Skip to content

 

ঘাস খাওয়ার উপকারিতা কি? গরু ছাগল ভেড়াকে ঘাস না খাওয়ালে কি হবে?

ঘাস খাওয়ার উপকারিতা গরুর ঘাস খাওয়া ছাগলের ঘাস খাওয়া গরুর ঘাস চাষ ছাগলের ঘাস চাষ ঘাস ছাড়া ছাগল পালন ঘাস ছাড়া গরু পালন ছাগল ঘাস খায় না কেন গরুর কাঁচা ঘাস

ঘাস খাওয়ার উপকারিতা :

• খাদ্য খরচ কম হবে।

• প্রাণির মৃত্যু হার খুবই কম হবে। ফলে আর্থিক ক্ষতির সম্ভাবনা কম হবে।

• দানাদার খাদ্যের প্রয়োজনীয়তা কম হবে। ফলে উৎপাদন ব্যয় কমে যাবে।

• খাদ্য খরচ কম হবে বিধায় গরু মোটাতাজা করার গরু পালন করে ছোট একটি সংসার চালনো যাবে এবং  দারিদ্র বিমোচন করা সম্ভব হবে।

• রোগ-ব্যাধি কম হয় ফলে ঔষধ খরচ কমে যাবে এবং চিকিৎসা খরচ খুবই কম হবে।

• এক একর জমিতে ধান চাষ করে যে লাভ পাওয়া যায় ঘাস চাষ করলে তার চেয়েও বেশী লাভ পাওয়া যাবে।

• অধিক দুধ পাওয়া যায়।

• সুস্থ-সবল বাছুর জন্ম দেয়।

• কৃত্রিম প্রজননের সফলতা পাওয়া যায়।

• সঠিক বয়সে যৌন পরিপক্কতা আসে।

• কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে যে বাছুর জন্ম নেয় তার দৈহিক ওজন কাঙ্খিত মাত্রায় পাওয়া যায়।

• লাভ বেশী হয় ফলে কৃষক গাভী পালনে উৎসাহিত হয়।

• দুধ উৎপাদন বেশী হলে গরিব কৃষক দুধ বিক্রয়ের পাশাপাশি নিজেরাও দুধ পান করে থাকে। ফলে তাদেরও স্বাস্থ্য ভালো থাকে।

 

ঘাস খাওয়ার উপকারিতা   গরুর ঘাস খাওয়া  ছাগলের ঘাস খাওয়া  গরুর ঘাস চাষ  ছাগলের ঘাস চাষ  ঘাস ছাড়া ছাগল পালন  ঘাস ছাড়া গরু পালন  ছাগল ঘাস খায় না কেন  গরুর কাঁচা ঘাস  ঘাস ছাড়া ছাগল চাষ  কাঁচা ঘাস ছাড়া গরু পালন

গরু ছাগল ভেড়া বা গবাদিপশুকে পর্যাপ্ত কাঁচা ঘাস না খাওয়ালে অপকারিতা :

• প্রণি অপুষ্টিতে ভোগে এবং রোগ-ব্যাধি বেশী হবে।

• দুর্বলতার কারণে রোগ-ব্যাধি বেশী হওয়াতে চিকিৎসা ব্যয় বেড়ে যাবে।

• রোগ হলে উৎপাদন কমে যাবে ফলে কৃষক আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

• দানাদার খাদ্য বেশী দরকার হবে। ফলে গরু মোটাতাজা করার খরচ বেড়ে যাবে।

 

করণীয়ঃ

জন্মের পর থেকেই ছাগল ছানাকে আঁশ জাতীয় খাদ্য যেমন কাঁচা ঘাস ইত্যাদিতে ধীরে ধীরে অভ্যস্ত করে তুলতে হবে।বিভিন্ন ধরনের ঘাস চাষ পদ্ধতি (নেপিয়ার, পারা, গিনি, জার্মান, ভুট্টা, ইত্যাদি) রয়েছে। স্থায়ী ঘাসের মধ্যে নেপিয়ার, পারা, জার্মান উল্লেখযোগ্য। বাংলাদেশের আবহাওয়ায় এগুলো খুব ভালো হয়। কচি অবস্থায় এসব ঘাসের পুষ্টিমান বেশি থাকে। গবাদিপশুর জন্য এগুলো অত্যন্ত উপাদেয় ও পুষ্টিকর খাদ্য।

See also  ছাগলের জাত উন্নয়ন, উন্নত জাতের পাঠার লক্ষন, জাত উন্নয়নের জন্যে পাঠার সংখ্যা, পাঠার পাল দেবার বয়স, ছাগলের কৃত্রিম প্রজনন, দুধের জাতের ছাগলের লক্ষন, ছাগলের জাত উন্নয়নের কতিপয় প্রজাতি ও ছাগলের বংশ বৃদ্ধি।

 

⇒ বর্তমানে সরকারি জেলা দুগ্ধ খামারসহ উপজেলা প্রাণিসম্পদ প্রতিষ্ঠানে বিনা মূল্যে ঘাসের কাটিং কিংবা মূল বিতরণ করা হয়। আগ্রহী খামারীরা খামার করার পূর্বেই ঘাসের কাটিং সংগ্রহ করে এসব ঘাসের চাষাবাদ করে নিতে পারলে দুধ ও মাংসের উৎপাদন খরচ অনেক কমে যাবে।

 

⇒ শুধুমাত্র দানাদার খাবার দিয়ে ডেয়রী খামারকে লাভজনক করা যাবে না। এমনভাবে চাষাবাদ করতে হবে যেন তা সারা বছর গবাদিপশুকে সরবরাহ করা যায়। শীতের মৈাসুমে সেচের ব্যবস্থা করতে হবে।

 

⇒ নেপিয়ার প্রায় সব রকম মাটিতেই হয় তবে উঁচু ও বেলে-দোঁআশ মাটি সবচেয়ে ভালো। ডোবা, জলাভূমি, পানি জমে থাকে এরকম স্থানে এ খাস ভালো হয় না। জমিতে ৪-৫টি চাষ দিয়ে আগাছা বেছে নিয়ে ঘাসের কান্ড অথবা শিকড়সহ মূল মাটিতে পুঁততে হয়। সারা বর্ষা মৌসুমেই এ ঘাস রোপণ করা যায়। বৈশাখ-জৈষ্ঠ্য মাসে প্রথম বৃষ্টির সময় রোপণ করলে প্রথম বছরেই ৫-৬ বার ঘাস কাটা যায়। কান্ড লাগানোর সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন রোপণকৃত কান্ডে দুইটি গিরা থাকে। এ ঘাস সারিবদ্ধভাবে লাগাতে হয়, এক সারি হতে অন্য সারির দূরত্ব ১.৫ থেকে ২ ফুট ও সারিতে চারা থেকে চারার দূরত্ব ১-১.৫ ফুট হতে হবে। চারার গোড়া মাটি দিয়ে শক্ত করে চাপা দিতে হবে। মাটিতে রস না থাকলে চারা লাগানোর পর পরই পানি সেচের ব্যবস্থা করতে হবে। বর্ষার সময় সেচের প্রয়োজন নেই। চারা লাগানোর আগে জমি তৈরির সময় ২০০০-২৫০০ কেজি গোবর সার ছিটিয়ে ভালো করে মাটিতে মিশিয়ে দিলে ফলন ভালো হয়। এছাড়া একর প্রতি ৩৫ কেজি ইউরিয়া, ২৬ কেজি টি এস পি ও ২০ কেজি এম পি দেয়া ভালো। প্রতিবার ঘাস কাটার পর একর প্রতি ২৬ কেজি ইউরিয়া দিলে ফলন ভালো পাওয়া যায়। সার ছিটানোর পূর্বে দুই সারির মাঝখানে লাঙ্গল বা কোদাল দিয়ে মাটি আলগা করে দিতে হবে। প্রথম লাগানোর ৬০-৮০ দিন পরেই ঘাস কেটে খাওয়ানো যেতে পারে। ২য় থেকে ৩য় গোড়া রেখে ঘাস কাটতে হবে। বছরে ৮-১০ বার ঘাস কাটা যায়। একর প্রতি ৬০,০০০-৬৫,০০০ কেজি কাঁচা ঘাস হতে পারে। পৌষ থেকে ফাল্গুন মাস পর্যন্ত অর্থাৎ শীতের সময় শুষ্ক আবহাওয়ার জন্য ঘাসের ফলন কমে যায়। তবে সেচের ব্যবস্থা থাকলে ভালো ফলন পাওয়া যেতে পারে। জমি থেকে কেটে এনে এ ঘাস টুকরো করে খাওয়ানোই উত্তম। তাছাড়া খড়ের সাথে মিশিয়েও খাওয়ানো যায়। শুকিয়ে রাখা সুবিধাজনক নয়; তবে সাইলেজ করে সংরক্ষণ করা যায়। পারা ঘাস উঁচু, নীচু, ঢালু, জলাবদ্ধ, স্যাঁতস্যেতে এমনকি লোনা মাটিতেও, যেখানে অন্য কোনো ফসল হয় না, ভালো জন্মে। জমি চাষ পদ্ধতি নেপিয়ার ঘাসের মতই।

See also  ছাগল কত বছর বাঁচে

 

⇒ পারা ঘাস বর্ষার সময় সারি করে লাগাতে হয়। দুই সারির মধ্যবর্তী দূরত্ব ১.৫ ফুট। তবে এই ঘাসের সারি থেকে সারিতে কাটিংয়ের দূরত্ব তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়। এই ঘাসের কাটিং বা মূল লাগানো যায়। লাগানোর ৪০-৫০ দিন পরই ঘাস কেটে খাওয়ানো যায়। পরে অবস্থা অনুযায়ী ৪-৭ সপ্তাহ পর পর ঘাস কাটা যাবে। একর প্রতি বছরে উৎপাদন ৪০,০০০-৪৫,০০০ কেজি।

 

⇒ জার্মান ঘাসের কান্ড বা মূল লাগাতে হয়। এই ঘাস খাল, বিল, নদীর ধার, বা জলাবদ্ধ জমিতে ভালো হয়। নেপিয়ার ঘাসের মতই জমি তৈরি করে ঘাসের মূল বা কাটিং লাগানো যায়। বৈশাখ-জৈষ্ঠ্য মাস এ ঘাস রোপণ করার উপযুক্ত সময়। নেপিয়ার ঘাসের মতই সারিবদ্ধ করে লাগানো হয়। জার্মান ঘাসের জমি সব সময় ভেজা রাখতে হয়। ঘাস লাগানোর ৪৫-৬০ দিন পরই প্রথম বার কাটা যায়। পরবর্তীতে ৪-৫ সপ্তাহ পর পর কাটা যাবে। ফলন বছরে একর প্রতি ৪০,০০০-৪৫,০০০ কেজি ঘাস পাওয়া যেতে পারে।

 

⇒ ভুট্টার কচি সবুজ গাছ গবাদিপশুর অত্যন্ত পুষ্টিকর ও উপাদেয় খাদ্য। আমাদের দেশে এখন প্রচুর ভুট্টা চাষ হচ্ছে। উঁচু/নীচু কিন্তু পানি জমে থাকে না এরকম জমিতে ভুট্টার চাষ করা যায়। বছরের সকল সময়ই ভুট্টার চাষ করা যেতে পারে। নীচু জমিতে বর্ষার পানি চলে যাওয়ার পর এবং উঁচু জমিতে সেচের ব্যবস্থা থাকলে একই সময়ে কার্তিক অগ্রহায়ণ মাসে ভুট্টার চাষ করা যায়। শীতের শেষে ফাল্গুন-চৈত্র মাসেও পানি সেচ দিয়ে বা বৃষ্টি হওয়ার পর ভুট্টার বীজ বপন করা যায়। ভুট্টা অধিক শীত ও অধিক বৃষ্টি কোনো অবস্থাতেই ভালো জন্মে না। বীজ বপনের আগে ৫-৬ বার জমি চাষ করে জমি তৈরি করতে হবে। একর প্রতি ১৫-২০ কেজি বীজের প্রয়োজন হয়। সারিবদ্ধভাবে বপন করা ভালো। দুই সারির মধ্যবর্তী দূরত্ব ১ ফুট পর পর বীজ বপন করতে হয়। ক্ষেত সব সময় আগাছামুক্ত রাখতে হবে। গাছের উচ্চতা ২-২.৫ ফুট হলেই ঘাস হিসাবে কেটে খাওয়ানো যায়। ভুট্টা গাছ সাইলেজ করে সংরক্ষণ করা যায়।

See also  গরু মোটাতাজাকরণ স্বাস্থ্য পুষ্টি ও খাদ্য ব্যবস্থাপনা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Copyright Notice

কপি করা নিষিদ্ধ!