Skip to content

 

অভিযোগ: ইসলাম তলোয়ারের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আর মুসলিমগণ ইসলাম ছাড়া অন্য ধর্মকে সহ্য করে না!

অভিযোগ: ইসলাম তলোয়ারের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আর মুসলিমগণ ইসলাম ছাড়া অন্য ধর্মকে সহ্য করে না!

মারাত্মক ভ্রান্তি ও অপব্যাখ্যা:-
🛑ইসলাম তলোয়ারের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আর মুসলিমগণ ইসলাম ছাড়া অন্য ধর্মকে সহ্য করে না!

🔷উত্তর :- বিভিন্ন সামাজিক গ্রন্থে যে দৃশ্যটি দেখানো হয় তা হল, একজন ঘোড় সোওয়ার। যার এক হাতে রয়েছে উন্মুক্ত তলোয়ার আরেক হাতে কুরআন। সে জোর করে মানুষকে ইসলামে দীক্ষিত করার জন্য যুদ্ধে ছুটে যাচ্ছে। মূলত: এ দৃশ্যটি ইসলামের প্রকৃত রূপ নয়।

ইসলাম সম্পর্কে খারাপ ধারণা সৃষ্টির জন্য এ জাতীয় একটি কল্পিত চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। বরং ইসলাম কখনো অন্য কোন ধর্মাবলম্বীকে জোর করে ধর্মান্তরিত করতে বলেনি। বরং সকল ধর্মকে সম্মান করতে শিক্ষা দিয়েছে। সকল ধর্মাবলম্বীদেরকে প্রদান করেছে ধর্ম গ্রহণের স্বাধীনতা। ইরশাদ হচ্ছে: “ দ্বীনের ব্যাপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেনি এবং তোমাদেরকে স্বদেশ হতে বহিষ্কার করেনি তাদের প্রতি সদ্ব্যবহার ও ন্যায় বিচার করতে আল্লাহ তোমাদেরকে নিষেধ করেন না। আল্লাহ তো ন্যায়-পরায়ণদেরকে ভালবাসেন।” (সূরা মুমতাহিনাঃ ৮)

ধর্মীয় স্বাধীনতার ক্ষেত্রে কুরআনের সুস্পষ্ট বক্তব্য হল:

“ দ্বীনের ক্ষেত্রে জোর-জবরদস্তী করা যাবে না। হেদায়েত এবং গোমরাহি স্পষ্ট হয়ে গেছে। যে ব্যক্তি ‘তাগুত’ কে অস্বীকার করল সে এমন ‘মজবুত হাতল’ ধরল যা কখনো বিচ্ছিন্ন হবার নয়।” (সূরা বাকারাঃ ২৫৬)

ইসলামের অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য হল, ইসলামী সমাজে বসবাসরত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে রক্ষা করা। যার প্রকিষ্ট উদাহরণ হল, ইসলামের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, বিভিন্ন মুসলিম দেশে অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয়গুলোকে সংরক্ষিত অবস্থায় রাখা হয়েছিল এবং আজ পর্যন্ত রয়েছে। ধর্মীয় সহিষ্ণুতার ঘটনায় ইসলামের ইতিহাস পূর্ণ।

ইসলামের দ্বিতীয় খলীফা উমার ইবনুল খাত্তাব (রা:) ৬৩৪ হিজরিতে বিজয়ী বেশে যখন বায়তুল মুকাদ্দাসে প্রবেশ করলেন তখন তিনি সেখানে অবস্থানরত প্রতিটি মানুষকে ধর্মীয় স্বাধীনতা দান করেছিলেন এবং ঘোষণা করেছিলেন, প্রত্যেক ব্যক্তির নিজ নিজ ধর্ম পালন করতে পারবে। আরও ঘোষণা করলেন, প্রতিটি মানুষের জান-মাল নিরাপদ এবং তাদের উপাসনালয়গুলোকে রক্ষা করার যাবতীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

অনুরূপভাবে ইসলামী আইনে ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য আলাদা বিচারালয় প্রতিষ্ঠা করা অনুমোদিত। যেখানে সংখ্যালঘুদের নিজস্ব আইন অনুযায়ী পারষ্পারিক বিষয়াদির নিষ্পত্তি করা হবে।

মোটকথা, ইসলামী রাষ্ট্রে প্রতিটি নাগরিকের জান-মালকে পবিত্র আমানত হিসেবে গণ্য করা হয়। চাই সে মুসলিম হোক বা অমুসলিম হোক। ইসলামে সাম্প্রদায়িকতার কোন স্থান নেই। কুরআন বলে, মানুষে মানুষে ভেদাভেদ নাই; সকল মানুষ সমান। ইরশাদ হচ্ছে:

“হে মানুষগণ, আমি তোমাদেরকে একজন পুরুষ এবং একজন নারী থেকে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোষ্ঠীতে বিভক্ত করেছি যাতে তোমরা পরস্পরে পরিচিত হতে পার। তোমাদের মাঝে আল্লাহর নিকট সেই সবচেয়ে বেশী সম্মানিত যে সবচেয়ে বেশী আল্লাহ ভীরু।” (সূরা হুজুরাতঃ ৪৯)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Copyright Notice

কপি করা নিষিদ্ধ!