হ্যালো খামারিয়ান ক্লাবের বন্ধুরা, কেমন আছেন আপনারা? আশা করি ভালোই আছেন, আজকে আমরা আলোচনা করব:
✔গর্ভবতী গাভীর যত্ন;
✔গর্ভবতী গাভীর পরিচর্যা;
✔গর্ভবতী গাভীর খাদ্য;
✔গাভী গরুর খামারের ব্যবস্থাপনা;
এই ৪টি বিষয় নিয়ে, তো চলুন শুরু করা যাক।

আজকে আমরা আলোচনা করবঃ
গর্ভবতী গাভী গরুর খামারের ব্যবস্থাপনাঃ
- খাদ্য সরবরাহের আগে পাত্র ভালো ভাবে পরিষ্কার করতে হবে।
- প্রতিদিন সঠিক সময়ে খাদ্য প্রদাণ করতে হবে।
- গাভী গরুকে নিয়মিত গোসল করাতে হবে।
- পরিমিত পরিমাণ দানাদার খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।
- গোবর ও মুত্র সবসময় পরিষ্কার রাখতে হবে।
- গাভীর থাকার স্থান পরিষ্কার ও শুষ্ক রাখতে হবে।
- আঁশ জাতীয় খাদ্য সঠিক ভাবে প্রক্রিয়াজাত করে গাভী গরুতে সরবরাহ করতে হবে।
- গোয়ালের ড্রেন সবসময় পরিষ্কার রাখতে হবে।
- প্রতি ৩-৪ মাস অন্তর অন্তর কৃমিনাশক প্রয়োগ করতে হবে।
- নিয়মিত টিকাদান কর্মসূচী অনুসরণ করতে হবে।
গর্ভবতী গাভীর যত্নঃ
- গাভীর গর্ভধারণ কাল ২৫০-২৭০ দিন হয়ে থাকে। এই সময়ে গাভী বা বকনার যত্ন ও পরিচর্যা গাভীর স্বাভাবিক প্রসব, সুস্থ-সবল বাচ্চা, দুধ উৎপাদনের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ে গর্ভবতী গাভীর পরিচর্যা নিম্নরূপ হওয়া দরকার।
- প্রজননের ৮০-৯০ দিন পর গর্ভধারণ ভেটেরিনারি চিকিৎসক দ্বারা পরীক্ষা করে নিশ্চিত হতে হবে।
- বাচ্চা প্রসবের সম্ভাব্য দিন নির্নয় করতে হবে।
- ৫-৬ মাস গর্ভধারনকালে খাদ্য ব্যবস্থাপনা উন্নত করতে হবে।
- কোনরূপ দৌড়-ঝাপ থেকে গাভীকে বিরত রাখতে হবে।
- গর্ভধারণের ৭-৮ মাসের মধ্যে এর দুগ্ধদোহন ক্রমান্বয়ে বন্ধ করতে হবে।
- গাভীকে ভীত বা উত্তেজিত করা যাবে না।
- হাল চাষ, গাড়ি টানা, শস্য মাড়াই এরকম কাজে গাভকে ব্যবহার করা হবে না।
- গাভীর গর্ভের বাচ্চার পুষ্টি ও ভবিষ্যতের দুধ উৎপাদনের জন্য এবং দেহে পুষ্টির সঞ্চয় গড়ে তোলার জন্য অতিরিক্ত সুষম খাদ্যের ব্যবস্থা করতে হবে।
- বাচ্চা প্রসবের ৩ সপ্তাহ আগে থেকে সহজ পাচ্য খাদ্য সরবরাহ করতে হবে। এবং দানাদার খাদ্যের পরিমান কমিয়ে দিতে হবে।
গর্ভবতী গাভীর দানাদার খাবার/গর্ভবতী গাভীর খাদ্য তালিকাঃ
গর্ভবতী গাভীকে প্রতিদিন ১৪-১৫ কেজি সবুজ ঘাস, ৩-৪ কেজি খড়, ২-৩ কেজি দানাদার খাদ্য একসঙ্গে মিশিয়ে খাওয়াতে হবে।
৩ কেজি গর্ভবতী গাভীর দানাদার খাবার তৈরিতে ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য উপাদান হচ্ছে-
- গমের ভূষি– ১ কেজি।
- খেসারি ভাঙা– ১ কেজি।
- খৈল- ২৫০ গ্রাম।
- চাউলের গুড়া- ৫০০ গ্রাম।
- চিটাগুড়– ১৫০ গ্রাম।
- খনিজ মিশ্রণ- ৫০ গ্রাম।
- লবণ- ৫০ গ্রাম।
গর্ভবতী গাভীর পরিচর্যাঃ
৩। প্রত্যেক দিন সকাল বেলা গরুর খামার ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে। সম্ভব হলে জীবাণুনাশক দিয়ে স্প্রে করে দিতে হবে। এতে গরুর রোগ হওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশেই কমে যাবে।
১। গরু পালনের সময় প্রত্যেক সপ্তাহে কমপক্ষে ৪ থেকে ৫ দিন গরুকে গোসল করিয়ে দিতে হবে। এতে গরুর শরীরের ময়লা থাকলে সেগুলো পরিষ্কার হয়ে যাবে এবং গরু রোগ জীবাণুর দ্বারা সহজেই আক্রান্ত হবে না।
৫। গরুর থাকার স্থানে পর্যাপ্ত পরিমাণে আলো ও বাতাস সব সময় যাতে চলাচল করতে পারে সেজন্য ঘরের চারদিকের পর্দা উঠিয়ে রাখতে হবে। এছাড়াও গরুর ঘরের দরজা ও জানালা দিনের বেলা খুলে রাখতে হবে।
২। গরুকে নিয়মিত ও সঠিক সময়ে প্রত্যেক দিন খাদ্য প্রদান করতে হবে। প্রয়োজন হলে দিনের কয়েক সময় গরুর চাহিদা অনুযায়ী খাদ্য প্রদান করতে হবে। আর খাদ্যের সাথে প্রয়োজন অনুসারে ভিটামিন ও মিনারেল প্রদান করা যেতে পারে।
৬। গরুর খামার বা খামারের আশপাশে স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশ রাখা যাবে না। এতে গরু রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এজন্য খামার ও এর আশপাশ পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত রাখতে হবে।
৪। গরুর থাকার স্থান থেকে একটু দূরে নির্দিষ্ট জায়গায় গোবর ও মূত্র ফেলতে হবে। কাছাকাছি বা পাশে ফেললে সেখান থেকে রোগ জীবাণু ছড়িয়ে পড়তে পারে। গোবর ও মূত্র দূরের কোন গর্তে ফেললে সবচেয়ে ভালো হয়।