বিষয়: ইস্তেখারার দোয়া সম্পূর্ণটা | ইস্তেখারার দোয়া বাংলা উচ্চারণ | ইস্তেখারার দোয়া বাংলা অর্থ | ইস্তেখারার দোয়া কি? উদ্দেশ্য, কখন, কেন, কিভাবে করতে হয়? ইস্তিখারা দোয়া কখন করা যাবে না?
ইস্তেখারার দোয়া সম্পূর্ণটা
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْتَخِيرُكَ بِعِلْمِكَ، وَأَسْتَقْدِرُكَ بِقُدْرَتِكَ، وَأَسْأَلُكَ مِنْ فَضْلِكَ العَظِيمِ؛ فَإِنَّكَ تَقْدِرُ وَلاَ أَقْدِرُ، وَتَعْلَمُ وَلاَ أَعْلَمُ، وَأَنْتَ عَلاَّمُ الغُيُوبِ، اللَّهُمَّإِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّ هَذَا الأمْرَ – وَيُسَمِّي حَاجَتَهُ – خَيْرٌ لِي فِي دِينِي وَمَعَاشِي وَعَاقِبَةِ أَمْرِي – أَوْ قَالَ: عَاجِلِهِ وَآجِلِهِ – فَاقْدُرْهُ لِي وَيَسِّرْهُ لِي ثمَّ بَارِكْ لِي فِيهِ، وَإِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّ هَذَا الْأَمْرَ شَرٌّ لِي فِي دِينِي وَمَعَاشِي وَعَاقِبَةِ أَمْرِي – أَوْ قَالَ: عَاجِلِهِ وَآجِلِهِ – فَاصْرِفْهُ عَنِّي وَاصْرِفْنِي عَنْهُ وَاقْدُرْ لِيَ الْخَيْرَ حَيْثُ كَانَ، ثُمَّ أَرْضِنِي بِهِ
ইস্তেখারার দোয়া বাংলা উচ্চারণ
আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসতাখীরুকা বি‘ইলমিকা ওয়া আস্তাক্বদিরুকা বিক্বুদরাতিকা ওয়া আস্আলুকা মিন ফাদলিকাল আযীম। ফাইন্নাকা তাক্বদিরু ওয়ালা আক্বদিরু, ওয়া তা‘লামু ওয়ালা আ‘লামু, ওয়া আনতা ‘আল্লামূল গুয়ূব। আল্লা-হুম্মা ইন কুনতা তা‘লামু আন্না হা-যাল আম্রা (মনে মনে প্রয়োজন উল্লেখ করুন) খাইরুন লী ফী দীনি ওয়া মা‘আ-শী ওয়া ‘আ-ক্বিবাতি আমরী, (অথবা বলেছেন) ‘আজিলিহী ও আজিলিহী, ফাকদুরহু লী, ওয়া ইয়াসসিরহু লী, ছুম্মা বা-রিক লী ফীহি। ওয়াইন কুনতা তা‘লামু আন্না হা-যাল আমরা (মনে মনে প্রয়োজন উল্লেখ করুন) শাররুন লী ফী দীনী ওয়া মা‘আ-শী ওয়া ‘আ-ক্বিবাতি আমরী, (অথবা বলেছেন) ‘আজিলিহী ও আজিলিহী, ফাসরিফহু ‘আন্নী ওয়াসরিফনী ‘আনহু, ওয়াকদুর লিয়াল-খাইরা হাইসু কা-না, সুম্মা আরদ্বিনী বিহ্)।
ইস্তেখারার দোয়া বাংলা অর্থ
হে আল্লাহ, আমি আপনার জ্ঞানের সাহায্যে আপনার কাছে কল্যাণ প্রার্থনা করছি। আমি আপনার শক্তির সাহায্যে শক্তি ও আপনার অনুগ্রহ প্রার্থনা করছি। কেননা আপনিই ক্ষমতাবান; আমি ক্ষমতা রাখি না। আপনি জ্ঞান রাখেন, আমার জ্ঞান নেই এবং আপনি অদৃশ্য বিষয়ে সম্পূর্ণ পরিজ্ঞাত।
হে আল্লাহ, আপনার জ্ঞানে আমার এ কাজ (এখানে নিজের প্রয়োজনের নাম উল্লেখ করবে অথবা মনে মনে স্মরণ করবে) আমার বর্তমান ও ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য (কিংবা বলবে আমার দ্বীনদারি, জীবন-জীবিকা ও কর্মের পরিণামে) কল্যাণকর হলোে, আপনি তা আমার জন্য নির্ধারণ করে দিন। সেটা আমার জন্য সহজ করে দিন এবং তাতে বরকত দিন।
হে আল্লাহ, আর যদি আপনার জ্ঞানে আমার এ কাজ আমার দ্বীনদারি, জীবন-জীবিকা ও কর্মের পরিণামে (কিংবা বলবে, আমার বর্তমান ও ভবিষ্যতের জন্য) অকল্যাণকর হয়, তবে আপনি আমাকে তা থেকে ফিরিয়ে দিন এবং সেটাকেও আমার থেকে ফিরিয়ে রাখুন। আমার জন্য সর্বক্ষেত্রে কল্যাণ নির্ধারণ করে রাখুন এবং আমাকে সেটার প্রতি সন্তুষ্ট করে দিন।
ইস্তেখারার দোয়া কি? উদ্দেশ্য, কখন, কেন, কিভাবে করতে হয়?
ইস্তেখারা শব্দটি আরবী। এর আভিধানিক অর্থ হলোো, কোন বিষয়ে কল্যাণ চাওয়া।
দুই রাকাত সালাত ও বিশেষ দুয়ার মাধ্যমে আল্লাহর তায়ালার নিকট দুটি বিষয়ের মধ্যে কল্যাণকর বিষয়ে মন ধাবিত হওয়ার জন্য আশা করা। অর্থাৎ দুটি বিষয়ের মধ্যে কোনটি অধিক কল্যাণকর হবে এ ব্যাপারে আল্লাহর নিকট দু রাকাত সালাত ও ইস্তিখারার দুয়ার মাধ্যমে সাহায্য চাওয়ার নামই ইস্তেখারা।
সহজ কথায় ইস্তিখারা হচ্ছে আল্লাহর কাছে পরামর্শ চাওয়া এবং তাঁর ইলম, কুদরত ও ফজীলতের মাধ্যমে তাঁর সাহায্য কামনা করা।

ইস্তেখারার দোয়া সম্পর্কে, জাবের ইবন আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে প্রত্যেক কাজেই ইসতিখারা (তথা কল্যাণ কামনার সালাত ও দো‘আ) শিক্ষা দিতেন, যেরূপ আমাদেরকে কুরআনের সূরা শিক্ষা দিতেন।
তিনি বলেন, যখন তোমাদের কেউ কোনো কাজ করার ইচ্ছা করে, তখন সে যেনো ফরয সালাত ব্যতীত দুই রাকাত নফল সালাত পড়ে, অতঃপর যেন বলে, (উপরে উল্লিখিত ইস্তেখারার দোয়া দোয়া দ্রষ্টব্য) “আল্লাহুম্মা ইন্নি-আস্তাখিরুকা বি-ইলমিকা ওয়া আস্তাকদিরুকা বি-কুদরাতিকা ওয়া আসআলুকা মিন ফাদলিকাল আজিম, ফা-ইন্নাকা তাকদিরু ওয়ালা আকদিরু, ওয়া তা’লামু ওয়ালা আ’লামু ওয়া আন্তা আল্লামুল গুয়ুব। আল্লাহুম্মা ইনকুন্তা তা’লামু আন্না হাজাল আমরা” (এখানে নিজের কাজের কথা মনে মনে উল্লেখ করবে) খাইরুন লি ফি- দ্বীনী ওয়া মা’আশি ওয়া আক্বিবাতি আমরি (অথবা বলবে: আ-জিলি আমরি ওয়া আজিলিহি) ফাকদিরহু লি, ওয়া ইয়াসসিরহু লি, সুম্মা বা-রিকলি ফিহি, ওয়া ইন কুনতা তা’লামু আন্না হাজাল আমরা (এখানে নিজের কাজের কথা মনে মনে উল্লেখ করবে) শাররুন লি ফি দ্বীনী ওয়া মা’আশি ওয়া আক্বিবাতি আমরি (অথবা বলবে: আ-জিলি আমরি ওয়া আজিলিহি) ফাসরিফহু আন্নি ওয়াসরিফনি আনহু ওয়াকদির লিয়াল খাইরা হাইসু কানা সুম্মা আরদিনি বিহি।” (এর পর নিজের কাজের কথা উল্লেখ করে দোয়া করবে)।
ইস্তেখারার দোয়া সম্পর্কে, প্রখ্যাত হাদিসবিশারদ ইবনে হাজার (রহ.) লিখেছেন, ইস্তেখারা মানে কোনো বিষয় বাছাই ও নির্বাচন করার ক্ষেত্রে আল্লাহর সাহায্য চাওয়া।
উদ্দেশ্য হচ্ছে, যে ব্যক্তিকে দুটি বিষয়ের মধ্যে একটি বিষয় বাছাই করে নিতে হবে, সে যেন উত্তমটি বাছাই করে নিতে পারে। এমন প্রার্থনা করাই হলোো ইস্তেখারার মূল উদ্দেশ্য।
ইস্তিখারা দোয়া কখন করা যাবে না?
- যে কাজ হারাম অথবা যে কাজ ফরজ বা ওয়াজিব তাতে কোন ইস্তিখারা নাই। যেমন, যে চাকরির সাথে হারাম জড়িত তা করা না করার জন্য কোন ইস্তিখারা নাই। তাতে অবশ্যই যোগ দেয়া যাবে না।
- উদাহরণ দিই একটা। আপনি সুদী ব্যাংকে চাকরির অফার পেয়েছেন। এখন এখানে যোগ দেবার বা না দেবার জন্য কোন ইস্তিখারা নাই। আপনার এখানে যোগ দেয়াটাই হারাম। একইভাবে কেউ কোন মুসলিম কোন কাফির, মুশরিক নারী বা পুরুষকে বিয়ে করবে কি করবে না সেজন্য ইস্তিখারা করবে না। সে অবশ্যই কাফির, মুশরিককে বিয়ে করবে না, কারণ এটা তার জন্য নিষিদ্ধ।
- অন্যদিকে যে কাজ করা ফরজ বা ওয়াজিব [যা অবশ্যই করতে হবে] তার জন্যও কোন ইস্তিখারা নাই। এখানে ইস্তিখারা করে সিদ্ধান্ত নেয়ার কিছু নাই। আপনাকে তো এ কাজ অবশ্যই করতে হবে।
- যেমন আপনি জাকাত দিবেন কি দিবেন না সেজন্য ইস্তিখারা করবেন না। আপনার বাপ-মাকে সাহায্য করবেন না কি করবেন না সেজন্যও ইস্তিখারা করবেন না।
- অথবা মুসলিমদের দেশ দুশমনদের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে এবং মুসলমানদের আমীর দুশমনের বিরুদ্ধে জিহাদের জন্য সাধারণ [আম] সমন জারী করেছেন; এমতাবস্থায় আপনি ইস্তিখারা করে সিদ্ধান্ত নেবেন না। এই জিহাদে যোগ দেয়া আপনার জন্য ওয়াজিব।