Skip to content

 

Wait...❤😘 Show love? ⬇⬇⬇

আল্লাহ ইবাদাত খায় না মাথায় দেয়? আল্লাহ কি মানুষের ইবাদাতের উপর নির্ভরশীল?

আল্লাহ ইবাদাত খায় না মাথায় দেয়? আল্লাহ কি মানুষের ইবাদাতের উপর নির্ভরশীল?

🛑প্রশ্নঃ আল্লাহ ইবাদাত খায় না মাথায় দেয়? আল্লাহ কি মানুষের ইবাদাতের উপর নির্ভরশীল?

ইবাদাত চাওয়ার মাধ্যমে আল্লাহ মানুষকে কাজ চাপিয়ে দিয়েছে। আল্লাহ নিজের প্রশংসা নিজে করতে বললেন কেন? আমাকে সৃষ্টি করলেন কেন আল্লাহ? আমাকে সৃষ্টি না করলে তো জাহান্নামে যেতে হতো না। শাস্তি পেতে হতো না। এটা অবিচার।

🔷উত্তরঃ

আল্লাহ তার প্রশংসা করার জন্য কোরানে বলেন-

১. “তোমরা আমাকে স্মরণ কর; আমিও তোমাদের স্মরণ করব। তোমরা আমার প্রতি কৃতজ্ঞ হও, আর কৃতঘ্ন হয়ো না।” (সূরা বাকারা, অধ্যায় ২ এর অনুচ্ছেদ ১৫২)

২. “তোমরা কৃতজ্ঞ হলে তোমাদেরকে অবশ্যই অধিক দান করব, আর অকৃতজ্ঞ হলে অবশ্যই আমার শাস্তি হবে কঠোর।” (সূরা ইব্রাহীম, অধ্যায় ১৪ এর অনুচ্ছেদ ৭)

৩. “বল, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহরই।” (সূরা ইসরা, অধ্যায় ১৭ এর অনুচ্ছেদ ১১১)

৪. তিনি আরও বলেছেন, “তাদের শেষ বাক্য হবে, আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন (সমস্ত প্রশংসা সারা জাহানের প্রতিপালক আল্লাহর জন্য)” (সূরা ইউনুস অধ্যায় ১০ এর অনুচ্ছেদ ১০)

এখানে বুঝা যাচ্ছে আল্লাহ্‌ আমাদের তার নেয়ামতের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য এবং অকৃতজ্ঞ না হওয়ার জন্য বলছেন।

নেয়ামতের শুকরিয়া সে তো নেয়ামত দাতার অনুগ্রহের স্বীকৃতি দানমাত্র। যা হয়ে থাকে নিজের ইচ্ছায় দাতার উপর সন্তুষ্টি ও ভালবাসা প্রকাশের জন্য। আর আল্লাহর প্রতি বিনয়ী হওয়ার নিদর্শন মাত্র। আমাদের অন্তরে এমন দৃঢ়বিশ্বাস থাকা আবশ্যক যে, আমি অধম এতসব নেয়ামত পাওয়ার উপযুক্ত নয়। বরং আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে আমাদের প্রতি দয়া ও রহমত প্রদর্শন করে যাচ্ছেন। আর এই নেয়ামত মুখের ভাষা দ্বারা প্রকাশ এবং কর্মের মাধ্যমে এর বাস্তবরূপ দান করা প্রত্যেক বান্দার উপর অপরিহার্য দায়িত্ব ও কর্তব্য। নেয়ামত পেয়ে বিনম্র হওয়া, নিজ অক্ষমতা অনুধাবন করা, নেয়ামতকে সঠিক পাত্রে ব্যবহার করা এবং যথাযথ এর মর্যাদা রক্ষা করা আল্লাহর প্রতি বান্দার ভালবাসা প্রকাশের আরেক দৃষ্টান্ত।

এখন প্রশ্ন আসতে পারে আমরা প্রশংসা না করলে কি তিনি মহান না?

এর উত্তরে বলব, ধর কেউ বললো আল্লাহু আকবার বা আল্লাহ মহান তার মানে এই নয় ঐ ব্যাক্তির প্রশংসার কারনে আল্লাহ আরো মহান হয়ে গেলেন। আল্লাহ অলরেডিই মহান হয়েই আছেন। যতই তাকে প্রশংসা করা হোক বা না হোক তিনি মহান আছেন ছিলেন ও থাকবেন। আল্লাহ বলেন সূরা ফাতির অধ্যায় ৩৫ এর অনুচ্ছেদ ১৫ তে ‘‘হে মানুষ, তোমরা আল্লাহর গলগ্রহ। আর আল্লাহ্; তিনি অভাবমুক্ত, প্রশংসিত”
এখন প্রশ্ন আসতে পারে আল্লাহর প্রশংসা কেন করবঃ
তারঁ প্রশংসা করা প্রয়োজন আমাদের লাভের জন্য।

আল্লাহ সমস্ত চাওয়া-পাওয়া থেকে মুক্ত। তারঁ প্রশংসা করা প্রয়োজন আমাদের লাভের জন্য। আপনি এমন কারো সম্মান করবেন যে সর্বজ্ঞ, অত্যন্ত সুক্ষদর্শী ও সব কিছু যার আয়ত্বাধীন, তারঁ প্রশংসা করে আপনি নিজেকে সন্তুষ্ট করবেন। এজন্যই প্রত্যেক মুসলমান প্রতি নামাযের শুরুই করে তাকে মর্যাদাসূচক উক্তি করে।

আর পৃথিবীর সবাই অকৃতজ্ঞ হলেও আল্লাহর কোনো ক্ষতি নেইঃ

মুসা বলেছিল, তোমরা ও পৃথিবীর সবাই যদি অকৃতজ্ঞ হও, তথাপি আল্লাহ অভাবমুক্ত ও প্রশংসিত। (সুরা : ইবরাহিম, আয়াত: ৮)
আর আল্লাহর কৃতজ্ঞতা আদায় করা হলে তিনি তাঁর অনুগ্রহ বৃদ্ধি করে দেন। আলোচ্য আয়াতে বলা হয়েছে, কৃতজ্ঞতা ও অকৃতজ্ঞতার প্রতিফল মানুষই পাবে। এতে আল্লাহর কোনো লাভ বা ক্ষতি নেই। গোটা পৃথিবীর মানুষ আল্লাহর অকৃতজ্ঞ হলেও তাঁর কোনো ক্ষতি নেই। একইভাবে গোটা পৃথিবীর মানুষ আল্লাহর কৃতজ্ঞ হলেও তাঁর কোনো লাভ নেই।

পৃথিবীতে মুসলিম ও অমুসলিম তথা মুমিন ও কাফির থাকবেই। কিন্তু কেউ যদি ঈমান আনে, তাহলে এর সুফল সে-ই ভোগ করবে। একইভাবে কেউ যদি কুফরি করে, তাহলে এর প্রতিফলও তাকে পেতে হবে। এতে আল্লাহর কোনো লাভ বা ক্ষতি নেই। মহান আল্লাহ বলেন, “কেউ কুফরি করলে জেনে রাখুক, নিশ্চয়ই আল্লাহ বিশ্বজগতের মুখাপেক্ষী নন। (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত: ৯৭)

অমুখাপেক্ষিতা আল্লাহ তাআলার বিশেষ গুণ। মুখাপেক্ষীহীন কোনো মানুষ নেই। প্রাকৃতিক নিয়মেই মানুষকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করা হয়নি। এর কারণ হলো, মানুষ অমুখাপেক্ষী হলে অন্যের লাভ-লোকসান ও সুখ-দুঃখের প্রতি মোটেও ভ্রুক্ষেপ করত না। তারা অন্যের প্রতি অত্যাচার, অবিচার ও উত্পীড়নের পথ বেছে নিত।

সাধারণত দেখা যায়, একটু ক্ষমতা লাভ করলেই মানুষ অপরাধপ্রবণ হয়ে ওঠে। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ বলেন, ‘মানুষ যখন নিজেকে অমুখাপেক্ষী দেখতে পায় তখন সে অবাধ্যতা ও ঔদ্ধত্যে মেতে ওঠে। ’ (সুরা : আলাক, আয়াত : ৬-৭)

তাই আল্লাহ তাআলা মানুষের জীবনধারা এমন প্রয়োজনাদির শিকলে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে দিয়েছেন, যেগুলো অন্যের সাহায্য ছাড়া পূর্ণ হতে পারে না। প্রবল প্রতাপান্বিত রাজা-বাদশাহরাও চাকর-চাকরানির মুখাপেক্ষী। বিত্তশালী ও কলকারখানার মালিকরাও শ্রমিকদের মুখাপেক্ষী। শহুরে মানুষ গ্রাম্য কাঁচামাল ও পণ্যের মুখাপেক্ষী। আবার গ্রাম্য মানুষও শহরের পণ্যাদির মুখাপেক্ষী। এরকম না হলে কোনো ধনী ব্যক্তি কাউকে এক পয়সারও মূল্য দিত না, আর কোনো শ্রমিক কারো বোঝা বহন করত না। কিন্তু মহান আল্লাহ অমুখাপেক্ষী হয়েও সৃষ্টিজগতের ওপর দয়াশীল।

আল্লাহ বলেন সূরা আনয়াম অধ্যায় ৬ এর অনুচ্ছেদ ১৩৩ “তোমার প্রতিপালক অমুখাপেক্ষী, দয়াশীল। তিনি ইচ্ছা করলে তোমাদের সবাইকে উচ্ছেদ করতে এবং তোমাদের পর যাকে ইচ্ছা তোমাদের স্থলাভিষিক্ত করতে পারেন, যেমন তোমাদের তিনি অন্য এক জাতির বংশধর থেকে সৃষ্টি করেছেন” মহান আল্লাহ সর্বশক্তিমান ও মহাপরাক্রমশালী। অক্ষমতা ও দুর্বলতা তাঁর ক্ষেত্রে অকল্পনীয়। তাঁর কোনো অভাব নেই। তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন। সব কিছুই তাঁর সৃষ্টি। তিনিই সব কিছুর স্রষ্টা। মানুষের সীমাবদ্ধ জ্ঞান দিয়ে তাঁর সত্তাকে পুরোপুরি উপলব্ধি করা সম্ভব নয়।

এখন প্রশ্ন আসতে পারে তাইলে আল্লাহ ইবাদাত করতে বলছে কেন???

উত্তরে একটা উদাহরণ দিই। ধরেন আপনার বাসায় আপনি রাস্তা থেকে একটা অনাথ ছেলেকে এনে আশ্রয় দিলেন, তার খাওয়া দাওয়া, জামা কাপড়, হাতখরচ যাবতীয় ভরণপোষণ নিজের ছেলের মত দিতে লাগলেন। এরপর যদি ঐ ছেলে আপনার কথা না শোনে। একের পর এক আপনার বিরোধীতা করতে থাকে। আপনার ভাত খেয়ে পাশের বাসার খারাপ প্রতিবেশীর সাথে হাত মিলিয়ে আপনার মানসম্মান নষ্ট করতে চায়, সামান্য কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ না করে৷ তখন আপনি কি তাকে শাস্তি দেবেন না?
তেমনি আল্লাহ আমাদের বেচে থাকার প্রয়োজনীয় সকল উপাদান যেমন মাটি, পানি, অক্সিজেন, খাবারের মৌলিক উপাদান সৃষ্টি করে দেন। আপনি এগুলো ব্যবহার করেও আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবেন না উল্টো শয়তানের সাথে হাত মিলিয়ে আল্লাহর একাত্ববাদে শরীক আনবেন সেটা আল্লাহ কিভাবে মেনে নেবেন? আর ইবলিস আল্লাহর সাথে চ্যলেঞ্জ করছিল যে মানুষকে ভ্রান্ত পথে নিয়া যাবে। তাই আল্লাহ ইবাদাতের মাধ্যমে সঠিক পথে চলতে বলছে। এটা আমাদেরই লাভ কারণ আমরা পথ ভ্রষ্ট হব না।

এখন প্রশ্ন আসতে পারে যে আমাকে সৃষ্টি না করলেই তো হত৷ তাহলে জাহান্নামেও যেতে হতো না আর শাস্তিও পেতে হত না। কেন আল্লাহ আমাকে সৃষ্টি করলেন?

এর উত্তরে বলব যদি আল্লাহ আপনাকে দুনিয়ার জন্য না সৃষ্টি করতেন কিন্তু আপনি চেতনা আছে এমন একটা বস্তু হতেন আর আপনাকে জাহান্নামের শাস্তি না দেখিয়ে জান্নাতের পুরষ্কার দেখানো হত, তখন আপনিই উল্টো প্রশ্ন করতেন যে “আল্লাহ কেন তুমি আমাকে সৃষ্টি করলে না? তুমি আমাকে সৃষ্টি করলেই তো আমি জান্নাতের পুরষ্কার পেতে পারতাম।”

এখানে কথা হলো আল্লাহ আপনাকে সৃষ্টি করেছেন তার মানে এই না সৃষ্টি করেই জাহান্নামে পাঠিয়ে দিয়েছেন। আপনি জান্নাতে যাবেন নাকি জাহান্নামে যাবেন তা নির্ভর করে আপনার কাজের উপর।

ইসলাম সম্পর্কে যেকোন অভিযোগ ও তুলনামূলক ধর্মতত্ত্বে সম্পর্কে কোন প্রশ্ন থাকলে নির্দ্বিধায় প্রশ্ন করতে পারেন। ইসলামের কোন নীতি যদি আপনার কাছে ভুল মনে হয় তাহলে প্রশ্ন করতে পারেন৷ তুলনামূলক ধর্মতত্ত্বের একজন ছাত্র হিসেবে যথাসাধ্য উত্তর দেয়ার চেষ্টা করব ইনশা আল্লাহ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Copyright Notice

কপি করা নিষিদ্ধ!