Skip to content

 

Wait...❤😘 Show love? ⬇⬇⬇

জুমার নামায ও জুমার খুতবার সুন্নাত, আদব ও মাসায়েল

জুমার নামায ও জুমার খুতবার সুন্নাত, আদব ও মাসায়েল

বিষয়: জুমার নামায, জুমার জামা’আত ওয়াজিব হওয়ার শর্তসমূহ, জুমুআ সহীহ হওয়ার শর্তসমূহ, জুমার খুতবার সুন্নাত, আদব ও মাসায়েল, জুমার খুতবার জরুরী বিষয়সমূহ, জুমার খুতবার সুন্নাত ও আদবসমূহ, জুমার নামাজের খতীবের সাথে সংশ্লিষ্ট কয়েকটি মাসায়েল, জুমার খুতবার সময় শ্রোতাদের করণীয় আমলসমূহ।

▣ শুক্রবার দিন জোহরের পরিবর্তে জুমার নামায হয়ে থাকে। প্রথমে চার রাকআত “কাবলাল জুমুআ” সুন্নাতে মুআক্কাদা, তারপর জুমার খুতবা ফরয, তারপর দুই রাকআত ফরয, তারপর চার রাকআত “বা’দাল জুমু’আ” সুন্নাতে মুয়াক্কাদা, অতঃপর দুই রাকআত সুন্নাতে গায়রে মুআক্কাদা।

▣ সব মৌসুমেই জুমার নামায ওয়াক্ত হওয়ার পর আগে ভাগেই পড়ে নেয়া মোস্তাহাব।

▣ নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুমার নামাযে প্রথম রাকআতে সূরা জুমুআ এবং দ্বিতীয় রাকআতে সূরা মুনাফিকূন অথবা প্রথম রাকআতে সূরা আ’লা এবং দ্বিতীয় রাকআতে সূরা গাশিয়া পাঠ করতেন। এরূপ করা মুস্তাহাব।

▣ অসুস্থ্য ও মা’যূর ব্যক্তিদের জন্য মোস্তাহাব হলো জুমার জামা’আত হয়ে যাওয়ার পর জোহরের নামায পড়া (আযান ইকামত ও জামা’আত ব্যতীত)। মহিলাগণ জুমু’আর জামা আতের পূর্বেও জোহর পড়ে নিতে পারে।

▣ চার রাকআত কাবলাল জুমু’আর নিয়ত এভাবে করা যায়-বাংলায়ঃ চার রাকআত কাবলাল জুমার নামাযের নিয়ত করছি।

▣ জুমার দুই রাকআত ফরযের নিয়ত এভাবে করা যায়-বাংলায়ঃ জুমার দুই রাকআত ফরয নামায পড়ছি।

▣ চার রাকআত বা’দাল জুমুআ নামাযের নিয়ত এভাবে করা যায়-বাংলায়ঃ চার রাকআত বা’দাল জুমুআ নামাযের নিয়ত করছি।

১. আযাদ হওয়া-গোলামের উপর জুমুআ ওয়াজিব নয়।

২. পুরুষ হওয়া-স্ত্রীলোকের উপর জুমুআ ওয়াজিব নয়।

৩. মুকীম হওয়া-মুসাফিরের উপর জুমুআ ওয়াজিব নয়।

৪. সুস্থ্য হওয়া-অসুস্থ্য ব্যক্তি যে জুমার মসজিদ পর্যন্ত নিজ ক্ষমতায় হেটে যেতে অক্ষম, তার উপর জুমুআ ওয়াজিব নয়। যে বৃদ্ধ ব্যক্তি বার্ধক্যের দরুণ জামে মসজিদে হেটে যেতে অক্ষম কিংবা অন্ধ, তাদেরকেও রোগী মনে করা হবে। অবশ্য অন্ধকে কেউ ধরে নিয়ে যাওয়ার থাকলে তার উপর জুমুআ ওয়াজিব।

৫. যে সব ওজরের কারণে পাঞ্জেগানা নামাযের জামা’আত তরক করা জায়েযসে সব ওজর না থাকা-এরূপ কোন ওজর থাকলে জুমুআ ওয়াজিব হয় না।

See also  বিতরের নামাজের নিয়ম + বিতরের নামাজের নিয়ত + বিতরের নামাজের দোয়া + দোয়া কুনুত আরবি, বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ

৬. পাঞ্জেগানা নামায ফরয হওয়ার জন্য যে সব শর্ত রয়েছে তা মৌজুদ থাকা যথাঃ বুদ্ধি সম্পন্ন হওয়া, বালেগ হওয়া, মুসলমান হওয়া।

৭. যাদের উপর জুমুআ ওয়াজিব নয় তারা জুমুআ পড়ে নিলে তাদের ফরযে ওয়াক্ত অর্থাৎ, জোহর আদায় হয়ে যাবে।

১. শহর (ছোট হোক বা বড়) বা ছোট শহর তুল্য বড় গ্রাম হওয়া। উল্লেখ্য, যে গ্রামে ৩/৪ হাজার লোকের বসতি রয়েছে সেটাকে ছোট শহর তুল্য বড় গ্রাম ধরা হয়। সেখানে জুমুআ জায়েয। কিন্তু বন, চর বা বিলের মধ্যে আবাদী থেকে অনেক দূরে কোন ছোট গ্রাম থাকলে সেখানে জুমুআ দুরস্ত নয়।

২. জুমার নামায ও খুতবা জোহরের ওয়াক্তের মধ্যে হতে হবে।

৩. খুতবা হওয়া শর্ত। খুতবা নামাযের পূর্বে হওয়া শর্ত।

৪. জামা’আত হওয়া। অর্থাৎ, খুতবার সময় থেকে ফরযের প্রথম রাকআতের সাজদা পর্যন্ত অন্ততঃ তিনজন বালেগ পুরুষ ইমামের সঙ্গে থাকতে হবে।

৫. ইজাযাতে আম্মা থাকা। অর্থাৎ, যে স্থানে জুমার নামায পড়া হবে সেখানে সর্ব সাধারণের প্রবেশাধিকার থাকা চাই। অতএব জেলখানা, কয়েদখানা, বন্ধ দূর্গ প্রভৃতি স্থানে জুমুআ দুরস্ত নয়।

জুমার খুতবার সুন্নাত, আদব ও মাসায়েলঃ-

১. খুতবা নামাযের পূর্বে হতে হবে

২. খুতবার নিয়ত থাকতে হবে।

৩. খুতবা জোহরের ওয়াক্তের মধ্যে হতে হবে।

৪. খুতবা কমপক্ষে এমন তিনজন লোকের সামনে হতে হবে যাদের দ্বারা জুমুআ কায়েম হয়।

৫. খুতবা এবং নামাযের মাঝে কোন আজনবী (অসংশ্লিষ্ট) কাজের ব্যবধান ঘটতে পারবে না।

৬. উভয় খুতবাই আরবী ভাষায় হওয়া জরূরী (অর্থাৎ, সুন্নাতে মুআক্কাদা)। আরবী ব্যতীত অন্য কোন ভাষায় খুতবা পড়া বা অন্য কোন ভাষায় পদ্য যোগ করা মাকরূহ তাহরীমী ও বিদআত।

১. খুতবার মধ্যে আল্লাহর শোকর বর্ণিত হওয়া সুন্নাত।

২. খুতবার মধ্যে আল্লাহর প্রশংসা বর্ণিত হওয়া সুন্নাত।

৩. খুতবার মধ্যে তাওহীদ ও রেছালাতের সাক্ষ্য বর্ণিত হওয়া সুন্নাত।

৪. খুতবার মধ্যে রাসূল (সাঃ)-এর উপর দুরূদ পাঠ করা সুন্নাত।

৫. খুতবার মধ্যে ওয়াজ নছীহাত বয়ান করা সুন্নাত।

৬. খুতবার মধ্যে দুই একটি আয়াত বা সূরা পাঠ করা সুন্নাত।

৭. দুই খুতবা পড়া সুন্নাত। দ্বিতীয় খুতবায় উপরোক্ত বিষয়গুলোর পুনরাবৃত্তি করা সুন্নাত।

৮. দ্বিতীয় খুতবায় সমস্ত মুসলমান নর-নারীর জন্য দোয়া ও এস্তেগফার করা সুন্নাত।

See also  নামাজের আহ্কাম বা শর্তসমূহ (৭টি), নামাজের আরকান (৬টি), নামাজের ওয়াজিবসমূহ (১৬টি), নামাজ ভঙ্গের কারণসমূহ (২৭টি), নামাজের মাকরূহসমূহ (২৫টি), যে সব অবস্থায় নামাজ ছেড়ে দেয়া যায় (৫টি)

৯. খুতবা অত্যন্ত লম্বা না করা সুন্নাত বরং নামাযের চেয়ে কম রাখবে।

১০.ছানী (দ্বিতীয়) খুতবায় হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আওলাদ, সাহাবীগণ ও হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বিবি সাহেবাগণের প্রতি বিশেষতঃ খোলাফায়ে রাশেদীন এবং হযরত হামযা ও আব্বাস (রাঃ)-এর জন্য দোয়া করা মোস্তাহাব। সমসাময়িক মুসলমান বাদশার জন্য দোয়া করা জায়েয কিন্তু তার মিথ্যা প্রশংসা করা মাকরূহ তাহরীমী।

১১. রমযান শরীফের শেষ জুমার খুতবায় আল বিদা জ্ঞাপন কিংবা বিদায় ও বিচ্ছেদমূলক বিষয় পড়া প্রমাণিত নয় বিধায় তা বিদআত I

▣ খতীবের উযূ গোসলের হাজত থেকে পবিত্র হয়ে নেয়া সুন্নাত।

▣ খতীব মিম্বরে উঠে কিছুক্ষণ বসবেন, তারপর দাঁড়িয়ে খুতবা দিবেন এটাই সুন্নাত।

▣ খতীবের জন্য প্রথম খুতবার শুরুতে শুধু আউযূবিল্লাহ চুপে চুপে (জোরে নয়) বলা সুন্নাত।

▣ উপস্থিত মুসল্লীদের দিকে মুখ করে খুতবা দেয়া সুন্নাত। খুতবার সময় ডানে বামে সীনা ঘুরিয়ে রুখ করা নিষিদ্ধ, তবে শুধু ডানে বামে নজর করা যায়। আর তারগীব-তারহীবের বিষয়বস্তুর প্রেক্ষিতে আওয়াজ ও আন্দাজের মধ্যে পরিবর্তন জায়েয বরং সুন্নাত।

▣ দাঁড়িয়ে খুতবা দেয়া সুন্নাত।

▣ মিম্বরের উপর খুতবা দেয়া সুন্নাত।

▣ লাঠি হাতে খুতবা দেয়া সুন্নাত (গায়রে মুআক্কাদা)। মিম্বার থাকলেও এটা সুন্নাত। (তবে মাঝে মধ্যে লাঠি নেয়া পরিত্যাগ করা উচিত, অন্যথায় বিদআত হয়ে যাবে।)

▣ খুতবার বই হাতে থাকলে লাঠি বাম হাতে নেয়া উত্তম আর বই হাতে না থাকলে লাঠি ডান হাতে নেয়া উত্তম।

▣ খতীবের জন্য মুখস্ত খুতবা দেয়া বা কিতাব কিংবা অন্য কিছু দেখে খুতবা পড়া সবটাই জায়েয।

▣ খতীবের জন্য দুই খুতবার মাঝখানে তিন আয়াত পড়া পরিমাণ সময় বসা সুন্নাত।

▣ লোকে শুনতে পারে এ পরিমাণ আওয়াজের সাথে খুতবা পড়া সুন্নাত। কাছের লোকে শুনতে পারে অন্ততঃ এতটুকু জোরে বলা জরুরী।

▣ খতীব খুতবার সময়েও নেক কাজের আদেশ এবং বদ কাজের নিষেধ করতে বা মাসআলার কথা বলতে পারেন বরং মুনকার (বদকাজ) দেখলে মুখেই নিষেধ করা তার উপর ফরয।

▣ খতীবের জন্য খুতবার পূর্বে মেহরাবের মধ্যে নামায পড়া মাকরূহ। পড়তে হলোে মিম্বরের ডান দিকে পড়বে।

▣ খতীবের জন্য কোন নির্দিষ্ট বিষয়ে খুতবা দেয়া জরূরী নয়।

▣ খুতবা এবং ইকামতের মাঝখানে প্রয়োজনে সংক্ষিপ্ত ভাবে কোন মাসআলা বলতে পারেন।

See also  শবে বরাতের নামাজ (sobe borat namaj)

▣ খতীব খুতবার পূর্বে সংক্ষিপ্ত ভাবে ওয়াজ-নছীহাত করতে পারেন, এটা জায়েয বরং মোস্তাহাব, যদি মুসল্লীগণ চান।

▣ জুমার দ্বিতীয় আযানের জবাব ও তার পরের দোয়া জায়েয নেই।

▣ যখন খতীব খুতবার জন্য দাঁড়াবেন, তখন থেকে খুতবার শেষ পর্যন্ত নামায পড়া বা কথা-বার্তা বলা মাকরূহ তাহরীমী। অবশ্য যে ব্যক্তি ছাহেবে তারতীব তার জন্য কাযা নামায পড়া জায়েয বরং ওয়াজিব।

▣ মনোযোগের সাথে খুতবা শ্রবণ করা ওয়াজিব। দূরত্বের কারণে খুতবার আওয়াজ শুনতে না পেলেও চুপ করে কান লাগিয়ে থাকা ওয়াজিব এবং যে কাজ বা কথা দ্বারা খুতবা শোনার ব্যাঘাত ঘটে তা মাকরূহ তাহরীমী। তখন হাঁটা চলা, সালাম করা, সালামের জবাব দেয়া, তাসবীহ-তাহলোীল ইত্যাদি এমনকি মুখে মাসআলা বলাও নিষিদ্ধ। দান বাক্স চালানো নিষিদ্ধ। তবে কোন বদকাজ (মুনকার) দেখলে ইশারায় নিষেধ করা ফরয।

▣ সুন্নাতে মুআক্কাদা পড়ার মধ্যে খুতবা শুরু হলোে তৃতীয় বা চতুর্থ রাকআতে থাকলে নামায পূর্ণ করে নিবে আর এর পূর্বে থাকলে দুই রাকআত পড়ে সালাম ফিরাবে। এবং এ সুন্নাত পরে পড়ে নিবে।

▣ খুতবার সময় নামাযের হালতে বসা আদব এবং কেবলামুখী হয়ে বসবে।

▣ খুতবার মধ্যে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নাম মোবারক আসলে মুখে নয় বরং মনে মনে দুরূদ শরীফ পড়া জায়েয।

সমাপ্ত: জুমার নামায, জুমার জামা’আত ওয়াজিব হওয়ার শর্তসমূহ, জুমুআ সহীহ হওয়ার শর্তসমূহ, জুমার খুতবার সুন্নাত, আদব ও মাসায়েল, জুমার খুতবার জরুরী বিষয়সমূহ, জুমার খুতবার সুন্নাত ও আদবসমূহ, জুমার নামাজের খতীবের সাথে সংশ্লিষ্ট কয়েকটি মাসায়েল, জুমার খুতবার সময় শ্রোতাদের করণীয় আমলসমূহ।

সূত্রঃ আহকামে জিন্দেগী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Copyright Notice

কপি করা নিষিদ্ধ!