Skip to content

 

গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগির রোগব্যাধি।

গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগির রোগব্যাধি। (খামারিয়ান ব্লগঃ khamarian.com)

পৰাদিপশু ও হাঁস-মুরগি পালন আমাদের দেশের মানুষের আয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস। বিভিন্ন প্রকার রোপ আয় বৃদ্ধির অন্যতম অন্তরায়। আমাদের দেশে প্রায় প্রতি বছর ২৫% গবাদি পশু বিভিন্ন রোগে মারা যাচ্ছে। বিভিন্ন কারণে রোগ-ব্যাধি হতে পারে যেমন ভাইরাস ব্যকটেরিয়ার সংক্রমণ, পরজীবীর আক্রমণ, অপুষ্টি, ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত ত্রুটি, বিপাকীয় রোগ, বিষক্রিয়া ইত্যাদি।

গবাদি পশুর রোগঃ

গবাদি পশুর বহু ধরনের রোগ হয়ে থাকে। এগুলোকে আমরা নিম্নলিখিত ভাবে ভাগ করতে পারি, যেমন-
১) সংক্রামক রোগ
২) অপুষ্টিজনিত রোগ
৩) পরজীবী ঘটিত রোগ
৪) বিপাকীয় রোগ

সংক্রামক রোগ: যে সকল রোগ অসুস্থ প্রাণীর দেহ হতে সুস্থ প্রাণীর দেহে সংক্রমিত হয় তাকে সংক্রামক রোগ বলে। গবাদি পশুর বিভিন্ন রোগের মধ্যে সংক্রামক রোগ বেশি মারাত্মক। এসব সংক্রামক রোগ কিছু ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া দ্বারা হয়ে থাকে।

ভাইরাস জনিত রোগ: ক্ষুরারোগ, পিপিআর, জলাতঙ্ক, গো-বসন্ত।

ব্যাকটেরিয়া জনিত রোগ: তড়কা, বাদলা, গলাফুলা, ধনুষ্টংকার, যক্ষ্মা, নাভীরোগ, ওলান প্রদাহ, নিউমোনিয়া।

অপুষ্টিজনিত রোগ: খনিজ পদার্থ যেমন ফসফরাস, আয়রন, আয়োডিন, কপার, কোবাল্ট ভিটামিন যেমন ভিটামিন এ, বি, ডি, ই ইত্যাদির অভাবে অপুষ্টিজনিত রোগসমূহ হয়ে থাকে।

পরজীবী জনিত রোগ: রক্তামাশয়, ব্যাবেসিওসিস, কলিজা কৃমির সংক্রমণ, পোল কৃমির সংক্রমণ, ফিতা কৃমির সংক্রমণ, কাঁধে ঘা বা হাম্প সোর, বহিঃপরজীবীর (উকুন, আঠাণী ও মাইট) আক্রমণ ইত্যাদি

বিপাকীয় রোগ: শারীরবৃত্তীয় কার্যকলাপ বা বিপাক ক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটলে এই সকল রোগ হয়ে থাকে। যেমন: পেট ফাঁপা, দুধক্কর।

তড়কা বা এন্থ্রাক্সঃ

এটি একটি গবাদি পশুর ব্যাকটেরিয়াল রোগ। রোপটি গত থেকে মানুষে ছড়াতে পারে। পেট ফাঁপা, গর্ভপাত, নাক, মুখ, প্রস্রাব ও মলদ্বার দিয়ে রক্তক্ষরণ হতে দেখা যায় ও শরীরের ভিতরে বিভিন্ন অঙ্গে রক্তক্ষরণ হয়।

প্রতিকার ও প্রতিরোধ: আক্রান্ত পশুকে সঠিক সময়ে এনথ্রাক্স রোগের টিকা প্রদান করতে হবে, অসুস্থ প্রাণী থেকে সুস্থ প্রাণীকে আলদা করতে হবে। মৃত পশুকে মাটিতে পুঁতে ফেলতে হবে।

চিত্রঃ নাক দিয়ে রক্তক্ষরণ

চিত্রঃ নাক দিয়ে রক্তক্ষরণ

ক্ষুরারোগ বা ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজঃ

ভাইরাস দ্বারা এ রোগ হয়। আক্রান্ত প্রাণীর জিহ্বা ও পায়ের ক্ষুরের ফাঁকে ফোস্কা পড়ে ও ক্ষতের সৃষ্টি হয়, লালা ঝরে, খাদ্য গ্রহণ ও উৎপাদন ব্যাপক হারে হ্রাস পায়। নিয়মিতভাবে এফএমডি রোগের টিকা প্রদান করা, আক্রান্ত প্রাণীকে সুস্থ প্রাণী থেকে পৃথক করা, আক্রান্ত প্রাণীর ব্যবহার্য খাবারের পাত্র, স্থান কীটনাশক দিয়ে ভলোভাবে ধৌত করা এবং মৃত প্রাণীকে গভীর গর্ত করে মাটিতে পুঁতে ফেলার মাধ্যমে এ রোগ প্রতিরোধ করা যায়।

চিত্রঃ ক্ষুরা রোগে পায়ে ক্ষত গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগির রোগব্যাধি। কৃষি মুরগি পালন, হাঁস পালন, ছাগল পালন, গরু পালন মুরগি পালন | হাঁস পালন | ছাগল পালন ⭐⭐⭐⭐⭐ গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগির রোগব্যাধিঃ I. গবাদি পশুর রোগঃ II. তড়কা বা এন্থ্রাক্সঃ III. ক্ষুরারোগ বা ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজঃ IV. ছাগলের পিপিআর বা গোট প্লেগঃ V. পরজীবী সংক্রমণঃ VI. হাঁস-মুরগির রোগঃ VII. রানীক্ষেতঃ VIII. গামবোরো IX. ডাক প্লেগ X. ডাক কলেরা।

চিত্রঃ ক্ষুরা রোগে পায়ে ক্ষত

ছাগলের পিপিআর বা গোট প্লেগঃ

পিপিআর ছাগল ও ভেড়ার ভাইরাস জনিত মারাত্মক সংক্রামক রোগ। আক্রান্ত ছাগলের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়, পাতলা ও দুর্গন্ধযুক্ত পায়খানা হয়, নাক দিয়ে প্রচুর তরল পদার্থ বের হয় এবং ছাগল মারা যায়। রোগ দেখা দেয়ার আগেই সুস্থ ছাগলকে পিপিআর টিকা দিতে হবে। এ রোগে আক্রান্ত মৃত ছাগলকে পুড়িয়ে অথবা নিরাপদ দূরত্বে পুঁতে ফেলতে হবে।

চিত্রঃ পিপিআর আক্রান্ত ছাগলের চোখ গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগির রোগব্যাধি। কৃষি মুরগি পালন, হাঁস পালন, ছাগল পালন, গরু পালন মুরগি পালন | হাঁস পালন | ছাগল পালন ⭐⭐⭐⭐⭐ গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগির রোগব্যাধিঃ I. গবাদি পশুর রোগঃ II. তড়কা বা এন্থ্রাক্সঃ III. ক্ষুরারোগ বা ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজঃ IV. ছাগলের পিপিআর বা গোট প্লেগঃ V. পরজীবী সংক্রমণঃ VI. হাঁস-মুরগির রোগঃ VII. রানীক্ষেতঃ VIII. গামবোরো IX. ডাক প্লেগ X. ডাক কলেরা।

চিত্রঃ পিপিআর আক্রান্ত ছাগলের চোখ

পরজীবী সংক্রমণঃ

কলিজা কৃমি, গোল কৃমি ইত্যাদি পরজীবীর সংক্রমণ বেশি পরিলক্ষিত হয়। এসব পরজীবী পোষক দেহ হতে পুষ্টি, রক্ত শোষণ করে এবং বিভিন্ন রোগের সৃষ্টি করে যেমন- ফ্যাসিওলিয়াসিস, রক্তাল্পতা, রক্ত আমাশয় ইত্যাদি। নিয়মিতভাবে কৃমিনাশক প্রয়োগের মাধ্যমে পরজীবীর সংক্রমণ কমানো যায়।

ছবিঃ আক্রান্ত ছাগলের ফিতাকৃমি গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগির রোগব্যাধি। কৃষি মুরগি পালন, হাঁস পালন, ছাগল পালন, গরু পালন মুরগি পালন | হাঁস পালন | ছাগল পালন ⭐⭐⭐⭐⭐ গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগির রোগব্যাধিঃ I. গবাদি পশুর রোগঃ II. তড়কা বা এন্থ্রাক্সঃ III. ক্ষুরারোগ বা ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজঃ IV. ছাগলের পিপিআর বা গোট প্লেগঃ V. পরজীবী সংক্রমণঃ VI. হাঁস-মুরগির রোগঃ VII. রানীক্ষেতঃ VIII. গামবোরো IX. ডাক প্লেগ X. ডাক কলেরা।

ছবিঃ আক্রান্ত ছাগলের ফিতাকৃমি

হাঁস-মুরগির রোগঃ

রানীক্ষেতঃ

রানীক্ষেত একটি ভাইরাসজনিত সংক্রামক রোগ। ঝিমানো, খাবারে অরুচি, চুনা পাতলা পায়খানা, মুখে শ্বাসপ্রশ্বাস নেওয়া, ঘড়ঘড় শব্দ করা এ রোগের লক্ষণ। খামারের মানসম্মত জীবনিরাপত্তা ও টিকা দিয়ে এ রোগ প্রতিরোধ করা যায়।

ছবিঃ ঝিমানো অবস্থায় মুরগি গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগির রোগব্যাধি। কৃষি মুরগি পালন, হাঁস পালন, ছাগল পালন, গরু পালন মুরগি পালন | হাঁস পালন | ছাগল পালন ⭐⭐⭐⭐⭐ গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগির রোগব্যাধিঃ I. গবাদি পশুর রোগঃ II. তড়কা বা এন্থ্রাক্সঃ III. ক্ষুরারোগ বা ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজঃ IV. ছাগলের পিপিআর বা গোট প্লেগঃ V. পরজীবী সংক্রমণঃ VI. হাঁস-মুরগির রোগঃ VII. রানীক্ষেতঃ VIII. গামবোরো IX. ডাক প্লেগ X. ডাক কলেরা।

ছবিঃ ঝিমানো অবস্থায় মুরগি

গামবোরো

ভাইরাসজনিত ছোঁয়াচে রোগ। ৩-৬ সপ্তাহের মুরগির বাচ্চায় দেখা দেয়। মুরগির পালক উসকো-খুসকো থাকে। মুরগির মধ্যে ঝিমানো ভাব দেখা যায়, দেহে তাপমাত্রা বেড়ে যায়। পা খোঁড়া হয়ে যায়। মুরগির পা ও রানের মাংসের উপর রক্তের ছিটা দেখা যায়। গামবোরো রোগ প্রতিরোধের জন্য টিকা ব্যবহার করতে হবে।

ছবিঃ গামবোরে গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগির রোগব্যাধি। কৃষি মুরগি পালন, হাঁস পালন, ছাগল পালন, গরু পালন মুরগি পালন | হাঁস পালন | ছাগল পালন ⭐⭐⭐⭐⭐ গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগির রোগব্যাধিঃ I. গবাদি পশুর রোগঃ II. তড়কা বা এন্থ্রাক্সঃ III. ক্ষুরারোগ বা ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজঃ IV. ছাগলের পিপিআর বা গোট প্লেগঃ V. পরজীবী সংক্রমণঃ VI. হাঁস-মুরগির রোগঃ VII. রানীক্ষেতঃ VIII. গামবোরো IX. ডাক প্লেগ X. ডাক কলেরা।

ছবিঃ গামবোরে

ডাক প্লেগ

ডাক প্লেগ ভাইরাসজনিত হাঁসের একটি ছোয়াচে রোগ। মৃত্যু হার ৮০-৯০ ভাগ। আক্রান্ত হাঁসের চোখ দিয়ে পানি ঝরে, ঘোলা, নীলাভ ও মাঝে মাঝে সবুজ পায়খানা করে, পা অবশ হয়ে যায় এবং ঝিমায়। রোগ প্রতিরোধে ডাক প্লেগের ভ্যাকসিন দিতে হবে।

ছবিঃ ডাক প্লেগ আক্রান্ত গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগির রোগব্যাধি। কৃষি মুরগি পালন, হাঁস পালন, ছাগল পালন, গরু পালন মুরগি পালন | হাঁস পালন | ছাগল পালন ⭐⭐⭐⭐⭐ গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগির রোগব্যাধিঃ I. গবাদি পশুর রোগঃ II. তড়কা বা এন্থ্রাক্সঃ III. ক্ষুরারোগ বা ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজঃ IV. ছাগলের পিপিআর বা গোট প্লেগঃ V. পরজীবী সংক্রমণঃ VI. হাঁস-মুরগির রোগঃ VII. রানীক্ষেতঃ VIII. গামবোরো IX. ডাক প্লেগ X. ডাক কলেরা।

ছবিঃ ডাক প্লেগ আক্রান্ত

ডাক কলেরা

ডাক কলেরা হাঁসের একটি ব্যক্টেরিয়াজনিত রোগ। ঘনঘন তরল পায়খানা হবে। মৃত্যু হার ৮০-৯০ ভাগ। ডাক কলেরার ভ্যাকসিন দিতে হবে।

ছবিঃ ডাক কলেরা আক্রান্ত গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগির রোগব্যাধি। কৃষি মুরগি পালন, হাঁস পালন, ছাগল পালন, গরু পালন মুরগি পালন | হাঁস পালন | ছাগল পালন ⭐⭐⭐⭐⭐ গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগির রোগব্যাধিঃ I. গবাদি পশুর রোগঃ II. তড়কা বা এন্থ্রাক্সঃ III. ক্ষুরারোগ বা ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজঃ IV. ছাগলের পিপিআর বা গোট প্লেগঃ V. পরজীবী সংক্রমণঃ VI. হাঁস-মুরগির রোগঃ VII. রানীক্ষেতঃ VIII. গামবোরো IX. ডাক প্লেগ X. ডাক কলেরা।

ছবিঃ ডাক কলেরা আক্রান্ত

Copyright Notice

কপি করা নিষিদ্ধ!