Skip to content

 

Wait...❤😘 Show love? ⬇⬇⬇

জেনে নিনঃ খাচায় কোয়েল পাখি পালন পদ্ধতি/কোয়েল পাখির খাঁচা তৈরি/কোয়েল পাখির খাঁচা তৈরি মাপ

খাচায় কোয়েল পাখি পালন পদ্ধতি, কোয়েল পাখির খাঁচা তৈরি, কোয়েল পাখির খাঁচা তৈরি মাপ

কোয়েল পালনে খাঁচা বা ব্যাটারি পদ্ধতি সহজ, নিরাপদ স্বাস্থ্যসম্মত। অল্প জায়গায় অধিক সংখ্যায় কোয়েল পালন করতে ব্যাটারি পদ্ধতির জুড়ি নেই। বিভিন্ন বয়সের কোয়েল পালনের জন্য বিভিন্ন প্রকার খাঁচা, যেমন : ব্রুডার খাঁচা, লেয়ার খাঁচা, ব্রিডার খাঁচা ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। এ অধ্যায়ে কোয়েলের বিভিন্ন ধরনের খাঁচা ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম, যেমন : খাবার ও পানির পাত্র তৈরির বিষয় পদ্ধতি ও মাপগুলো সেন্ট্রাল এভিয়ান রিসার্চ ইনস্টিটিউট কর্তৃক উদ্ভাবিত ও অনুমোদিত আদর্শ পদ্ধতি ও মাপের আলোকে বর্ণনা করা হয়েছে। নিম্নে এগুলো সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো :

ক. ব্যাটারি ব্রুডারঃ-

সদ্যফোটা বাচ্চা কোয়েল জন্মের দিন থেকে ৩-৪ সপ্তাহ বয়স পর্যন্ত নিরাপদে ও স্বাস্থ্যসম্মতভাবে লালন-পালনের জন্য ব্যাটারি ব্রুডারই উৎকৃষ্ট। ব্যাটারি ব্রুডার তৈরি করার নিয়মাবলী নিম্নরূপ :

  1. প্রতিটি ব্যাটরি ব্রুডার ইউনিট ৫-৬ তলাবিশিষ্ট হবে। প্রতিটি তলা (Tier) দৈর্ঘ্যে ১৬০ সেমি, প্রস্থে ৮০ সেমি এবং উচ্চতায় ২৫ সেমি হবে।
  2. ১৬০ সেমি দৈর্ঘ্যের মধ্যে হোভার বা ব্রুডারের জন্য ৮০ সেমি জায়গা তিনদিক থেকে ২২ গেজি জি.আই. পাত (Galvanized iron sheet) দিয়ে ঘিরে দিতে হবে।
  3. ব্রুডারের জায়গার বা ব্রুডার স্পেসের (Brooder space) ছাদ থেকে ঠিক ৫ সেমি নিচে ২২ গেজি জি. আই. পাতের একটি আলগা ছাদ (False roof) লাগাতে হবে।
  4. আলগা ছাদের রান-এর (Run) দিকের প্রান্তটি নিম্নমুখী করে নামিয়ে এনে মেঝে থেকে ৫ সেমি উচ্চতায় সীমাবদ্ধ করতে হবে।
  5. ক্রডিং স্পেসের প্রত্যেক পার্শ্বে ৮ সেমি ব্যাসবিশিষ্ট ও ৫-৬টি ছিদ্রযুক্ত দুটো করে ভেন্টিলটর লাগাতে হবে যাদের ছিদ্রগুলো ইচ্ছামতো খোলা বা বন্ধ করা যাবে।
  6. ব্রুডার স্পেসের প্রস্থের দিকে ৮০ সেমি × ২৫ সেমি মাপের একটি দরজা থাকবে যার উপরের প্রান্তে খিড়কীর ব্যবস্থা থাকবে।
  7. দরজার মাঝ বরাবর ২০ সেমি X ১০ সেমি মাপের সচ্ছ কাঁচ লাগাতে হবে। প্রত্যেক তলার ছাদ ২২ গেজি জি. আই. পাত দিতে তৈরি করতে হবে।
  8. ক্রডিং স্পেসে সঠিক তাপ বজায় রাখার জন্য আলগা ছাদের চার কোণায় চারটি লাইট পয়েন্ট (Light point) যুক্ত করতে হবে।
  9. প্রতিটি পয়েন্টের জন্য আলগা ছাদ থেকে এমনভাবে যুক্ত করতে হবে যেন তা রানের দিকে নিম্নমুখী হয়ে থাকে। রান অংশের দুই পার্শ্বে ৪০ সেমি × ১০ সেমি মাপের ০.৫ সেমি (০.৫ সেমি ফাঁকযুক্ত ১৬ গেজি জি. আই. তারজালির দুটো দরজা লাগাতে হবে।
  10. ব্যাটারি ব্রুডারের প্রত্যেকটি তলার মেঝে ০.৫ সেমি × ০.৫ সেমি ফাঁকযুক্ত ১৬ গেজি জি. আই. তারজালি দিয়ে মজবুতভাবে তৈরি করতে হবে।
  11. প্রত্যেকটি তলার মেঝের নিচে ৮০ সেমি × ৮০ সেমি মাপের দুটো করে মল সংগ্রহের ট্রে (Fecal tray) সরবরাহ করতে হবে। এগুলো ২২ গেজি জি. আই. পাত দিয়ে তৈরি করতে হবে।
  12. প্রতিটি মল সংগ্রহের ট্রের সামনের দিকে মাঝ বরাবর একটি হ্যান্ডেল সংযুক্ত করতে হবে।
  13. প্রত্যেক তলার খাঁচা রাখার ফ্রেমগুলো ৩ মি.মি. পুরু, ২.৫ সেমি × ২.৫ সেমি মাপের অ্যাঙ্গেল লোহা দিয়ে তৈরি করতে হবে। তবে ভিত্তি তলা (Base tier) বা প্রথম তলার ফ্রেমটি ৬ মি.মি. পুরু, ৪ সেমি × ৪ সেমি অ্যাঙ্গেল লোহা দিয়ে তৈরি করতে হবে।
  14. পুরো ব্যাটরি ব্রুডার ইউনিটটি ২৫ সেমি উঁচু চারটি মজবুত পায়ার উপর স্থাপন করতে হবে। ব্যাটারি ব্রুডারের প্রত্যেক তলায় প্রয়োজনীয় খাবার ও পানির পাত্র সরবরাহ করতে হবে।

এখানে এগুলো তৈরির নিয়মাবলী সংক্ষেপে বর্ণনা করা হলো :

খাচায় কোয়েল পাখি পালন পদ্ধতি, কোয়েল পাখির খাঁচা তৈরি, কোয়েল পাখির খাঁচা তৈরি মাপ

১. বাচ্চা কোয়েলের পানির পাত্র

একটি উৎকৃষ্টমানের বাচ্চা কোয়েলের পানির পাত্রের বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপ :

  • ক. এটি থেকে এরা পরিচ্ছন্ন পানির সরবরাহ পাবে।
  • খ. বাচ্চাদের পানি পানের উপযোগী হবে।
  • গ. পরিষ্কার করা সহজ হবে।
  • ঘ. টেকসই ও দামে সস্তা হবে।

বাচ্চা কোয়েলের পানির পাত্র দুটো অংশ নিয়ে গঠিত; একটি এনামেল প্লেট (Enamel plate) ও একটি প্লাস্টিক মগ (plastic mug)। এনামেল প্লেটের তলদেশ (Bottom) ও ওপরের (Top) অংশের ব্যাস যথাক্রমে ৯ সেমি ও ১০.৫-১১ সেমি এবং তা ১.৫-২ সেমি গভীর হবে। ১০ সেমি উঁচু ও ৯ সেমি ব্যাসবিশিষ্ট প্লাস্টিকের মগটি উল্টিয়ে প্লেটের উপর স্থাপন করতে হবে। প্লেটের তলদেশ থেকে ঠিক ১ সেমি উপরে মগটির উভয় পার্শ্বে একটি করে দুটো ছিদ্র করতে হবে। এতে প্লেটে পানির লেভেল ঠিক থাকবে ও বাচ্চারা সঠিকভাবে পানি পান করতে পারবে।

See also  কোয়েল পাখি সম্পর্কে ‍a to z (30 টি প্রশ্নের উত্তর)

অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে মগ ও প্লেটের মাপের কিছুটা পরিবর্তন করা যেতে পারে। তবে প্লেটের তলদেশ থেকে মগের ছিদ্রের দূরত্বটুকু (১ সে.মি) সর্বদাই অপরিবর্তিত থাকবে।

২. বাচ্চা কোয়েলের খাবার পাত্র

একটি ভালো খাবার পাত্রের বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপ :

  • ক. এটি খাদ্য দিয়ে সহজেই পূর্ণ করা যায়।
  • খ. পরিষ্কার করা সহজ হবে।
  • গ. খাদ্য অপচয় কম হবে।
  • ঘ. টেকসই ও দামে সস্তা হবে।

বাচ্চাদের জন্য বিভিন্ন ডিজাইনের চিক ফিডার রয়েছে। এখানে একটি সরল চিক ফিডার (Linear chick feeder) তৈরির নিয়মাবলী বর্ণিত হলো :

৩. লেনিয়ার বা সরল চিক ফিডার

  1. এটি ৩০ সেমি লম্বা, ২ সেমি গভীর ও ৭ সেমি চওড়া হওয়া উচিত। পাত্রের প্রস্থের দিকে ২ সেমি উচ্চতা থেকে উভয় পার্শ্বে ৩.৫ সেমি ব্যাসবিশিষ্ট একটি অংশ প্রায় গোলাকার করে তৈরি করতে হবে।
  2. পাত্রের দৈর্ঘ্যের দিকের উভয় পার্শ্বে উপর থেকে জি. আই. পাত ১ সেমি করে ভিতরের দিকে বাঁকা করে নিতে হবে। এতে খাদ্যের অপচয় রোধ করা যাবে। এই অংশটি তৈরি করতে ২৪ গেজি জি. আই. পাত ব্যবহার করতে হবে।
  3. ১.২৫ সেমি × ১.২৫ সেমি ফাঁকযুক্ত ১৪ গেজি জি. আই. তারের সাহায্যে কব্জা দিয়ে পাত্রের দৈর্ঘ্যের এক পার্শ্বের সাথে যুক্ত করতে হবে। এতে সহজেই এটি খোলা যাবে, পরিষ্কার করা যাবে ও খাদ্য দিয়ে পূর্ণ করা যাবে।
খাচায় কোয়েল পাখি পালন পদ্ধতি/কোয়েল পাখির খাঁচা তৈরি/কোয়েল পাখির খাঁচা তৈরি মাপ

খ. রিয়ারিং খাঁচাঃ-

  1. ৩-৪ সপ্তাহ পর্যন্ত ব্রুডারে পালন করার পর বাচ্চারা পরিবেশের তাপমাত্রায় (২১°-২২°সে.) সহজেই নিজেদেরকে খাপ খাইয়ে নিতে পারে। কাজেই এরপর থেকে এদের জন্য আর অতিরিক্ত তাপের ব্যবস্থা করতে হয় না। এ সময়ের পর থেকে ডিম পাড়ার পূর্ব পর্যন্ত অর্থাৎ ৫-৬ (বা অবস্থাভেদে ৪-৫) সপ্তাহ বয়স পর্যন্ত এদেরকে রিয়ারিং খাঁচায় পালন করা যায়।
  2. রিয়ারিং খাঁচা তৈরি করার নিয়মাবলী নিম্নরূপ : প্রতিটি রিয়ারিং কেইজ ইউনিট ৫-৬ তলাবিশিষ্ট হবে। তবে তলাগুলো এমনভাবে তৈরি করতে হবে যেন প্রয়োজনের সময় এগুলো সহজেই পৃথক করে ফেলা যায়।
  3. প্রতিটি তলায় ৬০ সেমি × ৬০ সেমি × ২৫ সেমি মাপের দুটো করে কক্ষ তৈরি করতে হবে। এগুলো ১ সেমি × ২.৫ সেমি ফাঁকযুক্ত ১৪ গেজি জি. আই. তারজালি দিয়ে তৈরি করতে হবে।
  4. প্রতিটি কক্ষের সামনের দিকে ১০ সেমি × ১৫ সেমি মাপের একটি করে দরজা তৈরি করতে হবে। এগুলো তৈরিতে ২২ গেজি জি. আই. পাত ব্যবহার করতে হবে। প্রতিটি পাত্র দৈর্ঘ্যে ৫৬ সেমি, গভীরতায় ৫ সেমি এবং প্রস্থে তলদেশে ৬ সেমি ও উপরের দিকে ১০ সেমি হবে।
  5. পাত্রের উপরের দিকের অংশে চারদিক থেকে ১.৫ সেমি করে জি. আই. পাত ভিতরের দিকে বাঁকা করে দিতে হবে। এতে খাদ্যের অপচয় রোধ করা সম্ভব হবে।
  6. ২-৩টি মজবুত হুকের সাহায্যে পাতগুলো খাঁচার সাথে যুক্ত করতে হবে। পাত্রগুলো প্রতিটি তলার মেঝে থেকে ২ সেমি উচ্চতায় সংযুক্ত করতে হবে। প্রতিটি কক্ষের জন্য একটি করে ২২ গেজি জি. আই. পাতের তৈরি ১.৫ সেমি গভীরতাসম্পন্ন মল সংগ্রহের ট্রে সরবরাহ করতে হবে।
  7. মল সংগ্রহের ট্রের সামনের দিকে মাঝ বরাবর একটি হ্যান্ডেল যুক্ত করতে হবে। প্রত্যেক তলার খাঁচার ফ্রেমগুলো ৩ মি.মি. পুরু, ২.৫ সেমি × ২.৫ সেমি মাপের অ্যাঙ্গেল লোহা দিয়ে তৈরি করতে হবে। তবে ভিত্তি তলা বা প্রথম তলার ফ্রেমটি ৬ মি.মি. পুরু, ৪ সে.মি × ৪ সেমি অ্যাঙ্গেল লোহা দিয়ে তৈরি করতে হবে। পুরো রিয়ারিং কেইজ ইউনিটটি ২৫ সেমি উঁচু চারটি মজবুত পায়ার উপর স্থাপন করতে হবে।
খাচায় কোয়েল পাখি পালন পদ্ধতি, কোয়েল পাখির খাঁচা তৈরি, কোয়েল পাখির খাঁচা তৈরি মাপ

গ. বয়স্ক কোয়েলের খাঁচাঃ-

কোয়েল যখন ডিম পাড়ার উপযোগী হয় তখন এদেরকে রিয়ারিং খাঁচা থেকে লেয়িং খাঁচায় স্থানান্তর করা হয়। লেয়ার কোয়েলের জন্য দু ধরনের খাঁচা তৈরি করা হয়। যথা :

See also  কোয়েল পাখির খামার ব্যবস্থাপনা, কোয়েল পাখি চাষ, কোয়েল পাখির চাষ করে সফল হতে চাইলে (৮টি) পয়েন্ট জেনে নিন!!! কোয়েল পাখি চাষের পদ্ধতি

ক. কলোনি লেয়িং খাঁচা (Colony laying cage): এ ধরনের খাঁচা বাণিজ্যিক লেয়ার খামারগুলোতে ব্যবহার করা হয়।

খ. ব্যক্তিগত পরীক্ষণ খাঁচা বা প্ৰজনন খাঁচা (Individual testing or mating cage): এ ধরনের খাঁচা সাধারণত গবেষণামূলক কাজে বা কোয়ের প্রজননেরর জন্য ব্যবহার করা হয়।

১. কলোনি লেয়িং খাঁচা

এ ধরনের খাঁচা তৈরি করার নিয়মাবলী নিম্নরূপ :

  • প্রতিটি কলোনি লেয়িং কেইজ ইউনিট ৫-৬ তলাবিশিষ্ট হবে। তবে তলাগুলো এমনভাবে তৈরি করতে হবে যেন প্রয়োজনের সময় এগুলো সহজেই পৃথক করে ফেলা যায়। প্রতিটি তলায় দুটো করে কক্ষ থাকবে। প্রতিটি কক্ষ দৈর্ঘ্যে ৬০ বা ৯০ সেমি, প্রস্থে ৬০ সেমি এবং উচ্চতায় পিছনের দিকে ১৭ সেমি এবং সামনের দিকে ২৫ সেমি হবে। কাজেই মেঝে পিছন থেকে সামনের দিকে ৮ সেমি ঢালু থাকবে। এতে ডিম সামনের দিকে গড়িয়ে আসতে সুবিধা হবে।
  • খাঁচায় ব্যবহৃত তারজালি ১ সেমি × ২.৫ সেমি ফাঁকযুক্ত ঝালাইকৃত ১৪ গেজি জি, আই. তার দিয়ে তৈরি করতে হবে। ডিম সংগ্রহের জন্য প্রতিটি তলার মেঝে সামনের দিকে ১২ সেমি বর্ধিত করতে হবে যার অগ্রভাগের ৪ সেমি অর্ধগোলাকার করে উপরের দিকে উঠিয়ে দিতে হবে। ডিম ভাঙা রোধ করতে অর্ধগোলাকার অংশটিতে রবারের লাইনিং লাগানো যেতে পারে। প্রতিটি কক্ষের সামনের দিকে ১৫ সেমি × ১৫ সেমি মাপের একটি করে দরজা থাকবে। ডিম গড়িয়ে আসার জন্য সামনের দিকের দেয়ালে মেঝের উপর থেকে ৪ সেমি জায়গা ফাঁকা রাখতে হবে।
  • খাবার ও পানির পাত্র যথাক্রমে খাঁচার সামনে ও পিছনের দিকে সংযুক্ত করতে হবে। এগুলো ২২ গেজি জি. আই পাত দিয়ে তৈরি করতে হবে। প্রত্যেকটি পাত্রের দৈর্ঘ্য কক্ষের দৈর্ঘ্যের সমান হবে। গভীরতায় পাত্রটি ৫.৫ সেমি এবং প্রস্থে তলার দিকে ৫ সেমি এবং উপরের দিকে ৮.৫ সেমি হবে। পাত্রের উপরের দিকের অংশে চারদিক থেকে ১.৫ সেমি করে জি. আই. পাত ভিতরের দিকে বাঁকা করে দিতে হবে। এতে খাদ্যের অপচয় রোধ করা সম্ভব হবে। পাত্রগুলো মেঝে থেকে ১০ সেমি উচ্চতায় স্থাপন করতে হবে।
  • মল সংগ্রহের ট্রে রিয়ারিং খাঁচার নিয়মেই তৈরি করতে হবে। তবে এক্ষেত্রে ডিম সংগ্রহের জন্য সামনের দিকের বর্ধিত অংশ পর্যন্ত তা বিস্তৃত থাকবে। প্রত্যেক তলার খাঁচার ফ্রেমগুলো ৩ সেমি পুরু, ২.৫ সেমি x ২.৫ সেমি মাপের অ্যাঙ্গেল লোহা দিয়ে তৈরি করতে হবে। তবে ভিত্তি তলা বা প্রথম তলার ফ্রেমটি ৬ মি.মি. পুরু, ৪ সেমি × ৪ সেমি অ্যাঙ্গেল লোহা দিয়ে তৈরি করতে হবে। পুরো কলোনি এবং কেইজ ইউনিটটি ২৫ সেমি উঁচু চারটি মজবুত পায়ার উপর স্থাপন করতে হবে।
খাচায় কোয়েল পাখি পালন পদ্ধতি/কোয়েল পাখির খাঁচা তৈরি/কোয়েল পাখির খাঁচা তৈরি মাপ

২. ব্যক্তিগত পরীক্ষণ খাঁচা বা প্রজনন খাঁচা

  • প্রতিটি ব্যক্তিগত বা প্রজনন খাঁচা ইউনিট ৫.৬ তলাবিশিষ্ট হবে। প্রতিটি তলা ১০টি কক্ষে বিভক্ত থাকবে। প্রতিটি কক্ষ চওড়ায় ২৫ সেমি, গভীরতায় ২০ সেমি এবং উচ্চতায় পিছনের দিকে ২২ সেমি ও সামনের দিকে ২৫ সেমি হবে। কাজেই মেঝে পিছন থেকে সামনের দিকে ৩ সেমি ঢালু হবে। এতে ডিম সামনের দিকে গড়িয়ে আসতে সুবিধা হবে।
  • খাঁচায় ব্যবহৃত তারজালি ১ সেমি × ২.৫ সেমি ফাঁকযুক্ত ঝালাইকৃত ১৪ গেজি জি. আই. তার দিয়ে তৈরি করতে হবে। ডিম সংগ্রহের জন্য প্রতিটি তলার মেঝে কলোনি লেয়িং কেইজের নিয়মেই তৈরি করতে হবে। তবে যেহেতু এ ধরনের খাঁচা ১০টি কক্ষে বিভক্ত থাকে, তাই ডিম সংগ্রহের জন্য বর্ধিত অংশে সঠিকভাবে বেড়া বা পার্টিশন (Partition) দিতে হবে। তা না হলে এক কক্ষের ডিমের সাথে অন্য কক্ষের ডিমের মিশ্রণ ঘটবে। ডিম গড়িয়ে আসার জন্য সামনের দিকের দেয়ালে মেঝের উপর থেকে ৪ সেমি জায়গা ফাঁকা রাখতে হবে।
  • খাবার এবং পানির পাত্র এমনভাবে তৈরি করতে হবে যেন তা পাঁচটি কক্ষের কোয়েলের চাহিদা পূরণের সক্ষম হয়। এগুলোকে যথাক্রমে খাঁচার সামনে ও পিছনের দিকে যুক্ত করতে হবে। পাত্রগুলো দৈর্ঘ্যে ১০০ সেমি, গভীরতায় ৫.৫ সেমি ও চওড়ায় তলার দিকে ৫ সেমি এবং উপরের দিকে ৮.৫ সেমি হবে। পাত্র তৈরির বাদবাকি নিয়মাবলী কলোনি লেয়িং কেইজেই মতোই।
  • প্রতি তলায় প্রতি পাঁচটি কক্ষের জন্য একটি করে মোট দুটো মল সংগ্রহের ট্রে সরবরাহ করতে হবে। ২২ গেজি জি. আই. পাতের তৈরি মল তৈরির ট্রেগুলো ২ সেমি গভীর ও ৩৫ সেমি চওড়া হবে। প্রতিটি ট্রের সামনের দিকে মাঝ বরাবর একটি করে হ্যান্ডেল লাগাতে হবে। খাঁচার ফ্রেম ও পায়া তৈরির নিয়মাবলী কলোনী লেয়িং কেইজের অনুরূপ হবে। ব্যক্তিগত পরীক্ষণ খাঁচা বা প্রজনন খাঁচা প্রয়োজন অনুযায়ী উপরোক্ত পদ্ধতি ছাড়াও অন্য পদ্ধতিতে তৈরি করা যেতে পারে।
See also  কোয়েল পাখির বাচ্চা উৎপাদন (কোয়েল পাখির ডিম থেকে বাচ্চা ফোটানো)
খাচায় কোয়েল পাখি পালন পদ্ধতি, কোয়েল পাখির খাঁচা তৈরি, কোয়েল পাখির খাঁচা তৈরি মাপ

সাধারণ জ্ঞাতব্যঃ-

ব্যাটারি ব্রুডার, রিয়ারিং কেইজ ও লেয়িং কেইজ তৈরির সময় নিম্নলিখিত বিষয়গুলোর প্রতি বিশেষ নজর দিতে হবে। যথা :

  • ক. তারজালি, জি. আই. তার ও জি. আই. পাতের কাটা বা চোখা অংশগুলো মসৃণ করে ফেলতে হবে।
  • খ. খাঁচাগুলো এমনভাবে তৈরি করতে হবে যে তাতে ইঁদুর বা অন্যান্য ইঁদুরজাতীয় প্রাণী (Rodents) প্রবেশ করতে না পারে।
  • গ. খাদ্য ও পানির পাত্রগুলো যেন সম্পূর্ণভাবে ছিদ্রযুক্ত (Leakproof) হয় ৷
  • ঘ. বিভিন্ন জায়গায় ঝালাইগুলো সঠিকভাবে করতে হবে।
  • ঙ. মরিচা রোধকল্পে খাঁচা ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপকরণগুলো উৎকৃষ্টমানের এনামেল পেইন্ট দিয়ে রঙ করতে হবে।
  • চ. প্রয়োজনবোধে, বিশেষ করে খামার খুব বড় হলে, কেইজগুলো সহজে স্থানান্তর করার জন্য পায়ার সাথে চাকা লাগানো যেতে পারে।

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ-

এ পোষ্টে বিভিন্ন ধরনের খাঁচা তৈরির আদর্শ নিয়মাবলী বর্ণনা করা হয়েছে যা অনেক খামারির পক্ষেই অনুসরণ করা সম্ভব হয় না। তাই প্রতি তলায় বা কক্ষে পাখির সংখ্যার ওপর বা খামারির প্রয়োজনীয়তার ওপর নির্ভর করে এগুলো পরিবর্তন করা যেতে পারে। খাঁচা তৈরিতে যেসব উপকরণ ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে তা অত্যন্ত ব্যয়বহুল; তবে খুবই টেকসই।

অবশ্য খরচ কমানোর জন্য খামারিরা এগুলোর বিকল্প হিসেবে সস্তা কোন উপকরণ ব্যবহার করতে পারেন। যেমন : ব্যাটারি ব্রুডারের হোভার অংশ তৈরিতে প্যাকিং বাক্স (Packing cage) ও রানের ছাদ তৈরিতে প্যাকিং বক্সের কাঠ বা প্লেইন অ্যাসবেসটস্ পাত (Plain asbestos sheet) ব্যবহার করা যেতে পারে। অ্যাঙ্গেল লোহার পরিবর্তে কাঠের বাটন ব্যবহার করা যেতে পারে। বেড়া বা পার্টিশন এবং বাইরের দেয়ালগুলো প্যাকিং বাক্সের কাঠ দিয়ে তৈরি করা যায়। খাবার পাত্রগুলো বাঁশ দিয়ে তৈরি করা যেতে পারে।

খামারিয়ান.কম কয়েল পাখি পালন সিরিজঃ

  • কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা, কোয়েল পাখির মাংসের উপকারিতা, কোয়েল পাখির ডিমের পুষ্টিগুণ ও কয়েল পাখির ডিম খাওয়ার নিয়ম, কোয়েল পাখির ডিম ও মুরগির ডিমের তুলনাঃ
  • https://khamarian.com/কোয়েল-পাখির-ডিমের-উপকার/

  • কোয়েল পাখির খাবার তালিকা-১, বয়স অনুযায়ী কোয়েল পাখির খাদ্য তালিকা-২, কোয়েল পাখি কি কি খাবার খায় এবং কোয়েল পাখির খাবার তৈরি/কোয়েলের খাদ্য তৈরিঃ-
    https://khamarian.com/কোয়েল-পাখির-খাবার-তালিক/

  • কোয়েল পালন ও চিকিৎসা, কোয়েল পাখির রোগ ও চিকিৎসা, কোয়েল পাখির চিকিৎসা, কোয়েল পাখির ঔষধ, কোয়েল পাখির ভ্যাকসিন, কোয়েল পাখির চোখের রোগ, কোয়েল পাখির চুনা পায়খানা, কোয়েল পাখির রোগ-ব্যাধি ও প্রতিকারঃ
    https://khamarian.com/কোয়েল-পালন-ও-চিকিৎসা-কোয/

  • কোয়েল পাখির খামার ব্যবস্থাপনা, কোয়েল পাখি চাষ, কোয়েল পাখির চাষ করে সফল হতে চাইলে ৮টি পয়েন্ট জেনে নিন!!! কোয়েল পাখি চাষের পদ্ধতিঃ-
    https://khamarian.com/কোয়েল-পাখির-খামার-চাষ/

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Copyright Notice

কপি করা নিষিদ্ধ!