ভূমিকাঃ
▪ বাংলাদেশের অর্থনীতিতে পশু তথা গরু, মহিষ, ছাগল ইত্যাদির গুরুত্ব অপরিসীম। তা সত্ত্বেও আমাদের দেশে উন্নত জাতের পশুর খুবই অভাব।
▪ গরু, মহিষ, ছাগল ইত্যাদির উন্নত কোন বৈশিষ্ট্য আমাদের পশু সম্পদের সমৃদ্ধিতে আশানুরূপ প্রভাব ফেলতে পারেনি। বেসরকারী পর্যায়ে এ বিষয়ে যতটা গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন তা দেয়া হয়নি বিধায় এমনটি ঘটেছে। যেনো তেনো মানের ষাড় দিয়ে গাভীর গর্ভ সঞ্চার করানের ফলে উন্নত জাতের পশু সৃষ্টির অন্তরায় সৃষ্টি হয়।
▪ বর্তমানে সরকারী ভাবে উন্নত জাতের ষাড় আমদানী করায় তাদের বীর্য দিয়ে দেশি জাতের গাভীর গর্ভ সঞ্চারের মাধ্যমে জাত উন্নয়নের অনেকটা সফলতা দেখা যাচ্ছে। উন্নত বিদেশি জাতের ও দেশি জাতের মিলনে উন্নত সংকর জাতের পশুর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
▪ জাত উন্নয়ন পদ্ধতির মাধ্যমে অনুন্নত পশু থেকে উন্নত জাতের পশু সৃষ্টি করা হয়ে থাকে।
▪ গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া, কুকুর তথা যেকোন পশুকে উন্নত জাতে রূপান্তরিত করা চলে। জাত উন্নয়নের প্রক্রিয়ায় হাঁস-মুরগি কিম্বা যেকোন পাখীর ক্ষেত্রেও জাত উন্নয়ন করা সম্ভব।
▪ ধরা যাক কোন গরু বা মহিষ বা ছাগল দুধ কম দেয় অথবা বেশি পরিশ্রম করতে পারে না অথবা কম মাংসের উৎপাদন হয়। এমনি নিম্ন জাতের কোন পশুই পালনকারীর কাম্য হতে পারেনা।
▪ পালনকারীর উদ্দেশ্য থাকে বেশি দুধ পাওয়া কিম্বা বেশি মাংস পাওয়া অথবা ঐ পশু থেকে বেশি কায়িক শ্রমের কাজ আদায় করা। আর এহেন উন্নত বৈশিষ্ট্যের গরু, মহিষ, ছাগল ইত্যাদি সৃষ্টি সম্ভব হয় জাত উন্নয়ন পদ্ধতি অনুসরনের মাধ্যমে।
▪ অতীতে উন্নত জাতের সাথে পাল খাইয়ে জাত উন্নয়নের কাজ করা হতো। তাতে অনেক সময় ষাড়ের জন্যে পশু পালনকারীকে সমস্যায় পড়তে হতো। কোন কোন সময় নিকটে ষাড় পাওয়া যেতোনা, কোন কোন পাওয়া গেলেও তা ভালো জাতের হতোনা। আবার যদি পাওয়া যেতো তাতে একটি ষাড় দিয়ে মাত্র একটি গাভীকে পাল খাওয়ানো যেতো। অতিরিক্ত বীর্যের অপচয় রোধ সম্ভব ছিলো না।
▪ বর্তমানে বিজ্ঞান সম্মত উপায়ে একটি ষাড়ের বীর্য দিয়ে কয়েকটি গাভীর গর্ভ সঞ্চারণ সম্ভব হচ্ছে। তাই পশুর এভাবে কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে একটা বড় রকম অপচয় রোধ করা সম্ভব হয়েছে।
▪ কেননা উন্নত জাতের ষাড়ের বীর্য দুষ্প্রাপ্য। বিজ্ঞানের বদৌলতে উন্নত জাতের ষাড় থেকে সংগৃহীত বীর্য অনেক দিন সংরক্ষন করা যায় এবং যেকোন সময় প্রয়োজন হলে তা ব্যবহার করা যায়।
▪ সুতরাং কৃত্রিম প্রজনন পদ্ধতিতে পশুর জাত উন্নয়নের কাজটি বহুলাংশে সহজতর হয়ে গেছে।
▪ সরকারের পশু প্রজনন কেন্দ্রে যেকোন সময় উন্নত জাতের ষাড়ের বীর্য পাওয়া যায়। তবে আপনার চাহিদা ও পছন্দের কথা সরকারের পশু সম্পদ বিভাগের কর্মকর্তাকে জানাতে হবে। দুধের কিম্বা মাংসের কিম্বা শ্রমের কোন দিক থেকে আপনার পশুর জাত উন্নয়ন করাতে চান।
গরু মহিষের জাত উন্নয়নের মূলনীতিঃ
একজন পশুপালনকারী কোন ধরনের জাত উন্নয়ন চান তার কথা ভেবে জাত উন্নয়নের মূলনীতি নির্ধারণ করতে হবে। অনুসরণ করার মতো কয়েকটি মূলনীতি দেয়া হলো যার যেকোন একটিকে অনুসরণ করা যেতে পারে।
১. নিম্ন জাত থেকে উন্নত জাত উন্নয়ন
▪ একজন পালনকারীর গাভী বা মহিষ পশুটি যদি নিন্মজাতের এবং দুধ কম দেয়। এখানে তার মূল উদ্দেশ্য দুধ বাড়ানো। উন্নয়ন মানে হলো ঐ গাভীটির বা মহিষটির পরবর্তীতে দুধ বেশি দেয় এমন জাতে উন্নীত করা।
▪ যে কোন উপায়ে ছাগল বা মহিষ বা গাভীটির পরবর্তী জাতের দুধ বাড়ানোই হলো মূল কথা এক্ষেত্রে যে ষাড়ের বীর্য গাভীর জরায়ুতে প্রবেশ করানো হবে সেই ষাড়টির মা বেশি দুধ দেয়া জাত কিনা তা দেখতে হবে। যদি তাই হয় তবে যে বাছুরের জন্ম হবে তা পূর্ণ গাভী হলে অবশ্যই দুধ বেশি দেবে। এ ক্ষেত্রে ষাড়ের বংশ পরিচয় জানার তেমন দরকার নেই। শুধু জানা যাবে বাছুরের বাপ জার্সি বা ফ্রিসিয়ান।
▪ পালনকারীকে পশু পালনের সময় সাধারণ নীতি মেনেই পালন করতে হবে। বাছুরটি যদি জার্সির ষাড় থেকে হয়ে থাকে তবে তাকে যে নিয়মে জার্সি জাত পালিত হয় সেই নিয়ম মেনে পালন করতে হবে। জাত উন্নয়নের গোড়ার দিকে গাভীকে হরিয়ানা ষাড় দিয়ে পাল খাওয়ানো হতো এবং বাছুরটি হরিয়ানা হিসিবেই পরিচিত হতো।
২. আত্মীয় দ্বারা জাত উন্নয়ন
▪ ধরা যাক পরিচিত একটি ষাড় বা পাঠা দিয়ে পাল খাইয়ে একটি উন্নত জাত সৃষ্টি করা হয়েছে। পালনকারীর এবার উদ্দেশ্য হলো উন্নত জাতটির আরো উন্নয়ন সাধন করা। এক্ষেত্রে জানা শোনা আত্মীয় ষাড় দিয়ে পাল খাওয়ানোই ভালো। কেননা ষাড়টির জাত ভালো বলে জানা আছে এবং সেই বংশের অন্য ষাড়ও ভালো হবার সম্ভাবনাই বেশি।
▪ অন্য বংশের স্থলে আত্মীয় দ্বারা পাল খাওয়ালে বংশের ধারাটি বজায় থাকে।
▪ বর্তমানে পাল খাওয়ানোর বদলে বীর্য সংগ্রহ করে গাভীর জরায়ুতে প্রবেশ করানো হয়। এক্ষেত্রে বংশের ধারা বজায় থাকে বলে যদি বগুন থাকে তাও পরবর্তী পশুতে দেখা যাবে।
▪ বংশের ধারায় পূর্ববর্তী পশুতে দোষ যেমন বদরাগ, জেদ, কঠিন রোগ ইত্যাদি আছে কিনা তা পরখ করে বীর্য সংগ্রহ করা বাঞ্চনীয়।
৩. দুর সম্পর্কের আত্মীয় দ্বারা জাত উন্নয়ন
▪ জাত উন্নয়নের এই মূলনীতি প্রায় ২নং মূলনীতির মতোই। কেবল সম্পর্কটা একটু দূরের অর্থাৎ সৎ ভাই-বোন, চাচাতো বা খালাতো ভাই বোনের মধ্যে পাল খাওয়ানো।
▪ এখানে পিতৃ ও মাতৃকুলের মধ্যে বংশের ধারা সীমাবদ্ধ থাকে। এভাবে সৃষ্ট জাতে পিতা মাত উভয়কুলের দোষ গুন বজায় থাকে।
▪ তাই উন্নত জাত থেকে বাছুর হলে জাত উন্নয়ন যেমন সম্ভব তেমনি পূর্বজাত উন্নত না হলে উল্টোও হতে পারে। বাছুরটা বকনা হলে পূর্ণ বয়স্ক গাভী হলে দুধ বেশি দেবে এবং তা এঁড়ে হলে পূর্ণ বয়স্ক ষাড় হয়ে পরিশ্রমী হবে এটাই স্বাভাবিক।
▪ ফসল আবাদে ভালো জমি আর ভালো সার কিম্বা যত্ন হলেই হয় না, ভালো বীজের প্রয়োজন হয়। আর পশু সম্পদ উন্নয়নের জন্যে প্রয়োজন ভালো জাতের ষাড়। গরু মহিষ বা ছাগল পালনকারীকে একথাটি মনে রেখেই নতুন জাতের বিষয়ে এগুতে হবে।
৪. ভাই দ্বারা জাত উন্নয়ন
▪ পশুর জাত উন্নয়নে এক্ষেত্রে ভাই দ্বারা পাল খাওয়ানো হয়। ঘরে ভালো জাতের ষাড় থাকলেই তা করা হয়। এক্ষেত্রে বংশের দোষ গুণের ধারা বজায় থাকে।
▪ ভাই বোনের প্রজননে জাতের ধারা বজায় থাকলেও বাস্তবে জাতের উন্নয়নের কাজটি কিন্তু হলো না।
▪ ঝামেলা এড়াতে কিম্বা পয়সা বাঁচাতে ভাই বোনের প্রজননে গরুটির বা মহিষটির বা ছাগলটির জাতের ধারাটি একই স্থানে স্থবির হয়েই রইল। এটা কারো কাছে জাত উন্নয়ন বলে চিহ্নিত হতে পারে না।
▪ সর্বশেষ জেনেটিক্যাল চিন্তাধারা অনুযায়ী এভাবে ভাই বোনের প্রজননে সৃষ্টিকৃত নতুন জাতের নানান জটিলতা দেখা দেয়াও অস্বাভাবিক নয়। মাছ আর মানবকূলে এ ধরনের প্রজননে অন্তপ্রজনন নামে সাংঘাতিক বিরূপ প্রতিক্রিয়া সবারই জানা।
৫. অন্য জাত দ্বারা জাত উন্নয়ন
পশুর জাত উন্নয়নের এই মূলনীতিটি নিঃসন্দেহে ভালো। এখানে উন্নত জাতের ষাড়ের সাথে দেশি গাভীর বা উন্নত জাতের পাঠার সাথে অনুন্নত ছাগলের বিকল্প ঘটানো যায়। উন্নতর এই নিয়মে পশু নির্বাচন করা হয় নিম্নোক্ত ভাবে।
- ১. দেশি ষাড় ও বিদেশি গাভী
- ২. দেশি গাভী ও বিদেশি ষাড়
- ৩. একই জাতের বিদেশি ষাড় ও গাভী
- ৪. ভিন্ন জাতের বিদেশি ষাড় ও গাভী।
উপরোক্ত (১) এর নির্বাচনে কিছুটা উন্নয়ন হবে এবং (২) এর নির্বাচনে যথেষ্ট উন্নয়ন আশা করা যাবে। অন্যদিকে (৩) ও (৪) নং নির্বাচনে পূর্ব জাতের দোষ গুণ দুটোই নতুন সৃষ্ট জাতে বজায় থাকার সম্ভাবনা।
জার্সি গাভী ও ফ্রিসিয়ান ষাড় হলে উভয়ের দোষ গুণ পাবে। কিন্তু জার্সি ষাড় ও জার্সি গাভী হলে পরবর্তী জাতে কেবল জার্সির দোষ গুণই পাওয়া যাবে।
৬. কর্মঠ ষাড় দ্বারা জাত উন্নয়ন
▪ এই মূলনীতিতে গাভী যাই হোকনা কেনো কর্মঠ ষাড় দ্বারা পাল খাওয়ানোর কথাই ভাবেন সকল পশুপালনকারী। জাত বিচার না করে বিচার করা হয় ষাড়টি কর্মঠ কিনা। দেশি হোক আর বিদেশি হোক কর্মঠ ষাড় হলেই হলো। এখানে ভালো মন্দ দুটোই হতে পারে।
▪ ধরা যাক ষাড়টি কর্মঠ কিন্তু বংশে রোগ বা বদগুণ আছে। এখানে পরবর্তী জাতে ঐ রোগ বা বদগুণের ধারাটি বজায় থাকবে। ফলে জাত উন্নয়ন হবেনা বরং ক্ষতির সম্ভাবনাই বেশি থাকবে।
গরু মহিষের জাত উন্নয়নের পদ্ধতিঃ
জাত উন্নয়নের বর্ধিত ৬টি মূলনীতির বাস্তবায়নের জন্যে কিছু অত্যাবশ্যক পদ্ধতি অনুসরণ করার দরকার হবে। কেননা একটা সুনির্ধারিত পদ্ধতিতে কাজ করেই সম্ভব পশুর জাত উন্নয়ন নিশ্চিত করা। পদ্ধতি সমূহ যথাক্রমে—
- ১. তির্যক পদ্ধতি
- ২. প্রচলিত পদ্ধতি এবং
- ৩. হাইব্রিড পদ্ধতি।
১. তির্যক পদ্ধতি
▪ জাত উন্নয়নে তির্যক পদ্ধতিটি খুবই উন্নত, কার্যকর এবং বিজ্ঞানসম্মত। যারা খামার স্থাপন করে বৃহৎ আকারে পশুপালন করেন তারা সহজে এই পদ্ধতি অনুসরন করতে পারেন। তবে ছোটখাট পশুপালনকারীর পক্ষে এটা খুবই কষ্টকর। কেননা পদ্ধতিটি সময় ও ব্যয়সাধ্য এবং ঝামেলাও খুব বেশি।
▪ তির্যক পদ্ধতিতে কয়েক বছরের মধ্যে গাভী বা ষাড় বেশ উন্নত জাতে পরিনত হয়। নতুন সৃষ্ট জাতের দুধ বেশি হবে, পশুটি পরিশ্রমি হবে এবং গুনাগুণও উন্নত ধরণের হবে।
ধরা যাক-
▪ প্রথমে একটি জার্সি গাভীর সাথে ফ্রিসিয়ান ষাড়ের মিলন ঘটানো হলো। ফলে যে বাছুর বকনা বা এঁড়ে যাই হোক সেটি পূবর্তন দুটি উন্নত জাতের গুণই পাচ্ছে। এই বাছুরটিকে X দ্বারা চিহ্নিত করা হ’লো। এখন তাহলে X -বাছুরের দেহে যে রক্ত বইছে তার শতকরা ৫০ ভাগ জার্সির ও শতকরা ৫০ ভাগ ফ্রিসিয়ান।
▪ দ্বিতীয় পর্যায়ে X-গাভীর সাথে একটি ফ্রিসিয়ান ষাঁড়ের মিলন ঘটানো হলো। ফলে যে বাছুর হ’লো তাকে Y দ্বারা চিহ্নিত করা হ’লো। এখন তাহলে Y-বাছুরের দেহে বইছে শতকরা ৭৫ ভাগ ফ্রিসিয়ান আর শতকরা ২৫ ভাগ জার্সির রক্ত।
▪ এবার তৃতীয় পর্যায়ে Y-গাভীর সাথে জার্সি ষাঁড়ের মিলন ঘটানো হলো। এর ফলে যে বাছুর হবে তাকে Z দ্বারা চিহ্নিত করা হ’লো। এই Z-এর দেহে এখন বইছে ৩৭.৫ ভাগ ফ্রিসিয়ান ও ৬২.৫ ভাগ জার্সির রক্ত।
▪ এই পদ্ধতিতে প্রতিটি পর্যায়ে কিছু কিছু উন্নতি হবে। এইভাবে এক সময় দেখা যাবে চরম উন্নতিতে পৌঁছে গেছে। এখন ষাঁড় বা গাভীটি খুবই উন্নত জাতের হবে।
▪ এখানে যে গাভীর সাথে যে ষাঁড়ের মিলন ঘটানো হচ্ছে পরিচর্যার বেলাতেও সেই গাভী বা ষাঁড়ের পরিচর্যা- পদ্ধতি প্রয়োগ করতে হবে।
▪ মনে রাখতে হবে, দুই জাতের মিলনে তৈরি হচ্ছে একটা নতুন জাত। সুতরাং তার টিকে থাকার ক্ষমতা দুই জাতের ক্ষমতার অর্ধেক করে। অর্থাৎ জার্সির অর্ধেক ও ফ্রিসিয়ানের অর্ধেক ক্ষমতা সে পাবে। এক্ষেত্রে কেবল জার্সির পালন-পদ্ধতি মানলেই চলবে না, কিম্বা কেবল ফ্রিসিয়ান পালন-পদ্ধতি মানলেও চলবে না।
২. প্রচলিত পদ্ধতি
▪ আগে বিদেশি ষাঁড় দিয়ে দেশি গাভীকে পাল খাইয়ে উন্নত করা হতো। পরে পালনকারীরা উন্নতি দেখে এ ব্যাপারে যথেষ্ট উদ্যোগ নেন। তখন তাঁরা ভেবে দেখলেন, বিদেশি ষাঁড় দিয়ে যদি এমন উন্নত করা চলে তাহলে আরও উন্নত জাতের ষাঁড় দিয়ে পাল খাওয়ালে আরও উন্নত জাত সৃষ্টি করা চলতে পারে। এরই ফলে শুরু হয়ে গেল গো-পালনের এক নতুন অধ্যায়।
▪ বিদেশ থেকে এলো ফ্রিসিয়ান, জার্সি এবং আরও অন্যান্য জাতের গরু।
▪ নতুনভাবে পাল খাওয়ানো চললো। কখনো বিদেশি ষাঁড় ও দেশি গাভী, আবার কখনো বা বিদেশি গাভী ও দেশি ষাঁড় ৷
▪ পালনকারীরা লক্ষ্য করলেন-দুধ কখনো পাতলা হচ্ছে, আবার কখনো হচ্ছে গাঢ়। এর কারণও জানা গেল বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি প্রয়োগ করে। দেখা গেল, স্নেহ পদার্থ কম থাকলেই দুধ পাতলা হয়। এখন পরীক্ষা করে পাওয়া গেল কোন জাতের গাভীর দুধে স্নেহ পদার্থ বেশি আছে তা জানা গেল।
▪ একটা কথা মনে রাখতে হবে কেবল দুধের জন্যই গরু পালন করা হয় না তার সাথে চাই আরও কিছু। যেমন-মাংস চাই, পরিশ্রমী ষাঁড় চাই, তারা এদেশের আবহাওয়াাা টিকে থাকতে পারে। তাদের দেহে সে-শক্তিও থাকা চাই।
▪ এখানে গরু পালন করার সময় তার দেহে যাতে এদেশীয় রক্ত শতকরা ৫০ ভাগ থাকে তা দেখতে হয়। কারণ রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং এদেশে টিকে থাকার ক্ষমতা তো নতুন প্রজন্মের মধ্যে থাকা চাই। সেই সাথে দেখতে হবে দুধে যেন যথেষ্ট পরিমাণ স্নেহ পদার্থ থাকে।
৩. হাইব্রিড পদ্ধতি
▪ এই পদ্ধতিতে পাল খাওয়ানো হয় দুটো উন্নত জাতের গাভী ও ষাঁড়ের মধ্যে। এতে দুধ, মাংস, পশম এবং পরিশ্রমী ষাঁড় সবই পাওয়া যাবে। দেহগত সৌষ্ঠবও খুব ভালো হবে। দেহ যেমনি লম্বা-চওড়া হবে তেমনি তাদের স্বাস্থ্যও রীতিমতো ভালো হবে।
▪ হাইব্রিড পদ্ধতিতে গরু পালন করা রীতিমতো ব্যয়সাধ্য ব্যাপার। তাছাড়া এর জন্যে তদ্বির-তদারকিও করতে হয় আলাদাভাবে।