🛑”আজওয়া খেজুর খেলে বিষ কাজ করে না” হাদিসে সঠিক ব্যাখ্যা কি?
🔷উত্তরঃ মগজে চিন্তাশীলতার অভাব এবং বুঝতে ভুল। আসুন প্রথমে আজওয়া খেজুর বিষয়ে কিছু হাদিস জেনে নেই…
সহিহ বুখারি, হাদিসঃ ৫৪৪৫ ,সহিহ হাদিসঃ সা’দ (রাঃ) তাঁর পিতা থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি প্রত্যেকদিন সকালবেলায় সাতটি আজওয়া (উৎকৃষ্ট) খেজুর খাবে, সেদিন কোন বিষ ও যাদু তার ক্ষতি করবে না।
সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ৫২৩৪ ,সহিহ হাদিসঃ সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি প্রতিদিন সকালে সাতটি আজওয়া (মদীনার উৎপন্ন এক জাতীয় উৎকৃষ্ট মানের খেজুর) আহার করে, সেদিন তাঁকে কোন বিষ বা যাদু অনিষ্ট করতে পারে না।
নাস্তিক অন্ধ বিশ্বাসীরা এই বিষ মানে বুঝেছে এমন “বিষাক্ত বিষ” যা খেলে মানুষ সাথে সাথেই মারা যাবে। আর আমরা আরও বিশুদ্ধ হাদিস থেকে জানতে পারি যে এমন বিষ যা খেলে মানুষ সরাসরি মারা যাবে এরকম বিষ সেবন নবী মুহাম্মদ (সা) সরাসরি নিষেধ করেছেন।
সুতরাং উপরের হাদিস দ্বারা যেই বিষের কথা বলা হয়েছে সেই বিষ আসলে হল “শরীরের রোগজীবাণু সৃষ্টিকারী বিষ” অর্থাৎ আজওয়া খেজুর খেলে শরীর সুস্থ থাকবে এবং রোগজীবাণুর বিষ আর কাজ করবে না। উপরিক্তো হাদিস দ্বারা বিষ ক্ষতি করতে পারবে না কথাটি বোঝাতে গিয়ে রসূল (সাঃ) খেঁজুরের রোগ নিরাময়কারী গুণাগুণ বুঝিয়েছেন। আমাদের দুটি দাবী তথা “ক্ষতিকর বিষাক্ত বিষ” ইসলামে হারাম এবং “রোগজীবাণু সৃষ্টিকারী বিষ” আজওয়া খেজুর খেলে ধ্বংস হয়ে যায়। প্রমানঃ
* ihadis.com, সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ৫২৩৬, সহিহ হাদিসঃ ‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মাদীনার উঁচু ভূমির ‘আজওয়াহ্ খেজুরে শিফা (রোগমুক্তি) রয়েছে। কিংবা তিনি বলেছেন, এগুলো প্রতি সকালে খাবারে বিষমুক্ত ঔষধের কাজ করে।
* ihadis.com, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিসঃ ৩৪৫৩ ,সহিহ হাদিসঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ‘আজওয়া’ হলো জান্নাতের খেজুর এবং তা উন্মাদনার প্রতিষেধক।
* ihadis.com, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিসঃ ৩৪৫৫ ,সহিহ হাদিসঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আজওয়া হলো জান্নাতের খেজুর এবং বিষের প্রতিষেধক।
* ihadis.com, জামে আত তিরমিজি, হাদিসঃ ২০৬৬, হাসান সহিহঃ আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আজওয়া হচ্ছে জান্নাতের খেজুরবিশেষ এবং এর মধ্যে বিষের প্রতিষেধক রয়েছে।
* ihadis.com, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিসঃ ৩৪৫৯, সহিহ হাদিসঃ আবূ হুরায়রাহ (রাঃ), থেকে বর্ণিতঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিকৃষ্ট ও অনিষ্টকর ঔষধ অর্থাৎ বিষ ব্যবহার করতে নিষেধ করেছেন।
* ihadis.com, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিসঃ ৩৪৬০ , সহিহ হাদিসঃ আবূ হুরায়রাহ (রাঃ), থেকে বর্ণিতঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি বিষপান করে আত্মহত্যা করলো, সে অনন্তকালের জন্য জাহান্নামী হয়ে এই বিষ গলাধঃকরণ করতে থাকবে।
* ihadis.com, জামে আত তিরমিজি, হাদিসঃ ২০৪৩, সহিহ হাদিসঃ আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ আবূ হুরাইরা (রাঃ) মারফূভাবে বর্ননা করেনঃ যে লোক লোহার অস্ত্র দ্বারা আত্মহত্যা করবে, সে ঐ লৌহঅস্ত্র হাতে নিয়ে কিয়ামত দিবসে হাজির হবে। সে নিজের পেটে এতা অবিরত ভাবে বিদ্ধ করতে থাকবে এবং সে চিরকাল জাহান্নামে থাকবে। যে লোক বিষপান করে আত্মহত্যা করবে, সে ঐ বিষ হাতে নিয়ে কিয়ামত দিবসে হাযির হবে। সে চিরকাল জাহান্নামে থাকবে এবং সর্বদা এই বিষ গলাধঃকরণ করতে থাকবে।
* সুরা বাকারা ২:১৯৫ = তোমরা নিজেদের জীবনকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেও না।
উদাহরণঃ ধরুন কোন এক মানুষ বলল ৭ ই মার্চের ভাষণ শুনে তৎকালীন মানুষদের এমন অবস্থা হয়েছিল যে যেন তাদেরকে আর কেউই হারাতে পারবে না। জনাব আব্দুল্লাহ তার মতই একজন নেতা। তার দেশপ্রেমের ভাষণ শুনলে আমাদের মনে এমন শক্তি উৎপন্ন হয় যে আর কোন কিছুই আমাদের দমাতে পারবে না। – এখন যদি কোন মূর্খ মানুষ বলে যে আচ্ছা সামান্য একটি ভাষণে যদি এতই শক্তি আসে তাহলে বিষ খান তো দেখি আপনার সেই শক্তি আপনাকে এই বিষ থেকে বাঁচাতে পারে কিনা? চিন্তাশীল মানুষ বুঝে গেছে যে তার প্রশ্ন অযৌক্তিক ঠিক একইভাবে নবী মুহাম্মদ (সা) আজওয়া খেজুরের গুনাগুন এবং রোগনিরাময়ের বর্ণনা করেছেন অথচ নাস্তিক অন্ধ বিশ্বাসীরা বলছে বিষাক্ত বিষ খেয়ে মুসলিমদের হাদিসের সত্যতার প্রমান দিতে যা খুবই হাস্যকর এবং ভিত্তিহীন একটি অভিযোগ এবং খগেনদের মূর্খতা, হ্যাঁ এটাই ফাইনাল কথা।
উপরের তথ্য প্রমান হাতে রেখে আমরা দৃঢ়তার সাথে কিছু শক্তিশালী দাবী উপস্থাপন করব এবং প্রশ্ন ছুড়ে দিবঃ
১) আজওয়া খেজুর খেলে রোগজীবাণুর বিষ শরীরে কোন ক্ষতি করতে পারবে না তথা ধ্বংস হয়ে যায় এটাই হাদিসে বুঝানো হয়েছে।
২) “আজওয়া খেজুর খেলে বিষ কাজ করবে না” এখানে বিষাক্ত বিষের কথা বলা হয়েছে বিশুদ্ধ হাদিস দিয়ে প্রমান করুন?
৩) বিষাক্ত বিষ সেবন করা ইসলামে হারাম।
৪) আত্মহত্যা করা হারাম।
৫) কোন নির্বোধ মানুষ যদি বিষাক্ত বিষ খেয়ে আজওয়া খেজুর খায় এবং সে মারা যায় তাহলে সেটি তার দোষ ইসলামের না কারন ইসলাম সরাসরি আপনাকে বলছে, সুরা বাকারা ২:১৯৫ = তোমরা নিজেদের জীবনকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেও না এবং ihadis.com, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিসঃ ৩৪৬০ , সহিহ হাদিসঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি বিষপান করে আত্মহত্যা করলো, সে অনন্তকালের জন্য জাহান্নামী হয়ে এই বিষ গলাধঃকরণ করতে থাকবে। এই থেকে প্রমানিত হয়ে যাচ্ছে আজওয়া খেজুর এর মধ্যে ক্ষতিকর রোগজীবাণুর বিষ ধ্বংসের গুনাগুন আছে আর এটাই বুঝিয়েছেন নবীজি (সা)।
৬) বিষাক্ত বিষ সেবন ইসলামে হারাম আর আপনি খগেন মিয়া মুসলিমদের বিষাক্ত বিষ খেতে বলছেন কেন? আপনি কি সন্ত্রাসী খগেন?
৭) রসূল সাঃ কী কখনো বিষপান রোগীকে বলেছেন যে, তুমি আজওয়া খাও, বিষক্রিয়া নষ্ট হয়ে যাবে। বা আরব সমাজে কেউ কি হাদিসের রেফারেন্স দিয়ে এটা বলেছেন যে, আজওয়া খেয়ে বিষপান করলেও বিষ কাজ করবে না?
৮) আরবদের তৎকালীন কোনো কাফেররা তো এটা বলে নি যে,ওহে, অমুক। শুনলাম আব্দুল্লাহর পুত্র মুহাম্মদ নাকি বলেছে প্রতিদিন সাতটি আজওয়া খেলে, বিষ খেলেও কোনো ক্ষতি হবে না? তো তুমি কী আজ আজওয়া খেয়েছ? যদি খেয়ে থাক, তবে এই নাও বিষ এবং বিষ খেয়ে প্রমাণ কর যে, আব্দুল্লাহর পুত্র মুহাম্মদ সত্য বলেছে?এমন কোনো ঘটনা কী ঘটেছে? ঘটে নি। নাস্তিক অন্ধ বিশ্বাসীরা হাদিস থেকে যে ডাহা মিথ্যাচার উৎঘাটন করেছে তা তৎকালীন বড় বড় ইসলাম বিদ্বেষী আরবরা কেন কাজে লাগায় নি? এটা করলেই তো মুহাম্মদ (সাঃ) কে মিথ্যাবাদী প্রমাণ করা হয়ে যেত! কিন্তু তারা এমন কিছু বলেন নি কারণ তারা জানত হাদিসের মর্মার্থ এমন নয়।
৯) খগেনরা বলে যে “কেউ যদি কাউকে বিষ খাওয়ায় তাহলে আজওয়া খেজুর তাকে সেবন করালে বিষাক্ত বিষ কাজ করবে না” এটাই নাকি উল্লেখিত হাদিসের ব্যাখ্যা। কিন্তু এর পক্ষে কুরআন ও হাদিসের প্রমান কোথায়? আমরা পরিস্কার বিশুদ্ধ হাদিস দিয়েই প্রমান করেছি যে সেখানে বিষ বলতে বিষাক্ত বিষের কথা বলাই হয় নাই , দেহে রোগজীবাণু এক প্রকাশ বিষ এই বিষের কথাই হাদিসে বলা হয়েছে। এই যে নেন আরেকবার পড়ুনঃ
ihadis.com, সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ৫২৩৬, সহিহ হাদিসঃ ‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মাদীনার উঁচু ভূমির ‘আজওয়াহ্ খেজুরে শিফা (রোগমুক্তি) রয়েছে। কিংবা তিনি বলেছেন, এগুলো প্রতি সকালে খাবারে বিষমুক্ত ঔষধের কাজ করে।
যুক্তির খাতিরে যদি ধরেও নেই যে এখানে বিষাক্ত বিষের কথাই বলা হয়েছে তাহলে এই হাদিস মজেজার মধ্যে পরবে কারন মুসলিমদের প্রস্তাব হল যে আল্লাহ এই আজওয়া খেজুর এর মাধ্যমেও একজন মানুষকে বাঁচাতে পারেন আবার এটা ছাড়াও তিনি আমাদের রক্ষা করতে পারেন। সুতরাং এরপরেও কোন সমস্যা থাকে না।
১০) তবে মূল উত্তর পরিস্কার ভাবেই বুঝা যায় যে হাদিসে আসলে সাধারন দেহের যে সকল বিষ রয়েছে সেগুলাই ক্ষতি করবে না এটাই মূল উত্তর।