ছাগল জবেহঃ
▪ ছাগল জবেহ করার জন্য মাটিতে ফেলে চেপে ধরা হয় ও ক্ষেত্রে সাবধান থাকতে হয়। সুবিধেমতো নরম স্থানে বালু বা ঘাসের উপরে জবেহ করা হলে কম ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
▪ জবেহ করার সময় মাথার কাছে মাটিতে গর্ত করে নিলে রক্ত তার মধ্যে জমা হয়।
▪ কসাইখানায় জবেহ করা স্থানে পাকা ড্রেন থাকে, তার ভিতর দিয়ে রক্ত একটা নির্দিষ্ট স্থানে জমা হয়। রক্ত ফেলে না দিলে হাঁস-মুরগির খাদ্য প্রস্তুত করতে ব্যবহার করা যায়।
▪ গলার শ্বাসনালী, খাদ্যনালী ও প্রধান রক্ত সঞ্চালন শিরা কাটার সময় যতদূর সম্ভব মাথার কাছাকাছি হওয়া উচিৎ।
▪ ছুরি অত্যন্ত ধারালো এবং লম্বা হতে হবে যেন সমস্ত গলা ছুরি ধারের মধ্যে থাকে ৷ খুব দ্রুত এবং হঠাৎ করে কাটলে প্রাণীটি সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলে কিন্তু তার হৃদপিণ্ড কর্মক্ষম থেকে শরীরের সমস্ত রক্ত বের করে দিতে সাহায্য করে।
▪ অনভিজ্ঞ লোক জবেহ করলে এবং ছুরিতে ধার না থাকলে জবেহ করতে অহেতুক সময় লাগে ফলে প্রাণীটি কষ্ট পায় এবং বেশি দাপাদাপি করে।
▪ কোন কোন দেশসমূহে প্রথমে পশুটির মাথায় কম ভোল্টের বিদ্যুৎ প্রবাহ ঘটিয়ে অজ্ঞান করে নেওয়া হয়। পরে যার যার ধর্মমতে জবেহ বা গলা কেটে রক্তক্ষরণ করানো হয়। ধারণা করা হয়, এ প্রথায় মানবিক কারণে পশুটিকে কম কষ্ট দেওয়া হয় এবং অজ্ঞান থাকার ফলে দাপাদাপি করে না। পরে একটা হুকে বা আংটায় ঝুলিয়ে দিয়ে যন্ত্রের সাহায্যে চামড়া ছড়িয়ে নেওয়া হয়।
চামড়া ছাড়ানোঃ
▪ ছাগলের চামড়া একটি মূল্যবান সম্পদ সঠিকভাবে চামড়া ছাড়াতে না পারলে চামড়ার মান কমে যায়।
▪ পশুর মালিক অথবা কসাইগণ সাধারণত নিজেদের বাড়ির আঙিনায় কোনো খোলা স্থানে, কোনো হাট-বাজারে অথবা পৌরসভার কসাইখানায় চামড়া ছাড়িয়ে থাকে।
▪ অনেক সময় শহরে স্থাতি কসাইখানাতেও পশু জবেহ ও চামড়া ছাড়ানোর জন্য নির্ধারিত স্থানসমূহ এতো সংকীর্ণ যে, প্রতিদিনের মাংস চাহিদার চাপ সহ্য করা কষ্টকর। পশুর মালিকদের অনভিজ্ঞতা ও কসাইদের চামড়ার প্রতি গুরুত্ব কম দিয়ে মাংসের জন্য তাড়াহুড়ো করে চামড়ার ছাড়ানো ইত্যাদি নানা কারণে চামড়ার মান কমে যায়।
▪ চামড়ার ছাড়ানোর জন্য অনভিজ্ঞতা ও বিশেষ প্রশিক্ষণের অভাবে এবং ধারালো ছুরি ব্যবহারের ফলে চামড়া কেটে- ছিঁড়ে ছিদ্র হয়ে যায়।
▪ ছাড়ানোর সময় যে সমস্ত চামড়া কেটে-ছিঁড়ে ছিদ্র হয়ে যায় প্রক্রিয়াজাতকরণের সময় যে-সমস্ত স্থানে আরো ছিঁড়ে যায় বা প্রক্রিয়াজাত হতে বাদ পড়ে। ফলে এ সমস্ত চামড়া স্বাভাবিকভাবে বিশ্ববাজারে উপযুক্ত মূল্য পায় না।
▪ ছাগলের দেহ জবেহ করার পর গরম থাকতে থাকতে চামড়া ছাড়াতে হয়। দেহ ঠাণ্ডা হয়ে গেলে চামড়া ছাড়ানো কষ্টকর হয়ে পড়ে।
চামড়া ছাড়ানোর নিয়ম/পদ্ধতিঃ
▪ অণ্ডকোষ অথবা দুই বাটের মাঝখান থেকে আরম্ভ করে পেট বুক রেখা বরাবর গলা পর্যন্ত ধারালো ছুরির সাহায্যে চামড়া চিরে ফেলতে হয়। তবে খেয়াল রাখতে হবে ছুরি যেন চামড়া ছাড়া গভীরে প্রবেশ না করে।
▪ অনুরূপভাবে একই স্থান হতে আরম্ভ করে পিছনের পায়ের প্রথম সন্ধিস্থল পর্যন্ত চামড়া হবে। পরে লেজ ও মলদ্বারের চারপাশ ঘিরে চামড়া ছাড়িয়ে ফেলতে হয়।
▪ চামড়ার ছাড়ানোর সুবিধার্থে পিছনের দুই পায়ের সাথে (অনেক সময় এক পায়ের সাথে) দড়ি বেঁধে কোনো গাছের ডালে অথবা কসাইখানায় নির্মিত ছক বা আংটার সাথে ঝুলাতে হবে।
▪ চামড়া ছাড়ানোর জন্য কখনো ধারালো ছুরি ব্যবহার করতে হয় না। সাধারণত শক্ত কাঠের টুকরা এবং হাতের কনুইয়ের সাহায্য চামড়া ছাড়ানো উত্তম ব্যবস্থা।
▪ ছুরি ব্যবহার করতে হলে ভোতা ছুরি ব্যবহার করা উচিৎ। তবে যতদূর সম্ভব ছুরি ব্যবহার না করাই ভালো ৷
▪ অনেকে আবার চামড়া ছাড়ানোর সময় উল্লিখিত উপায়ে না চিরে আস্ত ছাড়িয়ে ফেলে। আস্ত ছাড়ানো হলেও পরে মলদ্বার হতে আরম্ভ করে পেট বুক হয়ে গলা পর্যন্ত চিরে ফেলতে হয়। না হলে প্রকোপিত বা প্রক্রিয়াজাত করতে অসুবিধে হয়। পিছনের পায়ের মতো সামনের পায়ের প্রথম সন্ধিস্থল পর্যন্ত চামড়া চিরতে হয়। পরে গলা ও কানের পাশ হতে চামড়া আলাদা করে ফেলতে হয়।
▪ চামড়া ছাড়ানোর সহজ ব্যবস্থা হিসেবে অনেকে পেটের চামড়া ছিদ্র করে (চিরে ফেলার পূর্বে) বাতাস ঢুকিয়ে আস্তে আস্তে চাপ দিয়ে চামড়াকে ঢিলা করে নিয়ে থাকে। ফলে পেট ও বুক বরাবর চামড়া চিরে ফেলে পিছন দিক হতে মাথার দিকে চামড়া ছাড়ানো সহজ হয়।
▪ প্রাচীনকালে পাথরের অস্ত্রের সাহায্যে চামড়া ছাড়ানো হতো। বর্তমানে বিভিন্ন প্রকার প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় নিখুঁতভাবে চামড়া ছাড়ানোর জন্য।
চামড়া প্রকোপিত করণঃ
▪ বিভিন্ন সময়ে চামড়া সংগ্রহ করে একত্রে মাটিতে জমা করা হয়। ফলে চামড়া পচতে আরম্ভ করে। এ পচন আরো দ্রুত হয় যদি চামড়াতে ধুলো-মাটি রক্ত বা নাদি গোবর লেগে থাকে। যদি এক রাত রেখে দেওয়া হয় অথবা আবহাওয়া খুব গরম থাকে তবে পচা গন্ধ বের হতে থাকে এবং লোম উঠে যেতে আরম্ভ করে। ফলে চামড়ার দানাদার অংশ অত্যন্ত ঢিলা হয়ে যায় এবং ভিতরের পর্দা সহজেই আলাদা হয়ে পড়ে।
▪ চামড়া প্রকোপিত করার সহজ উপায় হচ্ছে শুকিয়ে ফেলা। কিন্তু শুকিয়ে ফেললে চামড়া শক্ত হয়ে যায় এবং নমনীয় হয় না। ফলে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করতে অসুবিধে হয়। পরিবহণের সুবিধের জন্য সুবিধামতোভাবে ভাঁজ করা হলে ঐ ভাঁজ বরাবর চামড়া ফেটে গেলে তার মূল্য কমে যায়। একটু অভিজ্ঞতা থাকলে বুঝতে পারা যায় কতটুকু শুকালে ভাঁজ করতে কোনো অসুবিধে হবে না, উপরন্তু পচা বা নষ্ট হয়ে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা থাকবে না।
▪ অনেকে ঘরে মধ্যে বা ছায়াতে চামড়া শুকানোর পক্ষপাতি। ছায়াতে বা ঘরের মধ্যে চামড়া শুকালেও কিছুটা পচন ধরে ফলে মান অনেকটা কমে যায়। ছাগলের দেহ থেকে চামড়ার ছাড়ানোর পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সংরক্ষণ করার ব্যবস্থা নিতে হয়।
▪ চামড়া প্রকোপিত করার প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে চামড়ার ওপরে বা ভিতরে এমন একটা বৈরী অবস্থার সৃষ্টি করা যার মধ্যে পচনশীল জীবাণু জন্মাতে বা বেঁচে থাকতে না পারে। চামড়া প্রকোপিত করার বিভিন্ন পদ্ধতির মধ্যে লবণ ব্যবহার করেও প্রাথমিকভাবে চামড়া সংরক্ষণ করা হয়ে থাকে।
▪ প্রথমে চামড়ায় লেগে থাকা ময়লা ও রক্ত পানিতে ভালোভাবে পরিষ্কার করে ফেলতে হবে। পরে লবণ-পানির সম্পৃক্ত দ্রবণের মধ্যে ডুবিয়ে রাখতে হয় অথবা চামড়ার ভাঁজে ভাঁজে পর্যাপ্ত (চামড়ার ওজনের এক-তৃতীয়াংশ) পরিমাণ লবণ মেখে রাখতে হয়। ফলে চামড়ার ভিতরের কোষের পানি বেরিয়ে আসে ও লবণ ভিতরে প্রবেশ করে পচনশীল জীবাণুর কার্যকলাপ ও জন্মহার প্রতিহত করে।
▪ পরিবহণের সুবিধের জন্যে এ চামড়ার ছায়ার মধ্যে শুকিয়ে নেওয়া যায়। রোদে শুকালে জেলির মতো আঠালো পদার্থের সৃষ্টি হয় বলে রোদে শুকানো হয় না। এ চামড়াকে বলে গ্রিন্ সল্টেড চামড়া। চামড়া প্রকোপিত করার সময় তা ভালোভাবে পুনরায় পানিতে পরিষ্কার করে নিতে হয়।
▪ যখন চামড়া পাকা করার কারখানা নিকটেই থাকে তখন অহেতুক প্রকোপিত করার প্রয়োজন পড়ে না। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সরাসরি চামড়া পাকা করার কারখানায় চালান দেওয়া উচিত।
▪ চামড়া পাকা করার উদ্দেশে পচন থেকে রক্ষা করা, পানি ও আদ্র জলবায়ু শোষণ প্রতিহত করা, সহজ ব্যবহারযোগ্য করা এবং দীর্ঘায়ু করা। প্রাচীনকালে বিভিন্ন গাছের ছাল ব্যবহার করা হতো চামড়া পাকা করার কাজে। বর্তমানে উদ্ভিদ জাতীয় রঙ ও কৃত্রিম রঙ ব্যবহার করা হয় চামড়া রঙ ও প্রক্রিয়াজাত করার জন্য। বিভিন্ন আকর্ষণীয় রঙে রঞ্জিত করা হয়।
ভালো চামড়ার জন্যে কয়েকটি জরুরী বিষয়ঃ
১. ছাগল জবেহ করার অন্তত ৪ ঘণটা পূর্ব হতে খাদ্য স্থগিত রাখতে হবে।
২. জবেহ করার অন্তত ঘণ্টা দুই পূর্বে ভালোভাবে পরিষ্কার পানি দ্বারা গোসল করানো উচিৎ যেন চামড়ায় কোনো প্রকার ময়লা না থাকে এবং শরীর শুকানোর পর্যাপ্ত সময় পাওয়া যায়।
৩. স্বাস্থ্যকর এবং ৮ মাস হতে ১৫ মাস বয়সের ছাগল মাংসের জন্যও যেমন উপযোগী তেমনি উন্নতমানের চামড়ার জন্যেও উপযোগী।
৪. জবেহ করার সময় এমনভাবে এবং এমন স্থানে তাকে শোয়াতে হবে যেন চামড়ার কোনো প্রকারে থেতলে না যায় বা কোথাও ছিঁড়ে না যায়।
৫. জবেহ করার পর শরীরে অন্য কোথাও যেন রক্ত না লাগে এবং দেহ হতে পরিপূর্ণভাবে রক্ত বেরিয়ে যেতে পারে সে দিকে খেয়াল রাখা দরকার।
৬. শরীর গরম থাকতে থাকতে চামড়া ছাড়াতে হবে।
৭. চামড়া ছাড়ানোর সময় যতদূর সম্ভব ভোতা ছুরি অথবা কাঠের টুকরো ব্যবহার করা উচিৎ।
৮. গলা হতে আরম্ভ করে বুকের উপর দিয়ে মলদ্বার পর্যন্ত এবং চার পায়ের প্রথম গিট হতে ঊর্ধ্বে পায়ের ভিতর দিক সোজা লম্বা কাটা পর্যন্ত চামড়া চিরে নিতে হবে।
৯. চামড়ার ছাড়ানোর জন্য গাছের ডাল বা আংটার সাথে ঝুলিয়ে নেওয়া ভালো।
১০. চামড়া ছাড়ানোর সর্বাধিক ৬ ঘণ্টার মধ্যে প্রক্রিয়াজাত কারখানায় পৌঁছাতে হবে অথবা ধুলা-বালি রক্ত পরিষ্কার করে লবণের সাহায্যে সংরক্ষণের ব্যবস্থা নিতে হবে। চামড়ার আকার অনুপাতে ১ হতে ২ কেজি লবণ (ওজনের এক-তৃতীয়াংশ) চামড়ার মাংসল দিকে ভালোভাবে ঘষে এবং ভাঁজে ভাজে দিয়ে সংরক্ষণ করা হয়।
ছাগলের চামড়ার গুরুত্ব ও ব্যবহারঃ
▪ ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় যে, সেই আদিকালের কথা যখন প্রাণী হত্যা করা হতো মাংসের জন্য এবং তার চামড়া ছাড়িয়ে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হতো, যেমন শীত ও লজ্জা নিবারণের জন্য পরিধেয় বস্ত্র এবং পানীয় ও তরল জাতীয় খাদ্য বস্তু রাখার পাত্র হিসেবে। এখনো অনেক উপজাতীয় আছে যারা চামড়া হতে লোম পরিষ্কার করে খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করে।
▪ চামড়া মানুষের প্রাচীনতম প্রয়োজনীয় সামগ্রী। বর্তমানে তার সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও ব্যবহার অনেক উৎকর্ষতা লাভ করেছে। অবশ্য এখনো অনেক স্থানে সাবেক পদ্ধ বংশানুক্রমে অনেক পরিবারে চামড়া সংরক্ষণ ও ব্যবহার বিধি চলে আসছে।
▪ ছাগলের চামড়া অত্যন্ত মূল্যবান সম্পদ। ছাগলের চামড়াতে সারবস্তু এবং দানাদার অংশ বেশি থাকে। ভেড়ার চামড়াতেও যেমন কোঁকড়া বা প্যাচানো লোমের গোড়া অত্যন্ত গভীরে প্রবিষ্ট থাকে ছাগলের চামড়াতে তেমন থাকে না। ফলে ছাগলের চামড়া খুব উন্নত মানের পাকা চামড়া হিসেবে বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হতে পারে।
▪ বিশেষ করে যে ছাগলের চামড়া ছোট রেশমি ও সুন্দর লোমে আবৃত থাকে তার চামড়া বড় লম্বা ও রুক্ষ লোমে আবৃত চামড়ার চেয়ে অনেক বেশি উন্নতমানের এবং তার মূল্য বিশ্ব বাজারে অনেক বেশি।
▪ লম্বা ও রুক্ষ লোমের গোড়া চামড়ার অনেক গভীরে প্রবিষ্ট থাকার ফলে চামড়া পাকা করার পর শোষক বা স্পনীজী হিসেবে থেকে যায়।
▪ বাংলাদেশের কালো ছাগলের চামড়া অত্যন্ত উন্নতমানেরূইে চামড়ার আঁশ অত্যন্ত ঘন সন্নিবেশিত এবং ধৈর্যশীল বা ইলাস্টিক। চামড়া নরম পুরু, ভাজ করলে আবার পূর্ব অবস্থায় ফিরে আসে এবং যে-কোনো আবহাওয়ায় বেশি দিন স্থায়ী হয়। আদ্র জলবায়ু ও পানিতে সহজে নষ্ট হয় না।
▪ চামড়ার উৎপত্তি স্থান হিসেবে চামড়ার ব্যবহার ও মান নির্ণয় করা হয়। শীতপ্রধান দেশের লম্বা লোম বিশিষ্ট ছাগলের চামড়া হতে প্রস্তুত হয় ‘মরোক্ত চামড়া’। গরমপ্রধান দেশের ছাগলের মসৃণ চামড়া হতে প্রস্তুত হয় জুতো, ব্যাগ, পরিধেয় বস্ত্র ইত্যাদি। উৎপত্তি স্থল হিসেবে নাম করা যায় যেমন করাচির চামড়া, কামপালার চামড়া, নাইজেরিয়ার, চামড়া, কাশ্মিরি চামড়া ইত্যাদি।
▪ বছরের বিভিন্ন সময়কালের পরে নির্ভর করে চামড়ার মান নিরূপিত হয়। গ্রীষ্মকালে উৎপাদিত চামড়ার রঙ সামান্য ফ্যাকাশে লাল হয়। এ সময়ে পর্যাপ্ত খাদ্য পাওয়া যায়। চামড়ার মধ্যস্থ রক্তের শিরা-উপশিরার রক্তের সাথে সঞ্চিত হয় পর্যাপ্ত খাদ্য পুষ্টি। এ সমস্ত বিনাশশীল খাদ্যবস্তু চামড়ার রঙ মেটে বা ফ্যাকাশে করে ফেলে। শীতের সময় এ খাদ্যবস্তু লোমের মধ্যে ও অন্যান্য অঙ্গ-প্রতঙ্গে স্থানান্তরিত হয় তখন চামড়ার রঙ হয় সাদা। এ সময়ে চামড়া এবং লোম উভয়েই হয় খুব উন্নতমানের এবং তার চাহিদা হয় বেশি।
▪ বয়স অনুপাতে চামড়ার মান নির্ণয় ও ব্যবহার হয়ে থাকে। জুতো সুটকেস, তাঁবু ইত্যাদিতে ব্যবহারের জন্যে ৯ হতে ১৮ মাস বয়সের ছাগলের চামড়া উপযুক্ত ৷
▪ উন্নত মানের দস্তানা তৈরি হয় ৬ মাস বা তার চেয়ে ছোট ছাগলের চামড়ার সাহায্যে। তবে এ চামড়ার চাহিদা অত্যন্ত কম। পূর্ণ বয়স্ক একটি ছাগলের চামড়ার প্রক্রিয়াজাত করার পরে বিভিন্ন জাত অনুসারে ২ পাউন্ড হতে ৫ পাউন্ড পর্যন্ত ওজনের হয়।
▪ সাধারণত ভালো চামড়া উৎপাদিত হয় মাংসের জন্য প্রতিপালিত ছাগল হতে। বেশি চর্বিযুক্ত ছাগলের চামড়া হয় নিম্নমানের। চামড়ার সাথে লেগে থাকা চর্বি পরিষ্কার করার সময় চামড়ার অঙ্গবিন্যাস ক্ষতিগ্রস্ত হয়।