Skip to content

 

গবাদিপশু হাঁস-মুরগি রোগ পরিচিতি ও প্রতিকার। (সহজ ও সংক্ষিপ্ত ও সাজানো) + ছবি।

(+ছবিসহ) গবাদিপশু হাঁস-মুরগি রোগ পরিচিতি ও প্রতিকার। ক্ষুরারোগ, পিপিআর রোগ, তড়কা রোগ বা অ্যানথ্রাক্স, বাদলা রোগ, ওলান পাকা রোগ, ইউরিয়া ও এর বিষক্রিয়া, পেট ফাঁপা বা ব্লোট, কৃমি, রানীক্ষেত, গামবোরোঃগবাদিপশুর রোগ পরিচিতি ও প্রতিকার। ক্ষুরারোগ, পিপিআর রোগ, তড়কা রোগ বা অ্যানথ্রাক্স, বাদলা রোগ, ওলান পাকা রোগ, ইউরিয়া ও এর বিষক্রিয়া, পেট ফাঁপা বা ব্লোট, কৃমি, রানীক্ষেত, ভাক প্লেগ এবং ডাক কলেরা।

গবাদিপশুর রোগ পরিচিতি ও প্রতিকার-

ক্ষুরারোগঃ

ক্ষুরারোগ বিভক্ত ক্ষুরবিশিষ্ট পশুর তীব্র ছোঁয়াচে ভাইরাস রোগ। জ্বর, মুখ ও পায়ে ফোসকা এ রোগের প্রধান বৈশিষ্ট্য। বাংলাদেশে প্রতিবছর ক্ষুরারোগের কারণে বিপুল পরিমাণে আর্থিক ক্ষতি হয়।

লক্ষণ: প্রথমে জ্বর হয় এবং মুখ, পা ও বাঁটে রসভরা ফোসকার সৃষ্টি করে। খাদ্য গ্রহণের ফলে মুখের ভিতরে ও জিহ্বার ফোসকা ছিঁড়ে ক্ষত সৃষ্টি হয়। প্রদাহের ফলে মুখ থেকে প্রচুর লালা ঝরে, দুই পায়ের ক্ষুরের মাঝে ক্ষত সৃষ্টি হয়।

ক্ষুরারোগঃ চিত্রঃ মুখ দিয়ে লালা ঝরছে + চিত্ৰঃ জিহ্বার ফোসকা + চিত্রঃ পায়ে ক্ষত

চিত্রঃ মুখ দিয়ে লালা ঝরছে + চিত্ৰঃ জিহ্বার ফোসকা + চিত্রঃ পায়ে ক্ষত

চিকিৎসা: মৃদু জীবাণুনাশক পদার্থ দ্বারা মুখ ও পায়ের ক্ষত পরিষ্কার করতে হবে। ক্ষুরারোগের জীবাণুর জটিলতা রোধে অ্যান্টিবায়োটিক অথবা সালফোনামাইড ইনজেকশন দিলে সুফল পাওয়া যায়। আক্রান্ত পশুকে শুকনো ও পরিষ্কার স্থানে রাখতে হবে এবং নরম খাবার দিতে হবে।

প্রতিরোধ: খামারের মানসম্মত জীবনিরাপত্তা ও প্রতি ৬ মাস পর পর এ রোগের টিকা প্রদান করতে হবে। রোগাক্রান্ত পশুকে সুস্থ পশু থেকে আলাদা করতে হবে। মৃত পশুকে গভীর গর্ত করে মাটিতে পুঁতে ফেলতে হবে।

পিপিআর রোগঃ

রোগটি আমাদের দেশে ছাগলে মাঝে মাঝে মহামারী আকারে দেখা দেয়। পিপিআর ভাইরাস দ্বারা এ রোগটি হয়।

লক্ষণ: ঝিম ধরে পিঠ বাঁকা করে দাঁড়িয়ে থাকে পরবর্তী পর্যায়ে নাক, মুখ ও চোখ দিয়ে তরুণ নিঃসৃত হয়। শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায় (১০৬-১০৭ ফাঃ), পাতলা পায়খানা শুরু হয়। মলের রং গাঢ় বাদামি, মাঝে মধ্যে রক্তমিশ্রিত আম থাকতে পারে। আক্রান্ত ছাগলের ব্যাপকভাবে নিউমোনিয়া দেখা দেয়, নাকের পথ বন্ধ হয়ে যেতে পারে ও শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে ৭-৯ দিনের মাথায় আক্রান্ত প্রাণী মারা যেতে পারে।

চিকিৎসা: এ রোগের সুনির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই, তবে লক্ষণ ভিত্তিক চিকিৎসা করালে মৃত্যুর হার কমানো যায়। পানিশূন্যতা রোধের জন্য স্থাপণকে মুখে বা শিয়ায় পর্যাপ্ত স্যালাইন দিলে ভালো ফল পাওয়া যায়।

প্রতিরোধ: রোগ দেখা দেওয়ার আগেই সুস্থ ছাগলকে পিপিআর টিকা দিতে হবে। একবার টিকা প্রয়োগ করলে সাধারণত এক বছরের অধিক সময় প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকে। টিকাকৃত ছাগীর বাচ্চার তিন মাস পর্যন্ত পিপিআর রোগের অ্যান্টিবডি থাকে। এ রোগে আক্রান্ত মৃত ছাগলকে পুড়িয়ে অথবা নিরাপদ দূরত্বে পুঁতে ফেলতে হবে।

তড়কা রোগ বা অ্যানথ্রাক্সঃ

তড়কা ব্যাকটেরিয়া সৃষ্ট পশুর একটি মারাত্মক রোগ। রোগটি পণ্ড থেকে মানুষে ছড়াতে পারে।

চিত্ৰঃ মুখ দিয়ে তরল নিসৃত

লক্ষণ: অধিকাংশ ক্ষেত্রে লক্ষণ প্রকাশের আগে মারা যায়, কখনো কখনো ১-২ ঘণ্টা স্থায়ী হয়, জ্বর (১০৪-১০৭ ফা), ক্ষুধামান্দ্য, নিষ্ফেলতা, দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস, পেট ফাঁপা, গর্ভপাত, দেহের কাঁপুনি, রুমেনের গতি কমে যায়, নাক, মুখ, প্রস্রাব ও মলদ্বার দিয়ে রক্তক্ষরণ হতে দেখা যায় ও শরীরের ভিতরে বিভিন্ন অঙ্গে রক্তক্ষরণ হয়।

তড়কা রোগ বা অ্যানথ্রাক্সঃ চিত্রঃ মলদ্বার দিয়ে রক্তক্ষরণ + চিত্রঃ নাক দিয়ে রক্তক্ষরণ + চিত্ৰঃ হাতে ক্ষত

চিত্রঃ মলদ্বার দিয়ে রক্তক্ষরণ + চিত্রঃ নাক দিয়ে রক্তক্ষরণ + চিত্ৰঃ হাতে ক্ষত

চিকিৎসা:  তড়কা রোগের চিকিৎসায় অ্যান্টিসিরাম ও অ্যান্টিবায়োটিক ভালো কাজ করে। অ্যান্টিসিরাম পাওয়া গেলে ১০০-২৫০ মিলি হিসেবে প্রতিটি আক্রান্ত গরুতে প্রত্যহ শিরায় ইনজেকশন দিতে হবে। তবে একই সময়ে অ্যান্টিসিরাম ও অ্যান্টিবায়োটিক ইনজেকশন অধিক কার্যকর। পেনিসিলিনজাতীয় ওষুধ প্রতি কেজি দৈহিক ওজনের জন্য ১০,০০০ ইউনিট করে মাংসপেশিতে দিনে দুইবার করে ৫ দিন ইনজেকশন দিতে হয়।

প্রতিরোধ: রোগাক্রান্ত পশুকে সুস্থ পশু থেকে পৃথক রেখে চিকিৎসা ও সুস্থ পশুকে টিকা প্রদান করতে হবে। মড়কের সময় পশুর চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। শুষ্ক ও পরিছন্ন অবস্থায় পালন করতে হবে। এ রোগ প্রতিরোধে ১ মিলি চামড়ার নিচে ইনজেকশন দিতে হবে এবং প্রতিবছর একবার করে প্রয়োগ করতে হবে।

বাদলা রোগঃ

এ রোগে পা আক্রান্ত হয় তাই একে ব্ল্যাক লেগ বলে। এ রোগ প্রধানত বাড়ন্ত বয়সের পর একটি তীব্র সংক্রামক রোগ।

লক্ষণ: অতি তীব্র প্রকৃতির রোগে আক্রান্ত পঞ্চ হঠাৎ মারা যায়। মৃত্যু আকস্মিক না হলে ক্ষুধামান্দ্য, জ্বর (১০৪-১০৭- ফাঃ), পেটে গ্যাস, নাকে শ্লেষ্মা, অবসাদভাব প্রকাশ পায়। উপসর্গ প্রকাশের ১২-৩৬ ঘণ্টার মধ্যে পশু মারা যায়। পায়ের মাংসপেশি আক্রান্ত হয়, ফলে পশু হাঁটতে পারে না এবং খুঁড়িয়ে হাটে। আক্রান্ত মাংসপেশি কিছু ফোলা থাকে এবং টিপলে পচপচ শব্দ হয়।

চিকিৎসা: অ্যান্টিবায়োটিক ইনজেকশন দিয়ে চিকিৎসা করতে হয়।

প্রতিরোধ: বাদলা রোগের টিকা দিয়ে এ রোগ প্রতিরোধ করা যায়।

চিত্ৰঃ বাদলা রোগে আক্রান্ত মাংসপেশি

চিত্ৰঃ বাদলা রোগে আক্রান্ত মাংসপেশি

ওলান পাকা রোগঃ

গাড়ির ওলানের কোষ-কলায় রোগজীবাণু বিশেষ করে ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক দ্বারা প্রদাহের সৃষ্টি হলে তাকে ওলান পাকা রোগ বলে। এ রোগ বিশেষ করে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, অস্বাস্থ্যকর উপায়ে ও অপরিষ্কার হাতে দুধ দোহন, ওলানের বাঁটে ক্ষত বা ঘা এ সমস্ত অব্যবস্থাপনার কারণে দেখা দিতে পারে।

ওলান পাকা রোগঃ চিত্রঃ গাভীর শক্ত ওলান

চিত্রঃ গাভীর শক্ত ওলান

লক্ষণ: দুধ পানির মতো সাদা বা হলদে অথবা জমা দুধ, ওলান গরম থাকে, জ্বর হতে পারে।

চিকিৎসা: অ্যান্টিবায়োটিক ও অ্যান্টিহিস্টামিন মাংসে ইনজেকশন এবং সাধারণ স্যালাইন শিরায় ইনজেকশন দিয়ে চিকিৎসা করলে সুফল পাওয়া যায়।

প্রতিরোধ: খামারে নতুন গাভির আগমন হলে সাথে সাথে তার ওলান পরীক্ষাসহ দুধ পরীক্ষা করে ব্যবস্থা নিতে হবে। মাসে অন্তত দুইবার খালি চোখে দুধ পরীক্ষা করতে হবে।

ইউরিয়া ও এর বিষক্রিয়াঃ

খড়কে শতকরা ৪ ভাগ ইউরিয়া প্রক্রিয়াজাত করে খাওয়ানো হয়। তবে ইউরিয়া মিশ্রিত খাদ্যে শর্করাযুক্ত হলে পশু অধিক মাত্রায় ইউরিয়া সহ্য করতে পারে। এছাড়া ইউরিয়া মোলাসেস ব্লক করে পশুকে মোটাতাজাকরণে খাওয়ানো হয়।

বিষক্রিয়ার লক্ষণ: গরুকে ইউরিয়া খাওয়ানোর ২০ থেকে ৬০ মিনিটের মধ্যে উপসর্গ প্রকাশ পায়। পেটে ব্যথা, ফেনাযুক্ত লালা ঝরা, মাংসপেশির কম্পন, শ্বাসকষ্ট, পেট ফাঁপা উপসর্গ দেখা দেয়।

চিকিৎসা:  অ্যাসিটিক এসিড ৫% অথবা ভিনেগার ০.৫ থেকে ১ লিটার ভেড়া ও ছাগলকে খাওয়াতে হবে। গরুর জন্য ২- ৫ লিটার। চিকিৎসার পর পুনরায় উপসর্গ দেখা দিলে ২০ মিনিট পর পুনরায় ওষুধ খাওয়ানো যায়।

পেট ফাঁপা বা ব্লোটঃ

গবাদিপশুর (রোমন্থনকারী পশু) পেটে (রুমেনে) অতিরিক্ত গ্যাস জমা হয়ে এ রোগের সৃষ্টি হয়। যদি কেবল অতিরিক্ত গ্যাস জমা হয় হবে তাকে টিপ্যানি বলে এবং গ্যাসের সাথে ফেনা থাকলে তাকে পেট ফাঁপা বা ব্লোট বলা হয়। গবাদিপশুর পেটে প্রায় ৫০০-৬০০ লিটার গ্যাস উৎপাদিত হয়। এ গ্যাস বের হতে না পারলে বা বের হওয়ার পথে কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হলে এ রোগ হতে পারে।

কারণ: নরম ডালজাতীয় (লিগিউম) ঘাস খাওয়ার ফলে ফেনাযুক্ত গ্যাস তৈরি হয়। এর কারণ রুমেনের অণুজীব দ্রুত এ ঘাস পরিপাকে সাহায্য করে কিন্তু এত অল্প সময়ে পশু গ্যাস বের করতে পারে না। আবার ফেনাযুক্ত হওয়ায় এ গ্যাস বের হতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়। নরম সবুজ ঘাস, পশুর চারণভূমিতে অতিরিক্ত ইউরিয়া প্রয়োগ করা হলে পশুর এ রোগ হতে পারে।

চিত্ৰঃ পেট ফাঁপা বা ব্লোট আক্রান্ত পশু

চিত্ৰঃ পেট ফাঁপা বা ব্লোট আক্রান্ত পশু

লক্ষণ: পশুর পেট (রুমেন) অস্বাভাবিকভাবে ফুলে যায়। পশু অস্বস্তিতে থাকে বারবার মাটিতে বসে। পশুর শ্বাসকষ্ট হয়। জিভ বের হয়ে যায় এবং লালা পড়ে। আক্রান্ত পশু আস্তে আস্তে দুর্বল ও নিস্তেজ হয়ে যায়। খাওয়া ও পায়খানা-প্রস্রাব বন্ধ হয়ে যায়।

চিকিৎসা: পশুর রোগ যদি গুরুতর হয় তবে দ্রুত পেটের বাম পাশের মাঝখানে ট্রকার ও ক্যানুলা প্রবেশ করিয়ে গ্যাস বের করে দিতে হবে।

প্রতিরোধ: নরম সবুজ ঘাস বা ডালজাতীয় ঘাস শুকনা খড়ের সাথে মিশিয়ে খাওয়ানো যেতে পারে।

কৃমিঃ

কৃমি কৃমি আক্রান্ত পশু মাঠে বা চারণভূমিতে পায়খানা করার ফলে মাঠের ঘাস দূষিত হয়। এসব দূষিত ঘাস সুস্থ গরু খেলে তারাও কৃমিতে আক্রান্ত হয়। তাছাড়া অনেক কৃমি আছে যা শরীরের চর্ম ভেদ করে দেহে প্রবেশ করে।

লক্ষণ: কৃমিতে আক্রান্ত গবাদিপশু সহজে মারা না গেলেও স্বাস্থ্য খারাপ হতে থাকে এবং দৈহিক বৃদ্ধি হ্রাস পায়। ঠিকমতো খাবার দিলেও তার স্বাস্থ্যের কোনো উন্নতি হয় না। বরং দিন দিন রোগা হতে থাকে। পশু ক্রমান্বয়ে হাড্ডিসার হয়ে পড়ে।

চিকিৎসা/প্রতিরোধ: কৃমির জন্য কৃমিনাশক ওষুধ প্রয়োগ করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। আমাদের দেশে গবাদিপশুর লালন-পালন ব্যবস্থায় বছরে ৩ বার কৃমির ওষুধ খাওয়ালে ভালো ফল পাওয়া যায়। কোনো গবাদিপশু অসুস্থ হলে তৎক্ষণাৎ সুস্থ প্রাণী থেকে আলাদা রাখতে হবে। এজন্য দ্রুত নিকটস্থ পশু হাসপাতালে যোগাযোগ করতে হবে।

রানীক্ষেতঃ

টিকা দেওয়া হয় নাই এ রকম মুরগির ঝাঁকে ১০০ ভাগ মুরগিই এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে এবং ১০-৯০ ভাগ মুরগি মারা যেতে পারে।

চিত্রঃ রানীক্ষেত রোগে ঝিমানো অবস্থায় মুরগি

চিত্রঃ রানীক্ষেত রোগে ঝিমানো অবস্থায় মুরগি

লক্ষণ: ঝিমানো, সবুজ পাতলা পায়খানা, মুখ দিয়ে শ্বাসপ্রশ্বাস নেওয়া, ঘড়ঘড় শব্দ করা।

চিকিৎসা: আক্রান্ত খামারে টিকা দেওয়া থাকলে মৃত্যুর হার কম থাকে। এ ধরনের খামারে অ্যান্টিবায়োটিক পানিতে মিশিয়ে ৩-৫ দিন মুরগিকে খাওয়াতে হবে। মুরগির ধকল থেকে দ্রুত মুক্তি পাওয়ায় জন্য ভিটামিনজাতীয় ওষুধে ভালো ফল পাওয়া যায়।

প্রতিরোধ: খামারের টিকা দিয়ে এ রোগ প্রতিরোধ করা যায়।

রানীক্ষেতঃ চিত্ৰঃ খাড় ও মাথা উল্টানো অবস্থায় মুরগি

চিত্ৰঃ খাড় ও মাথা উল্টানো অবস্থায় মুরগি

এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা বা এভিয়ান ফ্লু বা বার্ড ফ্লুঃ

এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা একটি উচ্চ সংক্রমণশীল ভাইরাসজনিত মুরগিজাতীয় পাখির রোগ এবং পূর্বে রোগটিকে ‘ফাউল প্লেগ’ও বলা হতো। বাংলাদেশে ২০০৭ সালের মার্চ মাসে প্রথম এ রোগ শনাক্ত করা হয়।

লক্ষণ: ডিমপাড়া মুরগি সর্বপ্রথম নরম খোসাবিশিষ্ট ডিম পাড়ে, কিন্তু এরপর হঠাৎ ডিম পাড়া বন্ধ করে দেয়। ঝুঁটি এবং গলকম্বল নীলাভ রং ধারণ করে এবং অর্থভাগে ছোট ছোট অথবা বড় ধরনের রক্তক্ষরণের চিহ্ন দেখা যায়। মাথা ফুলে যায় এবং পানি জমে থাকতে পারে। পালকবিহীন স্থানে রক্তক্ষরণ দৃশ্যমান হয় এবং ক্ষেত্র বিশেষে ৫০-১০০ ভাগ মৃত্যুহার দেখা যায়।

এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা বা এভিয়ান ফ্লু বা বার্ড ফ্লুঃ চিত্ৰঃ নরম খোসাবিশিষ্ট ডিম + চিত্রঃ পালকবিহীন স্থানে রক্তক্ষরণ + চিত্রঃ মৃত মুরগি

চিত্ৰঃ নরম খোসাবিশিষ্ট ডিম + চিত্রঃ পালকবিহীন স্থানে রক্তক্ষরণ + চিত্রঃ মৃত মুরগি

চিকিৎসা: এ রোগের কোনো ফলপ্রসু চিকিৎসা নাই।

প্রতিরোধ: এভিয়ান ইনফ্লুয়ো রোগ নিয়ন্ত্রণে যে সকল পদ্ধতি বিশ্বব্যাপী ব্যবহার হয়ে আসছে তা হলো- 

  • (১) দ্রুত রোগ শনাক্ত করা এবং দ্রুত আক্রান্ত মুরগি নির্মূল করা
  • (২) আক্রান্ত খামার জীবাণুমুক্ত করা ও চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা
  • (৩) ভ্যাকসিন প্রদান করা।

গামবোরোঃ

গামবোরো ভাইরাসজনিত একটি ছোঁয়াচে রোগ। গামবোরো রোগ সাধারণত ৩-৬ সপ্তাহের মুরগির বাচ্চার তীব্র আকারে দেখা দেয়।

লক্ষণ: মুরগির পালক উসকো-খুলকো থাকে। মুরগির মধ্যে ঝিমানো ভাব দেখা যায় এবং তাপমাত্রা বেড়ে যায় এবং কাঁপতে থাকে। মাংসের উপর রক্তের ছিটা দেখা যায়।

চিকিৎসা: সাধারণত ভাইরাসজনিত রোগের কোনো চিকিৎসা নেই। দ্বিতীয় পর্যায়ের ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়। চিন পাসবোরো আবন মুরূপি প্রতিকায়। গামবোরো রোগ প্রতিরোধের জন্য টিকা ব্যবহার করতে হবে।

চিত্ৰঃ গামবোরো আক্রান্ত মুরগি

চিত্ৰঃ গামবোরো আক্রান্ত মুরগি

ভাক প্লেগঃ

ভাক প্লেগ ভাইরাসজনিত একটি ছোঁয়াচে রোগ। মৃত্যুহার ৮০-৯০ ভাগ।

চিত্ৰঃ ডাক প্লেগ আই

চিত্ৰঃ ডাক প্লেগ আই

লক্ষণ: হাঁসের চোখ দিয়ে পানি ঝরে। চাল ধোয়া পানির মতো খোলা পায়খানা করে। মাঝে মাঝে নীলাত, মাঝে মাঝে সবুজ পায়খানা করে। পা অবশ হয়ে যায় এবং এক জায়গায় চুপচাপ বসে থাকবে, ঝিমাবে।

চিকিৎসা: দ্বিতীয় পর্যায়ের ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়।

প্রতিকার: ডাক প্লেগের ভ্যাকসিন দিতে হবে।

ডাক কলেরাঃ

ডাক কলেরা ব্যাকটেরিয়া জনিত রোগ।

লক্ষণ: তরল পায়খানা হবে। ঘন ঘন পায়খানা হবে। মৃত্যুর ৮০-৯০ ভাগ।

চিকিৎসা: অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারে এ রোগ নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

প্রতিকার: ডাক কলেরার ভ্যাকসিন দিতে হবে।

চিত্রঃ ভাক কলেরা আক্রান্ত হাঁস

চিত্রঃ ভাক কলেরা আক্রান্ত হাঁস

Copyright Notice

কপি করা নিষিদ্ধ!