নাস্তিক: তোরা কোরবানির নামে পশু হত্যা করো, রক্তখেলায় উল্লাস করো। অবুজ প্রাণীদের কষ্ট দাও।
🛑প্রশ্নঃ কোরবানির যৌক্তিকতা কি? এটা তো পশু হত্যা?
🔷উত্তরঃ মানুষের শরীরের স্বাভাবিক বৃদ্ধি বিকাশ ও গঠনের জন্য ২২ টি আ্যমাইনো এসিড প্রয়োজন, যার মধ্যে মাত্র ০৮ টি আমরা শাকসব্জি ডিম দুধ ফল ইত্যাদির মধ্যে পাই। তবে বাকি গুলোর জন্য আমাদের নির্ভর করতে হয় কোন না কোন প্রাণীজ আমিষ অর্থাৎ গরু ছাগল ইত্যাদির মাংসের উপর। যা হোক এটা অপ্রসাঙ্গিক তবুও জানালাম। এবারে প্রাসঙ্গিক উত্তরে আসি।
১. আমরা মুসলমানরা কোরবানির সময় উল্লাস করি না। দেখবেন কোরবানির গরু কিনে আনার সময় সবার মুখে হাসি থাকে কিন্তু জবাই দেয়ার সময় নারী পুরুষ, শিশু যুবক, বৃদ্ধ বৃদ্ধা সবার মুখে কষ্টের ছাপ থাকে। তবে কিছু কিছু লোক আছে যারা গান বাজনা করে, কিন্তু তারাও না জেনে না বুঝে করে। এতে ইসলামকে দোষারোপ করা যায় না।
২. বিধর্মীরা ও নাস্তিকরাও মাংসের জন্য গরু, ছাগল, হাস, মুরগী, সাপ, ব্যাঙ, শুকর সব খায়। অথচ কোরবানির সময় তারা এমন অযৌক্তিক প্রশ্ন করে। এর কারণ হলো:- আল্লাহর উদ্দেশ্যে কোরবানি দেয়াটাই তারা সহ্য করতে পারে না। এখানে যৌক্তিক পয়েন্ট হলো তাদের গরু ছাগলের উপর কোন ভালোবাসা নেই। যদি থাকত তাহলে তারা কেন মাংস খায়?
৩. প্রশ্ন আসতে পারে “কিন্তু ভাই তোমরা মুসলমানরা কোরবানির নামে মাংস অপচয় করো। আল্লাহ কি রক্ত খায় নাকি মাংস খায় যে কোরবানি দেয়া লাগবো?”
এর উত্তর হলো:- আল্লাহ রক্ত মাংস কিছুই খায় না। আল্লাহর কাছে যা পৌছায় তা হলো আমাদের ঈমানের অংশ তাকওয়া। আর আমরা কোথাও এক টুকরা মাংস ফেলে দিয়ে অপচয় করি না। বরং আত্মীয়স্বজন পাড়াপ্রতিবেশী ও গরীবদের নিয়ে একত্রে মাংস খাই সেখানে আমাদের সম্প্রীতি আরো মজবুত হয়।
৪. কিন্তু ইব্রাহিম (আ) কে আল্লাহ বলছিল তার সবচেয়ে প্রিয় বস্তু কোরবানি দিতে। আমারে বুঝাও তো মুসলমান তোমার ইব্রাহিমের নিজের জীবনের চেয়ে তার ছেলের জীবন কেমনে বেশি প্রিয় হইলো।
উত্তর টা আসলেই সহজ:- মনে করুন ১৯৭১ সালের কথা। নিজের জীবন বাজি রেখে মানুষ যুদ্ধ করেছিল দেশের জন্য। সেখানে নিজের জীবনের কোন মুল্যই ছিল না। ভালোবাসাটা ছিল দেশের জন্য। ঠিক একই ভাবে নিজের চেয়ে নিজের সন্তানের জীবন বাবা মায়ের কাছে অনেক বেশি প্রিয়।
৫. তো তোমাগো ইব্রাহিমরে তো আল্লাহ আগুনে ফেলেও পরিক্ষা নিছিল। তোমরা কেন আগুনে ঝাপ দাও না?
দেখুন আপনারা হয়ত কোন কোন মহাপুরুষের আদর্শকে নিজের মধ্যে আকড়ে ধরে তাদের মৃত্যুদিনে শোক পালন করেন। যেমন বঙ্গবন্ধু বা জিয়াউর রহমানের মৃত্যুদিনে শোক পালন করেন, কিন্তু তাদের মত একই ভাবে মারা যেতে চান না, বা নিজেদের একই ভাবে মৃত্যু কামনা করেন না। কারন আপনারা জানেন এতে আপনাদের ক্ষতি।
একই ভাবে,
আমরা মুসলমান রা আগুনে ঝাপ দেই না। কারণ যে কাজে আমাদের ক্ষতি তা ইসলাম নিষেধ করেছে। ইব্রাহিম (আ) কে আল্লাহ আগুন থেকে বাচিয়েছিলেন। আমাদেরও ক্ষমা করবেন হয়তো আখিরাতে ইনশাল্লাহ।
৬. আরেকটা কথা আপনি যদি প্রাণিদের কষ্টের কথা ভেবে নন ভেজ খাওয়া বাদ দেন আর ভেজ খাওয়া শুরু করেন তাহলে জেনে রাখুন গাছেরও প্রাণ আছে। একটা মানুষকে খাওয়াতে ১০ টা শাক গাছ কাটা লাগে অথচ একটা গরু দিয়ে আমরা ১০০ জন মানুষকে খাওয়াতে পারি। তাহলে আমরা কি আপনাদের থেকে কম অপরাধী নই? আপনারা তো বড় অপরাধী।
বলতে পারেন “উদ্ভিদের ২ টা ইন্দ্রিয় কম তাই কম কষ্ট পায়”
তাহলে উত্তর হলো “ধরেন আপনার বোবা আর বধির ভাইকে আমি খুন করলাম। আপনি কি এখন আদালতে গিয়ে বলবেন ‘বিচারক সাহেব আমার ভাইয়ের ২ টা ইন্দ্রিয় নেই তাই কম কষ্ট পেয়েছে, খুনির বিচার করতে হবে না।’ বরং আপনি তো উলটা বলবেন যে ‘বিচারক সাহেব আমার এই খুনি আনার নিষ্পাপ ভাইকে মেরেছে, একে কঠিন শাস্তি দিন’
তাহলে গাছের সাথে বা ভেজ খাবারের সাথে এই অবিচার করেন কেন?
৭. খেয়াল করবেন মুসলিমরা কোরাবানির সময় পশুর গলার নিউরন পর্যন্ত কাটে। নিউরন কাটা হয়ে গেলে পশু কোন ব্যাথা অনুভব করে না কারণ মস্তিষ্কে নিউরনের যোগাযোগ থাকে না বলে কোন তা কোন সংকেত গ্রহণ করতে পারে না। পশু ছটফট করে রক্ত বের হয়ে যাচ্ছে বলে।
(অথচ যেসব ধর্মে পশু বলি দেয় সেখানে পুরো মাথা একবারে কেটে ফেলে। তখন হার্টের নার্ভসটাও কাটা হয় বলে পশু হার্ট এটাক করে কষ্ট পায়।)
তাই বলা যায় একমাত্র ইসলামই পশুর সাথে সর্বচ্চ সহমর্মিতা দেখায়।
আশা করি কোরবানি নিয়ে আপনাদের আর কোন সংশয় নেই। যদি এরপরও প্রশ্ন থাকে তাহলে প্রশ্ন করবেন। ইনশাল্লাহ আমি উত্তর দিব। আমাদের সাথে থাকবেন। আপনাদের মুল্যবান মতামত জানাবেন। আপনাদের মুল্যবান মতামত আমাদের উৎসাহিত করে সঠিক তথ্য খুজে বের করে প্রমাণ ও যুক্তির সাথে জানাতে, গবেষণা ও বিশ্লেষণ করতে। ধন্যবাদ।