Skip to content

 

জাতীয় সংগীত অনুচ্ছেদ

জাতীয় সংগীত অনুচ্ছেদ

এখানে ‘জাতীয় সংগীত’ অনুচ্ছেদ দেওয়া হলো। যথা-

জাতীয় সংগীত অনুচ্ছেদঃ

রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃত এক বা একাধিক দেশপ্রেমমূলক গানকে জাতীয় সংগীত হিসেবে বিবেচনা করা হয়। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচির সূচনায় বা জাতীয় দিবসসমূহ পালনের সময়ে বিভিন্ন সরকারি অনুষ্ঠানে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে প্রতিদিন সকালের সমাবেশে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পাশাপাশি জাতীয় সংগীত গাওয়া হয়। জাতীয় সংগীত পরিবেশনের সময়ে সমবেত সকলকে উঠে দাঁড়াতে হয়। এটা দেশের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর সামিল। আন্তর্জাতিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় খেলা শুরুর আগেও প্রতিযোগীরা নিজ নিজ দেশের জাতীয় সংগীত পরিবেশন করে। বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের প্রথম লাইন: ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি।’ বাউল গানের সুরে গানটি রচনা করেছেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ১৯৭২ সালের ১৩ই জানুয়ারি স্বাধীন বাংলাদেশের মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে গানটিকে জাতীয় সংগীতের মর্যাদা দেওয়া হয়। গানটির কথায় বাংলাদেশ এবং বাংলা ভাষার প্রতি গভীর ভালোবাসা প্রতিফলিত হয়েছে। এই ধরনের জাতীয় সংগীত দেশের মানুষকে নিজ দেশের প্রতি দায়বদ্ধ হতে শেখায়।

জাতীয় সংগীত অনুচ্ছেদ লেখার পদ্ধতিঃ

একাধিক বাক্য দিয়ে একটি অনুচ্ছেদ রচিত হয়। আবার বহু অনুচ্ছেদের সমন্বয়ে তৈরি হয় প্রবন্ধ, গল্প ইত্যাদি গদ্যরচনা। এদিক থেকে অনুচ্ছেদ হলো গদ্যরচনার একক। একটি অনুচ্ছেদের মধ্যে বিশেষ একটি ভাবের প্রকাশ ঘটে কিংবা কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ের অবতারণা করা হয়। তাই অনুচ্ছেদের বাক্যগুলো ভাব বা বিষয়ের দিক দিয়ে পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত থাকে। ভালো অনুচ্ছেদের সমন্বয়ে একটি গদ্যরচনা আকর্ষণীয় হয়। শিক্ষার্থীকে তাই ভালোভাবে অনুচ্ছেদ লিখতে শেখা দরকার।

অনুচ্ছেদ রচনার সময়ে যেসব বিষয় মনে রাখতে হয়, সেগুলো নিম্নরূপ:

ক. অনুচ্ছেদে সব সময়ে একটি ভাব বা একটি বিষয় থাকে।

খ. একটি অনুচ্ছেদের মধ্যে একাধিক ভাব বা বিষয়ের অবতারণা করা ঠিক নয়।

গ. একটি বাক্য দিয়েও একটি অনুচ্ছেদ হয়। তবে দশ থেকে পনেরো বাক্যের অনুচ্ছেদই হলো আদর্শ অনুচ্ছেদ।

ঘ. অনেক সময়ে যৌক্তিক কারণে অনুচ্ছেদ দীর্ঘতর হতে পারে। সেক্ষেত্রে ভাব বা বিষয়ের সূক্ষ্মতর বিভাজন বিবেচনায় নিয়ে একটি অনুচ্ছেদকে একাধিক অনুচ্ছেদে বিভক্ত করা যায়।

ঙ. অনুচ্ছেদের প্রথম বাক্যে মূল ভাব বা বিষয়ের উল্লেখ করা হয়।

চ. অনুচ্ছেদের পরের বাক্যগুলোতে প্রথম বাক্যে উল্লেখিত ভাব বা বিষয়ের বিস্তার ঘটানো হয়ে থাকে।

ছ. অনুচ্ছেদের শেষ বাক্যে থাকে ভাব বা বিষয়ের সমাপ্তির ইঙ্গিত।

জাতীয় সংগীত অনুচ্ছেদ লেখার নিয়মঃ

১. ক্ষুদ্রই সুন্দর এবং সহজবােধ্যতাই আকর্ষণ। এটিই হলাে অনুচ্ছেদ রচনার মূল প্রতিপাদ্য। 

২. অনুচ্ছেদ হবে ছােটো। এখানে বর্ণনা থাকবে, তবে অনাবশ্যক কোনাে শব্দ থাকতে পারবে না। 

৩. অনুচ্ছেদ কেবল একটি প্যারাতেই সীমাবদ্ধ থাকবে। এটি অনাবশ্যক দীর্ঘ হবে না। 

৪. অনুচ্ছেদের শুরুতে শিরােনাম দিয়ে একটি প্যারার মধ্যে সূচনা, মূলবক্তব্য ও মন্তব্যকে উপস্থাপন করতে হয়। 

৫. অনুচ্ছেদে মূল ভাবের প্রকাশ হবে সংক্ষিপ্ত।

৬. অনুচ্ছেদের ভাষা হবে সহজ-সরল। 

৭. অনুচ্ছেদে কোনাে উপমা বা আলংকারিক ভাষা প্রয়ােগ করা সমীচীন নয়। তাহলে অনুচ্ছেদের সহজবােধ্যতায় ভাটা পড়বে। 

৮. অনুচ্ছেদের বক্তব্য স্পষ্ট এবং ভাষা প্রাঞ্জল হওয়া আবশ্যক। 

৯. বাক্যের মধ্যে অর্থগত সংগতি থাকতে হবে। 

১০. লেখা শুরু করার আগে অনুচ্ছেদের বিষয় সম্পর্কে ভালােভাবে চিন্তা করে নিতে হবে। 

১১. অনুচ্ছেদে সাধু ও চলিত ভাষা একসঙ্গে ব্যবহার করা যাবে না। 

১২. অনুচ্ছেদ হবে ছােটো ও স্বল্পায়তনের, কিন্তু বক্তব্য হবে স্বয়ংসম্পূর্ণ।

জাতীয় সংগীত অনুচ্ছেদ রচনার উদ্দেশ্যঃ

অনুচ্ছেদ রচনা একটি উৎকৃষ্ট শিল্পকর্ম। অনুচ্ছেদ রচনার মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীর অভিব্যক্তি, মনোভাব, অভিজ্ঞতা, আত্মোপলব্ধি, বোধগম্যতা ও নতুন কিছু সৃষ্টি করতে শেখায়। যে কোনো বিষয়ে অনুচ্ছেদ রচিত হতে পারে। আবার, সমকালীন জীবন ও পরিবেশ, আর্থ-সামাজিক সমস্যাবলি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইত্যাদি নানা বিষয়ে সংবাদপত্রে কিংবা যে কোন অনুষ্ঠানে যেমন— স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় অথরা কোন সাংস্কৃতি অনুষ্ঠান কিংবা স্থানীয় বা জাতীয় কোনো সেমিনারে কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে কিছু বলতে গেলে অনুচ্ছেদ রচনা জানা অপরিহার্য।

জাতীয় সংগীত অনুচ্ছেদ রচনার প্রয়োজনীয়তাঃ

মননশীল ও সৃজনশীল রচনার একটি সংক্ষিপ্ত রূপ হলাে অনুচ্ছেদ। ক্ষুদ্রায়তনেই অনুচ্ছেদের ভাব, ভাষা ও বিষয়ের বিস্তৃতি। এক্ষেত্রে রচয়িতার দায়িত্ব অনেক গুরুত্বপূর্ণ। স্বল্প কথায় একটি সম্পূর্ণ ভাবার্থকে প্রকাশ করতে গিয়ে লেখকের মুনশিয়ানা থাকতে হয় অনেক বেশি। স্বল্প কথায় পূর্ণাঙ্গতা লাভ করে বলে অনুচ্ছেদকে বলা যায় একটি উৎকৃষ্ট শিল্পকর্ম। সমকালীন, চলমান, জ্ঞান-বিজ্ঞান, সাহিত্য-সংস্কৃতি, শিক্ষা ও সমস্যা প্রভৃতি বিচিত্র বিষয়কে লেখকের চিন্তাশীলতা ও সৃজনশীলতা দিয়ে সার্থক রূপে প্রকাশ করা অত্যন্ত জরুরি। বক্তব্যকে সুন্দরভাবে গুছিয়ে উপস্থাপনের ক্ষেত্রে অনুচ্ছেদ রচনার বাস্তব ধারণা থাকা একান্ত প্রয়ােজন। যেকোনাে বক্তব্য উপস্থাপনের ক্ষেত্রে অনুচ্ছেদ রচনা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকলে কাজটি সহজ হয়ে যায়। অনুচ্ছেদে মূল কথাগুলাে আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপিত করা হয় বলে সবার কাছে তা গ্রহণযােগ্যতা পায়। তাই সার্থক অনুচ্ছেদ রচনার জন্য অনুচ্ছেদ রচনার কৌশল জানার প্রয়ােজনীয়তা অনেক।

Copyright Notice

কপি করা নিষিদ্ধ!