🛑প্রশ্ন:
বিভিন্ন সাধারণ জ্ঞানের বইয়ে “ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক কে?” এই প্রশ্নের উত্তরে লেখা থাকে, “হযরত মুহম্মদ (সাঃ)”।
🔷উত্তর:
ইসলাম ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা —আর কেউ নন– তিনি বিশ্বনিয়ন্তা, সর্বস্রষ্টা, সর্বজ্ঞ, মহাপরাক্রমশালী আল্লাহ তায়ালা।
তিনি মানবজাতিকে সৃষ্টি করেছেন। এরপর কিছুকালের জন্য তাকে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। এই মানব পৃথিবীতে আসার পরে তার হৃদয়ে কিছু প্রশ্ন উদিত হয়। এক মহাসত্যের উপলব্ধি হয় তার মনে। কে এই জগত চরাচরের স্রষ্টা, কে এই আকাশ, পাতাল, পাহাড়-পর্বত, নদ-নদী, চন্দ্র, সূর্য, গ্রহ-নক্ষত্র সৃষ্টি করেছেন? কে এদেরকে নির্ধারিত গতি পথে চলার ইঙ্গিত দিয়েছেন? কে এই দিবস-রজনী সৃজনকারী? কে বৃক্ষের পূর্বে তার বীজকে সৃজন করেছেন? কে মুরগির আগে তার ডিমের আবির্ভাব ঘটালেন? এদের কে আগে কে পরে? কে মানুষের আদি জন্মদাতা? কেন মানুষ জীবশ্রেষ্ঠ? সেই জীবশ্রেষ্ঠের শ্রেষ্ঠ কর্তব্য কি? কোন উপায়ে তা পালন করবে? ইত্যাদি জীবন-জিজ্ঞাসা তাকে অস্থির করে তোলে। যেগুলোর সমাধান মানুষ তার সীমিত জ্ঞানের সাহায্যে উদ্ধার করতে পারে না।
তাই আল্লাহ তায়ালা যুগে যুগে তাঁর নির্বাচিত কিছু বান্দাকে এসব জিজ্ঞাসার সমাধান দিয়ে পাঠিয়েছেন। যাঁদেরকে আমরা নবী-রাসূল বা বার্তাবাহক-দূত বলি। তারা পৃথিবীতে এসে মানুষের জন্ম-মৃত্যু, তার সৃষ্টিরহস্য, কিসে তার কল্যাণ ও মুক্তি, কে সেই সত্তা যিনি মানুষ সৃষ্টি করেছেন এসব কিছুর বার্তা স্বয়ং আল্লাহর পক্ষ হতে মানুষের কাছে পৌঁছিয়েছেন। মোটকথা তারা মানুষকে তাওহীদ তথা একত্ববাদ, রিসালাত তথা নবী-রাসূলদের আগমন ও আখেরাত তথা পরললৌকিক জগতের যে মহান বাণী মানুষের কাছে পৌঁছিয়েছেন তাহাই ইসলাম।
তাই ইসলাম এটা একমাত্র ঐশী ধর্ম। বর্তমান পৃথিবীতে পরিচিত ইসলাম ধর্মও নতুন কোনো ধর্ম নয়, বরং আদম আ. থেকে শুরু সর্বশেষ নবী মুহাম্মদে আরাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্যন্ত সকল নবী-রাসূলগণ যেই ধর্মের পথে মানুষকে আহবান করে গেছেন তা এই ইসলাম ধর্মই। যুগোপযোগীকরণে আল্লাহ সেগুলোর মধ্যে শাখাগত কিছু পরিবর্তনও করেছেন। কিন্তু মৌলিকত্ব তথা একত্ববাদ, রিসালাত, আখেরাত বিষয়ে সবি ছিল এক ও অভিন্ন। সকল যুগের অন্যায় কাজের মূলোৎপাটন করে বিশ্বময় শান্তি প্রতিষ্ঠার মহান লক্ষে ইসলাম এসেছে। যে ধর্মের পরিপূর্ণতা হয়েছে শেষ নবী, বিশ্বনবী মুহাম্মদে আরাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মাধ্যমে। ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রসহ জীবনের সকল ক্ষেত্রে সকলের জন্য শান্তি ও নিরাপত্তা বিধান করাই ইসলামি জীবন ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য। আর মানবজীবনে এমন একটি ধর্মের প্রয়োজন অনস্বীকার্য। তাই খোদ আল্লাহ তায়ালা মানবজাতির কল্যাণে তাঁর মনোনিত বান্দাদের মাধ্যমেএই ধর্মকে প্রতিষ্ঠা করেছেন।