🛑প্রশ্নঃ আল্লাহ তায়ালা কেন দেখা দেন না?
🔷উত্তরঃ আজকাল নাস্তিকরা প্রশ্ন করেন, “সত্যিই যদি আল্লাহ বলে কেউ থাকে, তাহলে তিনি আমাদের সাথে কথা বলেন না কেন? “
এই প্রশ্ন মানুষ করবে তা আল্লাহ জানেন এবং জবাব ও দিয়ে রেখেছেন ৷
মহান আল্লাহ বলেন,
[118] وَقالَ الَّذينَ لا يَعلَمونَ لَولا يُكَلِّمُنَا اللَّهُ أَو تَأتينا ءايَةٌ ۗ كَذٰلِكَ قالَ الَّذينَ مِن قَبلِهِم مِثلَ قَولِهِم ۘ تَشٰبَهَت قُلوبُهُم ۗ قَد بَيَّنَّا الءايٰتِ لِقَومٍ يوقِنونَ
[118] যারা কিছু জানে না, তারা বলে, আল্লাহ আমাদের সঙ্গে কেন কথা বলেন না? অথবা আমাদের কাছে কোন নিদর্শন কেন আসে না? এমনি ভাবে তাদের পূর্বে যারা ছিল তারাও তাদেরই অনুরূপ কথা বলেছে। তাদের অন্তর একই রকম। নিশ্চয় আমি উজ্জ্বল নিদর্শনসমূহ বর্ণনা করেছি তাদের জন্যে যারা প্রত্যয়শীল।
(সূরা বাকারাহ)
এই আয়াতে আমরা পাই,
(1) যারা মূর্খ, তারাই এমন প্রশ্ন করে ৷
(2) পূর্বের লোকেরাও এমন প্রশ্ন করত ৷
(3) আল্লাহ তাঁর অস্তিত্ব প্রমাণের জন্য নিদর্শন দিয়ে রেখেছেন ,যা জ্ঞানীরা বুঝতে পারবে ৷ ( এটা নিয়ে পরে আলোচনা করছি)
ধরুন, আপনার কাছে কোন সেলসম্যান মাইক্রোসফট এর কোন সফটওয়্যার বিক্রি করার চেষ্টা করল ৷
কেনার আগে আপনি দাবি করলেন: বিল গেটসের সাথে আপনি সরাসরি কথা বলবেন, তারপরেই সফটওয়্যার টি কিনবেন, নাহলে কিনবেন না। অথবা সে যেন নিজে আপনাকে ফোন করে তার সফটওয়্যার কিনতে অনুরোধ করে।
বিলগেটস কি ফোন দেবে? তার ঠেকা পরেছে? এমন মাথামোটা কাস্টমারের সাথে তিনি দেখা করবেন?
তাহলে ধর্ম গ্রহনের পূর্বে বিশ্বজগতের সৃষ্টিকর্তা, আল্লাহর সাথে দেখা করার দাবি কতটা যৌক্তিক?
কোন যোগ্যতা অর্জন করেছেন যে আল্লাহ আপনার সাথে দেখা করবেন?
আল্লাহ তায়ালা নবী, রাসূলদের সাথে যোগাযোগ করেছেন, কথা বলেছেন এমনকি মূসা (আঃ) এর সাথে আল্লাহ তায়ালা সাক্ষাত করেছেন ৷
প্রত্যেকের সাথে দেখা করে ধর্মের দাওয়াত দিতে হবে?
পানি পথের যুদ্ধের ইতিহাস আমরা পড়ি এবং বিশ্বাস করি! কেন? কারন ঐতিহাসিকরা লিখে রেখেছে, ডকুমেন্ট আছে ৷
ঠিক তেমনিভাবে নবী, রাসূলদের সাথে আল্লাহ যোগাযোগ করেছেন এবং ডকুমেন্ট হিসেবে দিয়েছেন ধর্মগ্রন্থ ৷ কেন তা বিশ্বাস করেন না?
শুধু তাই নয়, নিদর্শন ও দিয়ে রেখেছেন! ( 3 নাম্বার point)
আল্লাহ বলেন,
[164] إِنَّ فى خَلقِ السَّمٰوٰتِ وَالأَرضِ وَاختِلٰفِ الَّيلِ وَالنَّهارِ وَالفُلكِ الَّتى تَجرى فِى البَحرِ بِما يَنفَعُ النّاسَ وَما أَنزَلَ اللَّهُ مِنَ السَّماءِ مِن ماءٍ فَأَحيا بِهِ الأَرضَ بَعدَ مَوتِها وَبَثَّ فيها مِن كُلِّ دابَّةٍ وَتَصريفِ الرِّيٰحِ وَالسَّحابِ المُسَخَّرِ بَينَ السَّماءِ وَالأَرضِ لَءايٰتٍ لِقَومٍ يَعقِلونَ
[164] নিশ্চয়ই আসমান ও যমীনের সৃষ্টিতে, রাত ও দিনের বিবর্তনে এবং নদীতে নৌকাসমূহের চলাচলে মানুষের জন্য কল্যাণ রয়েছে। আর আল্লাহ তা’ আলা আকাশ থেকে যে পানি নাযিল করেছেন, তদ্দ্বারা মৃত যমীনকে সজীব করে তুলেছেন এবং তাতে ছড়িয়ে দিয়েছেন সবরকম জীব-জন্তু। আর আবহাওয়া পরিবর্তনে এবং মেঘমালার যা তাঁরই হুকুমের অধীনে আসমান ও যমীনের মাঝে বিচরণ করে, নিশ্চয়ই সে সমস্ত বিষয়ের মাঝে নিদর্শন রয়েছে বুদ্ধিমান সম্প্রদায়ের জন্যে।
(সূরা বাকারাহ)
আয়াতে যে নির্দশন গুলো আমাদের চারপাশে রয়েছে সেগুলো হল:-
(1) আসমান ,জমিন এবং এর সৃষ্টি প্রক্রিয়া :- অতীতে এই মহাবিশ্ব ছিল না বিজ্ঞান তা স্বীকার করছে ৷ আল্লাহ তায়ালা সৃষ্টি করেছেন ৷
(2) রাত ও দিনের আবর্তন: -আহ্নিক গতির কারনে হচ্ছে দিন রাত ৷ কিভাবে আহ্নিক গতির সূত্রপাত হল?
(3) নদীতে নৌকা সমূহের চলাচল :- বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে শুধু পৃথিবীতে পানি আছে, আর কোথাও নৌকা চলাচলের জন্য পানি নেই! কেন নেই? কিভাবে পানির সৃষ্টি হল পৃথিবীতে?
(4) বৃষ্টি: -বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে কোথাও বৃষ্টি হয়না! কে এনে দিল বৃষ্টির নিয়ম?
(5) মৃত জমিনে গাছ পালার বৃদ্ধি :- বৃষ্টি পরার সাথে সাথে দ্রুত বাড়তে থাকে সকল তরুলতা ৷ কে তাদের প্রাণ দিয়েছে? কিভাবে প্রাণ আসল?
(6) সকল প্রকারের জীব জন্তু: – লক্ষ লক্ষ প্রজাতির জীব জন্তু কিভাবে সৃষ্টি হল? কিভাবে বংশবিস্তারের মেশিন শরীরে যুক্ত হল? নারীর পেটে সন্তানের বেড়ে উঠার মেশিন কার বুদ্ধিতে যুক্ত হয়ে গেল যা এখনও মানুষ তৈরি করতে পারেনি? কোন বৈজ্ঞানিক তা যুক্ত করে দিল?
(7) আবহাওয়ার পরিবর্তন: – পৃথিবী নিজ অক্ষের উপর সাড়ে 23 ডিগ্রি কোনে হেলে থেকে অবিরাম ছোটে চলছে ৷ যার কারনে আবহাওয়ার সহনশীল পরিবর্তন হয় ৷ যদি তা 50 ডিগ্রি কোনে হেলে পরে তবেই ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে চলে যাবে পৃথিবী! কে এই সাড়ে 23 ডিগ্রি কোনে স্থির রাখল?
(8) মেঘমালা:- বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে কোথাও বৃষ্টি বর্ষনের জন্য মেঘ নেই পৃথিবী ছাড়া! কেন?
এই সকল কিছুই আল্লাহ তায়ালার নিদর্শন ৷
মোবাইল দেখে যেমন বুঝা যায় এর নির্মাতা রয়েছে, তেমনিভাবে আসমান ও জমিনের নিদর্শন দেখে বুঝতে হবে একজন সৃষ্টিকর্তা রয়েছে ৷
যদি বুঝতে না চান তবে দায়ভার সম্পূর্ণ আপনার ৷