Skip to content

 

তাকবিরে তাশরিকের অর্থ, উচ্চারণ, কখন পড়তে হয়? কত বার পড়তে হয়? + ঈদের রাতের ফজিলত + ঈদের দিনের সুন্নত কাজগুলো কি কি?

তাকবিরে তাশরিকের অর্থ, উচ্চারণ, কখন পড়তে হয়? কত বার পড়তে হয়? + ঈদের রাতের ফজিলত + ঈদের দিনের সুন্নত কাজগুলো কি কি?

সম্মানিত পাঠকবৃন্দ, আজকে আমরা জানব, তাকবিরে তাশরিকের অর্থ, তাকবিরে তাশরিকের উচ্চারণ, তাকবিরে তাশরিক কখন পড়তে হয়? তাকবিরে তাশরিক কত বার পড়তে হয়? ও ঈদের রাতের ফজিলত এবং ঈদের দিনের সুন্নত কাজগুলো কি কি? এটা জানা দরকার, কারণ, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, জিলহজ মাসের প্রথম দশকে তোমরা বেশি বেশি তাকবির (আল্লাহু আকবার), তাহলিল (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ) ও তাহমিদ (আলহামদুলিল্লাহ) বলবে।’ (মুসনাদে আহমাদ) তো চলুন শুরু করা যাক।

তাকবিরে তাশরিকের অর্থ, উচ্চারণ, কখন পড়তে হয়? কত বার পড়তে হয়?

* ৯ই যিলহজ্জের ফজর থেকৈ ১৩ই যিলহজ্জের আসর নামায পর্যন্ত সর্বমোট ২৩ ওয়াক্তে প্রত্যেক ফরয নামাযের পর তাকবীরে তাশরীক বলা ওয়াজিব। জামা’আতে নামায হোক বা একাকী সর্বাবস্থায় বলতে হবে। পুরুষ হোক বা নারী সকলকে বলতে হবে।

তাকবীরে তাশরীক আরবি: الله أكبر الله أكبر لا إله إلا الله والله أكبر الله أكبر ولله الحمد –

তাকবিরে তাশরিক উচ্চারণ: ‘আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার ওয়ালিল্লাহিল হামদ।’

তাকবিরে তাশরিক অর্থ: ’আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান; আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই; আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান; সব প্রশংসা মহান আল্লাহ জন্য।’

* এই তাকবীর জোর আওয়াজে বলা ওয়াজিব। তবে মহিলাগণ আস্তে আস্তে বলবে।

* নামাযের সালাম ফিরানোর সাথে সাথে এই তাকবীর বলতে হবে। ইমাম বলতে ভুলে গেলে মুক্তাদীগণ সাথে সাথে বলবে- ইমামের বলার অপেক্ষা করবে না।

* কারও কারও মতে ঈদুল আযহার নামাযের পরও এই তাকবীর পড়ে নেয়া চাই।

* তাকবীরে তাশরীক একবার বলা ওয়াজিব। তিনবার বলা সুন্নাত নয়। তিনবার বলা সুন্নাতের মত অনুযায়ী ফতুয়া দেয়া হয় না। (৬৩)

ঈদের রাতের ফজিলত

* হাদীসে আছে, যে ব্যক্তি ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার রাতে জাগরিত থেকে আল্লাহর ইবাদত-বন্দেগীতে মশগুল থাকবে, তাহলে যে দিন অন্যান্য দিল মরে যাবে সেদিন তার দিল মরবে না অর্থাৎ, কিয়ামতের দিনের আতংকের কারণে অন্যান্য লোকের অন্তর ঘাবড়ে গিয়ে মৃতপ্রায় হয়ে যাবে, কিন্তু দুই ঈদের রাত্রে জাগরণকারীর অন্তর তখন ঠিক থাকবে- ঘাবড়াবে না। (رواه ابن ماجة ، وإسناده ضعيف الا انه يقوى برواية الطبراني في الكبير والاوسط)

ঈদের দিনের সুন্নত কাজগুলো কি কি?

* ঈদুল ফিতরের দিন, ঈদুল আযহার দিন এবং ঈদুল আযহার পরের তিন দিন সর্বমোট এই ৫দিন যে কোন প্রকারের রোযা রাখা হারাম।

* উপরোক্ত ৫দিন পানাহারের মধ্যে কিছু অতিরিক্ত জাঁকজমক করার অবকাশ রয়েছে এবং তা শরী’আতের কাম্য।

ঈদুর ফিতরে ১৩টা জিনিস সুন্নাত

১. ভোরে খুব তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠা।

২. মেসওয়াক করা।

৩. গোসল করা।

৪. যথাসাধ্য উত্তম পোশাক পরিধান করা।

৫. শরী—আত সম্মতভাবে সাজ-সজ্জা করা।

৬. খুশবূ লাগানো।

৭. ঈদগাহে যাওয়ার পূর্বে কোন মিষ্ট দ্রব্য খেয়ে যাওয়া।

৮. আগে ঈদগাহে যাওয়া।

৯. ঈদগাহে যাওয়ার পূর্বে সদকায়ে ফিতির (ফেতরা) না দিয়ে থাকলে দিয়ে যাওয়া।

১০. ঈদগাহে যেয়ে ঈদের নামায পড়া। বিনা ওজরে মসজিদে না পড়া।

১১. পায়ে হেটে ঈদগাহে যাওয়া।

১২. যাওয়ার সময় এই তাকবীর আস্তে আস্তে পড়তে পড়তে যাওয়া-

الله أكبر الله أكبر لا إله إلا الله والله أكبر الله أكبر ولله الحمد –

১৩. এক রাস্তায় যাওয়া, অন্য রাস্তা দিয়ে প্রত্যাবর্তন।

ঈদুল আযহার দিনের সুন্নাত

ঈদুল আযহার দিন ও ঈদুর ফিতর সুন্নাত সব একই। শুধু পার্থক্য হল-

(১) ঈদুল আযহায় ঈদগাহে যাওয়ার পূর্বে কিছু না খাওয়া সুন্নাত।

(২) ঈদুল আযহায় ঈদগাহে যাওয়ার সময় উপরোক্ত তাকবীর আস্তে আস্তে নয় বরং জোরে জোরে বলা সুন্নাত।

(৩) ঈদুল ফিতরের তুলনায় ঈদুল আযহার নামায সকাল সকাল পড়া সুন্নাত।

(৪) ঈদুল আযহায় ফিতরা-র বিধান নেই বরং এখানে নামাযের পর কুরবানী রয়েছে।

* যেখানে ঈদের নামায পড়া হবে সেখানে ঐ দিন অন্য কোন নফল নামায পড়া মাকরূহ, চাই ঈদের নামাযের পূর্বে হোক বা পরে। আর ঈদের নামাযের পূর্বে ঘরেও কোন নফল নামায পড়া মাকরূহ। হ্যাঁ ঈদের নামাযের পর ঘরে নফল নামায পড়া যায়- মাকরূহ হবে না।

আজকে এখাইনেই শেষ করছি, আশা করি পোষ্টটি থেকে তাকবিরে তাশরিকের অর্থ, তাকবিরে তাশরিকের উচ্চারণ, তাকবিরে তাশরিক কখন পড়তে হয়? তাকবিরে তাশরিক কত বার পড়তে হয়? ও ঈদের রাতের ফজিলত এবং ঈদের দিনের সুন্নত কাজগুলো কি কি? তা আমার জানতে পেরেছি। আল্লাহতাআলা মুসলিম উম্মাহকে ২৩ ওয়াক্ত ফরজ নামাজের পর তাকবিরে তাশরিক পড়ার মাধ্যমে আল্লাহর বড়ত্ব, একত্ববাদের ঘোষণা ও প্রশংসা করে যথাযথ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করার তাওফিক দান করুন। আল্লাহ তাআলার ভালোবাসার ভাগিদার হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Copyright Notice

কপি করা নিষিদ্ধ!