Skip to content

 

গর্ভবতী গাভীর পরিচর্যা কি কি ও কিভাবে করবেন?

গর্ভবতী গাভীর পরিচর্যা:- গাভীর গর্ভধারণ সমস্যা থেকে বাঁচতে করণীয় ও প্রসবের পূর্বে গর্ভবতী গাভীর লক্ষন। গাভীর গর্ভকাল, নবজাতক বাছুরের যত্ন ও বাছুরের পরিচর্যা, গরুর বাছুরের যত্ন সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত ধারণা। গর্ভবতী গাভীর পরিচর্যা কিভাবে করবেন?

খামারিয়ান লাইভস্ট ফার্ম এর প্রিয় দর্শক সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করতে চলেছি আজকের এই আলোচনা।আজকের আমরা গর্ভবতী গাভীর পরিচর্যা ও যত্নাদি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত ভাবে আলোচনা করব। বিষয় গরুর খামারের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আশি করি সম্পূর্ণ পোষ্টটি মনোযোগ সহকারে পড়বেন।

গর্ভবতী গাভীর পরিচর্যা:- গাভীর গর্ভধারণ সমস্যা থেকে বাঁচতে করণীয় ও প্রসবের পূর্বে গর্ভবতী গাভীর লক্ষন। গাভীর গর্ভকাল, নবজাতক বাছুরের যত্ন ও বাছুরের পরিচর্যা, গরুর বাছুরের যত্ন সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত ধারণা। গর্ভবতী গাভীর পরিচর্যা কিভাবে করবেন?

গাভীর গর্ভধারণ সমস্যা গুলো থেকে বাঁচতে করণীয়

(১) গাভী বা বকনার গর্ভধারণ কাল ২৭০-২৮০ দিন। এই জন্য প্রজননের ৮০-৯০ দিন পর পশু চিকিৎসক দিয়ে গর্ভধারণ নিশ্চিত করতে হবে।

(২) বাচ্চা প্রসবের সম্ভাব্য দিন নির্ণয় করতে হবে।

(৩) ৫-৬ মাস গর্ভধারণ কালে খাদ্য ব্যবস্থাপনা উন্নতর করতে হবে।

(৪) দৌড় ঝাপ যেন না করে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।

(৫) গর্ভাবস্থার শেষ তিন মাস বাচুর এবং মায়ের দিকে বেশী নজর দিতে হবে।

(৬) এ সময়ে দৈনিক ২-৩ কেজি সুষম খাদ্যের পাশাপাশি সবুজ ঘাস দিতে হবে। গাভীর জন্য প্রতিদিন ১৪-১৫ কেজি সবুজ ঘাস, ৩-৪ কেজি খড়, ২-৩ কেজি দনাদার ও পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ করতে হবে।

(৭) গরমকালে দৈনিক একবার ও শীতকালে সপ্তাহে দুই বার গোসল করাতে হবে।

(৮) গর্ভবতী অবস্থায় গাভীকে পালের অন্যান্য গরুথেকে আলাদা করতে হবে, অন্তত এক মাস আগে অবশ্যই তা করতে হবে।

(৯) প্রসবের তিন সপ্তাহ পুর্বে হতে সহজ পাচ্য খাবার দিতে হবে এবং কয় দিনের জন্য দানাদার খাদ্য প্রদান কমিয়ে দিতে হবে।

See also  নেপিয়ার ঘাস চাষ পদ্ধতি

(১০) শেষ মাসে গাভীকে সমপুর্ণ বিশ্রামে নিয়ে সুষম খাবার প্রদান করতে হবে।

 

বাচ্চা প্রসবের পূর্বে গর্ভবতী গাভীর লক্ষন

(১) বাচ্চা প্রসবের পূর্বে গাভীর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে কিছু বাহ্যিক লক্ষণ ফুটে উঠে। যেমন

(২) গাভীর উলান ফুলে উঠে, বাট দিয়ে ঘন দুধের মত তরল নিঃসৃত হয়।

(৩) যোনি মুখ বড় ও ঝুলে যাবে এবং নরম ও ফোলা ফোলা হয়ে উঠবে।

(৪) লেজের গোড়ার দুই পাশে গর্তের মত আকার স্পষ্ট হয়ে উঠে।

(৫) যোনিমুখ দিয়ে আঠলো তরল বের হবে।

(৬) পানির থলি বের হবে এবং সবশেষে প্রসবের সময় বাছুরের সামনের দুই পা ও নাক দেখা যাবে।

 

গাভীর গর্ভকাল এ প্রসবের পরবর্তী ব্যবস্থাপনা

(১) স্বভাবিক প্রসব হলে বাছুরকে সাথে সাথে গাভীর কাছে রাখতে হবে।

(২) গাভীর পেছনের অংশ ও প্রসবের রাস্তার বাইরের অংশ জীনানুনাশক ঔষধ মিশ্রিত পানি দিয়ে ভালভাবে পরিষ্কার করতে হবে।

(৩) স্বভাবিক প্রসব হলে ৩-৪ ঘন্টার মধ্যে গর্ভফুল মাটিতে পড়ে যাবে এবং তা সাথে সাথে মাটিতে পুঁতে ফেলতে হবে।

(৪) কোন ক্রমেই এটি শুকাতে বা গাভীকে খেতে দেয়া যাবেনা।

(৫) প্রসবের পর মায়ের প্রথম শাল দুধ বাচ্চকে খাওয়াতে হবেএবং বাট চুষতে দিতে হবে।

(৬) দানাদার খাদ্য কিছুটা কমিয়ে কাচা ঘাস বেশী দিতে হবে।

(৭) দুধ দোহনের আগে উলান, তলপেট ভালভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে। সাথে গাভীকে সবসময় পরিস্কার রাখতে হবে।

(৮) গাভীর ঘর পরিস্কার রাখতে হবে ও বাছুর দাড়ানোর চেষ্টা করলে তাকে সাহায্য করতে হবে।

 

নবজাতক বাছুরের যত্ন বা গরুর বাছুরের যত্ন ও বাছুরের পরিচর্যা

আশানুরুপ উৎপাদন পেতে হলে জন্মের পর হতেই একটি গরুর বাছুরের যত্ন ,পরিচর্যা, খাদ্য ও প্রতিপালন ব্যবস্থা উন্নত হওয়া প্রয়ােজন।

খামার স্থাপন করে লাভবান হতে শংকর জাতের অথবা দেশী উন্নত জাতের ও অধিক উৎপাদনশীল গাভী পালন করা উচিত। এ ধরনের গাভী হতে প্রাপ্ত বাছুরের অধিক যত্ন প্রয়ােজন এবং এ জন্য এদরে পরিচালনা ব্যবস্থা সম্বন্ধে সম্যক জ্ঞান থাকা প্রয়ােজন।

See also  বাংলাদেশে গরুর জাত কত প্রকার? গরুর জাতের নাম ও গরুর জাত পরিচিতি। বাংলাদেশে বিদ্যমান গরুর জাত সমূহ কি কি?

জন্মের পর প্রথমেই গাভীর বাসস্থানের পাশেই শুকনা জায়গায় বাঁশ দিয়ে ঘেরাও করে শুকনা খড় বিছিয়ে বাছুরের থাকবার ব্যবস্থা করে দিতে হবে। কয়েকদিন পর পর ঘর পরিস্কার করে পুরনো খড় ফেলে দিয়ে অথবা রোদে শুকিয়ে নতুন করে দিতে হবে।

বাছুরের খাদ্য তালিকাঃ

দুধ

সাধারণত একটি বাছুকে তার শরীরের ওজনের ১০% দুধ খাওয়াতে হয়। বাছুরকে জন্মের পর ৫-৭ দিনের মধ্যে অবশ্যই শাল দুধ খাওয়াতে হবে। ৬-৮ সপ্তাহ পর্যন্ত দৈনিক নির্দিষ্ট সময়ে ৩-৪ বার দুধ খাওয়াতে হবে। পরবর্তীতে দৈনিক ২বেলা দুধ খাওয়াতে হবে।

বাছুরের জন্য আঁশ ও দানাদার খাদ্য

বাছুরকে জন্মের ১মাস পরেই কিছু কিছু কাচাঘাশ ও দাদনাদার খাদ্যে অভ্যস্ত করে তুলতে হয়।

২মাস বয়স হতে পরিমিত সহজ পাচ্য আঁশ জাতীয় খাদ্য এবং দৈনিক ২৫০-৫০০গ্রাম দানাদার খাদ্য দিতে হবে।

বয়স অনুসারে ক্রমান্বয়ে দানাদার খাদ্যে পরিমাণ বাড়িয়ে ৪মাস বয়সে দৈনিক প্রায় ৭৫০ গ্রাম, ৬-৯ মাস বয়স পর্যন্ত ১ কেজি এবং ১ বৎসর বয়সে দৈনিক প্রায় ১.৫কেজি দানাদার খাদ্য দিতে হবে। অনুরূপ কাচা ঘাসের পরিমাণ বাড়িয়ে ৬-৮কেজি পর্যন্ত দিতে হবে। বাছুরের জন্য দানাদার খাদ্য খাদ্যের উপাদান নচের টেবিলে দেখুন।

খাদ্যের উপাদানপরিমাণ
নমুনা-১নমুনা-২
গমের ভুষি৩.৫ কেজি৬.৫ কেজি
খেশারী ভাঙ্গা১.৫ কেজি২.৫ কেজি
ছোলা ভাঙ্গা১ কেজি
গম বা ভুট্রা ভাঙ্গা২.৫ কেজি
তিলের বা সারিষার খৈল১ কেজি৫০০ গ্রাম
খনিজ বা ভিটামিন প্রিমিক্স৪০০ গ্রাম৪০০গ্রাম
আয়ােডিন লবণ১০০গ্রাম১০০গ্রাম
সর্ব মোট১০ কেজি১০ কেজি

 

গরুর বাছুরের যত্ন নিয়ে আরো বিস্তারিত আলোচনা থাকবে পরবর্তী পোষ্টে। খামারিয়ানের সাথেই থাকুন। যে কোন ফার্মিং রিলেটেড তথ্য পেতে নিয়মিত খামারিয়ান এর ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন। ধন্যবাদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Copyright Notice

কপি করা নিষিদ্ধ!