Skip to content

 

জীবনীশক্তি কি/কাকে বলে? ATP এর পূর্ণরূপ কি? ATP কি/কাকে বলে? ও ATP এর কাজ ভূমিকা কি? #জীববিজ্ঞান

জীবনীশক্তি কি/কাকে বলে? ATP এর পূর্ণরূপ কি? ATP কি/কাকে বলে? ও ATP এর কাজ ভূমিকা কি? #জীববিজ্ঞান

জীবনীশক্তি কি/কাকে বলে?

জীবনীশক্তি বা জৈবশক্তি (bloenergy) বলতে আমরা ভিন্ন বা বিশেষ কোনো শক্তিকে বুঝাই না। পদার্থবিজ্ঞানে শক্তির যে সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে তা থেকে, এটি আলাদা কিছু নয়, জীবদেহ বা জৈব অপুর রাসায়নিক বন্ধন ছিন্ন করার মাধ্যমে প্রাপ্ত শক্তিকে এই নামে ডাকা হয় মাত্র।

◾ জীবন পরিচালনার জন্য জীবকোষে প্রতি মুহূর্তে হাজারো রকমের জৈব রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটতে থাকে। এসব বিক্লিয়ার জন্য কমবেশি শক্তির প্রয়োজন হয়। পৃথিবীতে শক্তির মূল উৎস সূর্য। সবুজ উদ্ভিদ সালোকসংশ্লেষণের মাধ্যমে সৌরশক্তিকে রাসায়নিক শক্তিতে পরিণত করে শর্করাজাতীয় খাদ্য তৈরি করে। প্রাণী কিংবা অসবুজ উদ্ভিদ সৌরশক্তিকে সরাসরি আবদ্ধ করে দৈহিক কাজে ব্যবহার করতে পারে না। জীবন পরিচালনার জন্য যে শক্তির প্রয়োজন হয়, সে শক্তির জন্য তাদের কোনো না কোনোভাবে সবুজ উদ্ভিদের উপরেই নির্ভর করতে হয়। এসব বিষয় আলোচনা করাই জীবনীশক্তি বা বায়োএনার্জেটিক্স (Bioenergetics)-এর মূল উদ্দেশ্য।

ATP এর পূর্ণরূপ কি? ATP কি/কাকে বলে?

ATP এর পূর্ণরূপ হল Adenosine Tri-phosphate। অ্যাডেনোসিন ট্রাইফোসফেট ( এটিপি ) একটি জৈব যৌগ যা জীবিত কোষকে বিভিন্ন প্রক্রিয়া চালিত করার জন্য শক্তি সরবরাহ করে।

জীবনীশক্তি ও ATP এর কাজ/ভূমিকাঃ

◾ জীব প্রতিনিয়ত পরিবেশ থেকে শক্তি সংগ্রহ করে, সংগৃহীত শক্তিকে একরূপ থেকে অন্যরূপে পরিবর্তিত করে, কখনো বা সঞ্চয় করে এবং শেষে সেই শক্তি আবার পরিবেশে ফিরিয়ে দেয়।

চিত্র-4.01ঃ অ্যাডিনোসিন ডাইফসফেটের (ADP) সাথে ফসফেট (P) যুক্ত হয়ে অ্যাডিনোসিন ট্রাইফসফেট (ATP) গঠিত হতে যতখানি শক্তি বাইরে থেকে সরবরাহ করা প্রয়োজন, ATP ভেঙে ADP ও ফসফেট উৎপাদন করলে প্রায় ততখানি শক্তি নির্গত হয়। জীবকোষে এই দুটি বিক্রিয়া চক্রাকারে চলতে থাকে।

চিত্র-4.01ঃ অ্যাডিনোসিন ডাইফসফেটের (ADP) সাথে ফসফেট (P) যুক্ত হয়ে অ্যাডিনোসিন ট্রাইফসফেট (ATP) গঠিত হতে যতখানি শক্তি বাইরে থেকে সরবরাহ করা প্রয়োজন, ATP ভেঙে ADP ও ফসফেট উৎপাদন করলে প্রায় ততখানি শক্তি নির্গত হয়। জীবকোষে এই দুটি বিক্রিয়া চক্রাকারে চলতে থাকে।

◾ DNA এবং RNA-এর গাঠনিক উপাদানগুলোর একটি হলো অ্যাডেনিন। এটি একটি নাইট্রোজেন বেস। এর সাথে পাঁচ কার্বনবিশিষ্ট রাইবোজ সুপার অণু যুক্ত হয়ে তৈরি হয় অ্যাডিনোসিন। অ্যাডিনোসিন অণুর সাথে পর্যায়ক্রমে একটি, দুটি এবং তিনটি ফসফেট/ফসফোরিক এসিড গ্রুপ যুক্ত হয়ে যথাক্রমে অ্যাডিনোসিন মনোফসফেট (AMP), অ্যাডিনোসিন ডাইফসফেট (ADP) এবং অ্যাডিনোসিন ট্রাইফসফেট (ATP) গঠন করে। এভাবে ফসফেট যুক্ত করতে বাইরে থেকে শক্তি দিতে হয়। এই বিক্রিয়ার নাম ফসফোরাইলেশন (phosphorylation)। আবার এর বিপরীত প্রক্রিয়ায়, ফসফেট গ্রুপ বিচ্ছিন্ন হলে শক্তি বের হয়ে আসে। এই বিক্রিয়ার নাম ডিফসফোরাইলেশন (dephosphorylation)। উল্লেখ্য, প্রতিমোল ATP অণুর প্রান্তীয় ফসফেট গ্রুপে 7.3 কিলোক্যালরি (প্রায় 30.55 কিলোজুল) শক্তি জমা থাকতে পারে।

◾ পরিবেশ থেকে শক্তি সংগ্রহ করে তাকে কোষের তথা জীবদেহের ব্যবহার উপযোগী রূপে পরিবর্তিত করার জন্য কাজ করে দুটি কোষীয় অঙ্গাণু: মাইটোকন্ড্রিয়া এবং প্লাস্টিড। উভয়েরই রয়েছে ইলেকট্রন ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম নামক একসেট বিশেষ জৈব অণু, যাদের কাজ হলো পুষ্টি উপাদান (যেমন: গ্লুকোজ) বা কোনো অন্তর্বর্তীকালীন অণুর শক্তিকে ATP-এর ফসফেট গ্রুপের বন্ধনশক্তি হিসেবে জমা করা।

◾ আবার, ATP-এর রাসায়নিক বন্ধন ভেঙে যে শক্তি বের হয়, সেই শক্তি দিয়ে জীবদেহের প্রতিটি জৈবনিক কাজ অর্থাৎ, মাংসপেশির সংকোচন থেকে ইন্দ্রিয়ানুভূতি, খাবার খাওয়া থেকে হজম করা, নিঃশ্বাস নেওয়া থেকে কথা বলা, চিৎকার করা থেকে হাসি-কান্না, দৈহিক বৃদ্ধি থেকে প্রজনন, দেহের তাপমাত্রা ঠিক রাখা থেকে শুরু করে দেহের প্রতিটি কোষের স্বাভাবিক আয়তন বজায় রাখা এর সবই সম্পন্ন হয়।

◾ আমরা যে খাবার খাই তা জারিত হয়, সেই জারণ থেকে নির্গত শক্তি দ্বারা ফসফোরাইলেশনের মাধ্যমে আবার সেই ভাঙা দুই টুকরা জোড়া লেগে ATP তৈরি হয়। শক্তির প্রয়োজন হলে তা আবার ভাঙে। তারপর খাদ্য থেকে শক্তি নিয়ে আবার জোড়া লাগে। এ যেন এক রিচার্জেবল ব্যাটারি। ATP শক্তি জমা করে রাখে এবং প্রয়োজন অনুসারে অন্য বিক্রিয়ায় শক্তি সরবরাহ করে। এজন্য ATP-কে অনেক সময় ‘জৈবমুদ্ৰা’ বা ‘শক্তি মুদ্ৰা’ (Biological coin or energy coin) বলা হয়।

Copyright Notice

কপি করা নিষিদ্ধ!