Skip to content

 

গরু মোটাতাজাকরণ

গরু মোটাতাজাকরণ পদ্ধতি pdf আধুনিক পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজাকরণ ও চিকিৎসা মোটাতাজাকরণ গরু ষাড় গরু মোটাতাজা করার নিয়ম গরু মোটাতাজা করার উপায়

গরু মোটাতাজাকরণ বা বীফ ফ্যাটেনিং এর জন্য কিছু সংখ্যক গরু নির্বাচন করে খামার ব্যাবস্থাপনায় সুষম খাবার সরবরাহ করে একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে গরুর শরীরে অধিক পরিমাণ মাংস/চর্বি বৃদ্ধি পূর্বক দেশের আমিষের চাহিদা পূরণ ও বাজারজাত করে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়াই বীফ ফ্যাটেনিং এর মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।

গরু মোটাতাজাকরণ পদ্ধতি pdf  আধুনিক পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজাকরণ ও চিকিৎসা  মোটাতাজাকরণ গরু  ষাড় গরু মোটাতাজা করার নিয়ম  গরু মোটাতাজা করার উপায়  গরু মোটাতাজা করার নিয়ম  গরু মোটাতাজা করার পদ্ধতি

গরু মোটাতাজাকরণ এর জন্য ৫টি ধাপ রয়েছে :

১. গরু নির্বাচনে সঠিক গরু ক্রয়/বাছাই।

২. কৃমি মুক্তকরণ।

৩. স্বাস্থ্যসম্মত বাসস্থান নির্মাণ।

৪. স্বাস্থ্য ব্যাবস্থাপনা।

৫. প্রাণি পুষ্টি/খাদ্য ব্যাবস্থাপনা।

গরু মোটাতাজাকরণ গরুর বয়স :

গরু মোটাতাজা বা বীফ ফ্যাটেনিং কর্মসূচীর জন্য ২.৫ বছর থেকে ৪ বছরের এঁড়ে/ষাড় গরু ক্রয় করা ৩

প্রয়োজন। কেননা ১.৫ বছর থেকে ২ বছরের এঁড়ে বাছুর প্রচুর খেতে পারে না এবং খেলেও হজম করতে

পারে না। তাছাড়া এ বয়সের ষাঁড় গরুর শরীর ঠিকমত বাড়তে ৫/৬ মাস সময় লেগে যায়। তাই গরু মোটাতাজা করার জন্য ২ বছরের উর্দ্ধে এঁড়ে/ষাড় গরু ক্রয় করাই লাভজনক।

গরু মোটাতাজাকরণ গরুর জাত নির্বাচন :

♦ কোরবানীর হাটে দেশী জাতের মোটাতাজা গরুর চাহিদা বেশী থাকে। তাই সেদিক বিবেচনায় মোটাতাজা

করার জন্য দেশী জাতের গরু নির্বাচন করাই লাভজনক।

♦ তবে মোটাতাজাকরণে অল্প সময়ে দৈহিক বৃদ্ধি ও মাংস উৎপাদনের জন্য দেশী জাতের গরুর চেয়ে

সংকর জাতের গরুর উৎপাদন বেশী হয়। তাই মোটাতাজা গরু কোরবানীর হাটে বিক্রির লক্ষ্য না

থাকলে সংকর জাতের গরু নির্বাচন করাই লাভজনক।

See also  গরুর টিকা দেওয়ার নিয়ম? ছাগলের টিকা দেওয়ার নিয়ম? পদ্ধতি ও সতর্কতাগুলো কি কি?

♦ আমাদের দেশে এখনও মাংসের জন্য পৃথক কোন গরুর জাত নাই। তবে মাংস উৎপাদনের জন্য

পরিক্ষামূলক হিসাবে ব্রাহমা জাতের গরু পালনের উদ্যোগ গ্রহন করা হচ্ছে। উক্ত জাতের গরু না

পাওয়া পর্যন্তমোটাতাজা করার জন্য বর্তমানে উন্নত দেশী। শাহীওয়াল সংকর ও ফ্রিজিয়ান সংকর

জাতের গরু নির্বাচন করা যেতে পারে।

দেশী/সংকর জাতের গরু মোটাতাজাকরণ গরু নির্বাচনে গরুর শারীরিক গঠন ও আকৃতি :

♦ গরুর চামড়া। লেজ। শিং। কান বা শরীরের অন্য কোন অংশে কোন প্রকার খুঁত থাকা যাবে না।

♦ গরুর দৈহিক আকার বর্গাকার হবে এবং মোটামুটি বড় হবে।

♦ গরুর গায়ের চামড়া ঢিলা হবে।

♦ শরীরের হাড়গুলো আনুপাতিক হারে মোটা হবে।

♦ মাথা চওড়া। ঘাড় চওড়া ও খাটো হবে।

♦ কপাল প্রশস্ত হবে।

♦ বুক প্রশস্ত ও বি¯তৃত হতে হবে।

♦ শিং খাটো ও মোটা হবে।

♦ পাগুলো খাটো ও সোজাসুজিভাবে শরীরের সহিত যুক্ত হবে।

♦ পিছনের অংশ ও পিঠ চওড়া এবং অনেকটা সমতল হবে।

♦ কোমরের দুই পার্শ্ব প্রশস্ত ও পুরু হবে।

♦ পিছনের অংশ ও পিঠ চওড়া এবং লোম খাটো ও মিলানো থাকবে।

♦ লেজ খাটো হতে হবে। অর্থাৎ বেশী লম্বা হবে না।

♦  ক্রয়কৃত গরু অপুষ্ট থাকলে অসুবিধা নেই। কিšদপশুটিকে শারীরিক রোগ বা ক্রটি মুক্ত থাকতে হবে। যেমন পশুটি খোঁড়া। গায়ে ঘা। অন্ধ। শরীরে টিউমার। ইত্যাদি হবে না।

মোটাতাজাকরণের জন্য নির্বাচিত পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও চিকিৎসা :

♦  নির্বাচিত গরু কোন রোগে আক্রান্তকিনা তা একজন ভেটেরিনারি ডাক্তার দ্বারা পরীক্ষা করাতে হবে

এবং পশুর কোন রোগ ব্যাধি থাকলে চিকিৎসা করাতে হবে।

♦  আমাদের দেশের প্রায় ১০০% পশু কৃমিতে আক্রান্ত হয়। তাই পশু ক্রয়ের পর বাড়িতে নিয়ে প্রথম কাজটি

হবে গরুকে কৃমি মুক্তকরণ। এ জন্য ভেটেরিনারি ডাক্তারের পরামর্শ মতে ক্রয়কৃত গরুসহ পালের সকল ৪

গরুকে এক সাথে কৃমি নাশক ঔষধ সেবন করাতে হবে এবং একইভাবে কৃমি নাশক ঔষধ ২য় মাত্রা (বুষ্টার-ডোজ) সেবন করাতে হবে।

See also  গরু-মহিষের খাদ্যঃ- গরু-মহিষের দানাদার খাদ্যের মিশ্রণ (৪টি ফর্মুলা) + ইউ এম এস খাদ্য হিসেবে সরবরাহ ও ইউ এম এস তৈরির পদ্ধতি।

গরু মোটাতাজাকরণের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত বাসস্থান নির্মাণ

স্বাস্থ্যসম্মত বাসস্থান সম্পর্কে যে সকল বিষয়ে আলোচনা করতে হবে :

গোয়াল ঘর নির্মাণের জন্য উঁচু সমতল ভূমি যেখানে বৃষ্টির পানি জমে না এবং পানি নিষ্কাষণের ব্যাবস্থা আছে এমন

স্থান নির্বাচন করতে হবে।

নিম্নলিখিত বিষয়গুলি বিবেচনা করে গোয়াল ঘর নির্মাণ করতে হবে :

♦  প্রণির স্বাস্থ্য ও আরাম।

♦  সহজ প্রাপ্য ণির্মান সামগ্রী ব্যবহার।

♦  উপযুক্ত স্বাস্থ্যসম্মত নিয়মাবলী পালন করার সুবিধা।

গরুর বাসস্থান (গোয়ালঘর) ণির্মানে যে সকল বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে।

♦ গোয়লঘর সাধারণত দক্ষিণমুখী হওয়া ভাল।

♦ গোয়ালঘর সমতল ভূমি থেকে এক ফুট উঁচুতে শুকনা স্থানে  হতে হবে।

♦ মেঝে হালকা ঢালু থাকবে যাতে সহজেই গরুর চনা কিনারে চলে যায় এবং ঘর শুকনো থাকে।

♦ এক চালা ঘরের উচ্চতা সধারণত ৮-১০ ফুট এবং দু’চালা ঘরে মধ্যবর্তী উভয় চালের শীর্ষদেশ ১৪ ফুট এবং

ঢালু অংশের উচ্চতা ৭ ফুট হওয়া প্রয়োজন।

♦ ঘরের চাল এস্বেস্টস দ্বারা নির্মাণ করা হলে ভাল হয়। এতে ঘর শীত/গরম উভয় ক্ষেত্র গরুর বসবাসের

জন্য আরামদায়ক হবে।

♦ ঘরের ভিতরে একটি বয়স্ক গরুর জন্য অন্তত ৩ ফুট প্রস্থ ও ৫ ফুট দৈর্ঘ্য জায়গা প্রয়োজন। তার সাথে

ম্যানজারের জন্য ২ ফুট এবং ড্রেনের জন্য ১ ফুট প্রশস্ত জায়গা লাগবে।

♦ ৪/৫ টি গরু হলে এক সারিতে রাখার ব্যাবস্থা করা যেতে পারে। এজন্য একচালা একটি ঘরই যথেষ্ট।

♦ ৮/১০ বা অধিক গরু হলে দু’চালা ঘর নির্মাণ করতে হবে এবং গরুকে ঘরে দুই সারিতে রাখার ব্যাবস্থা

করতে হবে।

♦ উভয় সারির গরুর সম্মুখে খাদ্য দেয়ার জন্য কমন খাবার পাত্র/ম্যানজার থাকবে। এ ক্ষেত্রে উভয় সারির

গরুর পিছনের ভাগ বহির্মুখী এবং সামনের ভাগ অন্তর্মুখী হবে।

♦ সংকর জাতের গরু অধিক গরমে কাতর। তাই গোয়ালঘর শীতল রাখার জন্য ঘরে সিলিং। উত্তর-দক্ষিনে

খোলা। আলো-বাতাস পূর্ণ এবং প্রয়োজনে ফ্যান এর ব্যাবস্থা করতে হবে।

See also  ব্যাকটেরিয়া সৃষ্ট ছোঁয়াচে গরুর কি কি রোগ হয়? উক্ত গরুর রোগ ও তার প্রতিকার

♦ শীতকালে প্রয়োজনে গরুর গায়ে ছালার ব্যাবস্থা ও মেঝেতে শুকনো খরের বিছানা করতে হবে।

♦ গরুর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় খাবার প্রাত্র ব্যবহার ও তা নিয়মিতভাবে পরিস্কার করতে হবে।

♦ গোয়ালঘর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে ও সময়মত গোবরসহ অন্যান্য বর্জ্য অপসারণ করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Copyright Notice

কপি করা নিষিদ্ধ!