Skip to content

 

ওলি মানে কি? ওলি কারা? এবং আল্লাহর ওলি হওয়ার উপায়।

ওলি মানে আওলিয়া কারা_ এবং আল্লাহর ওলি হওয়ার উপায়।

আল্লাহ তাআলা বলেন :

﴾أَلَا إِنَّ أَوْلِيَاءَ اللَّهِ لَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُمْ يَحْزَنُونَ ﴿62﴾ الَّذِينَ آَمَنُوا وَكَانُوا يَتَّقُونَ ﴿63﴾ ﴿يونس

অর্থাৎ, শুনে রাখ, নিশ্চয় আল্লাহর অলীদের কোনো ভয় নেই, আর তারা পেরেশানও হবে না। যারা ঈমান এনেছে এবং তাকওয়া অবলম্বন করত।  ( সূরা ইউনুস: আয়াত ৬২,৬৩) 

উপরোক্ত আয়াত আমাদের এই শিক্ষাই দিচ্ছে যে, মুমিন-মুত্তাকি ও নিজেকে যাবতীয় পাপকাজ হতে বিরত রাখেন এমন প্রতিটি ব্যক্তিই হচ্ছেন আল্লাহর অলী। যিনি সর্বদা আপন রবকে এককভাবে ডাকেন এবং তাঁর সাথে আর কাউকে শরিক করেন না। প্রয়োজন হলে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাদের মাধ্যমে বিভিন্ন কারামত প্রকাশ করে থাকেন। যেমন, ঈসা আ:-এর মাতা মারইয়ামের জন্য সর্বদা গায়েব হতে রিযক আসত। 

সুতরাং বেলায়াত বা অলীত্ব সত্য । কিন্তু অলী হবার জন্য শর্ত হচ্ছে তাঁকে মুমিন, আল্লাহর একান্ত অনুগত ও তাঁর একত্ববাদে বিশ্বাসী হতে হবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শের পূর্ণ অনুবর্তন তার মাঝে থাকতে হবে। শরয়ি বিধি-বিধান মান্যতার দিক থেকে অলস ও পাপকর্মে জড়িত কোনো ফাসেক কিংবা মুশরিক ব্যক্তির মধ্যে অলীত্ব প্রকাশ পাবে, এমনটি কোনোভাবেই সত্য ও গ্রহণযোগ্য নয়।

যে ব্যক্তি মুশরিকদের মত আল্লাহকে ছেড়ে অন্যের নিকট দোয়া করে, সে কেমন করে আল্লাহর সম্মানিত অলী হতে পারে? আর কারামত বাপ-দাদার নিকট থেকে ওয়ারিশ সূত্রে পাওয়ার কোনো বস্তু নয়। বরং এর সাথে ঈমান ও নেক আমল সম্পর্কযুক্ত। অনেক সময় দেখা যায়, বিদআতীরা তাদের শরীরে লোহা ইত্যাদি প্রবেশ করায়,আগুন গিলে খায় এবং এ জাতীয় নানা অলৌকিক কাজ প্রদর্শন করে। সেসব আসলে শয়তানের কাজ। নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য তারা ঐ ধরণের উদ্ভট কার্যকলাপ প্রদর্শন করে কারামত বলে চালিয়ে দেয়। এসব কাজের মাধ্যমে বরং তারা ক্রমান্নয়ে গোমরাহীর অতল তলে তলিয়ে যাচ্ছে।

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন :

قُلْ مَنْ كَانَ فِي الضَّلَالَةِ فَلْيَمْدُدْ لَهُ الرَّحْمَنُ مَدًّا (مريم 75)

অর্থাৎ, বল : যে বিভ্রান্তিতে রয়েছে তাকে পরম করুণাময় প্রচুর অবকাশ দেবেন। ( সূরা মারইয়াম: আয়াত ৭৫) 

যারা ভারতে গিয়েছেন তারা অগ্নি উপাসকদের নিকট এর চেয়েও ভয়ানক বিষয় দেখতে পেয়েছেন। যেমন, তারা তলোয়ার দিয়ে একে অপরকে আঘাত করে, তবুও তাদের কোনো ক্ষতি হয় না, অথচ তারা কাফির ও মুশরিক। ইসলাম রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার সাহাবিরা করেননি এমন কার্যাবলীর কোনো স্বীকৃতি দেয় না। এ জাতীয় কাজের মধ্যে যদি কোনো ফায়দা থাকত তাহলে অবশ্যই তারা এতে অগ্রগামী থাকতেন।

অনেক লোকের ধারণা, আল্লাহর অলীরা গায়েবের খবর জানেন। কিন্ত সত্যিকার্থে গায়েবের খবর একমাত্র আল্লাহর হাতে। তবে কখনও কখনও তিনি গায়েবের কোনো কোনো বিষয় তাঁর রাসূলদের জানিয়েছেন। 

আল্লাহ বলেন : 

عَالِمُ الْغَيْبِ فَلَا يُظْهِرُ عَلَى غَيْبِهِ أَحَدًا ﴿26﴾ إِلَّا مَنِ ارْتَضَى مِنْ رَسُولٍ (الجن 26)


অর্থাৎ, তিনি গায়েবের জ্ঞানের অধিকারী, আর তিনি তাঁর গায়েবের খবর কারো কাছে প্রকাশ করেন না। তবে তাঁর মনোনীত রাসূল ছাড়া। ( সূরা জিন, ৭২: ২৬ আয়াত)। 

এই আয়াতে শুধু রাসূলদের কথা বলা হয়েছে। অন্য কারও কথা বলা হয়নি।

কবরের উপর গম্বুজ ইত্যাদি দেখলেই কেউ কেউ মনে করে থাকেন যে, এটি কোনো অলীর কবর। অথচ খোজ নিলে দেখা যায় তা হয়তো কোনো ফসিকের কবর অথবা আদৌ ওখানে কাউকে কবরই দেয়া হয়নি। কবরের উপর গম্বুজ, সৌধ ইত্যাদি নির্মাণ করা ইসলাম হারাম ঘোষণা করেছে। 

হাদীসে আছে : 

نَهى رَسُولُ اللهِ صلى اللهُ عَلَيهِ وَسَلَّمَ أَنْ يُجَصَّصَ الْقَبْرُ وَأنْ يَّقْعُدَ عَلَيْهِ وَأنْ يُّبْنى عَلَيْهِ. (رواه مسلم)

অর্থাৎ, অর্থাৎ, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কবর চুনকাম বা প্লাষ্টার করা, করবের  উপর বসা এবং তার উপর ঘর (বা সৌধ) নির্মাণ নিষিদ্ধ করেছেন। (সহিহ মুসলিম) 

মসজিদে দাফন করা হয়েছে (আর সে তা জানার পরও নিষেধ করে যায়নি) এমন ব্যক্তি কখনই অলী হতে পারে না। কারো জন্য মাজার বানানো কিংবা কবরের উপর গম্বুজ নির্মাণ করা অলীদের কাজ হতে পারে না। কারণ, এগুলো ইসলামি শিক্ষার পরিপন্থী। মৃত ব্যক্তিদের স্বপ্নে দেখতে পাওয়াও শরিয়তের দৃষ্টিতে অলী হবার মাপকাঠি নয়, বরং তা অনেক সময় শয়তানের ধোকাও হতে পারে। 

Copyright Notice

কপি করা নিষিদ্ধ!