বিষয়: গরু খাদ্য/খাবারে পানি, শর্করা, আমিষ ও চর্বি জাতীয় খাদ্য উপাদানের উৎস, কাজ ও অভাব জনিত উপসর্গ।
হ্যাশট্যাগ:#গরু খাদ্য/খাবারে পানি, শর্করা, আমিষ ও চর্বি জাতীয় খাদ্য উপাদানের উৎস, কাজ ও অভাব জনিত উপসর্গ।
পশুর জীবন ধারণের জন্য খাদ্য অত্যাবশ্যক। ক্ষুধা নিবৃত্তির জন্য যেসব দ্রব্য গ্রহণের মাধ্যমে পশুর দেহের ক্ষয়পূরণ, বৃদ্ধিসাধন ও শক্তি উৎপাদিত হয় তাকে গবাদি পশুর খাদ্য বলে।
খাদ্যের কাজ
⇒ পশুর কাজের ধরন ও পরিশ্রমের উপর পশু খাদ্য সরবরাহ প্রয়োজন। অর্থাৎ পশু শক্তি ব্যবহারের প্রয়োজন অনুযায়ী উপযুক্ত পরিমাণ খাদ্যের দরকার পড়ে।
⇒ পশুর মাংস প্রোটিনযুক্ত। তাই উৎকৃষ্ট মানের মাংসের জন্য উপযুক্ত খাদ্য সরবরাহ প্রয়োজন সুষম পশু খাদ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণে খাদ্যের সকল উপাদান থাকে।
⇒ দেহের তাপ সংরক্ষণ, শক্তি উৎপাদন, ক্ষয়পূরণ, রোগ প্রতিরোধ ও সর্বোপরি জীবন ধারণের জন্য খাদ্য অপরিহার্য।
⇒ বাড়ন্ত অবস্থায় পশুর সুষ্ঠুভাবে দৈহিক বৃদ্ধির জন্য খাদ্য আবশ্যক।
⇒ পশুর সময়মত গরম হাওয়া, গর্ভধারণ, বাচ্চা প্রসব তথা পশুর উর্বরতা রক্ষার জন্য সুষম খাদ্যের প্রয়োজন এছাড়া গর্ভবতী পশুর গর্ভস্থ বাচ্চার দৈহিক বৃদ্ধির জন্য খাদ্যের ভূমিকা অতি গুরুত্বপূর্ণ।
⇒ পশুর দুধ উৎপাদনের পরিমাণের উপর পশু খাদ্যের উৎপাদন ও পরিমাণ বৃদ্ধি আবশ্যক। অর্থাৎ গাভীকে খাদ্য সরবরাহের উপর তার দুধের পরিমাণ ও মান নির্ভর করে।
খাদ্যের উপাদান
প্রধানত ৬ প্রকার খাদ্য উপাদান আছে। যথা- ১। পানি, ২। শর্করা, ৩। আমিষ, ৪। চর্বি, ৫। খনিজ পদার্থ এবং ৬। ভিটামিন।
১। পানি (Water)।
⇒ পশু দেহের পানির পরিমাণ শতকরা ৭০-৯০ ভাগ। আর দুধে পানির পরিমাণ শতকরা ৮৭ ভাগ।
⇒ সুতরাং পর্যাপ্ত পরিমাণে পরিষ্কার পানি পশুর জীবন ধারণের জন্য অপরিহার্য উপাদান। পশুর দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ও খাদ্য পরিপাকের জন্য পানি অত্যন্ত প্রয়োজন। মানুষের মত পশুও সব সময় একই পরিমাণ পানি পান করে না।
⇒ পশুর পানি পানের পরিমাণ বৃদ্ধি নির্ভর করে তার পারিপার্শ্বিক তাপমাত্রায় (গ্রীষ্মকালে), অধিক প্রোটিন ও খনিজ ঐ সমৃদ্ধ খাদ্য এবং শুল্ক খাদ্য গ্রহণে। এছাড়া অধিক দুধ উৎপাদনকারী গাভীর পানির চাহিদা অত্যধিক।
⇒ পানির অভাবে উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটে, প্রস্রাবের মাধ্যমে দূষিত পদার্থ নিঃসরণে হরাস পায়, দীর্ঘ সময় ধরে দেহের পানির অভাব ঘটলে রক্তের বেড়ে যায় ফলে দেহের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়।
২। শর্করা (Carbohydrate):
⇒ কার্বন, হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন এর সমন্বয়ে শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট গঠিত হয়।
⇒ সাধারণত শর্করার হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন পানির অনুপাতে থাকে। তাই এই খাদ্য উপাদানের নাম কার্বোহাইড্রোজেন।
⇒ উদ্ভিদের শতকরা প্রায় ৬০-৯০ ভাগ সেলুলোজ যা পশু খেয়ে শর্করা জাতীয় উপাদানের চাহিদা মিটায়।
৩। আমিষ (Protein):
⇒ আমিষ বা প্রোটিন একটি জৈব জটিল যৌগিক। সাধারণত আমিষ কার্বন, হাইড্রোজেন, অক্সিজেন নাইট্রোজেন সমন্বয়ে গঠিত। প্রোটিনের ইউনিটকে অ্যামিনো অ্যাসিড বলা হয়।
৪। চর্বি (Fats):
⇒ চর্বি না স্নেহজ পদার্থ বা লিপিড উদ্ভিদ ও প্রাণী দেহের টিস্যুর একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। চর্বি অদ্রবণীয় কিন্তু জৈব দ্রাবক যেমন ক্লোরফর্ম, বেনজিন ইত্যাদিতে দ্রবণীয়।
পশুর পানি, শর্করা, আমিষ ও চর্বি জাতীয় খাদ্য উপাদানের উৎস, কাজ ও অভাব জনিত উপসর্গ
১। পানিঃ
পানির উৎস: স্বাভাবিক পানি।
পানির অত্যাবশ্যকীয় কাজ: দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ও খাদ্য পরিপাক।
পানির অভাবজনীত উপসর্গ: হজমে ব্যাঘাত, দেহের তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও দুধ উৎপাদনে হরাস।
২। শর্করাঃ
শর্করার উৎস: চিনি, লালীগুড়, গম, চাল, ভুট্টা, ঘাস, খড়।
শর্করার অত্যাবশ্যকীয় কাজ: দেহের তাপ ও শক্তির উৎস।
শর্করার অভাবজনীত উপসর্গ: দেহের ওজন হরাস, দুধ উৎপাদন ও গাভীর কিটোসিস রোগ।
৩। আমিষঃ
আমিষ এর উৎস: শুটকি মাছেরগুড়া, খৈর, ডাল ইত্যাদি।
আমিষের অত্যাবশ্যকীয় কাজ: শরীরেরর বৃদ্ধি ও ক্ষয়পূরণ দেহের প্রতিরোধ শক্তিকে বজায় রাখে।
আমিষের অভাবজনীত উপসর্গ: বাড়ন ব্যাহত, দুর্বণতা, দৈহিক ওজন গাভীর কিটোসিস রোগ।
৪। চর্বিঃ
চর্বির উৎস: মাছের তৈল, উদ্দিজ্জ তেল, মাছের চর্বি।
চর্বির অত্যাবশ্যকীয় কাজ: দেহের তাপ ও শক্তি উৎপাদন।
চর্বির অভাবজনীত উপসর্গ: পানি পান বৃদ্ধি ও দেহে পানি ধরা, দেহের ওজন হরাাস ও বাড়ন ব্যাহত।
৫। ভিটামিনঃ
পরবর্তী পোষ্টে দেখুন,লিংক দেওয়া হলো: https://khamarian.com/গরুর-ভিটামিন/
৬। মিনারেলঃ
পরবর্তী পোষ্টে দেখুন,লিংক দেওয়া হলো: https://khamarian.com/গরুর-মিনারেল/