গর্ভবতী ছাগলের কৃমিনাশক কত মাস গাভীন থাকলে কৃমির মেডিসিন দেওয়া যায়?
মা ছাগল গাভীন অবস্থায় তার শরীরে যদি কৃমি থাকলে কি কি সমস্যা হতে পারে?
ছাগল গাভীন অবস্থায় কৃমির ওষুধ দিতে হলে কোন কোন সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে?
» সঠিক সময়ে যদি কৃমিনাশক ঔষধ না দেওয়া হয় তাহলে কি কি সমস্যা গুলি হতে পারে। প্রথম সমস্যা একটা ছাগল যখন গাভীন হয়ে যায় আমরা সে সময় মা ছাগলটিকে পুষ্টিকর জাতীয় খাবার দিয়ে থাকি তার বাচ্চার বৃদ্ধি এবং তার দুধ বৃদ্ধি করার জন্য কিন্তু শরীরের ভিতরে যদি কৃমি থাকে সে পুষ্টিকর খাবার গুলোকে সেগুলি কিন্তু শোষণ করে অর্থাৎ খাদ্য মায়ের শরীরে কোন কাজে লাগে না।
» দ্বিতীয় সমস্যা হচ্ছে গাভীন অবস্থায় তার শরীরে যদি অতিরিক্ত পরিমাণে কৃমি থাকে তাহলে সঠিক ভাবে বাচ্চার বিকাশ ঘটে না এবং বাচ্চা হওয়ার পর মায়ের পর্যাপ্ত দুধ পাওয়া যায় না এবং বাচ্চা হওয়ার পর মায়ের শরীর অতিরিক্ত দুর্বল হয়ে যায়।
» তৃতীয় সমস্যা গাভীন অবস্থায় অতিরিক্ত পরিমাণে কৃমি থাকলে যদি তাকে কৃমিনাশক দেওয়া না হয় কৃমির কারণে কিন্তু বাচ্চা এবরশন হয়ে যেতে পারে। কারণ অতিরিক্ত পরিমাণে নিউট্রিশন লেভেল যখন ডাউন হয়ে যায় বাচ্চা খাদ্যের অভাবে কিন্তু মিসক্যারেজ হয়ে যায়। একটি কারনে বাচ্চা এবরশন হয়না বহু কারণ রয়েছে যার কারণে ছাগলের বাচ্চা এবরশন হয়ে।
» চতুর্থ সমস্যা একটু জটিল একটা ছাগল যখন গাভীন থাকে সে সময় তার গর্ভে একটা হোক বা দুটো ভ্রূণের সৃষ্টি হয় আর সেই ভ্রূণের বিকাশ এর জন্য আমার ছাগলটিকে আলাদাভাবে পুষ্টিকর জাতীয় আহার এবং আলাদাভাবে সাপ্লিমেন্ট দিই। কিন্তু ছাগলের শরীরে অতিরিক্ত পরিমাণে প্যারাসাইটিক থাকে সেই পুষ্টিকর খাবারগুলিকে প্যারাসাইটিকগুলো খেয়ে নেয়। যার ফলে বাচ্চাদের ভাগে পুষ্টি কম পড়ে, মায়ের গর্ভে ধীরে ধীরে যেমন তার ভ্রূণের বৃদ্ধি হয় তেমনি কিন্তু শরীরে প্যারাসাইটিক বৃদ্ধি হয়। আর তখনই খাদ্যের প্রয়োজন বেশি করে পড়ে যায়। তখন মায়ের শরীর থেকে সে নিউট্রিশন গুলো ভাঙতে থাকে অর্থাৎ মায়ের শরীর থেকে সে খাদ্যের যোগান দিতে হয়। এজন্যই কিন্তু একটা মা ছাগলের শরীর দুর্বল হতে থাকে আর যখন শরীর দুর্বল হয়ে যায় তখন রোপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। ঠিক সেই সময় ছাগল যে কোন রোগে আক্রান্ত হতে পারে। আর গর্ভের ভ্রূণ বড় হচ্ছে অর্থাৎ গর্ভের বাচ্চা বড় হচ্ছে বাচ্চারাও কিন্তু ঠিকঠাক ভাবে বেড়ে উঠতে পারবে না যার কারণে বাচ্চা হওয়ার পর দেখবেন বাচ্চা বাচ্চা খুব দুর্বল এবং সেই সব বাচ্চাদের ইমিওনিটি একদম কম থাকে ও জন্ম হওয়ার পর যে কোন রোগে আক্রান্ত হতে পারে এবং সেইসব বাচ্চাদের কে বাঁচানো খুব মুশকিল হয়ে দাঁড়ায়।
» বর্তমান অধিকাংশ ফার্মে কিন্তু এই সমস্যাটি দেখা যাচ্ছে গত তিন মাসের মধ্যে এই ধরনের সমস্যা আমার কাছে প্রায় 10 থেকে 15 টা এসেছে প্রত্যেকে বলছে দাদা আমার ছাগলের বাচ্চা হচ্ছে কিন্তু একমাসের বেশি বাচ্চা টিকছে না তার কারণ হচ্ছে গর্ভে থাকা অবস্থায় ঠিকঠাকভাবে এই বাচ্চা নিউট্রেশন পাইনি যার কারণে বাচ্চাদের ইমিওনিটি পাওয়ার একদম। যার ফলে যে কোন রোগে আক্রান্ত হয়ে বাচ্চাগুলি মারা যাচ্ছে। এজন্যই কিন্তু প্রেগনেন্ট থাকা অবস্থায় ছাগলকে কৃমিনাশক দিয়ে তাকে কৃমি মুক্ত করা অবশ্যই জরুরি।
» এবারে গাভীন ছাগলের কৃমির ওষুধ খাওয়ার সঠিক নিয়ম মনে রাখবেন। একটা ছাগল যখন প্রেগন্যান্ট কনফার্ম হবে 1 থেকে 2 মাসের মধ্যে তাকে কৃমিনাশক দেওয়া অতি আবশ্যক। বর্তমান প্রেগনেন্সির সময়ে ব্যবহারে জন্য অনেক কৃমিনাশক মেডিসিন রয়েছে যেগুলো দিয়ে আপনারা তাদেরকে কৃমি মুক্ত করতে পারেন। যেমন ফ্রেন বেনডাজল গ্রপের যেকোন লিকুইড বা ট্যাবলেট দিয়ে তাদেরকে কৃমি মুক্ত করবেন। আমার পরবর্তী বিস্তারিত আলোচনা করব ছাগলের প্রেগনেন্সি সেইফ কৃমিনাশক মেডিসিন নিয়ে।
» মনে রাখবেন যে কোন পশু যখন গাভীন থাকবে গাভীন থাকাকালীন কৃমিনাশক দেওয়ার সময় সবচেয়ে ভালো সময় হচ্ছে প্রেগনেন্ট হয়ে যাওয়ার পর এক থেকে দু মাসের মধ্যে এবং লাস্ট মাসে যে মাসে বাচ্চা হলো। কৃমিনাশক দেওয়ার পর তাকে লিভার টনিক এবং ভিটামিন অবশ্যই দেবেন। কৃমিনাশক দেওয়ার সঠিক নিয়ম ও সময় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা নিয়ে আমাদের অন্যান্য পোষ্ট আমাদের ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখে নিতে পারেন।
» সব সময় মনে রাখবেন পশুদের ডি ওয়ারমিং করানোটা কিন্তু একটা খুব ভাইটাল জিনিস। যদি সঠিক নিয়মে ফার্মিং করাতে না পারেন তাহলে আপনার মা ছাগল অসুস্থ হবে এবং বাচ্চাও কিন্তু দুর্বল হবে। এর পরবর্তীতে আমরা আলোচনা করব বাচ্চা হওয়ার পর মা ছাগলকে কৃমিনাশক দেওয়ার সঠিক সময় এবং নিয়ম নিয়ে। প্রিয় দর্শক কেমন লাগলো আমাদের আলোচনা তথ্য যদি ভালো লাগে এবং সঠিক বলে মনে হয় বাকি বন্ধুদেরকে পোষ্টটি শেয়ার করে দেখার সুযোগ করে দিন এবং নতুন দর্শক হলে আমাদের এই khamarian.com ওয়েব সাইটে তে ছাগলের সঠিক নিয়মাবলী পশুদের বিভিন্ন রকম রোগের চিকিৎসা এবং মেডিসিন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। আমাদের বাকি পোষ্টগুলিকেকে দেখতে হলে আমাদের ফেইসবুক পেইজ ও ইউটিউব চ্যানেলটিকে সাবস্ক্রাইব করে আমাদের সঙ্গে থাকুন। আজকের আলেঅচনা এই পর্যন্ত সকলে ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন আবার কথা হবে অন্য কোন টপিকে। মূল আলোচনাটি সংগ্রহিত।
আমার দেড় মাসের গাভীন ছাগল আছে, তাকে কোন গ্রুপের কৃমি নাশক খাওয়াতে পারি??
আমার একটি ৫ মাসের গাভীন ছাগল আছে এখন কি তাকে কৃমির ওষুধ খাওয়ানো যাবে?
না। ৫ মাসের গাভীন ছাগলকে কৃমির ওষুধ খাওয়ানো ঠিক হবে না। গাভীন হওয়ার ১ থেকে ২ মাসের মধ্যে কৃমির ওষুধ খাওয়াতে হতো ও কৃমিনাশক দেওয়ার পর ছাগলকে লিভার টনিক ও ভিটামিন দিতে হতো।
এখন আপনি যেহেতু কৃমির ওষুধ খাওয়াতে পারবেন না, সেহেতু শুধু গাভীন ছাগলটিকে ভিটামিন ও ক্যালসিয়াম খাওয়ান। লাস্ট মাসে যে মাসে বাচ্চা হয়ে যাবে উক্ত মাসে কৃমির ওষুধ খাওয়াবেন। কৃমিনাশক দেওয়ার পর তাকে লিভার টনিক অবশ্যই দেবেন।