Skip to content

 

দাওয়াত, তাবলীগ এবং ওয়াজ-নছীহত ও বয়ান করার সুন্নাত, আদব ও শর্ত সমূহ

দাওয়াত, তাবলীগ এবং ওয়াজ-নছীহত ও বয়ান করার সুন্নাত, আদব ও শর্ত সমূহ

বিষয়: দাওয়াত, তাবলীগ এবং ওয়াজ-নছীহত ও বয়ান করার সুন্নাত, আদব ও শর্ত সমূহ।
হ্যাশট্যাগ: #দাওয়াত, তাবলীগ এবং ওয়াজ-নছীহত ও বয়ান করার সুন্নাত, আদব ও শর্ত সমূহ।

দাওয়াত, তাবলীগ এবং ওয়াজ-নছীহত ও বয়ান করার সুন্নাত, আদব ও শর্ত সমূহঃ

* আমল বিল মা’রূফ ও নাহী আনিল মুনকার তথা দাওয়াত প্রদান এবং ওয়াজ-নছীহত ও বয়ান করার পূর্বে নিয়ত সহীহ করে নিবে অর্থাৎ, এ’লায়ে কালিমাতুল্লাহ বা আল্লাহর হুকুম আহকাম চালু করার, আল্লাহর দ্বীন যিন্দা করার এবং ছওয়াব হাছিল করার নিয়তে করবে।

* আল্লাহর কথা এবং হক কথা বলার কারণে যে অসুবিধা দেখা দিতে পারে তার উপর ধৈর্য ধারণের জন্য মনকে প্রস্তুত করে নিবে।

* শ্রোতাদেরকে তাদের কাজ থেকে এবং কথা-বার্তা থেকে ফারেগ করে নিবে।

* আউযু বিল্লাহ, বিসমিল্লাহ পড়ে নিবে।

* ওয়াজ-নছীহত্ ও বয়ানের পূর্বে আল্লাহর হাম্দ ও দুরূদ শরীফ পড়ে নিবে। তবে ওয়াজের মজলিসে সকলের সম্মিলিত ভাবে সমস্বরে দুরূদ শরীফ পাঠ করাটা রছমে পরিণত হয়েছে, তাই এটা পরিত্যজ্য।

* যে বিষয় বিশুদ্ধভাবে জানা আছে একমাত্র সেটাই বলবে। নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি বা নির্ভরযোগ্য কিতাব থেকে যেটা জানা হয়নি, তাহকীক ছাড়া সেটা বর্ণনা করা মিথ্যা বয়ান করার শামিল।

* হেকমত, যুক্তি ও বুদ্ধিমত্তার সাথে কথা বলা জরুরী।

* নরমীর সাথে কলা বলা কঠোরতা পরিহার করা। মোস্তাহাব পর্যায়ের বিষয় হলে সর্বদাই নরমীর সাথে বলা, আর ওয়াজিব ও ফরয পর্যায়ের বিষয় হলে প্রথমে নরমীর সাথে তারপর কঠোরতার সাথে বলবে।

* অন্যকে যে বিষয়ের দাওয়াত ও নছীহত প্রদান করবে, প্রথমে নিজে সেটার উপর আমল শুরু করতে পারলে উত্তম। অন্যথায় মানুষের মনে তার দাওয়াত ও নছীহতের আছর কম হবে।

* এত ঘন ঘন বা এত দীর্ঘ সময় ওয়াজ-নছীহত না করা, যাতে শ্রোতাদের মনে বিরক্তির উদ্রেক হয়।

* শ্রোতাদের ধারণ ক্ষমতা লক্ষ্য রেখে কথা বলা জরুরী।

* তারগীব (উৎসাহমূলক কথা), তারহীব (ভয় ও সতর্কতামূলক কথা, ফাযায়েল ও আহকাম সব বিষয়ের সমন্বয়ে বয়ান করা। এমনিভাবে ঈমান ও ইবাদতের বিষয়ের সাথে ইসলামের মু’আমালাত, মুআশারাত এবং আখলাক- চরিত্র সম্পর্কেও বয়ান রাখা জরুরী।

* শ্রোতাদের মন-মেজায় লক্ষ্য রেখে কথা বলা জরুরী।

* যে বিষয় শ্রোতাদের জন্য বেশী প্রয়োজনীয় সে বিষয়ের বয়ানকে অগ্রাধিকার দেয়া জরুরী।

* দাওয়াত ও নছীহতের বিনিময়ে পার্থিব বিনিময় গ্রহণ না করা নবীগণের সুন্নাত।

* শ্রোতাদের খায়ের খাহীর জব্বা নিয়ে দাওয়াত দিবে ও বয়ান করবে।

* পরকালমুখী করে বয়ান করা অর্থাৎ, মুখ্যতঃ আল্লাহর হুকুম ও দ্বীন মানা না মানার পরকালীন লাভ ক্ষতিকে তুলে ধরেই বয়ান করা। কখনও কখনও পার্থিব লাভ-লোকসানকেও গৌণভাবে উল্লেখ করা যায়।

* দ্বীনকে সহজভাবে পেশ করা নিয়ম, যেন শ্রোতারা দ্বীনকে কঠিন মনে করে না বসে।

* পর্যায়ক্রমে জরুরী হুকুম-আহকামের চাপ দেয়া, যাতে এক সঙ্গে অনেকগুলো বিষয়ের চাপ মনে করে শ্রোতাগণ বিগড়ে না যায়।

* দোষ-ত্রুটির নেছবত নিজের দিকে করা, যেমন বলা যে, আমরা কেন ইবাদত করব না? আমরা এই পাপ পরিত্যাগ করি ইত্যাদি। এরূপ না বলা যে, আপনারা কেন ইবাদত করেন না? আপনারা এই পাপ পরিহার করুন ইত্যাদি।

* দায়ী (দাওয়াত দানকারী) নিজের অবস্থানকে পরিষ্কার রাখবে। এমন কোন কাজ করবে না যা প্রকৃতপক্ষে তার জন্য বৈধ হলেও বাহ্যিকভাবে সেটা দেখে তার ব্যাপারে কেউ সন্দিহান হয়ে পড়তে পারে। অন্যায়ভাবে তার উপর কোন অপবাদ আরোপিত হলে সমাজের সামনে সে তার সঠিক অবস্থান ব্যাখ্যা করে দিবে।

* বয়ান এবং ওয়াজের মধ্যে কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে উদ্দেশ্য করে নছীহত না করা। এতে উক্ত ব্যক্তি লজ্জিত হয়ে বক্তার প্রতি মনে মনে ক্ষীপ্ত হয়ে উঠতে পারে এবং হিতে বিপরীত হতে পারে।

সমাপ্ত: দাওয়াত, তাবলীগ এবং ওয়াজ-নছীহত ও বয়ান করার সুন্নাত, আদব ও শর্ত সমূহ।
সূত্র: আহকামে যিন্দেগী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Copyright Notice

কপি করা নিষিদ্ধ!