বিষয়: ঘরে প্রবেশের ওয়াজিব, সুন্নাত ও আদব সমূহ + ঘর থেকে বের হওয়ার সুন্নাত ও আদব সমূহ।
হ্যাশট্যাগ: #ঘরে প্রবেশের ওয়াজিব, সুন্নাত ও আদব সমূহ #ঘর থেকে বের হওয়ার সুন্নাত ও আদব সমূহ।
ঘরে প্রবেশের ওয়াজিব, সুন্নাত ও আদব সমূহ
* ঘরে প্রবেশের পূর্বে ঘরবাসীর অনুমতি গ্রহণ করা ওয়াজিব। এমনকি পিতা-মাতা, ভাই-বোন ও পুত্র-কন্যার ঘর হলেও অনুমতি গ্রহণ করা জরুরী। একমাত্র যে ঘরে শুধু মাত্র প্রবেশকারীর স্ত্রী বা স্বামী থাকে সেখানে উক্ত প্রবেশকারীর জন্য অনুমতি গ্রহণ করা ওয়াজিব নয়, তবে সেখানেও কাশি দিয়ে, জুতার শব্দ করে বা যে কোন ভাবে সাড়া দিয়ে প্রবেশ করা মোস্তাহাব ও উত্তম। আবার স্ত্রীর সাথে অন্য কেউ রয়েছে বলে নিশ্চিত জানা থাকলে বা তার প্রবল ধারণা হলেও অনুমতি নেয়া জরুরী।
* দোকান-পাট, কোট-কাচারি, অফিস-আদালত, হোটেল, পার্ক ইত্যাদি ওযেসব স্থানে গণমানুষের প্রবেশ করার সাধারণ অনুমতি থাকে, সেখানে প্রবেশের জন্য অনুমতির প্রয়োজন নেই। তবে যেসব অফিস দপ্তর প্রাইভেট, সেখানে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ব্যতীত অন্যদেরকে প্রবেশের জন্য অনুমতি গ্রহণ করতে হবে।
* অনুমতি গ্রহণের সুন্নাত-নিয়ম হলঃ দরজার বাইরে থেকে সালাম দিবে কিংবা সালাম দিয়ে বলবে আসতে পারি? ভিতর থেকে সাড়া না পেলে আবার সালাম দিবে। এভাবে তিনবার করবে। তারপরও যদি ভিতর থেকে কোন সাড়া না আসে, তাহলে যেখান থেকে চলে আসবে। উল্লেখ্য যে, এই সালামকে বলা হয় ‘সালামে ইস্তীযান’ বা অনুমতি গ্রহণের সালাম। এই সালামের উত্তর ওয়ালাইকুমুস সালাম … নয় বরং এর উত্তর হল প্রবেশের অনুমতি দেয়া বা না দেয়া। প্রবেশের অনুমতি দিলে দেখা সাক্ষাৎ হওয়ার সময় স্বাভাবিক সালাম জবাব আদান-প্রদান করতে হবে।
* অনুমতি চাওয়ার জন্য দরজায় করাঘাত করা, কড়া নাড়ানো কিংবা বর্তমানে প্রচলিত কলিং বেল বাজানো, ভিজিটিং কার্ড বা আইডেন্টি কার্ড প্রেরণ পূর্বক অনুমতি চাওয়া-এগুলো দ্বারাও অনুমতি চাওয়ার হুকুম আদায় হয়ে যাবে।
* অনুমতি চেয়ে এমন স্থানে দাঁড়াবে, যাতে গায়র মাহরাম কেউ দরজা/ জানালা খুললে বা পর্দা সরালে নজরে না পড়ে কিংবা কোনভাবে গোপন কিছু নজরে না আসে।
১. ভিতর থেকে যদি জিজ্ঞেস করা হয় কে? তাহলে এরূপ বলবে না যে, “আমি” বরং পরিষ্কার নিজের নাম বলবে যে, আমি অমুক এমনকি প্রয়োজনে নিজের পরিচয়ও বলবে।
২. ‘বিসমিল্লাহ’ বলে ঘরে প্রবেশ করা সুন্নাত।
৩. ডান পা দিয়ে প্রবেশ করবে।
৪. প্রবেশকালে নিম্নোক্ত দোয়া পড়বে-
اللهم إني أسألك خير المولج وخير المخرج بسم الله ولجنا وبسم الله خرجنا وعلى الله ربنا توكلنا
অর্থঃ হে আল্লাহ, আমি গৃহে প্রবেশ করতে এবং বের হতে তোমার কাছে মঙ্গল প্রার্থনা করি। আমি আল্লাহর নাম নিয়ে গৃহে প্রবেশ করি এবং আল্লাহর নাম নিয়ে গৃহ থেকে বের হই। আর আল্লাহর উপরই আমি ভরসা রাখি।
৫. ঘরবাসীকে সালাম দিবেI
৬. ঘরে কোন লোক না থাকলে এই বলে সালাম দিবে- (মা’আরেফুল কুরআন)
السلام عليكم يا أهل البيت
অর্থঃ হে গৃহবাসী, তোমাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক।
৭. কেউ ঘুমন্ত এবং কেউ জাগ্রত থাকলে জাগ্রতদেরকে এমনভাবে সালাম দিবে যেন ঘুমন্তদের ঘুমের ব্যাঘাত না হয়।
৮. ঘরের দরজা বন্ধ করতে হলে বিসমিল্লাহ বলে বন্ধ করবে।
৯. তারপর আয়াতুল কুরছী পাঠ করবে।
ঘর থেকে বের হওয়ার সুন্নাত ও আদব সমূহ
১. বিসমিল্লাহ বলে দরজা খুলবে।
২. নিম্নোক্ত দোয়া পড়বে-
بسم الله توكلت على الله لا حول ولا قوة إلا بالله العلي العظيم
অর্থঃ আমি আল্লাহর নাম নিয়ে বের হলাম। আল্লাহরই উপর ভরসা করলাম। শক্তি সামর্থ কেবল আল্লাহর কাছ থেকেই আসে।
৩. ডান পা দিয়ে বের হবে। (যদি নেক কাজের উদ্দেশ্যে বের হয়।)
৪. সব রকম ভুলভ্রান্তি ও পদস্খলন থেকে মুক্তি চাওয়া বিষয়ক নিম্নোক্ত দোয়া পড়বে-
اللهم إني أعوذبك أن أضل أو أضل أو أزل أو أزل أو أظلم أو أظلم أو أجهل أو يعمل على
অর্থঃ হে আল্লাহ, আমি নিজে বা অন্য কর্তৃক বিভ্রান্ত হওয়া, নিজে বা অন্য কর্তৃক বিচ্যুত হওয়া, জালেম হওয়া বা মাজলূম হওয়া, নাদানী করা বা নাদানীর স্বীকার হওয়া (এই সবকিছু) থেকে তোমার কাছে পানাহ চাই।
৫. বের হয়ে আয়াতুল কুরছী পড়বে।
সমাপ্ত: ঘরে প্রবেশের ওয়াজিব, সুন্নাত ও আদব সমূহ + ঘর থেকে বের হওয়ার সুন্নাত ও আদব সমূহ।
সূত্র: আহকামে যিন্দেগী।