খামারিয়ান লাইভস্টক ভিলেজ
বাংলাদেশে ছাগল পালনের সমস্যাসমূহঃ
- ছাগলের পুষ্টি, প্রজনন, সা ব্যবস্থাপনার ব্যাপারে খামারীদের প্রযুক্তিগত জ্ঞানের অভাব |
- ছাগলের বিভিন্ন, রোগ দমনে প্রস্তুতিমূলক ও কৌশলগত ব্যবস্থার অভাব যেমনঃ কৃমি নাশক না খাওয়ানো, যথাসময়ে টিকা প্রদান না করা ইত্যাদি।
- ফ্যাতেজিং, সেমি-ন্টেনসি এবং ইন্টেনসিত পদ্ধতিতে ছাল উৎপাদনে প্রযুক্তিগত জ্রানেব অভাব থাকা। নীতিমালাহীন অবাধ সংকরায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশের ব্রাক বেঙ্গল জাতের ছাগলের কৌলিক মানের বিনাশ।
- ছাগল উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কার্যকর সমস্থিত জাতীয় পরিকল্পনার অভাব |
- ছাগল ফসলের ক্ষেত নষ্ট করে এবং তা থেকে উদ্ভূত আঞ্চলিক মারামারির ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঝিনাইদহ জেলার অন্তত ৩৫টি গ্রামে বেশ কয়েক বছর ছাগল পালন বন্ধ ছিল।
- সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশে ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের ছাগলের জিনের গুনাগুণ, বিশেষ করে প্রজনন ক্ষমতার গুনগত মান হ্রাস পেয়েছে বলে বলছিলেন অধ্যাপক এমএএম ইয়াহিয়া।
- এই জাতের পাঠার সংখ্যা অনেক কমে গেছে। গায়ে দুর্গন্ধ হয় হয় বলে লোকে পাঠা পালন করতে চায় না। পাঠা হিসেবে ছাগলে জন্ম হলেও সেগুলোকে খাসি করে দেয়া হয়। তাছাড়া বাংলাদেশে পাঠার মাংসের চাহিদাও নেই, যে কারণে পাঠার সংখ্যা কম। বৈজ্ঞানিক গবেষণায় আমরা দেখেছি, একই পাঠা যদি একই পরিবারের কয়েক প্রজন্মের ছাগীর প্রজননের একমাত্র উৎস হয়, অর্থাৎ আন্তঃপ্রজনন হতে থাকে, তাহলে তার জিনের বৈশিষ্ট্যের মান আগের মত থাকবে না। এই মূহুর্তে দেশে গড়ে ১৬২টি ছাগীর প্রজনন হয় একটি পাঠা দিয়ে।
- বাংলাদেশে প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইন্সটিটিউট ২০০০ সালের দিকে কৃত্রিম প্রজননের ওপর গবেষণা শুরু করে। এখান থেকে গবেষণাগারে উৎপাদিত উন্নত জাতের পাঠা খামারীদের মধ্যে দেয়া হয়, তবে সে সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম।
বাংলাদেশে ছাগল পালনের সুবিধাসমূহঃ
- বাংলাদেশের স্বল্প ব্যয়ে ছাগল পালনের জন্য খুবই উপযুক্ত। গ্রামের বসতবাড়িতে ২-৪ টি। ছাগল পালন করা লাভজনক। বাংলাদেশের মোট ভূমির প্রায় ৭৬% এলাকা ছাগল পালনের উপযোগী।
- ছাগল অপচলিত খাদ্য যেমন কাঁঠাল পাতা, বাশ পাতা, কলা পাতা, হিজল পাতা এমনকি বসতবাড়ির আশেপাশের লতাপাতা ও সামান্য ঘাস খেয়ে জীবনধারণ ও বংশবৃদ্ধি করতে সক্ষম। ফলে ছাগলের খাবার জোগাড় করা তেমন কষ্টসাধ্য নয় |
- যেসব খামারীর গাভী পালন করার সামর্থ নেই তারা অনায়াসে ২-৪ টি ছাগল পালন করতে পারে। স্বল্প আয়ের মানুষ যেমন ভূমিহীন, হুদ, ও মাঝারী চাষী থামের দুণ্ছ মহিলা বা ছোট ছোট বালক বালিকারাও বাড়ির আশেপাশে, ক্ষেতের ধারে, রাডার পাশে ছাগল চড়িয়ে পালন করতে পারে।
- ছাগলের রোগ বালাই অন্যান্য গবাদিপরাণির তুলনায় কম হওয়ায় ছাগল পালন লাভজনক।
- বাংলাদেশের ব্রাক বেঙ্গল জাতের ছাগল বছরে ২ বার বাচ্চা দেয় এবং প্রতিবাণও ২-৪ টি করে বাচ্চা দেয় বলে এ জাতের ছাগল পালন লাভজনক।
- দেশে ও দেশের বাইরে ছাগলের মাংস, দধু ও চামড়ার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাই এগুলো বাজারজাতকরণ সহজসাধ্য ৷
- ছাগল খামার খাতে বিনিয়োগকৃত অর্থের ঝুঁকি অন্যান্য গবাদি প্রাণির তুলনায় কম।
- ছোট প্রাণীর খোরাক তুলনামূলকভাবে অনেক কম, পালনের জন্য অল্প জায়গা লাগে এবং মূলধনও সাধারণ মানুষের সামর্থ্যের মধ্যে থাকে।
- গবাদিপশুর তুলনায় ছাগলের রোগবালাই কম।
- তুলনামূলক কম সময়ে অধিক সংখ্যক বাচ্চা পাওয়া যায়। বছরে দুইবার বাচ্চা প্রসব করে এবং প্রতিবারে গড়ে ২-৩ টি বাচ্চা হয়ে থাকে।
- দেশে ও বিদেশে ব্ল্যাক ছাগলের চামড়া, মাংস ও দুধের বিপুল চাহিদা আছে।
- ছাগলের দুধ যক্ষ্মা ও হাঁজল রোগ প্রতিরোধক হিসাবে জনশ্রুতি রয়েছে এবং এজন্য এদের দুধের যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে।
ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল পালনের সুবিধাঃ
- ছাগলের দাঁত দেখে বয়স নির্ধারণ করতে হয়। বয়স ১২ মাসের নিচে হলে দুধের সবগুলোর দাঁত থাকবে, ১২-১৫ মাসের নিচে বয়স হলে স্থায়ী দাঁত এবং ৩৭ মাসের ঊর্ধ্বে বয়স হলে ৪ জোড়া স্থায়ী দাঁত থাকবে।
- ১২-১৫ মাস বয়সে প্রথম বাচ্চা দেয়।
- একটি ছাগী বছরে দুইবার বাচ্চা প্রসব করলেও উপযুক্ত ব্যবস্থাপনায় ছাগী ২-৮ টি পর্যন্ত বাচ্চা পাওয়া যেতে পারে।
- ২০ কেজি দৈহিক ওজন সম্পন্ন একটি ছাসী থেকে কমপক্ষে ১১ কেজি খাওয়ার যোগ্য মাংস এবং ১.-১.৪ কেজি ওজনের অতি উন্নতমানের চামড়া পাওয়া যায়।
- ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের চামড়া একটি অতি মূল্যবান উপজাত।
- দেখা গেছে, সেমি-ইন্টেনসিভ পদ্ধতিতে ২৫টি ছাগীর খামার থেকে ১ম বছরে ৫০,০০০ টাকা, ২য় বছরে ৭৫,৩৩৭ এবং ৩য় বছরে ১,০২,৬০০ টাকা পর্যন্ত আয় করা সম্ভব।
এগিয়ে যান…
ধন্যবাদ ভাই, খুব ভালো হয়েছে!