খামারিয়ান এর সমস্ত সদস্যদের শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আজকেই এই আলোচনা। আমাদের আজকের আলোচনার হলো- ছাগলের বাচ্চার যত্ন, ছাগলের বাচ্চার রোগ ও ছাগলের বাচ্চার খাবার সক্রান্ত। প্রথমে এ সক্রান্ত কিছু কথা জেনে নিন।
**বাংলাদেশে ছাগলের প্রতি বৎসর যে পরিমান ছাগলের বাচ্চা জনুগ্রহণ করে থাকে তার প্রায় ৩০ ভাগই বিভিন্ন কারণে মারা যায় | এতে দেশরখামারিগণ বিপুল পরিমান আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
**অবশ্যই, ছাগল ছানার উপযুক্ত খাদ্য ব্যবস্থাপনা, বাসস্থান ব্যবস্থাপনা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বাচ্চা মৃত্যুর হার রোধ করা সম্ভব।
**ছাগল ছানার জন্মকালীন ওজন, মৃত্যুর হার এবং বিভিন্ন সংক্রামক ও বিপাকীয় রোগে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি ছাগী ও প্রজননকালে ব্যবহৃত পাঠার প্রজনন ব্যবস্থাপনার উপর নির্ভরশীল।
**প্রজননকালীন সময় ছাগীর দৈহিক অবস্থা গুরুত্বপূর্ণ। ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের একটি ছাগী সাধারণত ৪-৫ মাস বয়সের মধ্যে গরম হয় | এসময় প্রজনন না করানো ভাল | ছাগীর দৈহিক ওজন কমপক্ষে ১২-১৩ কেজি হলে তাকে প্রজনন করানো উচিৎ। অন্যথায় কম দৈহিক ওজনের ছাগীকে প্রজনন করালে প্রসবকৃত বাচ্চার ওজন কম হয়ে থাকে যা বাচ্চা মৃত্যুর একটি অন্যতম কারণ।
**এ ছাড়া অপ্রাপ্ত বয়স্ক অবস্থায় বা কম ওজনের সময় গর্ভধারণ করলে ছাগীর দুধ উৎপাদন কম হয়, যা বাচ্চার বেঁচে থাকার ন্যুনতম প্রয়োজন মেটাতে পারে না। ফলে জন্মের কয়েকদিন পরেই ছাগল ছানার মৃত্যু ঘটে |
**আবার ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের একটি ছাগী এক সাথে ৩-৪ টি বাচ্চা প্রসব করে। কিন্তু ছাগীর দুধের বাট দুটি হওয়ায় সবগুলো বাচ্চা একসাথে মায়ের দুধ খেতে পায় না। ফলে অপেক্ষাকৃত দূর্বল বাচ্চা আরও দূর্বল হয়ে পড়ে।
[01] ছাগল ছানার মৃত্যু হার রোধে ছাগীর গর্ভকালীন ব্যবস্থাপনাঃ
■ ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের একটি ছাগী সাধারণতঃ প্রতিবারে ২-৪ টি বাচ্চা প্রসব করে | তাই গর্ভবতী ছাগীকে পর্যাপ্ত সুষম ও পুষ্টিকর খাবার সরবরাহ করতে হবে | এতে বাচ্চা ও ছাগীর রোগ সংক্রমণের সম্ভাবনা হ্রাস পাবে এবং ছাগল ছানার জন্মকালীন ওজন বৃদ্ধি পাবে | অন্যথায় জন্মের সময় বাচ্চা ওজনে কম ও দূর্বল হতে পারে; ফলে বাচ্চা মৃত্যুর হার বেড়ে যেতে পারে।
■ গর্ভধারণের প্রথম তিন মাসে ছাগীকে যে খাদ্য সরবরাহ করা হয় তা গর্ভস্থ ভ্রণের প্রয়োজনীয় পুষ্টি জোগায় এবং ছাগীর স্তন টিস্যুর বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। গর্ভের শেষ দুই মাসে ছাগী ও বাচ্চার স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য পর্যাপ্ত পরিমান কাঁচা ঘাস, দানাদার খাদ্য, ভিটামিন ও মিনারেল সাপ্লিমেন্ট এবং বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা উচিৎ। এতে গর্ভস্থ বাচ্চার সুষম বৃদ্ধি ঘটবে এবং প্রসবকৃত বাচ্চার মৃত্যুর হার কমেযাবে।
■ গর্ভের শেষ ১-২ সপ্তাহে ছাগীকে ব্রড স্পেকট্রাম কৃমিনাশক খাওয়াতে হবে।
■ গর্ভকালীন সময়ে অপুষ্টিতে আক্রান্ত বা ক্ষীণ স্বাস্থ্যের ছাগীকে সুষম খাবার সরবরাহের পাশাপাশি প্রতি সপ্তাহে একটি করে কাঁচা বা সিদ্ধ ডিম খাওয়ানো যেতে পারে | এতে ছাগীর আমিষের চাহিদা কিছুটা পূরণ হবে এবং গর্ভস্থ বাচ্চাও সবল হবে।
■ গর্ভকালীন সময়ে ছাগীকে নিমের ছক অনুসারে খাদ্য ও পানীয় সরবরাহ করা হলে ছাগী সুস্থ সবল থাকবে এবং নবজাতক ছাগল ছানার ওজন বেশী হবে।

[2] ছাগীর প্রসব পূর্ববর্তী ও প্রসবকালীন ব্যবস্থাপনাঃ
■ আসন্ন প্রসবা ছাগীকে প্রসবের কমপক্ষে ১-২ সপ্তাহ পূর্বে দলের অন্যান্য ছাগল হতে আলাদা করে
একটি পরিস্কার, পরিচ্ছন্ন, জীবানুমুক্ত ঘরে (প্রসূতি ঘর) রাখতে হবে।
■ প্রসুতি ঘরের মেঝে শুকনো, পরিস্কার ও জীবানুমুক্ত খড়-বিচালী বা চট দিয়ে ঢেকে দিতে হবে।
অতিরিক্ত ঠান্ডা বা গরম হতে ছাগীকে রক্ষা করতে হবে|
■ মশা-মাছি ও অন্যান্য কীট পতঙ্গের উৎপাত হতে ছাগীকে রক্ষা করতে হবে।
■ ছাগীকে যথারীতি সুষম ও পুষ্টিকর খাবার সরবরাহ করতে হবে।
■ প্রসবের লক্ষণ প্রকাশ পেলে ছাগীর পিছনের অংশ ও ওলান পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট এর ০.৫-১.০% দ্রবণ দিয়ে ধুয়ে-মুছে দিতে হবে। এসময় ছাগীর পাশে উপস্থিত থাকতে হবে এবং প্রয়োজনে প্রসবে সহায়তা করতে হবে (যেমন- বাচ্চার পা টেনে বের করা)।
■ প্রসবের সাথে সাথে বাচ্চাকে মায়ের সামনে দিতে হবে যাতে ছাগী বাচ্চার শরীর চেটে পরিস্কার করতে পারে। বাচ্চার নাক শ্লেম্মাতে আটকে থাকার কারণে দম বন্ধ হয়ে বাচ্চা মারা যেতে পারে তাই প্রসবের সাথে সাথে বাচ্চার সমস্ত শরীর ও নাকের শ্রেম্মা সরিয়ে নাকের মধ্যে ফু দিয়ে বাচ্চার শ্বাস প্রশ্বাসে সহযোগীতা করতে হবে।
■ শীতের সময় দ্রস্ত বাচ্চার শরীর মুছে না দিলে শীতে বাচ্চার শরীরের অতিরিক্ত তাপমাত্রা দ্রুত হারাতে থাকে এবং বাচ্চা কাঁপতে কাঁপতে মারা যায় | এজন্য বাচ্চাকে উ্ণ স্থানে অর্থ্যাৎ খড় বা চটের উপর রেখে চারদিক চট দিয়ে ঘিরে দিতে হবে অথবা তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
■ বাচ্চা প্রসবের পরপরই বাচ্চার নাভি ২-৩ সে.মি. রেখে বাকী অংশ কেটে দিতে হবে এবং উক্ত স্থানে টিংচার অব আয়োডিন লাগিয়ে দিতে হবে |
■ প্রসবের পর ছাগীকে স্যালাইন খেতে দেওয়া ভাল।
■ ছাগীর জরায়ুতে যাতে ইনফেকশন না হয় সেজন্য যৌনাঙ্গকে ০.৫-১.০% পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট দ্রবণ দিয়ে ধুয়ে দিতে হবে। প্রয়োজনে জরায়ুতে এন্টিবায়োটিক বোলাস প্রয়োগ করতে হবে।
[3] ছাগল ছানার খাদ্য ব্যবস্থাপনাঃ
■ সদ্য প্রসূত বাচ্চার বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজন শক্তি | নবজাত ছাগল ছানা শক্তি পায় মায়ের দুধ হতে। তাই প্রসবের ২০-৩০ মিনিটের মধ্যে ছাগল ছানাকে মায়ের শাল দুধ খেতে সাহায্য করতে হবে। শাল দুধ দোহন করে বোতলে খাওয়ানো যেতে পারে।
■ খেয়াল রাখতে হবে যে সকল বাচ্চা যেন সমভাবে দুধ পায়| অপেক্ষাকৃত দূর্বল বাচ্চাকে নিজের হাতে ধরে মায়ের দুধ খাওয়ার সুযোগ করে দিতে হবে। জন্মের পর ১ম ৪-৫ দিন বাচ্চাকে শাল দুধ খাওয়াতে হবে।
■ জন্মের সময় বাচ্চার ওজন ১ কেজির কম হলে মায়ের দুধের পাশাপাশি এক সপ্তাহ পর্যন্ত চিনির সিরা/ডেক্সট্রোজ দিনে ৩-৪ বার খাওয়ানো যেতে পারে | এতে বাচ্চার শরীরে শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং বাচ্চা মত্যর হার কমে যায় ৷
■ ছাগীর দুধ উৎপাদন কম কিন্তু বাচ্চার সংখ্যা যদি বেশী হয় তাহলে তিন মাস বয়স পর্যন্ত বাচ্চাকে মায়ের দুধের পাশাপাশি কৃত্রিম উপায়ে গাভীর দুধ, বার্লি, পাউডার মিন্ক, ভাতের মাড় প্রভৃতি খাওয়ানো যেতে পারে।
■ গরুর দুধ পাওয়া না গেলে প্রয়োজনে ছাগল ছানাকে মিল্ক রিপ্লেসার তৈরী করে দিনে ৩-৪ বার খাওয়ানো যেতে পারে | এতে ননীমুক্ত গুড়া দুধ (ক্ষিম মিন্) ৭০ ভাগ; চাল,গম বা ভুট্টার গুড়া ২০ ভাগ, সয়াবিন তেল ৭ ভাগ, লবন ১ ভাগ, ডাইক্যালসিয়াম ফসফেট ১.৫ ভাগ এবং ভিটামিন মিনারেল প্রিমিক্স ০.৫ ভাগ থাকে। উক্ত মিশ্রণের একভাগ, নয়ভাগ পানির সাথে মিশিয়ে ভালমত ফুটানোর পর ঠান্ডা করে ছাগল ছানাকে খাওয়াতে হবে।
■ ছাগল ছানার ১৫ দিন বয়স হতে অল্প অল্প করে দানাদার খাদ্য এবং আঁশ জাতীয় খাবার (কাঁচা ঘাস, গাছের পাতা প্রভৃতি) খাওয়ানোর অভ্যাস করাতে হবে |
■ যে সকল ছাগল ছানা দীর্ঘ সময় ধরে মায়ের অপর্যাপ্ত দুধ পাওয়ার কারণে দূর্বল হয় তাদেরকে অন্যান্য সুষম খাবার সরবরাহের পাশাপাশি প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে একটি করে কাঁচা বা সিদ্ধ ডিম খাওয়ানো যেতে পারে | এতে ছাগল ছানার আমিষের চাহিদা কিছুটা পূরণ হবে এবং বাচ্চা সুস্থ ও সবল হবে।
■ ছাগল ছানাকে নিম্নের ছক অনুসারে সুষম খাদ্য সরবরাহ করা হলে ছাগল ছানা সুস্থ সবল থাকবে এবং দৈহিক ওজন বৃদ্ধি পাবে।

[4] ছাগল ছানার বাসস্থান ব্যবস্থাপনাঃ
■ ছাগল ছানার মৃত্যু হার রোধের জন্য বাসস্থান ব্যবস্থাপনা খুবই গুরুতৃপূর্ণ। সদ্য প্রসূত ছাগল ছানাকে পরিস্কার পরিচ্ছন ও শুক্ক জায়গা (ক্রডিং পেন) তে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।
■ শীতের সময় মেঝেতে ছালা বা খড় বিছিয়ে মার সাথে ছাগল ছানাকে রাখতে হবে।
■ প্রয়োজনে ছাগল ছানার শরীর গরম কাপড়া বা ছালা দিয়ে ঢেকে দেয়া যেতে পারে।
■ ছাগলের ঘরের বেড়া বা দেয়াল চট দিয়ে ঢেকে দেয়া দেতে পারে যাতে ঘর হতে শীত শীত ভাব দূর হয়।
■ প্রতিদিন খাদ্য ও পানির পাত্র পরিস্কার করতে হবে এবং খেয়াল রাখতে হবে যেন ঘর ভেজা বা স্যাতসেঁতে না হয়।
■ শীতে বা বৃষ্টির সময় ছাগর ছানাকে ঘরের বাইরে যেতে দেওয়া উচিৎ নয়। এতে ঠান্ডা লেগে ছাগল ছানার নিউমোনিয়া হতে পারে |
■ বড় প্রাণীর আক্রমন হতে ছাগল ছানাকে রক্ষার ব্যবস্থা থাকতে হবে।
[5] ছাগল ছানার পরজীবি নিয়ন্ত্রণঃ
■ বিভিন্ন কারণে ছাগল ছানার শরীরে উকুন, আঠালী, মাইট প্রভৃতি পরজীবির সংক্রমন হতে পারে | এর ফলে বাচ্চা রক্তশূন্যতায় ভুগে দূর্বল হয়ে পড়ে এবং মারা যায় | এ সব পরজীবির আক্রমন প্রতিরোধের জন্য ছাগল ছানাকে উকুন নাশক সাবান দিয়ে অথবা ০.৫% ম্যালাথিয়নের পানিতে গোসল করাতে হবে।
■ ছাগল ছানার বয়স ২ মাস হলেই প্রতি সপ্তাহে দুইবার একে সাধারণ পানিতে গোসল করাতে হবে। শরীরে উকুন, আঠালী, মাইট প্রভৃতি পরজীবির সংক্রমন দেখা দিলে মাসে দুইবার ০.৫% ম্যালাথিয়নের পানিতে বাচ্চাকে গোসলকরাতে হবে। গোসলের পরপরই ছাগল ছানার শরীর কাপড় বা ছালা দিয়ে মুছে দিতে হবে।
■ বয়স বাড়ার সাথে সাথে ছাগল ছানার পেটে গোল কৃমি, ফিতা কৃমি এবং যকৃত কৃমিসহ বিভিন্ন ধরণের কৃমি হতে থাকে | এর ফলে ছাগলের খাদ্য হজম কমে যায় এবং হজমকৃত খাদ্য শোষণে ব্যাঘাত ঘটে | একপর্যায়ে বাচ্চা অপুষ্টিতে দূর্বল হয়ে মারা যেতে পারে। তাই বাচ্চার বয়স একমাসের অধিক হলে প্রতি চারমাস পরপর পায়খানা পরীক্ষা করে ভেটেরিনারিয়ানের পরামর্শ অনুযায়ী কৃমির উবধ খাওয়াতে হবে।
[6] ছাগল ছানার নিউমোনিয়া নিয়ন্ত্রণঃ
■ ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ফাংগাস প্রভৃতি জীবানু দ্বারা বিভিন্ন সময়ে ছাগল ছানার নিউমোনিয়া হতে পারে।প্রচন্ড শীত, অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতকালীন সময় এবং ভেজা স্যাঁতসেতে ও অপরিস্কার বাসস্থান এ রোগের সংক্রমন তৃরান্ধিত করে | এ ছাড়া শ্বাস নালীতে খাবার বা ওঁষধ জাতীয় কোন পদার্থ ঢুকে গেলে এসপিরেশন নিউমোনিয়া হতে পারে।
■ ছাগল ছানার নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণগুলো কি?
⇒ ঘন ঘন নিঃশ্বাস ও অল্প জবর (প্রধান লক্ষণ)।
⇒ শ্বাস প্রশ্বাসের সময় শব্দ হওয়া (ঘড়ঘড় শব্দ)।
⇒ রোগের শেষ পর্যায়ে শ্বাস কষ্ট।
⇒ ঘন ঘন কাশি এবং কাশির সময় বুকে ব্যাথা।
⇒ নাক দিয়ে সাদা ফেনাযুক্ত সর্দি বের হওয়া।
⇒ খাদ্য গ্রহণে অরুচি ও অনীহা।
⇒ বাচ্চার শরীরের তাপমাত্রা এক পর্যায়ে কমে যাওয়া এবং শ্থাসকষ্টে মৃত্যুবরণ।
■ নিউমোনিয়া রোগের প্রতিরোধের উপায় কি?
⇒ ছাগল ছানার নিউমোনিয়া রোগ হলে একজন অভিজ্ঞ ভেটেরিনারিয়ানের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী এর চিকিৎসা করাতে হবে।
⇒ নিউমোনিয়া রোগ কোন একক সুনির্দিষ্ট জীবানু দ্বারা হয়না বলে টিকা দিয়ে এ রোগ প্রতিরোধ করা যায় না। খামারের উন্নত ব্যবস্থাপনা, পরিস্কার পরিচ্ছন্ন পরিবেশ এবং অতিরিক্ত শীত, বৃষ্টি ইত্যাদি হতে ছাগল ছানাকে রক্ষার মাধ্যমে নিউমোনিয়া রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
⇒ ঠান্ডা এড়ানোর জন্য শীতকালে গরম কাপড় বা চট দিয়ে ছাগল ছানাকে ঢেকে দিতে হবে এবং মেঝেতে খড়/চট বিছিয়ে তার উপর বাচ্চাকে রাখতে হবে।
[7] ছাগল ছানার ডায়রিয়া/পেটের পীড়া নিয়ন্ত্রণঃ
■ ছাগল ছানা জন্মের ১২-৪৮ ঘন্টার মধ্যে ই. কোলাই নামক এক ধরণের ব্যাকটেরিয়া দ্বারা পেটের পীড়া রোগ হয়। বাচ্চার জন্মের পরপরই শাল দুধ খাওয়ালে এই রোগ হয় না।
■ ছাগল ছানার ডায়রিয়া/পেটের পীড়া পীড়ার লক্ষণ কি?
⇒ সাদা বা হলুদ বর্ণের পাতলা পায়খানা হয়।
⇒ মুখ দিয়ে অত্যধিক লালা পড়ে।
⇒ বাচ্চার খাওয়া দাওয়া বন্ধ হয়ে যায়।
⇒ বাচ্চা নিস্তেজ হয়ে যায়।
⇒ শরীরের তাপমাত্রা কমে যায়।
⇒ পেটে গ্যাস জমে যেতে পারে, ফলে শ্বাস নিতে কষ্ট হয়।
⇒ সময় মত চিকিৎসা না করালে ১২-১৪ ঘন্টার মধ্যে বাচ্চা মারা যায়।
■ ডায়রিয়া/পেটের পীড়া প্রতিরোধের উপায় কি?
⇒ ছাগল ছানার পেটের পীড়া হলে একজন অভিজ্ঞ ভেটেরিনারিয়ানের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী এর চিকিৎসা করাতে হবে। দেহের পানি শূন্যতা পূরণের জন্য আক্রান্ত ছাগল ছানাকে ঘন ঘন স্যালাইন খাওয়াতে হবে।
[8] ছাগল ছানার টিকা প্রদানঃ
■ রোগ প্রতিরোধ রোগ নিরাময়ের চেয়ে উত্তম। ছাগল ছানার কয়েকটি মারাতুক রোগ টিকা প্রদানের মাধ্যমে প্রতিরোধ করা সম্ভব। নিচে বিভিন্ন বয়সে ছাগল ছানার টিকার বিবরণ ছক আকারে দেখানো হলো।
