এলাকার সড়কের দুরবস্থা সংক্রান্ত সংবাদ প্রতিবেদন রচনাঃ
সড়কের বেহাল দশা: যাত্রীদের দুর্ভোগ
হাসিবুল আলম, চাটখিল (নোয়াখালী), ২২ জুলাই ২০২১ ৷ নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি উপজেলার জয়াগ বাজার থেকে কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার হাসনাবাদ পর্যন্ত শহিদ মুক্তিযোদ্ধা একরামুল হক সড়কটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। প্রায় এক যুগ ধরে সড়কটির কোনো সংস্কার কাজ হয়নি। সড়কের এ বেহাল দশায় যাত্রীরা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, বারো কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটির পুরোটাই বড়ো বড়ো গর্ত ও খানাখন্দে ভরা। জয়াগ বাজার থেকে মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের নগরপাড়া সেতু পর্যন্ত দুই কিলোমিটার অংশে দুই পাশের মাটি সরে গেছে। প্রতিদিন এ সড়ক দিয়ে নোয়াখালীর চাটখিল ও সোনাইমুড়ি, কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ ও লাকসাম এবং চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার হাজার হাজার বাসিন্দা চলাচল করে। এছাড়া কমপক্ষে ত্রিশটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এ পথে যাতায়াত করে থাকে। এলাকাবাসী জানান, সড়কটির তিন কিলোমিটার সোনাইমুড়ি এবং বাকি নয় কিলোমিটার চাটখিল উপজেলায় পড়েছে। বিগত ২০১৯ সালের বন্যায় সড়কটির সুরকির স্তর দেবে গিয়ে বালু বের হয়ে আসে এবং সৃষ্টি হয় খানাখন্দের। এরপর প্রতি বর্ষায় বৃষ্টিপাতে পানি ও কাদায় সড়কটি একাকার হয়ে যায়, যা এখন চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। গত বুধবার একটি পিকআপ ভ্যান ভাওরকোট গ্রামের কাছে রাস্তার গর্তে পড়ে যায়, এতে চালকসহ তিন জন যাত্রী আহত হন।
চাটখিল ইউনিয়ন পরিষদের সাধারণ মানুষ মনে করে, সড়কটি নিয়ে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ দীর্ঘদিনের। অথচ এর সমাধানে কর্তৃপক্ষের কোনো নজর নেই। এটি মেরামতের জন্য স্থানীয় লোকজন সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে একাধিকবার আবেদন করলেও কোনো প্রতিকার পায়নি। এলাকাবাসীর দাবি, গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি দ্রুত সংস্কার করে জনদুর্ভোগ কমাতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেন কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
সংবাদ প্রতিবেদন লেখার নিয়মঃ
১. সংবাদ প্রতিবেদনের শুরুতে একটি শিরোনাম থাকে।
সংবাদ প্রতিবেদন প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন থেকে পুরোপুরি ভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। সংবাদপত্রের প্রতিবেদনের জন্য একটি সুন্দর শিরোনাম দরকার হয়। শিরোনামটি খুবই গুরুত্ব বহন করে। খবরের মূল কথাটি শিরোনামের মাধ্যমেই প্রকাশ পায়। একজন পাঠক সংবাদটি পড়বেন কিনা সেই সিদ্ধান্ত নির্ভর করে শিরোনামের ওপর। তাই শিরোনামটি আকর্ষণীয় এবং সংক্ষিপ্ত অথচ মূলভাব প্রকাশ করে এমন হতে হয়।
২. এরপর প্রতিবেদকের নাম, ঘটনার স্থান ও তারিখ উল্লেখ করতে হয়।
শিরোনাম লেখার পরে আসে প্রতিবেদকের সংক্ষিপ্ত পরিচয়। এই অংশে প্রতিবেদকের নাম বা পদবী, ঘটনার বা প্রতিবেদন তৈরির স্থান লিখতে হয়। এর পরে দুই-তিন লাইনের মধ্যে ঘটনার একটি সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দিতে হয়। তারপর যেতে হয় বিস্তারিত অংশে।
শেষকথাঃ
প্রতিবেদন শব্দটি ইংরেজি শব্দ “Report” থেকে এসেছে। এর অর্থ হলো সমাচার, বিবৃতি বা বিবরণী। নির্দিষ্ট কোন বিষয় সংশ্লিষ্ট যাবতীয় প্রয়োজনীয় তথ্য অনুসন্ধানের পর সেটিকে সুসংগঠিত করে বিবরণী আকারে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে উপস্থাপন করাই হল প্রতিবেদন। অর্থাৎ, যেকোন নির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে তথ্য সমৃদ্ধ বিবরণীকেই সংক্ষেপে প্রতিবেদন বলা যেতে পারে।
প্রতিবেদনের নির্দিষ্ট শ্রেণিবিভাগ নেই। বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে প্রতিবেদন নানা রকম হতে পারে। প্রতিবেদনকে প্রধানত তিনটি ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। যথা : সংবাদ প্রতিবেদন, তদন্ত প্রতিবেদন ও সাধারণ প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন। প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন লেখার নিয়ম, সংবাদ প্রতিবেদন লেখার নিয়ম ও তদন্ত প্রতিবেদন লেখার নিয়মের মধ্যে কিছু পার্থক্য রয়েছে। এই পোষ্টটিতে উপরে একটি এলাকার সড়কের দুরবস্থা সংক্রান্ত সংবাদ প্রতিবেদন রচনার নমুনা দেওয়া হয়েছে।
প্রচারমাধ্যমে প্রচারের লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য সংবলিত বিবরণীকে সংবাদ প্রতিবেদন বলে। যিনি এই প্রতিবেদন প্রস্তুত করেন, তাঁর নাম প্রতিবেদক। প্রতিবেদককে গভীর মনোযোগের সঙ্গে ঘটনা প্রত্যক্ষ করতে হয় এবং ঘটনার পক্ষপাতহীন বিবরণ তৈরি করতে হয়।
মূলত সংবাদপত্র বা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশের উপযোগী তথ্য সমৃদ্ধ সহজ সরল ভাষায় সংবাদ পরিবেশন করাকে বলা হয় সংবাদ প্রতিবেদন। এখানে সুনির্দিষ্ট নিয়ম মেনে সহজ-সরল ও প্রাঞ্জল ভাষায় সঠিক তথ্য দিয়ে বিষয়টি সম্পর্কে পাঠক-কে একটি সুস্পষ্ট ধারনা দিতে হয়।
সাধারণত নাগরিক জীবনের বিভিন্ন সমস্যা, কোথাও ঘটে যাওয়া জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ কোনো ঘটনা, দুর্ঘটনা, বিষয় বা প্রসঙ্গ সম্পর্কে তথ্যমূলক বিবৃতি লিখন সংবাদ প্রতিবেদন -এর অন্তর্ভুক্ত। এক্ষেত্রে আমাদের কোনো পত্রিকার সাংবাদিক অর্থাৎ নিজস্ব সংবাদদাতা/ স্টাফ রিপোর্টার/ নিজস্ব প্রতিবেদক বা কোনো জেলা/ থানা প্রতিনিধি হিসেবে সংবাদপত্রে প্রকাশ উপযোগী করে এ ধরনের প্রতিবেদন লিখতে হয়।
প্রতিবেদন অংশে মোট নম্বরের দশ শতাংশ তো অন্তত আছেই। তাই প্রতিবেদন লেখার নিয়ম সঠিকভাবে জেনেই পরীক্ষার হলে ঢোকা বুদ্ধিমানের কাজ হবে। আর লিখলে ভালো নম্বর পাওয়া কোনো ব্যাপারই না। আবার ছোটখাটো ভুলের জন্য মোটা অঙ্ক খাতা থেকে সরে যাই যাই অবস্থা হয়। ব্যাপারটা প্রতিরোধ করার একমাত্র উপায়: প্রতিবেদন লেখার যথাযথ কাঠামো অনুসরণ করা। তাই প্রতিবেদন কি, প্রসংবাদ প্রতিবেদন লেখার নিয়ম + সংবাদ প্রতিবেদন রচনা + সংবাদ প্রতিবেদন নমুনা নিয়েই আজকের এই ব্লগ লেখা হয়েছে, যদি পোষ্টটি আপনার কাজে আসে তাতেই আমাদের সার্থকথা। খামারিয়ানকে স্মরণে রাখবেন। ধন্যবাদ।