Skip to content

 

Wait...❤😘 Show love? ⬇⬇⬇

গরু মহিষের বাসস্থান নির্মাণঃ- বিশেষ সতর্কতা, গোয়াল ঘর অন্যান্য বিবেচ্য বিষয়াদি, পশুর অবস্থা ভেদে (4 প্রকার) গোয়াল ঘর তৈরির নিয় : বাছুরের গোয়াল ঘর, আসন্ন প্রসবা গাভীর গোয়াল ঘর, ষাঁড়ের ঘর, গরুর খামার ঘর তৈরির নিয়ম।

গরু মহিষের বাসস্থান নির্মাণঃ- বিশেষ সতর্কতা, গোয়াল ঘর অন্যান্য বিবেচ্য বিষয়াদি, পশুর অবস্থা ভেদে (4 প্রকার) গোয়াল ঘর তৈরির নিয় : বাছুরের গোয়াল ঘর, আসন্ন প্রসবা গাভীর গোয়াল ঘর, ষাঁড়ের ঘর, গরুর খামার ঘর তৈরির নিয়ম।

ভূমিকাঃ

▪ মানুষ যেমন তার কোন একটা নির্দিষ্ট বাসস্থান চায়, গরু মহিষ ছাগল তথা সকল পোষা পশুরও বাসস্থান থাকা অত্যাবশ্যক।

▪ ছাগলের বেলায় দুয়েকটা পালনের জন্যে ঘরের বারিন্দা রান্নাঘর এসব জায়গা বাসস্থান হিসেবে চলতে পারে। কিন্তু গরু মহিষ একটি হলেও তার জন্যে পৃথক বাসস্থান প্রয়োজন।

▪ আবার ছাগল ও গরু-মহিষের ভিন্ন ভিন্ন ধরণের বাসস্থান যেমনি প্রযোজন, তেমনি বাছুর/ছাগল ছানা, ষাড়/বলদ, পোষাতি, দুধেল ইত্যাদি।

▪ অবস্থাভেদেও বাসস্থান পৃথক হওয়া বাঞ্চনীয়। গরু মহিষ ও ছাগলের বাসস্থান সম্বন্ধে নিম্নে আলোচনা করা হলো।

গরু মহিষের বাসস্থানঃ

▪ গরু মহিষের বাসস্থান গোয়াল ঘর হিসেবেই সবার কাছে পরিচিত। আগেই বলা হয়েছে গরু মহিষের গোয়াল ঘর বাছুর বকনা, ষাড়, পোয়াতি এসব অবস্থা বিচারে পৃথক করাই ভালো। ফলে তাদের থাকার ব্যবস্থাটা যেমন আরামদায়ক হবে, যত্ন ও পরিচর্যা নেবার ক্ষেত্রেও সুবিধে হবে।

▪ গরু-মহিষের গোয়াল ঘর নির্মাণের পূর্বে কতিপয় বিশেষ সতর্কতার কথা অবশ্যই বিবেচনায় রাখতে হবে। নতুবা গরু-মহিষের নানাবিধ অসুবিধা হতে পারে।

গোয়াল ঘর নির্মাণে বিশেষ সতর্কতাঃ

  1. হিংস্ৰ বন্য পশু, সাপ যেনো গোয়াল ঘরে প্রবেশের সুযোগ না পায়।
  2. ঘরে কড়া রোদ, ঝড়-বৃষ্টি অত্যাধিক শীতল হাওয়া ইত্যাদি যেনো ঢুকতে না পারে।
  3. ঘরটিতে যেনো পর্যাপ্ত আলো-বাতাস প্রবেশ করার ব্যবস্থা থাকে।
  4. নোংরা আবর্জনা গোবর-চানা ইত্যাদি যেনো সহজেই বের করা যায় যেনো তেমন ব্যবস্থা থাকে।
  5. ঘরে যেনো অসহনীয় দুগন্ধ না থাকে।
  6. ঘরটি যেনো রোগ-জীবাণু মুক্ত রাখা যায়।
  7. ঘরে যেনো যথাযথ খাবারের ও পানি খাবার পাত্র রাখা হয়।

গরুর ঘর নির্মাণে অন্যান্য বিবেচ্য বিষয়াদিঃ

১. পাকা বা ইটের তৈরি গোয়াল ঘর হলে খুবই ভালো হয়। যাঁরা তা না করে কাঁচা অর্থাৎ বাঁশ-কাঠ ও মাটি দিয়ে গোয়াল—ঘর করতে চান তাতেও কোনো অসুবিধে নেই। তবে ঘরখানা যেন খুব মজবুত হয়। জানলা-দরজা সর্বদাই খোলা রাখতে হবে বাইরের আলো-বাতাস অবাধে প্রবেশের জন্য। ঘরের চারদিকেই বড় বড় জানালা রাখতে হবে এবং জানালাগুলো যেন সমান্তরাল-ভাবে অর্থাৎ উত্তর-দক্ষিণে ও পূর্ব-পশ্চিমে সমানভাবে থাকে। গোয়াল ঘরের দরজা থাকবে দুটো। সামনের দিকে একটি, পিছনের দিকে অপরটি।

গোয়াল—ঘরের পচা বা নোংরা আবর্জনা বের করে দিতে হবে নিকাশী নালার মাধ্যমে। বের করে সে-সব জিনিস এমন জায়গায় চালান করে দিতে হবে যেন তার দুর্গন্ধ মানুষের কোনো ক্ষতি করতে না পারে। মাটির নীচে চালান করতে পারলে খুবই ভালো হয়। দূরে কোনো খাল-বিল বা নদী থাকলে সেখানেও চালান করা চলে।

See also  গাভীর দুধ দোহন করার বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি কি? গাভী পালনের পদ্ধতি ও গাভী পালন প্রশিক্ষণ

৩. যদি পাকা গাঁথুনি ও ছাদ-আঁটা গোয়াল-ঘর হয় তাহলে ভাববার কিছু নেই। আর ছাদ না হয়ে টালি, টিন বা খড়-উলুর চাল হলে যথেষ্ট ভাবনার বিষয়। বৃষ্টির সময় দেখতে হয় গরু বা মহিষের গায়ে জল পড়ছে কি না। ঘরের চালের নিচে যে ফাঁক থাকে সেখান দিয়ে সাপ, বিছে, ইঁদুর প্রভৃতি ঢুকেও গরু-মহিষের ক্ষতি করতে পারে। এরও সুব্যবস্থা থাকা দরকার। এবং এক্ষেত্রে শক্ত ও একটু মোটা তারের জাল লাগানোই ভালো। দরজা-জানালাগুলোতেও ঐভাবে জাল লাগাতে হবে।

৪. গরু-মহিষের আরও শত্রু আছে, তারা হ’লো মশা-মাছি! ছোট্ট জীব, কিন্তু ভয়ংকর ক্ষতিকারক শত্রু। এরা কিছুতেই গরু-মহিষকে শান্তিতে থাকতে দেবে না। তাই মশা- মাছি তাড়াবার সাবেকী ব্যবস্থা ধোঁয়া দিতে হবে অথবা আধুনিক বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থার সাহায্য নিতে হবে।

একটা গোয়াল ঘরে অনেকগুলো গরু বা মহিষ অথবা গরু-মহিষ দুই-ই রাখার ব্যবস্থা রাখতে হবে। লাইনবন্দী করে তাদের থাকা ও খাবার পাত্রের ব্যবস্থা করা দরকার। এমন ব্যবস্থা করতে হবে যেন একটি অন্যের ডাবায় মুখ বাড়াতে না পারে। তাহলে দুটোর মধ্যে খুনোখুনি কান্ড বেধে যেতে পারে। একটা গরু-মহিষ থেকে অন্য গরু- মহিষের দূরত্ব এমন হবে যেন একের সাথে অন্যের ছোঁয়াছুঁয়ি না হয়।

৬. বলদ ও গাভীর জন্য আলাদা ঘর থাকা দরকার। তা না হলে মাঝখানে এমন পার্টিশান দিতে হবে যেন ঘর আলাদা মনে হয়। অবশ্য গাভীর ঘরে বাছুরকে রাখা চলতে পারে। গরু পরিচর্যাকারীর অবাধে যাতায়াতের জন্য পথ থাকবে গোয়াল-ঘরের মধ্যে।

৭. খাবার দিতে, জল দিতে বা অন্য কোনো প্রয়োজনে প্রায়ই তাকে গোয়ালে ঢুকতে হবে, সুতরাং তার যাতায়াতের পথ ভালো হওয়া চাই।

৮. সুস্থ গরু-মহিষের ঘরে কোনো রোগী গরু বা মহিষ রাখা কোনোমতেই উচিত নয়। রোগীর ঘর অবশ্যই আলাদা হবে। সদ্য বাছুর হয়েছে এমন গাভীর ঘরও আলাদা হওয়া উচিত।

৯. প্রতিটি গরু-মহিষের গায়ে নম্বর দেওয়া থাকবে-তাদের থাকবার জায়গাতেও থাকবে নম্বর দেওয়া। অবশ্য দু চারটে গরু-মহিষের বেলায় তা দরকার হয় না।

পশুর অবস্থা ভেদে গোয়াল ঘরঃ

১. বাছুরের গোয়াল ঘর

▪ গভন গরুর বিয়োবার জায়গা, ষাঁড়ের থাকবার পৃথক ব্যবস্থা খড়-টড় রাখবার জায়গা, চরে খাবার মাঠ এবং ছোটা-ছুটি করবার আলাদা মাঠের মতো বাছুরদেরও থাকবার জন্য একটা আলাদা জায়গা দিতে হবে।

▪ ঘরটা খোলা মেলা আলো-বাতাস যুক্ত হওয়া চাই। ঘরটার একদিকে খাবার জায়গা থাকা চাই।

▪ বাছুরদের জন্য প্রচুর পরিষ্কার জলের ব্যবস্থা করতে হবে। যদি বড় আকারের খামার হয় তা হলে-(১) তিন মাসের নিচের বাছুর, (২) তিন মাস থেকে ছয় মাস বছরের বাছুর, এবং (৩) ছয় মাসের বড় বাছুরের জন্য আলাদা ঘরের ব্যবস্থা করতে হবে।

See also  ভুট্টা সাইলেজ তৈরির পদ্ধতি? সাইলেজ খাওয়ানোর নিয়ম? কেন ভুট্টা সাইলেজ খাওয়াবেন?

▪ অনেকগুলি বাছুর যখন একসাথে থাকে মা’র সাথে আলাদা হয়ে তখন দুধ খাওয়াবার পর বাছুরগুলিকে কিছুক্ষণের জন্য আলাদা বেঁধে রাখতে হবে। এই সময়টা ওরা পরস্পর গা চাটা-চাটি করে। ফলে ওদের পাকস্থলীতে গোলাকার চুলের বল তৈরি হয়ে ওদের পাকস্থলীর নানা জটিলতার সৃষ্টি করে।

▪ যদি দুধ খাওয়াবার পর কোনো শুকনো খাবার বাছুরের নাক এবং মুখের চারদিকে ছড়িয়ে দেওয়া যায় তা হলে শীঘ্র মা’র দুধ খাওয়া ছেড়ে আলাদা থাকতে পারে।

▪ বাছুরকে সব সময় পরিষ্কার শুকনো স্থানে রাখতে হবে। গোয়াল ঘরে গাভীর পাশে শুকনো খড় বিছিয়ে ছোট বাছুরের বিছানা করে দিতে হবে এবং কয়েক দিন পরপর পুরাতন খড় বদলিয়ে নূতন খড় দিয়ে বিছানা করে দিতে হবে।

▪ শীতের সময় বাছুরকে চট বা কাপড় দিয়ে জড়িয়ে দিতে হবে। কোন অবস্থাতে বাছুরের যাতে ঠান্ডা না লাগে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।

২. দুধেল গরু-মহিষের গোয়াল ঘর

▪ গরু-মহিষ যেগুলো দুধ দেয় তাদের একত্রে বর্ণনার সুবিধার্থে গাভী বলা যেতে পারে। গাভীর বাসস্থান সামান্য উচু শুকনো জায়গায় তৈরি করতে হয়।

▪ প্রতিটি গরুর জন্য ৪-৬ বর্গমিটার আয়তনের ঘরের মেঝের প্রয়োজন।

▪ গরুর ঘরে যাতে প্রচুর আলো বাতাস প্রবেশ করতে পারে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। ঘর দক্ষিনমুখী হলে ভালো হয়।

▪ ঝড় বৃষ্টি, রৌদ্র, অতিরিক্ত ঠান্ডা ও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া থেকে পশুকে রক্ষা করতে হবে।

▪ আমাদের দেশে চারন ভূমির অভাব। তাই গাভীকে গৃহে পালন করা যায়। বাঁশের খুঁটি, শন, খড়, টিন, বা পাতার চালা দিয়ে গোয়াল ঘর তৈরি করা যায়। টিনের চালার নিচে বাঁশের সিলিং দিলে ঘর ঠান্ডা থাকে ৷ গোয়াল ঘরের মেঝে সেমিপাকা বা ইট বিছিয়ে তৈরি করতে হবে।

▪ ঘরের এক পাশে বাছুর রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। গোয়াল ঘরে খাবার এর জন্য চাড়ির ব্যবস্থা ও পানি সরবরাহ করতে হবে।

▪ গরুর গোবর, মূত্র ও আবর্জনা পরিষ্কার করে দূরে গর্তে রাখতে হবে। এ গুলো পরে সার হিসাবে জমিতে ব্যবহার করা যায়।

▪ বর্তমানে গোয়াল ঘরের আবর্জনা থেকে বায়োগ্যাস তৈরি করে জ্বালানী হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

▪ ঘরে মাঝে মাঝে জীবাণু নাশক ঔষধ যেমন আইওসান, ফিনাইল বা ডেটল ব্যবহার করতে হবে। ঘরটি যাতে দুর্গন্ধমুক্ত ও মশা মাছির উপদ্রবহীন থাকে এবং গাভীর জন্য আরামদায়ক হয় সেদিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে।

▪ গাভীর ঘর সবসময় স্বাস্থ্য সম্মত রাখতে হবে। ঘর শুকনো পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। নিয়মিত গোবর-মূত্র ও উচ্ছিষ্ট খাবার সরিয়ে নিতে হবে।

▪ খেয়াল রাখতে হবে ঘর যেন স্যাঁতস্যাঁতে না থাকে। কেননা স্যাঁতস্যাঁত অবস্থায় গরু সহজেই রোগাক্রান্ত হতে পারে।

See also  গরু খাদ্য/খাবারে পানি, শর্করা, আমিষ ও চর্বি জাতীয় খাদ্য উপাদানের উৎস, কাজ ও অভাব জনিত উপসর্গ

▪ গরমের দিনে গাভীকে প্রতিদিন গোসল ও শীতের দিনে শুকনো খড়ের বিছানা এবং গায়ে চট দিয়ে ঢেকে দিতে হবে।

▪ দুধালো গাভী নিয়মিত দোহন করতে হবে এবং দুধ দোহানের পূর্বে ওলান পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে।

▪ গাভীর গতিবিধি সর্বদাই কাছাকাছি থেকে পর্যবেক্ষন করতে হবে। কোন রকম অসুবিধা দেখা দিলে সাথে সাথে পশু চিকিৎসক এর স্মরণাপন্ন হতে হবে।

৩. ষাঁড়ের ঘর

▪ প্রজননকাজের জন্য সংরক্ষিত ষাঁড় কিছুটা হিংস্র প্রকৃতির হয়ে থাকে। কোনো গাভী ষাঁড়ের কাছ দিয়ে গেলে তাকে আয়ত্তে রাখা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। সাধারণ দরজা বা বেড়া ভেঙে স্ত্রী- পশুর পিছু পিছু ছুটতে পারে। এতে অনেকে আক্রমণের শিকার হতে পারে। এসব বিপত্তি পরিহারের জন্য ষাঁড় ও ষাঁড়ের ঘর একটা নিরিবিলি আবদ্ধ জায়গায় রাখতে হয়।

▪ এজন্য ১৩ মিটার × ১৩ মিটার (প্রায় ৪০x৪০) ফুট জায়গায় এক কোণে ৩ মিঃ × ৩ মিঃ (প্রায় ১০×১০ ফুট) একটা ঘর রাখতে হয়। এতে ষাঁড় এ ঘরের মধ্যে যেমন খুশিমতো ঘোরাফেরা করতে পারবে তেমনি সামনের খোলা জায়গায় ইচ্ছামতো চলাফেরা করতে পারে।

▪ খোলা জায়গাটি ঘেরবেড়া বা দেয়াল দিয়ে মজবুত করে তৈরি করতে হবে, এর একটি মজবুত থাকবে। ষাঁড়ের প্রজননশক্তি ও স্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য ষাঁড়ের ঘর ও সামনের খোলা জায়গায় পর্যাপ্ত খাদ্য রাখতে হবে।

৪. আসন্ন প্রসবা গাভীর ঘর

▪ প্রসবের ১ মাস থেকে ১৫ দিন আগে থেকে গাভীকে আলাদা সরিয়ে রাখতে হয়। প্রতিটি গাভীর জন্য এ ঘর কমপক্ষে ৬ বর্গমিটার (প্রায় ৬৪ বর্গফুট) হওয়া চাই। ঘরটি হতে হবে আলো-বাতাসপূর্ণ। এ ঘরের ভেতর গাভীকে বেঁধে রাখার দরকার হয় না। ঘরে পানির গামলা ও খাবারের গামলা থাকা চাই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Copyright Notice

কপি করা নিষিদ্ধ!