আল্লাহ কোথায় আছেন/থাকেনঃ
উত্তরঃ আল্লাহ আরশের উপর আছেন।
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আরশের উপর আছেন। এ বিষয়টি পবিত্র কুরআনের বহু আয়াত, অসংখ্য সহিহ হাদিস এবং সালাফে সালেহীনদের কথা হতে প্রমাণিত।
১। আল্লাহ তা’আলা বলেন :
إِلَيْهِ يَصْعَدُ الْكَلِمُ الطَّيِّبُ وَالْعَمَلُ الصَّالِحُ يَرْفَعُهُ (فاطر 10)
অর্থাৎ, তাঁরই পানে উত্থিত হয় ভাল কথা (কালিমা তাইয়েবা) আর নেক আমল তা উন্নীত করে। (সূরা ফাতির, ৩৫ : ১০ আয়াত)।
২। অন্যত্র বলেন :
ঊর্ধ্বারোহণের সোপানসমূহের অধিকারী,ফেরেশতাগণ ও রূহ আল্লাহর পানে ঊর্ধ্বগামী হয়। (সূরা মাআরিজ, ৭০: ৩ও ৪ আয়াত)
৩। আরও ইরশাদ করেছেন :
তুমি তোমার সুমহান রবের নামের তাসবীহ পাঠ কর।(সূরা আলা ৮৭:১ আয়াত)
৪। অন্যত্র ইরশাদ হচ্ছে :
রহমান-পরম করুণাময়, আরশের ওপর উঠেছেন। ( সূরা ত্বহা, ২০ : ৫)
৫। ইমাম বুখারি রহ. “এসতোয়া” শব্দের অর্থ করেছেন, উর্দ্ধারোহন ও উপরে অধিষ্টিত হওয়া।
৬। বিদায় হজে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুতবায় উচ্চারণ করেছিলেন :
হে উপস্থিতি! আমি কি পৌঁছেয়েছি? সাহাবাগণ রা. বললেন : হ্যাঁ, অবশ্যই। তখন তিনি আসমানের দিকে তর্জনী উঠিয়ে সাহাবাদের দিকে ইশারা করে বললেন : হে আল্লাহ! তুমি সাক্ষী থেক। (মুসলিম)
৭। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
আল্লাহ তাআলা একটি কিতাব লিখেছেন, সেটি তাঁর নিকট আরশের উপর আছে। (বুখারি ও মুসলিম)
৮। অন্যত্র বলেছেন:
তোমরা কি আমাকে বিশ্বাস কর না! যিনি আসমানে আছেন তাঁর নিকট আমি বিশ্বাসী বলে পরিগণিত। সকাল-সন্ধ্যা আসমানের খবর আমার নিকট আসে। (বুখারি ও মুসলিম)
৯। ইমাম আওযায়ী রহ. বলেছেন:
আমরা ও আমাদের সময়ের তাবেয়ীনরা বলতাম: নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ আরশের উপর আছেন। আমরা হাদীসে বর্ণিত তাঁর সিফাতসমূহের উপর ঈমান এনেছি। (বায়হাকী, সহিহ)।
১০। ইমাম শাফেয়ী র. বলেছেন :
আল্লাহ আসমানের উপর আরশে আছেন। সেখান থেকে চাহিদা মাফিক সৃষ্টির নিকটবর্তী হন। এবং প্রতি রাতের শেষ তৃতীয়াংশে দুনিয়ার আসমানে অবতীর্ণ হন যেভাবে চান সেভাবে।
১১। ইমাম আবু হানিফা রহ. বলেছেন :
যে বলল, আল্লাহ আসমানে না যমীনে, সে কুফরী করল। কারণ, আল্লাহ নিজেই বলেছেনঃ তিনি আরশের উপর আছেন। তাঁর আরশ সাত আসমানেরও উপরে। তিনি বলেন : যদি কেউ বলে, হ্যাঁ সত্যিই তিনি আরশের উপর আছেন কিন্তু আরশ আসমানে না যমীনে তা জানি না, তাহলে সেও কাফের। কারণ, তিনি যে আসমানে আছেন সে ব্যক্তি তা অস্বীকার করেছে। আর আসমানে তাঁর বিদ্যমানতাকে যে ব্যক্তি অস্বীকার করে সে কুফরী করল। কারণ, আল্লাহ ইলি্লয়িনে আছেন।
তাছাড়া তাঁকে আমরা উপরের দিকে হাত তুলে ডাকি, নীচের দিকে নয়।
(শরহুল আকীদাহ আত-তহাবিয়াহ)।
১২। যে ব্যক্তি ইসতাওয়াকে ইসতাওলা বলে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করে সে যেন কুরআনের শব্দকে বিকৃত করল। কারণ, সালাফে সালেহীনদের কেউ একথা বলেননি। তাদের রাস্তাই হচ্ছে সর্বোত্তম গ্রহণযোগ্য রাস্তা। আর ইসতাওলা শব্দের ব্যাখ্যা করলে অর্থ দাড়ায়, আরশ আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের দখলে ছিল না, তিনি জোর করে দখল করেছেন।