বিষয়: তারাবীর নামায ও তার মাসায়েল + খতম তারাবীর মাসায়েল।
তারাবীর নামায ও তার মাসায়েল
◆ রমযান মাসে ইশার নামাযের পর ইশার ওয়াক্তের মধ্যে যে বিশ রাকআত সুন্নাতে মুআক্কাদা পড়তে হয়, তাকে তারাবীহ-র নামায বলে।
◆ তারাবীহ্-র নামায সুন্নাতে মুআক্কাদা।
◆ তারাবীহ্-র নামায জামাআতের সাথে পড়া সুন্নাতে মুআক্কাদায়ে কেফায়া। মহিলাদের তারাবীহ্-র জামা’আত করা মাকরূহ তাহরীমী।
◆ প্রতি চার রাকআত তারাবীহ্-র পর এবং বিশ রাকআতের পর বিতরের পূর্বে চার রাকআত পরিমাণ বিশ্রাম করা মোস্তাহাব। জামা’আতের লোকদের কষ্ট হওয়ার বা জামা’আতের লোক সংখ্যা কম হওয়ার আশংকা হলোে এত সময় বিশ্রাম করবে না বরং কম করবে।
◆ এই বিশ্রামের সময় চুপ করে বসে থাকা, তাসবীহ তাহলীল, তিলাওয়াত, দুরূদ পড়া বা নফল নামায পড়া সবই জায়েয। বারবার পড়তে থাকা উত্তম। এবং এসব দোয়া চিৎকার করে নয় বরং নীরবে (কিংবা স্বল্প শব্দে) পড়া মোনাসেব।
◆ প্রত্যেক চতুর্থ রাকআতে মোনাজাত করা জায়েয আছে, কিন্তু বিশ রাকআতের পর বিতরের পূর্বে দু’আ করাই আফযল। (শামসুল হক ফরীদপুরী, দ্রঃ বাংলা বেহেশতী জেওরঃ ১ম) তবে কোথাও প্রতি চার রাকআতের পর মুনাজাত করলে কঠোর ভাবে তাতে বাঁধা দেয়া কিংবা না করা হলোে মুসল্লীগণের পক্ষ থেকে ইমামকে করার জন্য হুকুম দেয়া সংগত নয়।
◆ যদি কেউ মসজিদে এসে দেখেন ঈশার জামাআত হয়ে গিয়েছে এবং তারাবীহ শুরু হয়ে গিয়েছে তখন তিনি একা একা ইশা পড়ে নিয়ে তারপর তারাবীহ্-র জামা’আত শরীক হবেন। ইত্যবসরে যে কয় রাক’আত তারাবীহ ছুটে গিয়েছে তা তিনি তারাবীহ ও বেতর জামা’আতের সাথে আদায় করার পর পড়বেন।
খতম তারাবীর মাসায়েলঃ
◆ রমযান মাসে তারাবীহ্-র মধ্যে তারতীব অনুযায়ী একবার কুরআন শরীফ খতম করা (পড়া/শুনা) সুন্নাত।
◆ তারাবীহ্-র খতমের মধ্যে যে কোন একটি সূরার শুরুতে বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম জোরে পড়া চাই, নতুবা শ্রোতাদের খতম পূর্ণ হবে না।
◆ নাবালেগের পিছনে এক্তেদা করা দুরস্ত নয়, চাই ফরয নামাযে হোক বা তারাবীহ্-র নামায হোক।
◆ ইচ্ছাকৃত ভাবে ভুল লোকমা দিয়ে হাফেজকে পেরেশান করা নিষিদ্ধ।
◆ তারাবীহ্তে এত দ্রুত তিলাওয়াত করা যে বুঝে আসে না- এরূপ তিলাওয়াত ছওয়াবের পরিবর্তে গোনাহের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
◆ হাফেজ সাহেব যদি ভুলে গিয়ে চুপ-চাপ দাঁড়িয়ে অথবা বৈঠকের সময় তাশাহ্হুদের আগে বা পরে চিন্তা করতে থাকেন এবং এর মধ্যে এক রুকন পরিমাণ (তিনবার সোবহানাল্লাহ বলার পরিমাণ) সময় অতিবাহিত হয়ে যায়, তাহলোে সাজদায়ে সাহো দিতে হবে।
◆ কোন আয়াত ভুলে থেকে গেলে বা ভুল পড়া হয়ে থাকলে পরবর্তী দুগানায় (দুই রাকআতে) বা পরবর্তী যে কোন দিন সেটা পড়ে নিতে হবে, নতুবা খতম পূর্ণ হবে না।
◆ খতমের দিন তারাবীহ্-র মধ্যেই খতম করার পর শেষ রাকআতে সূরা বাকারা পড়া মোস্তাহাব।
◆ তারাবীহ্-র মধ্যে খতমের সময় সূরা এখলাস তিনবার পড়া মাকরূহ। (অর্থাৎ, শরী’আতের বিশেষ নিয়ম মনে করে এরূপ আমল করা মাকরূহ।)
◆ তারাবীহ্-র বিনিময়ে পারিশ্রমিক দেয়া নেয়া জায়েয নয়, তবে হাফেজ সাহেবের যাতায়াত ভাড়া ও খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা করা বিধেয়।
সমাপ্ত: তারাবীর নামায ও তার মাসায়েল + খতম তারাবীর মাসায়েল।
সূত্রঃ আহকামে জিন্দেগী।