Skip to content

 

Wait...❤😘 Show love? ⬇⬇⬇

কাঁকড়া চাষ, আধুনিক পদ্ধতিতে কাঁকড়া চাষ, বাংলাদেশের কাঁকড়া চাষ, কাঁকড়া চাষ করার পদ্ধতি, কাঁকড়া চাষ বাংলাদেশ, কাঁকড়া চাষের পদ্ধতি, কাঁকড়া চাষ পদ্ধতি, কাঁকড়ার জীবন চক্র, কাঁকড়ার চাষ পদ্ধতি

পদ্ধতিতে কাঁকড়া চাষ বাংলাদেশের কাঁকড়া চাষ কাঁকড়া চাষ করার পদ্ধতি

কাঁকড়া আর্থোপোড শ্রেণির শক্ত খোলস বিশিষ্ট জলজ প্রাণী। প্রজাতি ভিত্তিক মিঠা ও লোনা পানির উভয় পরিবেশে কাঁকড়া পাওয়া যায়। মিঠা পানিতে ৪ প্রজাতির এবং লোনা পানিতে ১১ প্রজাতির কাঁকড়া রয়েছে। মিঠা পানির কাঁকড়া আকারে ছোট এবং লোনা পানির কাঁকড়া আকারে বেশ বড় হয়। লোনা পানির কাঁকড়া সমুদ্রে বসবাস করে। মিঠা পানির কাঁকড়া বিদেশে রফতানি হয় না।

সামুদ্রিক বড় আকারের কাঁকড়া বিদেশে রফতানি হয়। তাছাড়া সামুদ্রিক ১১ প্রজাতির কাঁকড়ার মধ্যে একমাত্র শিলা কাঁকড়া রফতানি হয়। এর বৈজ্ঞানিক নাম সাইল্ সিরেটা (Scylla serrata)। অনেক স্থানে এটা ‘মাডক্রাব’ নামে পরিচিত।

বিদেশে শিলা কাঁড়রার মাংসই প্রিয় খাদ্য। স্থানীয়ভাবে বৃহত্তর জনগোষ্ঠী খাদ্য হিসেবে কাঁকড়া গ্রহণ না করলেও বিদেশে রফতানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হয়। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশসহ ইউরোপ মহাদেশেও কাঁকড়ার চাহিদা রয়েছে। কাঁকড়া চাষ প্রক্রিয়া আজো প্রাথমিক পর্যায়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষাধীন আছে। বর্তমান রফতানিকৃত কাঁকড়ার প্রায় সবটাই উপকূলীয় চিংড়ি খামার, সমুদ্রের মোহনা, নদী এবং ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল থেকে আহরণ করা হয়ে থাকে।

কাঁকড়া পরিচিতি ও বিস্তৃতি

  • কাঁকড়া বা ম্যাক্রাভ আফ্রিকার পূর্ব উপকূল, ভারত উপকূল এবং ইন্দো-পেসিফিক্ অঞ্চলের ম্যানগ্রোভ এলাকায় দেখা যায়। এ কাঁকড়ার চক্ষুপুঞ্জের দু পাশে Carapace এর উপর ৯টি দাঁত রয়েছে যা Serrations বলা হয়। এ সিরাসন্ এর সংখ্যা দিয়ে কিশোর কাঁকড়া চেনা যায়।
  • বাংলাদেশে উপকুলীয় অঞ্চলের প্রায় সর্বত্র কাঁকড়া পাওয়া যায়। কাঁকড়ার বয়স সাধারণত ১৬-১৮ মাসের হলেই পূর্ণবয়স্ক বা প্রজননক্ষম হয়। এ সময় একটি কাঁকড়ার ওজন হয় ৩০০-৫০০ গ্রাম। একটি কাঁকড়া সর্বোচ্চ ৫ কেজি পর্যন্ত ওজনের পাওয়া গেছে।
  • সাধারণত ১ বছর বয়সের কাঁকড়ার ওজন ৪০০-৫০০ গ্রাম হয়ে থাকে। বাগদা চিংড়ির ন্যায় স্ত্রী কাঁকড়া গভীর সমুদ্রে নউপি ছেড়ে থাকে, যা পর্রে ৫টি লার্ভা স্তর (Aoea) পার হয়ে ম্যাগালোপা (Megalopa) ও পোষ্ট লার্ভা স্তরে উপনীত হয়। এরা জোয়ার, ঢেউ ও বাতাসে উপকূলীয় ম্যানগ্রোভ এলাকায় ভেসে আসে এবং কিশোর (Juvenile) স্তরে উপনীত হয়।
  • একটি স্ত্রী কাঁকড়া ১-৮ মিলিয়ন ডিম দিতে পারে। বাগদা চিংড়ির ন্যায় কাঁকড়ার খোলস রয়েছে যা চিংড়ির চেয়ে অপেক্ষাকৃত শক্ত এবং দৈহিক বৃদ্ধির জন্য কাঁকড়া খোলস পরিবর্তন করে থাকে। এদের নিজ প্রজাতি ভক্ষণের প্রবণতা রয়েছে এবং শক্ত চিমটা দ্বারা সহজে অন্য প্রাণীকে মেরে ফেলতে পারে।
  • কাঁকড়া মাটিতে এবং বাঁধে গর্ত করতে পছন্দ করে। ডুবন্ত গাছের শেঁকড় ও ডাল-পালায় এরা আশ্রয় নেয়। তাই ম্যানগ্রোভ এলাকা এদেরকে পাওয়া যায়। পানি ছাড়া কাঁকড়া দীর্ঘ সময় বাঁচতে পারে এবং হেঁটে এক স্থান থেকে সহজে অন্য স্থানে চলে যেতে পারে।

কাঁকড়া চাষের প্রধান সুবিধাসমূহ

১. বাংলাদেশের উপকূল অঞ্চলে চাষের পরিবেশ রয়েছে।

See also  পাংগাস মাছের চাষ ও হ্যাচারি ব্যবস্থাপনা

২. আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদা থাকায় এর উৎপাদন লাভজনক।

৩. বর্তমানে বাংলাদেশে প্রাকৃতিক পোনা (কিশোর) পাওয়া যায়।

৪. কাঁকড়ার খাবার স্বল্পমূল্যে সংগ্রহ সম্ভব।

৫. ওজন হিসেবে কাঁকড়ার বৃদ্ধি হার বেশি।

৬. কাঁকড়া রফতানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা যায়।

৭. কাঁকড়া পানি ব্যতীত অনেকক্ষণ বেঁচে থাকতে পারে এবং প্রতিকূল পরিবেশ সহ্য করতে পারে।

৮. পঁচা আবর্জনা খেয়ে পরিবেশ বিশুদ্ধ করে।

কাঁকড়া চাষের উপযুক্ত পরিবেশ

বাগদা চিংড়ির ন্যায় কাঁকড়া উপকূলীয় লবণাক্ত পানিতে চাষ করা যায়। কাঁকড়া চাষের মাটি ও পানির গুণাবলি নিম্নরূপ হওয়া উচিত:

কাঁকড়া চাষে মাটির গুণাবলি

১. নরম দো-আশ বা এঁটেল মাটি। ২. হাইড্রোজেন সালফাইট ও এ্যামনিয়া গ্যাসমুক্ত মাটি। ৩. জৈব পদার্থ ৭% – ১২%। ৪. এসিড সালফেট মুক্ত মাটি। ৫. হালকা শেওলা ও জলজ আগাছাযুক্ত পরিবেশ।

কাঁকড়া চাষে পানির গুণাবলি

১. লবণাক্ততা: ১০-১৫ পিপিটি। ২. তাপমাত্রা: ২৫-৩২ সেল্‌সিয়াস। ৩. পি.এইচ: ৭.৫-৮.৫। ৪. এ্যাল্কালিনিটি: > ৮০ মিলিগ্রাম / লিটার। ৫. হার্ডনেস: ৪০-১০০ পি.পি.এম। ৬. দ্রবীভূত অক্সিজেন: ৪ পি.পি.এম-এর ঊর্ধ্বে।

কাঁকড়া চাষের স্থান নির্বাচন

কাঁকড়া খামার বা পুকুরে প্রতিনিয়ত লবণাক্ত পানি পরিবর্তনের যথেষ্ট সুযোগ থাকতে হবে। বছরে ৮-১০ মাস ৫ পি.পি.টি-র ঊর্ধ্বে লবণাক্ততা থাকে এরূপ স্থান কাঁকড়া চাষের উপযোগী ৷ কাঁকড়া চাষ এলাকা বন্যপ্রাণী ও পাখিমুক্ত থাকতে হবে। তা না হলে এরা যখন পানি ছেড়ে উপরে আসবে কিংবা কুলে আসবে, তখন এদেরকে পশুপাখিরা খেয়ে ফেলবে।

কাঁকড়া চাষের পুকুর নির্মাণ

কাঁকড়া হেঁটে বেড়াতে অভ্যস্ত। তাছাড়া মাটিতে গর্ত করে লুকিয়ে থাকতে পছন্দ করে। তাই বাঁধের অভ্যন্তরে বেড়া স্থাপন করা আবশ্যক। বেড়ার উচ্চতা পানির উপরে ০.৫ মিটার রাখতে হবে। পুকুরের অভ্যন্তরে এ বেড়া বাঁশের ঘন পাটা, গাছের ঘন কঞ্চির বুনন, সিমেন্ট দেওয়া বা এ্যাবেস্টাস দ্বারা তৈরি করা যায়। এ বেড়া কমপক্ষে ০.৫ মিটার মাটিতে নিচে বসিয়ে দিতে হবে যেন কাঁকড়া বেড়ার নিচ দিয়ে গর্ত করে পালিয়ে যেতে না পারে। এছাড়া বেড়ার বুনন এমন ঘন হতে হবে যেন কিশোর কাঁকড়া ফাঁক দিয়ে পালিয়ে যেতে না পারে এবং অন্য ক্ষতিকর প্রাণী কাঁকড়ার পুকুরে প্রবেশ করতে না পারে। পুকুর শুকানো এবং পানি সরবরাহের ব্যবস্থা থাকতে হবে। পুকুরের আয়তন ০.২-১.০ হেক্টর হলে ব্যবস্থাপনার সুবিধে হয়। পুকুরের গভীরতা ১.০-১.০৫ মিটার রাখা ভালো।

কাঁকড়া চাষে পুকুর শুকানো ধৌতকরণ

পুকুরের মাটি শুকাতে হবে। শুকাবার পরে মাটির উপরের অল্প লবণ, বিষাক্ত পদার্থ অপসারণের জন্য পুকুরের তলদেশ ধৌত করতে হবে। পানি তুলে পুনরায় একদিন পর পানি ছেড়ে ধৌত প্রক্রিয়া সমাধান করা যায়। পুকুরের তলদেশ চাষ দেওয়ার প্রয়োজন হলে চাষ দেওয়ার পর একই নিয়মে তা পুনরায় ধৌত করতে হবে।

কাঁকড়া চাষে চুন প্রয়োগ

হেক্টর প্রতি সাধারণত ৩০০-৮০০ কেজি CaO (কলিচুন) চাষ পূর্বক মাটিতে দিতে হবে। মাটির পি.এইচ. নির্ধারণ পূর্বক চুন প্রয়োগ করা উচিত |

কাঁকড়ার আশ্রয় স্থল সৃষ্টি

কাঁকড়া খোলস ছাড়ার সময় জলজ প্রাণীর আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য লুকিয়ে থাকতে পছন্দ করে। চাষ পুকুরে বাঁশের কঞ্চি দ্বারা আশ্রয় স্থল তৈরি করা যায়। তা ছাড়া সিমেন্টের পাইপ বা পি.ভি.সি পাইপের টুকরোও ব্যবহার করা যায়। সাধারণত ১০-১৫ সেন্টিমিটার ব্যাসের পাইপ ব্যবহার করা যায়। পাইপের ব্যাস বিভিন্ন সাইজের হলে ছোট বড় কাঁকড়া তাদের পছন্দ মতো স্থানে আশ্রয় নিতে পারে। পুকুরের তলদেশে এবং অভ্যন্তরে বেড়ার পাশে এ আশ্রয় স্থল স্থাপন করা যায়। পচনশীল দ্রব্য আশ্রয়ের জন্য ব্যবহার করা যাবে না।

See also  শিং-মাগুরের চাষ

কাঁকড়া চাষে পুকুরে পানি উত্তোলন ও সার প্রয়োগ

  1. চিংড়ি চাষের ন্যায় কাঁকড়ার চাষ এলাকায় অন্য প্রাণীর অনুপ্রবেশ রোধ করার জন্য সব সময় ০.২৫ সেন্টিমিটার ছিদ্রযুক্ত নাইলন জাল দিয়ে পানি ছেঁকে তুলতে হবে। প্রথমবার ৩০ সেন্টিমিটার পানি পুকুরে উঠিয়ে পানিতে জৈব সার ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ করা যায়।
  2. পানিতে সার একত্রে সব না দিয়ে কয়েক ভাগে ভাগ করে প্রয়োগ করা হলে সারের সুষ্ঠু ব্যবহার করা যায়, যা আর্থিকভাবেও ভজনক। হেক্টর প্রতি ৫০০ কেজি জৈব সার, ১৫ কেজি টি.এস.পি এবং ১০ কে.জি ইউরিয়া সার পানিতে গুলে সর্বত্র ছিটিয়ে দিতে হবে।
  3. পানির রং এবং ফাইটোপ্লাংক্টনের উৎপাদনের পরিমাণ অনুসারে সার প্রয়োগ করতে হবে। সার প্রয়োগের পাশাপাশি ক্রমান্বয়ে পানির গভীরতা বৃদ্ধি করতে হবে এবং পানির গভীরতা ১ মিটারের মধ্যে থাকা উচিত। পানিতে উৎপাদিত ফাইটোপ্লাংকটন্‌ কাঁকড়ার খাদ্য উপাদান বৃদ্ধিতে সহায়তার পাশাপাশি পুকুরের তলায় ছায়া দেয়। কাঁকড়া সূর্যের আলো সহ্য করতে পারে না এবং ছায়া পছন্দ করে। এছাড়া প্লাংক্‌টন্‌ পানির গুণাগুণ সঠিক মাত্রায় রাখতে সাহায্য করে এবং বিষাক্ত পদার্থ অপসারণের সহায়তা করে।

কাঁকড়া মজুদকরণ

  • বর্তমানে কাঁকড়া চাষ বলতে কাঁকড়া মোটা তাজা করাকেই বুঝায়। কিশোর কাঁকড়া বাঁশের চাই বা ফাঁদ, পাতা জাল, থলে জাল দিয়ে ধরা যায়। ২০-৪০ গ্রাম ওজনের ৮-১০ হাজার কাঁকড়া প্রতি হেক্টেরে মজুদ করা যায়।
  • স্ত্রী কাঁকড়ার চাষ বেশি লাভজনক। তাই স্ত্রী ও পুরুষের অনুপাত ৯ঃ১ বা ৯০% স্ত্রী ১০% পুরুষ করা হলে ভালো হয়। কিশোর স্ত্রী ও পুরুষ কাঁকড়া সহজে কাঁকড়ার চিমটা পা ও বুকের ফ্ল্যাপ দেখে সনাক্ত করা যায়।
  • পুরুষ কাঁকড়ার চিমটা পা বড়, স্ত্রী কাঁকড়ার চিমটা পা একই বয়সে পুরুষ কাঁকড়ার চেয়ে ছোট ৷ স্ত্রী কাঁকড়ার বুকের ফ্লাপ্‌টি অর্থ গোলাকার অন্য দিকে পুরুষ কাঁকড়ার ফ্লাপ্‌টি অপেক্ষাকৃত সরু ও ইংরেজি ভি-আকৃতির। একই বয়সের কাঁকড়া একত্রে সংগ্রহ করা অত্যন্ত কঠিন। তাই ওজনের ভিত্তিতে কাছাকাছি ওজনের কাঁকড়া মজুদ করা হলে চাষকালীন পরিচর্যার সুবিধে হয়।
  • কিশোর কাঁকড়া একস্থান হতে অন্য স্থানে বাঁশের ঝুড়িতে পরিবহণ করা যায়। বিক্রির জন্য গোনাড বিশিষ্ট স্ত্রী কাঁকড়া গোনাড বা ডিম্বাশয়বিহীন অবস্থায় যাওয়া যায় সেগুলো স্থানীয় ভাষায় খোসা কাঁকড়া বলা হয়। এ খোসা কাঁকড়া বা নরম খোলস বিশিষ্ট কাঁকড়া নির্ধারিত পুকুরে ১৫-২০ দিন রেখে উপযুক্ত খাবার দেওয়া হয়। এটাকে কাঁকড়া ফেটেনিং বলা হয়। কাঁকড়া ফেটেনিং পদ্ধতি অনেক স্থানেই প্রচলিত আছে।

কাঁকড়াকে খাবার সরবরাহ

  • কাঁকড়া সর্বভূক। এরা সাধারণত জীবন্ত খাদ্য খেতে পছন্দ করে। ছোট ছোট মাছ, সামুদ্রিক ক্রিমি, শামুক, ঝিনুক, কীট-পতঙ্গ খেয়ে থাকে। তবে ময়লা ও পচা জৈব পদার্থ জাতীয় খাবারও এরা খায়। খাদ্য হিসেবে ছোট মাছ, শামুক, ঝিনুকের মাংস, চিংড়ি ও চিংড়ির মাথা, বিভিন্ন প্রকার দেহাবশেষ ইত্যাদি ব্যবহার করা যায়। কাঁকড়ার খোলস তৈরির জন্য ক্যাল্‌সিয়াম সমৃদ্ধ খাদ্য প্রয়োজন। তাই মাংসের হাড় বা কাটা ও কাঁকড়া খেয়ে থাকে।
  • এছাড়া চালের কুড়া, গমের ভুষি, আটা, ফিশ্ মিল্‌ ইত্যাদি মিশ্রণপূর্বক কাঁকড়ার খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা যায়। কাঁকড়ার দেহের বৃদ্ধির সাথে সাথে খাদ্য চাহিদা বৃদ্ধি পায়। ট্রে-তে খাবার দিয়ে খাদ্য গ্রহণের প্রবণতা পর্যবেক্ষণ পূর্বক খাবার সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে। কাঁকড়া বাগদা চিংড়ির ন্যায় নিশাচর প্রাণী। তাই বিকালে বা সন্ধ্যায় ও রাতে প্রতিদিন ২-৩ বার খাবার দিতে হয়।
See also  সমন্বিত হাঁস মুরগি ও মাছ চাষ ব্যবস্থাপনা + মাছ ও হাঁস চাষ পদ্ধতি একসাথে, হাঁস ও মাছ সমন্বিত চাষ + মুরগি ও মাছ সমন্বিত চাষ, মাছ ও মুরগি চাষ পদ্ধতি একসাথে, মুরগি ও মাছের খামার

কাঁকড়া চাষে পানি ব্যবস্থাপনা

অমাবস্যা ও পূর্ণিমায় জোয়ার-ভাটার প্রভাবে কাঁকড়ার পুকুরের পানি পরিবর্তন করা যায়। পানি গুণাগুণ রক্ষার জন্য নিয়মিত চুন ও সার প্রয়োগ করতে হবে। কোনো কারণে প্লাংক্‌টন্মা রা গেলে কিংবা পানি দূষিত হলে সাথে সাথে পানি পরিবর্তনের ব্যবস্থা নিতে হবে। কাঁকড়া উপযুক্ত পরিবেশ না পেলে অন্যত্র বের হয়ে যায়। কাঁকড়া শক্ত প্রাণি বটে কিন্তু পরিবেশের তারতম্যে বা পানি দূষিত হওয়ার কারণে এরা মারা যায় এবং উৎপাদন ব্যাহত হয়।

কাঁকড়া আহরণ ও বাজারজাতকরণ

  • মজুদের ৩-৪ মাস পর কাকড়া আহরণ করা যায়। বাংলাদেশে সবচেয়ে চাষের উপযুক্ত সময় মার্চ থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত। এ সময় পানির গুণাগুণ ও তাপমাত্রা উপযুক্ত পর্যায়ে থাকে।
  • কাঁকড়া ধরার জন্য বাঁশের চাই অথবা জালের তৈরি ফাঁদ সবচেয়ে উপযুক্ত। ধরার সময় কাঁকড়ার পা ভেঙ্গে গেলে বাজারজাত করা যায় না। লিফট নেট বা চাই-ফাঁদে খাবার দিয়ে কাঁকড়া পর্যায়ক্রমে ধরা যায়।
  • কাঁকড়া ধরার আগেই পুকুরে খাবার সরবরাহ বন্ধ রাখতে হবে। সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় হেক্টর প্রতি ১,২০০-১,৫০০ কেজি কাঁকড়া উৎপাদন করা যায়।
  • কাঁকড়া একপাত্র থেকে অন্য পাত্রে নেওয়া বা রাখার সময় বাঁশের চিমটা এমনভাবে ব্যবহার করতে হবে যেন পা ভেঙ্গে না যায়। কাঁকড়াকে পিছন থেকে চিমটা বা হাত দিয়ে ধরা যায়।
  • বর্তমানে জীবন্ত কাঁকড়া বিদেশে রফতানি হয়ে থাকে। তাই কাঁকড়া চিমটা বা প্লাস্টিকের ফিতা দিয়ে ভালোভাবে বেঁধে ঝুড়িতে ভর্তি করে বাজারজাত করা যায়। পরিবহনের সময় ঝুড়িতে স্যাঁত স্যাঁতে ভাব বজায় রাখার জন্য লবণ পানি ছিটিয়ে দিতে হয়। কাঁকড়া ঝুড়ি অন্ধকার বা ছায়াযুক্ত ঠাণ্ডা স্থানে রাখতে হয়।
  • সঠিকভাবে চাষ করা গেলে বর্তমান হিসেবে প্রতি কেজিতে ৬০ টাকারও বেশি নীট লাভ করা যায়। কাঁকড়াও একটি চাষযোগ্য প্রাণী এবং এর উৎপাদন একটি লাভজনক বিনিয়োগ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Copyright Notice

কপি করা নিষিদ্ধ!