Skip to content

 

Wait...❤😘 Show love? ⬇⬇⬇

ইসলামে কোম্পানি বা যৌথ ফার্মের মাসআলা মাসায়েল

ইসলামে কোম্পানি বা যৌথ ফার্মের মাসআলা মাসায়েল

কোম্পানি সম্পর্কিত মাসায়েল

দুই বা ততোধিক ব্যক্তি পারস্পরিক চুক্তি সম্মতি সাপেক্ষে নিজেদের পুঁজি বিনিয়োগ করে যৌথভাবে কোন কারবার করতে চাইলে তার নীতিমালা ও মাসায়েল নিম্নরূপঃ

১. যথারীতি যৌথ কারবারের চুক্তি অঙ্গীকার হওয়া চাই। লিখিত হওয়াই উত্তম। মৌখিক হলেও জায়েয হবে।

২. সকলের পুঁজি ও মুনাফা সমান হওয়া জরুরী নয় বরং কারও পুঁজি কম কারও বেশী এবং সে অনুপাতে মুনাফাও অল্প বা অধিক হতে পারে।

৩. মুনাফা বন্টনের হার পরিষ্কারভাবে বর্ণনা করতে হবে অর্থাৎ, কে কত অংশ হারে পাবে সে বর্ণনা থাকতে হবে।

৪. মুনাফার সম্পর্ক কেবল পুঁজির সাথে নয় বরং শ্রম, সাধনা, কৌশলগত যোগ্যতা, বুদ্ধির প্রখরতা প্রভৃতির প্রভাব রয়েছে মুনাফার ক্ষেত্রে। তাই কারও মধ্যে এসব গুণাবলী অধিক থাকার কারণে তার পুঁজি কম হওয়া সত্ত্বেও তাকে মুনাফার হার অধিক দেয়া যেতে পারে। তবে পার রিক সম্মতির ভিত্তিতেই তা নির্ধারিত হতে হবে।

৫. প্রত্যেকের স্বয়ং অথবা প্রতিনিধির মারফত কার্যে অংশ গ্রহণ আবশ্যকীয় | তবে কোন কারণবশতঃ অংশ গ্রহণে অসমর্থ হলেও মুনাফায় অংশীদার থাকবে, কেননা ক্ষতি হলে তাকেও তা বহন করতে হবে।

৬. কারবারের প্রারম্ভে যদি কোন অংশীদার বলে যে, আমি কাজে অংশ গ্রহণ করব না, তাহলে এ কারবার তার জন্য ফাসেদ হয়ে যাবে।

৭. যে বিষয়ের যৌথ কারবার চলে তা ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে সকলের অধিকার সমান। এমনিভাবে যে কোন অংশীদারের হাতে কারবারের ক্ষতি হলে সকলকেই তার দায়িত্ব বহন করতে হবে। অবশ্য কোন অংশীদার তাকে কোন দ্রব্য ক্রয় করতে বাধা দেয়া সত্ত্বেও যদি সে ক্রয় করে এবং ক্ষতি হয় তাহলে তার দায়িত্ব একা তাকেই বহন করতে হবে। এমনিভাবে কেউ কোন দ্রব্য ক্রয় করতে গিয়ে অসম্ভব প্রকারের প্রতারিত হয়ে থাকলে সে দায়িত্ব তারই উপর বর্তাবে।

৮. কোন শরীক স্বেচ্ছায় ক্ষতি করলে বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকলে সে দায়িত্ব তারই ঘাড়ে বর্তাবে }

৯. সকল অংশীদারের অনুমতি ছাড়া কোন অংশীদার কাকেও যৌথ মূলধন থেকে ঋণ প্রদান করতে পারবে না।

১০. লাভ ক্ষতিতে সকল অংশীদারকে ভাগী ধরতে হবে, কোন অংশীদার ক্ষতির ভাগ থেকে মুক্ত থাকার শর্ত আরোপ করলে বা কোন অংশীদার ক্ষতির দায়িত্ব পুরোটা নিজে নিতে চাইলে এ যৌথ কারবার নাজায়েয হবে।

১১.নিজের ব্যক্তিগত মালামালের সাথে যৌথ কারবারের মালামালকে একত্রিত করে রাখা অথবা উভয় কারবার মিশ্রিত করে রাখা জায়েয নয়। তবে সকল অংশীদারের অনুমতি থাকলে জায়েয।

১২.সকল অংশীদারের সম্মতি ব্যতীত নতুন কোন অংশীদারকে শরীক করা যাবে না।

১৩.যে যৌথ কারবারের কোন পুঁজি বিনিয়োগ করা হল, কোন অংশীদার ঐ কাজে ব্যক্তিগত অর্থ বিনিয়োগ করে পৃথক কারবার করলেও তা যৌথ কারবারের অন্তর্ভুক্ত বলে গণ্য হবে। যেমন কতিপয় লোক যৌথভাবে একটা কাপড়ের দোকান দিল, এমতাবস্থায় এদের কেউ ব্যক্তিগতভাবে দ্বিতীয় পৃথক কোন কাপড়ের দোকান দেয়ার অনুমতি পাবে না।

১৪.যদি কোন অংশীদার বা অংশীদারগণ অপর কোন অংশীদার বা অংশীদার- গণকে বলে যে, এ কারবার এ স্থানে করলে ভাল হবে; এমতাবস্থায় অন্য স্থানে কারবার করলে যদি ক্ষতি হয় তাহলে নিজেদের মতে যারা সেটা করবে ক্ষতির দায় তাদেরকেই বহন করতে হবে। অবশ্য মুনাফা হলে চুক্তি অনুযায়ী সকলেই তার অংশ পাবে।

১৫.যাদ কোন কারণে যৌথ কারবার বাতিল হয়ে যায় অথবা কেউ নিজেই। স্বেচ্ছায় চুক্তি বাতিল করে, তাহলে মুনাফা পুঁজি অনুপাতেই বন্টিত হবে। যদিও কারবারের প্রারম্ভে মুনাফা বেশ-কম গ্রহণের শর্তও হয়ে থাকে কিন্তু ভঙ্গের সময় তা কার্যকরী হবে না।

১৬.অংশীদারদের কেউ ইন্তেকাল করলে চুক্তি এমনিতেই বাতিল হয়ে যাবে। অবশ্য উত্তরাধিকারীগণ ইচ্ছা করলে চুক্তি নবায়ন (Renew) করতে পারবে। (ইসলামী ফেকাহঃ ৩য় থেকে গৃহীত।)

যৌথ ফার্ম সম্পর্কিত মাসায়েল

একাধিক সমপেশার লোক কোন পুঁজি ছাড়াই শ্রম বিনিয়োগ ও তার মুনাফা বন্টনের চুক্তিতে যে যৌথ ফার্ম গঠন করে, তাকে ফেকাহ্র পরিভাষায ‘শিরকাতে আমল’ বা ‘শিরকাতে সানায়ে’ বলে। যেমন কয়েকজন ঠিকাদার বা কয়েকজন ইঞ্জিনিয়ার বা কয়েকজন দর্জি বা কয়েকজন স্বর্ণকার একত্রে কাজ করার ও তার মুনাফা চুক্তির ভিত্তিতে বন্টন করে নেয়ার চুক্তিতে আবদ্ধ হল। এরূপ যৌথ কারবারের প্রয়োজনীয় কয়েকটি মাসায়েল নিম্নরূপ|

১. এতে মুসলিম অমুসলিম নির্বিশেষে সকলকে অংশীদার বানানো যায়।

২. এ ধরনের যৌথ কারবারে সকলের কাজ সমান সমান হওয়া এবং মুনাফায় সকলের সমান অংশীদার হওয়া শর্ত নয় বরং পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে এতে বেশ কমও হতে পারে।

৩. অংশীদারদের যে কেউ কোন কাজ বা কাজের অর্ডার নিলে তার দায়-দায়িত্ব সকলের উপর এসে যাবে এবং কাজদাতা যে কোন অংশীদার থেকে কাজ বুঝে নেয়ার অধিকার রাখবে।

৪. যে কোন অংশীদার কাজের অর্ডারদাতা থেকে পুরা মজুরী চেয়ে নিতে পারবে এবং এরূপ ক্ষেত্রে অন্যান্য অংশীদার আর কাজদাতা থেকে কিছুচাইতে পারবে না। অবশ্য নির্দিষ্ট কোন এক জনের হাতে মজুরী পরিশোধ করতে বলা হয়ে থাকলে কাজদাতার পক্ষে অন্য কাউকে মজুরী দেয়া ঠিক হবে না।

৫. অংশীদারদের একজন কাজ করল অন্যজন করল না, তাহলে এতে কাজ দাতার কিছু বলার থাকবে না। অবশ্য কাজ দেয়ার সময় কাজ দাতার পক্ষ থেকে যদি নির্দিষ্ট কারও কাজে থাকার শর্ত আরোপিত হয়ে থাকে, তাহলে সে অনুযায়ী কাজ হতে হবে।

৬. কোন অংশীদার অসুস্থতা বা এরূপ অনিবার্য কোন কারণ বশতঃ যদি কাজে অংশগ্রহণ করতে না পারে, তাহলেও সে লাভ ও মজুরীতে অংশীদার থাকবে।

৭. কোন কাজে ক্ষতি বা লোকসান হয়ে গেলে প্রত্যেক অংশীদারকে সে ক্ষতি বহন করতে হবে। যে যে হারে লাভের অংশ গ্রহণ করে থাকে, ক্ষতির অংশও সে হারে বহন করবে।

৮. বৃদহায়তনে এ কাজে পরিচালনার প্রয়োজনে কোন ব্যবস্থাপনা পরিষদ গঠন করতে হলে নিজেদের মধ্য থেকে করা যায় বা বাইরে থেকেও করা যায়। ব্যবস্থাপনা পরিষদের সদস্যের জন্য হয় নির্ধারিত বেতন থাকবে বা মুনাফার একটা হারাহারি অংশ থাকবে। একদিকে নির্ধারিত বেতন নিবে অপরদিকে মুনাফার একটা হারও পাবে-তা হতে পারবে না।

৯. কাজ শুরুর পূর্বে চুক্তি অঙ্গীকার হওয়া চাই। লিখিত হোক বা মৌখিক। লিখিত হওয়াই উত্তম।

১০.মুনাফা বন্টনের হার পরিষ্কারভাবে নির্ধারিত হওয়া চাই। মিল/ফ্যাক্টরীর সাথে সম্পর্কিত মাসায়েল ও শ্রমনীতি

* মিল/ফ্যাক্টরীর দু’টো পক্ষ থাকে (১) মালিক পক্ষ (২) শ্রমিক পক্ষ ও কর্মচারী পক্ষ।

মালিকের জন্য শ্রমিকের কি করণীয় এবং শ্রমিক কর্মচারীদের জন্য মালিকের কি করণীয় তন্মধ্যে বিশেষ কয়েকটি মাসআলা এবং মিল/ফ্যাক্টরীর সাথে সম্পর্কিত অন্যান্য আনুষঙ্গিক মাসায়েল বর্ণনা করা হলঃ

* মালিক শ্রমিক মজুরদেরকে নিজের ভাইয়ের মত মনে করবে।

* তাদের মজুরীর মান হবে নিয়োগকর্তার জীবন যাত্রার মানের সমকক্ষ; উভয়ের মাঝে যেন আকাশ পাতাল পার্থক্য না হয়। এমন কি কৃপণতা বশতঃ কোন মালিক নিম্নমানের জীবনযাত্রায় অভ্যস্ত হলে মজুরদেরকে সে মান গ্রহণের জন্য বাধ্য করার অধিকার তার নেই।

* তাদের দ্বারা এমন কঠোর কাজ করাবে না, যাতে তারা অবসন্ন হয়ে পড়ে বা সত্ত্বর ভগ্নস্বাস্থ্য হয়ে যায়। কখনো এরূপ করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে তাদের বাস্তব ও আর্থিক সহায়তা করতে হবে।

* মালিক ও শ্রমিকের মধ্যে একবার কর্মচুক্তি সম্পাদিত হওয়ার পর কাজ করা বা নেয়া অসম্ভব হওয়ার মত পরিস্থিতি সৃষ্টি না হলে (অর্থাৎ, ওজর বা বাধ্যবাধকতা না দেখা দিলে) সেই চুক্তি বাতিল করার অধিকার কোন পক্ষের নেই।

* উপরে বর্ণিত প্রকৃত ওজর ছাড়া যখনই ইচ্ছা একটা অজুহাত দাঁড় করিয়ে মালিক মিল/ফ্যাক্টরী লক আউট করতে পারবে না বা শ্রমিকরা কাজ বন্ধ/ধর্মঘট করতে পারবে না।

* মাসিক বেতনের ভিত্তিতে বা দৈনিক ভিত্তিতে (Daily basis ) বা কাজের পরিমাণের ভিত্তিতে সব ভাবে শ্রমিক নিয়োগ করা যায়।

* শ্রমিককে মাসিক বেতনের ভিত্তিতে নিয়োগ করে থাকলে কাজ না নেয়ার দিনের বা ছুটির দিনেরও মজুরী তাকে দিতে হবে।

* মালিক মজুরী পরিশোধ করার যে সময় নির্ধারণ করেছে সে সময়েই মজুরী প্রদান করা আবশ্যক। ঘটনাক্রমে কোন দিন বা কোন মাসে পিছিয়ে গেলে দোষ নেই, তবে এরূপ অভ্যস্ত হওয়া অন্যায়।

* মালিক যদি অনুভব করে যে, কোন শ্রমিক ন্যাস্ত কাজের ক্ষতি করছে অথবা সে মনোযোগের সাথে কাজ করছে না, তাহলে তাকে কর্মচ্যুত করার অধিকার মালিকের আছে। কিন্তু কর্মচ্যুত করার পূর্বে দুটো কথা জানা দরকার।

(১) শ্রমিকদের দৈহিক অসুবিধার কারণে এরূপ হয়ে থাকলে তাদেরকে কোনরূপ চার্জ করা যাবে না।

(২) মজুরীর স্বল্পতাই যদি তার অমনোযোগিতার কারণ হয়ে থাকে, তাহলে তার মজুরী প্রচুলিত মজুরীর চেয়ে কম হয়ে থাকলে তাকে প্রচলিত মজুরীর সমান মজুরী অবশ্যই দিতে হবে। এ দু’টোর কোনটা কারণ না হলে মালিক তাকে কর্মচ্যুত বা অধিক কাজ করতে আইনতঃ বাধ্য করতে পারবে।

* মালিক শ্রমিককে তাগিদ করতে পারবে কিন্তু গালাগালি বা মার-পিট করতে পারবে না।

* শ্রমিকের দ্বারা ওজরবশতঃ অথবা ঘটনাক্রমে অনিচ্ছায় তার ব্যবহারে বা চার্জে দেয়া মেশিন যন্ত্রাংশ বা কোন আসবাবপত্রের ক্ষতি সাধন হলে মালিক তার থেকে কোন ক্ষতিপূরণ নিতে পারবে না। কিন্তু যদি সে স্বেচ্ছায় ক্ষতিসাধন করে, যেমন মেশিন সোজা না চালিয়ে বিপরীত দিকে চালায় অথবা তার ঠাণ্ডা গরম তারতম্য না করে তা চালায় আর ক্ষতি হয় অথবা ম্যাচের কাঠি ধরাতে গিয়ে মেশিনে আগুন লেগে গেল কিংবা গ্লাস বরতন বা এ জাতীয় আসবাবপত্র এমন স্থালে রাখল, যেখানে ছেলে মেয়ে বা বিড়াল পৌঁছতে পারে, ফলে তা ভেঙ্গে গেল, এরূপ হলে মালিক তার থেকে ক্ষতিপূরণ নিতে পারে। ঘরের চাকর নওকরের ক্ষেত্রেও এ নিয়ম প্রযোজ্য হবে।

* মালিকের পরামর্শের বিপরীত কাজ করার ফলে ক্ষতি হলে সে জন্য শ্রমিককে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

* মিল/ফ্যাক্টরীর উৎপাদিত পণ্যের যে মান দেখে গ্রাহকরা তার প্রতি আকৃষ্ট হয়, পরবর্তীতে সে মান কম করে দেয়া গ্রাহকদের প্রতারিত করার শামিল বিধায় তা পাপ ও অন্যায়।

* মালিক যদি কোন কাজের ব্যাপারে শর্ত আরোপ করে যে, এ কাজ তুমি নিজেই করবে, তাহলে শ্রমিক সে কাজ অন্যকে দিয়ে করাতে পারবে না। করালে যদি ক্ষতি হয় তাহলে তাকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

* যে সংস্থার মালিক ব্যক্তি বিশেষ, সেক্ষেত্রে তিনি বা যে সংস্থার মালিক কোন ব্যক্তি বিশেষ নয় বরং সরকার বা জনগণ, সে ক্ষেত্রে তার নিয়োগকর্তা যদি অনুমোদন দান করে, তাহলে সে সংস্থার শ্রমিক কর্মচারীদেরকে ছুটি বা অসুস্থতার বেতন/ভাতা দেয়া হবে।

* নিয়োগকর্তাদের পক্ষ থেকে যে টাকা পুরষ্কার, অনুদান, বোনাস, প্রভিডেন্ট ফাণ্ড ইত্যাদি স্বরূপ দেয়া হয় তাকে কখনো মজুরীর মাঝে গণ্য করা যায় না। বেতন দেয়ার সময় নির্ধারিত থাকলে তার পূর্বে বেতন দাবী করার অধিকার বর্তায় না। তবে মালিক ইচ্ছা করলে অগ্রিম দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে বাকী সময় বা বাকী দিনগুলোর কাজ করে দেয়া শ্রমিকের যিম্মাদারী হয়ে দাঁড়ায়।

(ইসলামী ফিকাহঃ ৩য় খণ্ড থেকে গৃহীত)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Copyright Notice

কপি করা নিষিদ্ধ!