আলোচনার বিষয়: ঈছালে ছওয়াব, দোয়ার মধ্যে ওছীলা, জিন, কারামত, কাশফ, এলহাম, পীর বুযুর্গ। তো চলুন শুরু করা যাক।
ঈছালে ছওয়াব কি?
“ঈছালে ছওয়াব” অর্থ ছওয়াব রেছানী বা ছওয়াব পৌঁছানো। মৃত মুসলমানদের জন্য কৃত নামায, রোযা, দান-সদকা, তাসবীহ-তাহলোীল, তিলাওয়াত ইত্যাদি শারীরিক ও আর্থিক ইবাদতের ছওয়াব পৌঁছে থাকে। এক মতে ফরয ইবাদতের দ্বারাও ঈছালে ছওয়াব করা যায়। এতে নিজের যিম্মাদারীও আদায় হবে, মৃতও ছওয়াব পেয়ে যায়।
দোয়ার মধ্যে ওছীলা কি?
দোয়া কবূল হওয়ার জন্য নবীদের বা কোন জীবিত বা মৃত নেককার লোকের ওছীলা দিয়ে কিংবা কোন নেক কাজের ওছীলা দিয়ে দু’আ করা জায়েয বরং তা মোস্তাহাব।
জিন কি?
আল্লাহ তা’আলা আগুনের তৈরী এক প্রকার জীব সৃষ্টি করেছেন, যারা আমাদের দৃষ্টির অগোচরে, তাদেরকে জিন বলে।
তাদের মধ্যে ভাল-মন্দ সবরকম হয়। তাদের সন্তানাদিও হয়। তাদের মধ্যে বেশী প্রসিদ্ধ এবং বড় দুষ্ট হলো ইবলীস অর্থাৎ, শয়তান।
জিন মানুষের উপর আছর করতে পারে।
কারামত, কাশফ, এল্হাম ও পীর বুযুর্গ সম্বন্ধে আকীদা:
বুযুর্গ এবং ওলী আউলিয়াদের দ্বারা আল্লাহ তাআলা যেসব অসাধারণ কাজ দেখিয়ে থাকেন, তাকে বলা হয় কারামত। আর জাগ্রত বা নিদ্রিত অবস্থায় তাঁরা যে সব ভেদের কথা জানতে পারেন বা চোখের অগোচর জিনিসকে দেলের চোখে দেখতে পারেন, তাকে বলা হয় কাশফ ও এল্হাম।
বুযুর্গদের কারামত ও কাশ্ফ এল্হাম সত্য। মৃত্যুর পরও কোন বুযুর্গের কারামত প্রকাশিত হতে পারে।
কারামত ও কাশ্য এল্হাম হয়ে থাকে বুযুর্গ এবং ওলীদের। আর বুযুর্গ এবং ওলী বলা হয় আল্লাহর প্রিয় বান্দাকে। শরীআতের বরখেলাফ করে কেউ আল্লাহর প্রিয় তথা ওলী বা বুযুর্গ হতে পারে না।
অতএব যারা শরী’আতের বরখেলাফ করে যেমন নামায রোযা করে না, গাঁজা, শরাব বা নেশা খায়, বেগানা মেয়েলোককে স্পর্শ করে বা দেখে, গান-বাদ্য করে ইত্যাদি, তারা কখনও বুযুর্গ নয়।
যদি তারা অলৌকিক কিছু দেখায়ও তবুও তা কারামত নয় বরং বুঝতে হবে হয় সেটা যাদু বা কোনরূপ তুকতাক ও ভেল্কিবাজী, কিংবা যে কোন রূপ প্রতারণা। অনেক সময় শয়তান এসব লোকদেরকে গায়েব জগতের অনেক খবর জানিয়ে দেয়। যাতে করে তা শুনে মূর্খ লোকেরা তাদের ভক্ত হয়ে যায় এবং এভাবে তারা বিভ্রান্তির শিকার হয়। এসব দেখে তাদের ধোঁকায় পড়া যাবে না।
- কাশফ এবং এল্হাম যদি শরী’আতের মোয়াফেক হয় তাহলোে তা গ্রহণযোগ্য, অন্যথায় তা গ্রহণযোগ্য নয়।
- কোন বুযুর্গ বা পীর সম্বন্ধে এই আকীদা রাখা শির্ক যে, সময় আমাদের অবস্থা জানেন।
- কোন পীর বা বুযুর্গকে দূর দেশ থেকে ডাকা এবং মনে করা যে তিনি জানতে পেরেছেন-এটা শির্ক। কোন পীর বুযুর্গ গায়েব জানেন না, তবে কখনও কোন বিষয়ে তাদের কাশ্ফ এল্হাম হতে পারে, তাও আল্লাহর ইচ্ছার উপর নির্ভরশীল 1
- কোন পীর বুযুর্গের মর্যাদা- চাই সে যতবড় হোক- কোন নবী বা সাহাবী থেকে বেশী বা তাঁদের সমানও হতে পারে না।
পোষ্টটি লিখতে নিম্নক্তো বই/লেখকের লিখনী থেকে সাহায্য নেওয়া হয়েছে: আহকামে জিন্দেগী (মাকতাবাতুল আবরার প্রকাশনী) মাওলানা মুহাম্মদ হেমায়েত উদ্দীন শায়খুল হাদীস, জামেয়া ইসলামিয়া আরার্বিয়া, তাঁতী বাজার, ঢাকা-১১০০ মুহাদ্দিছ, জামিয়া ইসলমিয়া দারুল উূলুম মাদানিয়া, ৩১২, দক্ষীণ যাত্রাবাড়ি, ঢাকা-১২৩৬