আমরা কবর যিয়ারাত করব কিভাবেঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
إنِّي كُنْتُ نَهَيْتُكُمْ عَنْ زِيَارَةِ الْقُبُوْرِ فَزُوْرُوْهَا لِتُذَكِّرَكُمْ زِيَارَتَهَا خَيْرًا. (رواه مسلم)
আমি তোমাদের কবর যিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম। কিন্তু এখন যিয়ারত কর, যাতে ইহা তোমাদেরকে ভাল কাজের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। (সহিহ মুসলিম)।
(১)
কবরস্থানে প্রবেশ কিংবা পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় সুন্নত হচ্ছে তাদের সালাম করা এবং তাদের জন্য দোয়া করা।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাহাবিদের শিখিয়েছেন :
হে ঘরের মুমিন-মুসলিম বাসিন্দাগণ! তোমাদের উপর আল্লাহর শান্তি বর্ষিত হোক। আমরাও আল্লাহ চাহে তো তোমাদের সাথে মিলিত হব। আল্লাহর কাছে আমাদের এবং তোমাদের জন্য তাঁর আযাব হতে ক্ষমা চাই। (সহিহ মুসলিম)।
(২)
কবরের উপর বসা নিষেধ এবং তার উপর দিয়ে চলাফেরা করার রাস্তা বানানোও নিষেধ। কারণ, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
তোমরা কবরের দিকে সালাত আদায় কর না এবং কবরের বসবে না। (মুসলিম)।
(৩)
নৈকট্য লাভের আশায় কবরের চারপাশে তাওয়াফ করা নিষেধ।
কারণ, আল্লাহ তাআলা বলেনঃ
তারা যেন প্রাচীন ঘরের (কাবার) চার পার্শ্বে তাওয়াফ করে। ( সূরা হজ ২২: আয়াত, ২৯)
(৪)
কবরস্থানে কোরআন তেলাওয়াত করা নিষেধ। কারণ, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
তোমরা বাসস্থানসমূহকে কবরস্থান বানাবে না। কারণ, শয়তান সেসব বাড়ী হতে পলায়ন করে যেখানে সূরা বাকারা পাঠ করা হয়। ( মুসলিম)।
এ হাদিস দ্বারা এটাই বুঝা যায় যে, কবরস্থান কোরআন পাঠের স্থান নয়, বরং কোরআন তেলাওয়াতের স্থান হচ্ছে নিজ নিজ বাসস্থান। যে সব হাদিসে কবরস্থানে কোরআন পাঠের কথা বলা হয়েছে সেগুলো সঠিক নয়।
(৫)
মৃতদের কাছ থেকে মদদ বা সাহায্য চাওয়া বড় শিরক। যদিও সে নবী কিংবা ওলী হয়। এ সম্বন্ধে আল্লাহ তাআলা বলেন :
আর আল্লাহ ছাড়া এমন কিছুকে ডেকো না, যা তোমার উপকার করতে পারে না এবং তোমার ক্ষতিও করতে পারে না। যদি তুমি কর, তাহলে নিশ্চয় তুমি জালিমদের অন্তর্ভুক্ত হবে। ( সূরা ইউনুস: আয়াত, ১০৬)
(৬)
কবরের উপর ফুলের তোড়া দেয়া কিংবা কবরস্থানে তা স্থাপন না করা নাজায়েয।
কারণ, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অথবা সাহাবিরা কেউ এমনটি করেননি। তাছাড়া এতে খ্রীষ্টানদের অনুকরণ হয়। এবং এটি অপচয় অপব্যয়ের রাস্তা। এসব টাকা-পয়সা যদি অনাথ-গরীবদেরকে দেয়া হত তবে তারা উপকৃত হত। এবং অনুমোদিত জায়গায় ব্যয় নিশ্চিত হত।
৭। কবরের উপর কোনো সৌধ বানানো বা সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য দেয়াল দেয়া জায়েয নেই। তাতে কোরআনের আয়াত কিংবা কবিতা লেখাও নিষেধ। তবে ইট, পাথর কিংবা মাটি দিয়ে এক বিঘত পরিমাণ উঁচু করা জায়েয, যাতে মানুষ বুঝতে পারে যে এটি কবর।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উসমান ইবনে মাজউনের কবরকে এরূপ করেছিলেন, যাতে মানুষ কবর বলে বুঝতে পারে।