Skip to content

 

ধর্ম বিষয়ে মুক্তমনার ৬০টি জিজ্ঞাসার উত্তর

ধর্ম বিষয়ে মুক্তমনার ৬০টি জিজ্ঞাসার উত্তর

জিজ্ঞাসাকারীঃ
কোরআনের বাংলা অনুবাদ, হাদিস ও ইসলাম ধর্মবিষয়ক অনেক বই পড়তে গিয়ে বিভিন্ন জিজ্ঞাসা মাথায় আসে, যার জবাব পাচ্ছি না। এই জিজ্ঞাসাগুলো আমার এক সিনিয়র আপার মাধ্যমে দেশব্যাপী সুপরিচিত আলেমের নিকট পাঠিয়েছিলাম। তিনি আমাকে দেখা করতে বলেছিলেন। আমি লিখিত জিজ্ঞাসার লিখিত জবাব চেয়েছিলাম। আরেক আলেম বলেছিলেন এসব প্রশ্ন করা যাবে না? বিশ্বাস করতে হবে। কিন্তু এ যুগে জিজ্ঞসার জবাব না পেয়ে বিশ্বাস করা মুশকিল। তাই জানার আগ্রহ নিয়ে ষাটটি জিজ্ঞাসা নিম্নে প্রদান করলাম।

প্রশ্নের উত্তরঃ
১। আল্লার ইচ্ছাতেই যদি সবকিছু হয় তবে মানুষের পাপপূণ্যও তার ইচ্ছাতেই হয়। আল্লার ইচ্ছাতেই যদি মানুষ পাপ-পূণ্য করে তবে মানুষের অপরাধ কোথায়? জন্মের আগেই ভাগ্য নির্ধারিত হলে মানুষের করণীয় কি?

উ: আপনি কথা বলছেন ‘তাকদীর’ নিয়ে। আল্লাহ সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করেন কিন্তু তিনি সবকিছুকেই একটা সিস্টেমের মধ্যে পরিচালনা করছেন। মানুষকে আল্লাহ স্বাধীন ইচ্ছা দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। এ কারণে ফেরেশতারা যখন জানতে পারলেন আল্লাহ পৃথিবীতে মানুষ পাঠাবেন, তারা বললেন,এমন সৃষ্টির কি দরকার যারা ধ্বংসাত্মক কাজ করবে, রক্তপাত হানাহানি করবে। অর্থাৎ মানুষ অন্য সব সৃষ্টি থেকে ভিন্ন। আল্লাহ দেখতে চান তার কোন বান্দা তার কথা মানে আর কোন মান্দা অস্বীকার করে।
জন্মের আগেই ভাগ্য নির্ধারিত মানে আল্লাহ সবার ভবিষ্যৎ জানেন এবং সে অনুযায়ী তিনি তা লিখে রেখেছেন। কিন্তু তার মানে এই না যে তিনি তাকে নিয়ন্ত্রণ করছেন। আমার কাজিন এইচএসসি পরীক্ষার আগে খুব পড়াশোনা করেছে। আমরাই তখন ভবিষ্যদ্বাণী করতাম যে সে এ+ তো পাবেই গোল্ডেনও পেতে পারে (অথচ আমরা তাকে নিয়ন্ত্রণ করছিনা বা ভবিষ্যৎ জানিনা)।
মোদ্দা কথা আল্লাহ মানুষকে তার ইচ্ছার উপর ছেড়ে দিয়েছেন। সবকিছুর ফলাফল জানানো হবে আখেরাতে।

২। আত্মা স্বাধীন নয়। সর্বশক্তিমান আল্লাহ তাকে নিয়ন্ত্রণ করে। তাহলে পরাধীন আত্মার পাপপূণ্যের বিচার কার বিরুদ্ধে হওয়া উচিৎ, নিয়ন্ত্রণকারীর না নিয়ন্ত্রিত ব্যক্তির বিরুদ্ধে?
উ: আত্মা স্বাধীন নয় এ কথা কোথায় পেলেন? পুরো জবাবের জন্য ১নং উত্তর দেখুন।

৩। আল্লাহর ইচ্ছাতেই যদি সব কিছু হয় তবে ফেরেস্তার দরকার কি? আজরাইলের জান কবজ করতে আল্লাহর কাছ থেকে অনুমতি নিতে যে সময় ব্যয় হয়, সেই সময়ে আল্লাহ নিজেই কাজটি করতে পারেন কিনা?
উ: যেমনটা আগেই বলেছি আল্লাহ একটি সিস্টেম করে দিয়েছেন এবং সে সিস্টেমেই সব পরিচালনা করেন।তাছাড়া একজন মালিক তার কাজের জন্য লোক রাখতেই পারে। আপনিও তো আপনার বাসার ঘর ঝাড়ু দিতে পারেন, কিন্তু কাজের লোক রাখেন কেন? তাকে আবার আপনার কাছে অনুমতি নিতে হয় আপনার কম্পিউটার মুছবে কী না ইত্যাদি।

৪। সূর্যোদয়, সূর্যাস্ত ও মধ্যাহ্ন সর্বত্র স্থির নয়। ঢাকাতে যখন ঠিক সূর্যোদয় তখন মক্কায় রাত্রি, কলকাতায় সূবহে সাদেক। অর্থাৎ এক স্থানের নামাজের জন্য নিষিদ্ধ সময়ে অন্য স্থানে নামাজ পড়া হচ্ছে। তাহলে নামাজের সময় নিষিদ্ধ থাকল কিভাবে?
উ: আপনি ঢাকায় থাকলে মক্কার সময় নিয়ে আপনার চিন্তা করার দরকার নেই।যেখানে পড়ছেন সেখানকার নিষিদ্ধ সময়ে না পড়ার কথাই হাদীসে বলা হয়েছে।
আপনার অফিস যখন ৯-৫টা বলা হয়, তখন নিশ্চয়ই ইংল্যান্ডের টাইম মেনে চলেন না, নাকি?

৫। সূর্যকে ৭০ হাজার ফেরেস্তা পূর্ব থেকে পশ্চিম পর্যন্ত টেনে নিয়ে যায় সোনার নৌকায় করে। সূর্য রাত্রে আশের নিচে বসে জিকির করে, পূনরায় ভোরে পূর্বাকাশে দেখা দেয়। অথচ প্রকৃত সত্য যে, পৃথিবীর আহ্নিক গতির কারণেই দিবারাত্র হয় এবং সূর্যের বসে থাকা বলতে কিছু নেই। এ ভুল ব্যাখ্যার কারণ কি?
উ: এমন হাদীস কখনো শুনিনি। এটা কোথায় পেলেন? সূত্র দেন।

৬। সূর্যের সাত মুখ নাকি উল্টা দিকে। হাশরের ময়দানে সূর্যের সাত মুখ দেখা যাবে অথচ সূর্য আপন অক্ষের উপর ঘুরছে বলে সব পিঠই দেখা যায়। তাহলে ধর্মগ্রন্থের বর্ণিত সাতমুখ কোধায় গেল?
উ: এমন হাদীস কখনো শুনিনি। এটা কোথায় পেলেন? সূত্র দেন।

৭। হাওয়া গন্ধম খাওয়াতে গন্ধম গাছের অভিশাপে তার রজস্রাব ও সন্তান প্রসবের কষ্ট হয়। অন্য প্রাণীরা গন্ধম খায় নাই তাহলে একই কষ্ট তাদের কেন হয়? আদম যদি গন্ধম না খাইত তাহলে স্বর্গেই থেকে যেত। তাহলে আল্লাহ বেহেস্ত দোজখ কেন সৃষ্টি করেছিলেন? আদমের আগেই নাকি হযরত মুহম্মদকে সৃষ্টি করেছেন মানুষকে হেদায়েতের জন্য। আদম গন্ধম না খেলে মুহম্মদের সৃষ্টির প্রয়োজন কেন? তাহলে আদম কি আল্লহর ইচ্ছাতেই গন্ধম খেয়েছে? আদমকে সৃষ্টি করার উদ্দেশ্য পৃথিবীতে মানুষের পদচারণা ঘটানো, তাহলে তাকে স্বর্গে রাখল কেন?
উ: আল্লাহ মানুষকে কোন না কোনভাবে পৃথিবীতে পাঠাতেন। গন্ধম ছিলো উসিলা।গন্ধম গাছের অভিশাপে রজস্রাব ও সন্তান প্রসবের কষ্ট হয় এটা বাইবেলের কথা, ইসলাম এমন কথা বলেছে বলে কখনো শুনিনি।

৮। সমাজবিজ্ঞান মতে আদিম মানুষ কথা এবং ভাষা জানত না। কিন্তু ধর্ম মতে আদম কথা বলতে পারত। সমাজবিজ্ঞানের ধর্মবিরোধী প্রচারণা মেনে নিচ্ছেন কেন? প্রতিবাদ করলে তার যুক্তি কি?
উ: সমাজবিজ্ঞান ১০০% ইভলভড হয়েছে তা বলতে পারেন না। দুইদিন পরপর তাদের নতুন থিওরি বের হয়। অপেক্ষা করুন, তারা জায়গামতো আসবে।
উদাহরণস্বরূপ স্টিফেন হকিং একবার বলেছেন পৃথিবী সৃষ্টির পেছনে ঈশ্বরের হাত আছে। তার কিছুদিন পর তা অস্বীকার করলেন। তাকে নাকি বর্তমান যুগের আইনস্টাইন বলা হয়। তিনিই এমন ইউ টার্ন নেন, সমাজবিজ্ঞানীরা তো কোন ছাড়!

৯। ছয় দিনে কিভাবে সবকিছু সৃষ্টি সম্ভব? সূর্য সৃষ্টির আগে কিভাবে দিন হত বা কাউন্ট হত? পৃথিবীর বাইরে সময় কি? এসব স্পষ্ট বুঝা না গেলে কোরানে লেখা হয়েছে কেন?
উ: আরবীতে ‘ইয়াওম’ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে যার অর্থ ‘দিন’ বা ‘লম্বা সময়’। দ্বিতীয় অর্থ ধরলে কোন সমস্যা থাকে না। প্রয়োজনে আরবী ডিকশনারী দেখুন। একটি অর্থ ধরে কোরআনকে ভুল বলার কোন মানে হয় না যখন অন্য অর্থ ধরে সঠিক অর্থে যাওয়া যায়।

১০। চন্দ্রকে নূরের তৈরি এবং সূর্যকে প্রদীপ বা আগুণ বলা হয়েছে। চন্দ্র নূরের তৈরি নয় এবং সূর্যের পুরো অংশ আগুন নয়। তাহলে কোরানের একথা কিভাবে সত্য হল। [৭১:১৫-১৬; ২৫:৬১] আয়াতে বলা হয়েছে চন্দ্র আলো প্রদান কারী উৎস। বর্তমানে স্পষ্টতই দেখা গিয়েছে চন্দ্রের নিজস্ব আলো নেই। অর্থাৎ চন্দ্র আলোর উৎস নয়। এর ব্যাখ্যা কি?
উ: কোরআনে চাঁদের জন্য ‘নূর’ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে যার অর্থ ‘ধার করা আলো’ বা ‘রিফ্লেক্টেড আলো’। সূর্যকে বলা হয়েছে ‘সিরাজ’ বা প্রদীপ। আগুন পেলেন কই?

১১। দিনকে মানুষ সাত ভাগে ভাগ করেছে। যদি ছয় বা আট ভাগে ভাগ করত তাহলে পরের শুক্রবার সাতদিন পর আসত না। তাহলে মানুষের ভাগ করা দিনের এত গুরুত্ব আল্লাহর কাছে কেন?
উ: দু’টি ব্যাখ্যা হতে পারে, প্রথমত-আল্লাহ জানতেন মানুষ এইভাবে ভাগ করবে। দ্বিতীয়ত- আল্লাহ পৃথিবীর গতিপথকে এমনভাবে সেট করেছেন যাতে মানুষ তাদের সুবিধার জন্য সাতদিনে সপ্তাহ করে।

১২। সাত আসমানের বর্তমান ব্যাখ্যা কি হবে? [৭৮:১২-১৩] আসমানের তারাগুলোকে সৌন্দর্যতার জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে। অথচ তারাগুলোর ব্যবধান কোটি কোটি মাইল এবং পৃথিবী ও সূর্যের চেয়ে লক্ষগুণ বড়ও আছে। শুধু সামান্য শোভাবৃদ্ধির জন্য এত বিশাল সৃষ্টি কেন? [২৩:৮৬;২:২৯; ২৩:১৭; ৬৭:৩ ইত্যাদি]
উ: যাতে আপনার মতো লোক হেদায়েতের আলো পায়। কেয়ামতের দিন হয়তো বলবেন, হে আল্লাহ, তুমি আমাকে হেদায়াতের সুযোগ দিলে না কেন? আল্লাহ হয়তো ‘সামুর’ এই অংশটুকু আপনাকে দেখাবেন।

১৩। আসমান ও জমিনের হিসাবটা কেমন? পৃথিবী গোল হলে এর চার দিকেই মহাবিশ্ব। এই ক্ষুদ্র পৃথিবীটাই কি জমিন? তাহলে আসমান ছাদ হয় কিভাবে?[৭৮ঃ১২-১৩] জমিন ও আসমানের মাঝখানে চন্দ্র, সূর্য, তারকা থাকলে আকাশ কি? আকাশ কি কঠিন পদার্থ? তা না হলে ধরে রাখার কি আছে? [৫০:৬; ৩১:১০; ১৩:২; ৫৫:৭; ২২:৬৫ ইত্যাদি]
উ: পৃথিবী গোল হলেও আপনার পার্সপেক্টিভে সেটা ফ্ল্যাট। মাথার ওপর তাই আকাশকে ছাদই মনে হয়।আপনার এবং আপনার ঘরের ছাদের মাঝে যেমন লাইট, ফ্যান, তেমনি পৃথিবী এবং আকাশের মাঝে চাঁদ সূর্য।
আকাশ কঠিন কী না আপনার তা সায়েন্স পড়েই বোঝা উচিত। সবকিছুর উত্তর ধর্ম দিবে নাকি? মাথাটা খাটান। আর ধরে রাখার কিছু নেই। আল্লাহ বলেছেন যে তিনি আকাশকে সৃষ্টি করেছেন কোন প্রকার খুঁটি ছাড়া।

১৪। পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘোরে কোরানের ব্যাখ্যা এর বিপরীত কেন? [২১:৩৩, ৩৬:৪, সুরা ইয়াসিন]
উ: সূরা ইয়াসিনে বলা হয়েছে প্রত্যেকেই আকাশে ইয়াসবাহুন বা সাঁতার কাটে। সমস্যা?

১৫। মক্কার ঠিক উপরে আরশ বা বায়তুল মোকাদ্দাছ। যেহেতু পৃথিবী ঘুর্ণায়মান ও সূয়ের চারিদিকে ঘুরে এবং সূর্যও তার গ্রহ-উপগ্রহদের নিয়ে দূর লক্ষ্যকে কেন্দ্র করে ঘুরছে তাহলে মক্কার ঠিক উপরে বায়তুল মোকাদ্দাস সব সময় কি করে ঠিক থাকবে? কোথায় থাকবে?
উ: আপনি যখন বলেন আপনার পশ্চিমে আমেরিকা, তার মানে এই না ১০০% পশ্চিমে। ডিগ্রি কোণ ইত্যাদি মেপে দেখেছেন নাকি? সুতরাং সাত আসমান উপরে যদি বায়তুল মোকাদ্দাস থাকেও, পৃথিবী ঘুরে তার থেকে কত দূরেই বা যাবে?

১৬। দশই রমজান শুক্রবার কেয়ামত। বাংলাদেশে যখন শুক্রবার তখন আরেকিায় শুক্রবার নয়: মক্কায় বাংলাদেশের একদিন বা দুইদিন আগেই দশই রমজান হয়ে থাকে। তাহলে কিয়ামত সর্বত্র কিভাবে দশই রমজান হবে?
উ: আমি জানি ১০ই মহররম কেয়ামত। আপনার ১০ রমজানের সূত্র কি?

১৭। সবেরবাত আরে ও বাংলাদেশে একদিনে হয় না। সবেবরাতের আগের দিন বাংলাদেশ থেকে দ্রুতগামী বিমানে সৌদি আরব গেলে দেখা যাবে সেখানে সবেবরাত একদিন আগেই হয়ে গেছে। তাহলে সে কিভাবে সবে বরাত পালন করবে? উল্টা ঘটলে দুবার সবেবরাত পাবে কে?
উ: সবে বরাত না বলে রোজা আর ঈদের মাসআলা আরো ভালো বুঝবেন। কেউ ২৮ রোজা করে বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরব গেলো। দেখলো সেখানে ঈদ হচ্ছে,সে সবার সাথে ঈদ করবে। কারণ মানুষ যখন যেখানে থাকবে সেখানকার মাসআলা পালন করবে।আরেকটা রোজা সে পরে কাজা করবে।আর উল্টোটা ঘটলে দু’বার ঈদ। সমস্যা কি? ঈদ তো তিনদিন, জানা কথা।

১৮। কিছু কিছু দিন বেহেস্তের দরজা খোলা থাকে। ঐ দিনটা সারা পৃথিবীতে একে স্থানে একেদিন হলে বেহেস্তেও দরজা কদিন খোলা থাকবে?
উ: যেমনটা আগেই বলেছি,যখন যেখানে যে সময় তখন সেখানে ঐ মাসআলা প্রযোজ্য হবে। আজকে বাংলাদেশের সময় অনুযায়ী বেহেস্তের দরজা খোলা বাংলাদেশীদের জন্য। পরদিন হয়তো খোলা থাকবে আমেরিকাবাসীদের জন্য।

১৯। মেরুতে ছয়মাস দিন ও ছয় মাস রাত থাকে। সেখানে কিভাবে নামাজ রোজা পালন করবে?
উ: ঘড়ি দেখে।দিনকে ভাগ করবে পাঁচ ভাগে। নিকটবর্তী এলাকার টাইমজোনকে মানদন্ড ধরবে।

২০। কেন বেহেস্থে যাব? আল্লাহর ইচ্ছায়, নবীর সুপারিশে, হোসেনের সুপারিশে নাকী পূণ্যের জোরে? সীমার কেন বেহেস্তে যাবে? বর্তমান রূপে নামাজ না পড়ে অন্য নবীরা কিভাবে বেহেস্থে যাবে?
উ: আল্লাহ অনেক জায়গাতেই বলেছেন, আল্লাহ যাকে ইচ্ছা মাফ করে দেন। নবীর সুপারিশে তার ইচ্ছা হতে পারে,হোসেনের সুপারিশে হতে পারে অথবা আপনি যদি বাকি জীবন কামেল দরবেশ হয়ে যান, আপনার সুপারিশেও হতে পারে।
অন্য নবীরা যে সময়ে এসেছিলেন তাদের সময় নামাজ ছিলো না এ কথা আপনাকে কে বললো? কোরআনেই আছে, ঈসা (আ), মারইয়াম (আ) জাকারিয়া (আ) তারা নামাজ পড়তেন। নামাজের মূল অংশ হলো সেজদা আর রুকু। তখন কোরআন ছিলো না তাই কেরাআত ছিলো না বলা যায়। বাকি মূল অংশ তো ছিলো।
বাইবেলেও ঈসা (আ) ওজু করে নামাজ পড়েছেন বলে বর্ণনা আছে।

২১। আল্লাহ যদি নবীর সুপারিশ গ্রহণ করেন তাহলে নিজের ইচ্ছা পূর্ণ করবেন কিভাবে? ব্যাখ্যা কি? তাহলে নির্বাহী প্রধান কে?
উ: সুপারিশ গ্রহণ করাও কিন্তু নিজের ইচ্ছারই প্রতিফলন। প্রধানমন্ত্রী কার সুপারিশ গ্রহণ করবেন সেটা কিন্তু তার এখতিয়ার। কেউ তাকে জোর করে না। ঠিক একই ব্যাপার এখানেও।

২২। যারা কোনদিন ইসলামের দাওয়াত পায়নি এবং কোন অপরাধ করেনি তারা কেন বেহেস্তে যাবে না? গোলাম আজম কোন দিন না কোনদিন বেহেস্তে প্রবেশ করবে মুসলিম বলে অথচ মাদার তেরেসা প্রবেশ করবেন না অমুসলিম বলে এটা কি ন্যায় বিচার?
উ: আল্লাহ কোরআনে বলেছেন, প্রতিটি মানুষকে তিনি হেদায়াতের আলো দেখান তার মনের ভেতর অথবা দূর আকাশের সীমানায় (অর্থাৎ কাছে বা দূরে)। ধরা যাক একজন আফ্রিকার জংলী। জীবনেও সে কোন মুসলমানের সংস্পর্শে আসেনি, কিন্তু আল্লাহ তাকে হেদায়াতের আলো জীবনে একবার হলেও দেখাবেন।সে যদি এক ঈশ্বরে বিশ্বাস করে তাহলেই তার জন্য যথেষ্ট হবে।
কিন্তু যারা মুসলমানদের মাঝে বাস করে, তাদের জন্য শুধু আল্লাহর উপর ঈমান রাখাই যথেষ্ট না। কারণ তার জ্ঞানের সুযোগ বেশি। তাই তাকে ইসলামের অন্যান্য বিধানও মানতে হবে।
আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি। ফেল করতে করতে ইমপ্রুভমেন্ট দিতে দিতে এক পর্যায়ে ঢাকা ভার্সিটির সার্টিফিকেট আমি পাবোই। কিন্তু আপনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সব বিষয়ে এ+ পেয়ে পাশ করে যদি বলেন আমাকে ঢাকা ভার্সিটির সার্টিফিকেট দাও- নাহলে অবিচার হবে। এ কথা কেউ মানবে? বেহেস্তে যেতে হলে আপনাকে মুসলমানদের ভার্সিটিতে (ইসলামে) ভর্তি হতেই হবে। তা আপনি যত খারাপ ছাত্রই হোন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এ+ পড়া ছাত্রও আপনি যে সার্টিফিকেট পাবেন তা পাবে না।

২৩। বিধর্মী শিশুরা কেন মুসলমান শিশুদের মত বেহেস্ত পাবে না? শিশুরা নিষ্পাপ নয় কি?
উ: শিশুদের জন্য বেহেস্ত ও দোযখের মাঝে একটি জায়গা আছে- আ’রাফ। কোরআন শরীফে একটি সূরাও আছে এ নামে। প্রাপ্তবয়স্ক হবার আগে মারা গেলে তারা নিষ্পাপ- তাদেরকে আরাফে রাখা হবে।শুধু বিধর্মী শিশুরাই নয়,মুসলিম শিশুরাও একই জায়গায় যাবে।

২৪। পুরুষ বেহেস্তে কমপক্ষে ৭০টি হুরী ও তার স্ত্রীকে পাবে এবং নারী বেহেস্তে গোলেমান ও তার স্বামীকে পাবে। তাহলে পুণ্যবান পুরুষের পাপিষ্ঠা স্ত্রী এবং পূণ্যবতী নারীর পাপী স্বামীও কি বেহেস্তে যাবে?
উ: যার যার ফল সে সে ভোগ করবে। স্বামী যদি পাপিষ্ট হয় তাহলে স্ত্রী তাকে পাবে না। ঠিক একই কথা উল্টোটার ক্ষেত্রেও।

২৫। সব ধর্মই বলে সেই ধর্মপন্থী ছাড়া অন্য কেউ বেহেস্তে যেতে পারবে না এবং সেই ধর্ম বিরোধী প্রশ্ন করা যাবে না। পৃথিবীতে সহস্রাধীক ধর্ম এখনো জীবিত আছে। ইসলামের অনেকগুলো ভাগ আছে। আবার উপভাগও আছে। যেমন আমরা সুন্নী ভাগের হানাফী উপভাগের। আমাদের মতে শুধু হানাফিরাই সঠিক পথে আছেন। এরকম প্রত্যেকের মনোভাব একই। তাহলে অন্য কোন ধর্মও সত্য হতে পারে অথবা মিথ্যা হতে পারে সবগুলোই।
উ: যুক্তি তর্ক মিলিয়ে আপনার যেটা ভালো লাগে সেটা ফলো করুন আর আল্লাহর কাছে হেদায়েত কামনা করুন।এর বেশি কিছু করতে হবে না।
শ্যামলী থেকে মতিঝিল যেতে গেলে ধানমন্ডি হয়েও যেতে পারেন আবার ফার্মগেট হয়েও যেতে পারেন। কোন মানা নেই। কিন্তু বনানীর রাস্তা ধরলে মতিঝিল না-ও পৌঁছাতে পারেন। সুতরাং সঠিক পথ কোনটা সেটা ম্যাপ ইত্যাদি দেখে এবং এ সম্পর্কে জানে এমন লোকদের জিজ্ঞেস করে বের করার দায়িত্ব আপনার।
তাছাড়া হানাফীরা কখনো বলে না শাফিওয়ালার বেহেস্তে যাবে না।আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের উপর যারা আছে, তাদের যুক্তি সহী হাদীস কোরআনের উপর প্রতিষ্ঠিত। আপনি যদি এমন কোন হাদীস কোরআন দেখান যেটার উপর তাদের আমল নেই, তারা সেটা মেনে নেবে। সুতরাং এখানে দ্বন্দ্বের কোন প্রশ্ন নেই।

২৬। মানুষের জান খতম করে আজরাইল। তাহলে একজনকে খুন করার অপরাধে কোন ব্যক্তি দায়ী হবে কেন? অথচ খুনের বদলে খুনের কথা কোন কোন নবীও বলেছেন। পাপের শাস্তি যদি পরকালেই হয় তাহলে ইহকালে শাস্তির বিধান কেন? এক অপরাধে শাস্তি দুবার হবে কেন?
উ: দুনিয়ার শাস্তি একরকম, আখেরাতের শাস্তি আরেক রকম। দুনিয়াতে শাস্তি দেয়া হয় যাতে সমাজে শান্তি-শৃংখলা বজায় থাকে, অপরাধীরা মাথা-চাড়া দিয়ে উঠতে না পারে। ইসলাম তো শুধু আখেরাতের কল্যাণ বয়ে আনতে আসেনি। দুনিয়াতে আদর্শ সমাজ প্রতিষ্ঠা করাও এর কাজ।
আজরাইল (আ) মানুষের আত্মা নিয়ে যান। তার কারণ ঘটায় খুনি। খুনি কারণ ঘটানো কাজ না করলে আজরাইল (আ) কিভাবে আত্মা নিতেন?

২৭। আত্মা বা প্রাণ বা রুহু এবং মন আলাদা জিনিস। মানুষ যা কিছু করে তার জন্য দায়ী মন। তাহলে আত্মার শাস্তি কেন? তাহলে আত্মা ও মন কি এক জিনিস? অজ্ঞনাবস্থায় বা ঘুমন্ত অবস্থায় মনের অস্তিত্ব না থাকলেও প্রাণ থাকে। তাহলে দুটো আলাদা এর ব্যাখ্যা কি?
উ: বিজ্ঞান এখনও আত্মা বলে কিছুর অস্তিত্ব প্রমাণ করতে পারেনি।আত্মা হলো মানুষের জীবনীশক্তি। মানুষের দেহ মানুষের মূল পরিচয় নয়। তার আত্মাই তার মূল পরিচয়। এ কারণেই একজন মানুষের আত্মা তৈরি হয় তার দেহের জন্মের অনেক আগে।তার দেহ মরার পর এই পৃথিবীতে গলে পচে যাবে কিন্তু তাকে আবার উত্থিত করা হবে নতুন শরীরে। তার মানে একটা মানুষ তার আত্মার পরিচয়ে পরিচিত। যেমন একটা হার্ডডিস্কে কিছু প্রোগ্রাম আছে। আপনি পুরো সিপিইউ বদলালেও হার্ডডিস্কের প্রোগ্রাম ঠিক থাকবে।ঠিক তেমন, শরীর বদলালেও আত্মা আপনার পরিচয় বহন করবে।

২৮। কৈ মাছ কাটলেও তার মধ্যে অনেকক্ষণ আত্মা বা প্রাণ থাকে। আবার টিকটিকির লেজ খসে পড়েও নড়াচড়া করে অর্থাৎ প্রাণ আছে। এ লেজে প্রাণ না থাকলে নড়ে কেন? কিছু কিছু গাছের ডাল কেটে বিভিন্ন স্থানে রোপন করলে প্রায় সবগুলোই স্বতন্ত্রভাবে বেঁচে যায়। ক্লোনিং করেও একটি কোষ থেকে প্রাণী সৃষ্টি করা হচ্ছে। তাহলে কি আত্মার বিভক্তি হল? নাকি নতুন আত্মা আসল? আত্মা বীজে না এসে ডালে আসল কেন? বা ক্লোনিং শেষে এক আত্মা দুই দেহে প্রবেশ করে কি করে?
উ: বিজ্ঞান সম্পর্কে আমার ধারণা কম। কিন্তু আপনার ধারণা দেখি তারচেয়েও কম। নাকি হুজুরদের উত্তক্ত করার জন্য এসব প্রশ্ন। মাংসপেশির সংকোচনের কারণে মারা যাবার পরও বা কাটা যাবার পরও একটা দেহ বা অংগ নাড়াচাড়া করতে পারে।
ক্লোনিং ইত্যাদি করলে এক আত্মা দুই জায়গায় যেতে পারবে না এমন কথা কোথায় পেলেন। আগে সায়েন্সকে আত্মার ব্যাখ্যা দিতে দিন। তারপর প্রশ্ন করবেন।

২৯। পৃথিবীতে প্রায় ৬শ কোটি মানুষ। রহিমের একটি ভাল কাজের জন্য আল্লাহ খুশি হলেন, ঠিক একই সময়ে করিমের খারাপ কাজে তিনি ক্রুদ্ধ হলেন। একই সময়ে এ দুটো বিপরীতমুখী কাজ কিভাবে সম্ভব।
উ: কারণ তিনি আপনার আমার মতো একটা দুইটা কাজ নয় বরং অসংখ্য কাজ একসাথে করতে পারেন।মানুষের ক্ষুদ্র বুদ্ধি দিয়ে সেটা বোঝা একটু কষ্টই বটে।
কয়েক বছর আগেও যদি কেউ বলতো একজন দুইহাতে দুইরকম লেখা লিখতে পারে, মানুষ বিশ্বাস করতো না।কোন কবি নাকি দুইরকম কবিতা দুই হাতে লিখতে পারতেন। একজন নশ্বর মানুষ এমন মাল্টিটাস্কিং পারলে মহাশক্তিমান আল্লাহর জন্য এটা এমন কি কঠিন কাজ!

৩০। বলা হয় আল্লাহ ন্যায়বান ও দযালূ। বিচার ক্ষেত্রে ন্যায় ও দয়ার একত্র সমাবেশ অসম্ভব। তাহলে বিচার কার্যে তিনি একই সময়ে ন্যায়বান ও দয়ালু কিভাবে হবেন?
উ: ন্যায়বান ও দয়ালু বিচারের ক্ষেত্রে হওয়া সম্ভব না একথা আপনাকে কে বললো? একজন বিচারক বিচারের আগে জামিন দেয় না? বৃদ্ধ লোককে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য বাধ্য না করাটাও তো তার দয়ার উদাহরণ।এরকম অনেক ডিসক্রিশনারি বিষয় আছে যেখানে আদালত ইচ্ছা করলে কোন হুকুম দিতে পারেন আবার নাও পারেন। এজন্য বিজ্ঞ আইনজীবীরা আদালতে গিয়ে আদালতের ‘মার্সি’ কামনা করেন।
তাছাড়া মনে রাখতে হবে আল্লাহর আইন আল্লাহই তৈরি করেছেন। এমন না যে পার্লামেন্ট আইন করেছে আর বিচারক তা প্রয়োগ করছেন যার বাইরে যাবার সুযোগ তার নেই। আল্লাহর আইন আল্লাহ প্রয়োগ করে শাস্তিও দিতে পারেন আবার দয়া দেখাতেও পারেন।
৩১। যেহেতু মানুষের পক্ষে চার স্ত্রীর দিকে সমান দৃষ্টি দেয়া সম্ভব নয়, তাহলে এরকম বিধান কেন?

উ: যে সমান দৃষ্টি দিতে না পারবে তার জন্য চার স্ত্রীর বিধান নয়। আপনি জাহান্নামে যেতে না চাইলে কেন চার স্ত্রীর ঝামেলা করবেন।তাছাড়া আল্লাহ তো চার স্ত্রীর বিধানের সাথে সাথে বলেই দিয়েছেন সবার মাঝে ন্যায়বিচার করা কঠিন কাজ।ন্যায়বিচার করতে না পারলে একটি বিয়েই করা উচিত এমনটাও কোরআনই বলে, অন্য কোন ধর্মগ্রন্থ বলে না।

৩২। মুহম্মদের ছয় বছরের শিশু এবং ধর্ম পুত্রবধুসহ এতগুলো (১২-১৪টি) বিবাহের ব্যাখ্যা কি কি? এবং কতটুকু যুক্তিসঙ্গত এবং প্রয়োজন কি ছিল? ইসলামী বিবাহ তালাক ও হিল্লার চেয়ে অনৈসলমিক সভ্য আইনগুলো ভাল নয়কি? কেন?
উ: ইসলামী বিবাহ তালাক যথেষ্টই বিজ্ঞানসম্মত। অন্য আইন সভ্য তা কে বললো? হোমোসেক্সুয়াল এবং লেসবিয়ানদের বিয়ে কোন ধরনের সভ্যতা? তাহলে ঐ সমাজেই গিয়ে থাকুন না কেন?
হিল্লা বিয়ের বাংলাদেশী সংস্করণ ইসলামে কোথাও নেই। ভালোমতো রিসার্চ করুন।
ধর্ম পুত্রবধুর বিধান ইসলামে নেই। সুতরাং তাকে বিয়ে করায় বাধা নেই।
ছয় বছরের শিশুকে বিয়ে করলেও সাবালিকা হবার আগে মহানবী তার সাথে দাম্পত্য জীবন শুরু করেননি।

৩৩। ডাইনোসরসহ বিলুপ্ত প্রাণীদের সম্পর্কে কোরানে কোন তথ্য নেই। এছাড়া বিজ্ঞান আবিস্কৃত প্রাচীন সভ্যতার কথাও লেখা নেই। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ও তাদের অবস্থান সম্পর্কেও কিছু বলা নেই। কোরানে সেসব কথাই রয়েছে যা তৎকালীন সময়ে আরবের মানুষ জানতো বা অনুমান করতে পারত। এর কারণ কি?
উ: কিন্তু কোরআনে এমব্রিও, চাঁদের আলো ধার করা,সকল গ্রহ মহাশূন্যে ঘুরছে, পৃথিবীর আকার ইত্যাদি নিয়ে তখনকার মানুষ হয় জানতো না নয়তো ভুল ধারণা ছিলো। কোরআনে ডাইনোসর না, আরো অনেক কিছু নিয়ে বলা হয়নি। সবকিছু বলার দরকার আছে বলে তো মনে হয় না। তার জন্য দরকার হলে একটা এ্যানিমেল কিংডম টাইপের বই কিনে পড়ুন।

৩৪। হোসেনের পরজয়ের পর হোসেন ও তার বংশধরদের হত্যাকারীরা প্রায় ৬শ বছর রাজত্ব চালায়। এরাই প্রকৃতপক্ষে ইসলামের প্রসার ঘটায়। মুহম্মদের বংশধরদের রক্তে যাদের হাত রঞ্জিত তাদের হাতে যারা মুসলমান হয়েছে তারা কি প্রকৃত মুসলমান হবে?
উ: কেউ খারাপ হলেও তার ভালো কাজকে ছুঁড়ে ফেলে দেয়ার কোন মানে আছে? বিল গেটসের দান আপনি নেন না? তেমনি আমেরিকার অনুদানে দেশের কতটুকু জিডিপির ঘাটতি কমছে তা জানেন? সেই দান নিয়ে কি আপনি প্রকৃত মানুষ হয়েছেন? কে প্রকৃত মুসলমান তা তার কাজের উপর নির্ভর করবে। এক খুনীর হাতে মুসলমান হয়ে একজন দরবেশের জন্ম হওয়াও বিচিত্র না।

৩৫। মুসলমানদের মধ্যে অনেকগুলো ভাগ ও উপভাগ রয়েছে। এদের মধ্যে কারা প্রকৃত মুসলমান এবং কেন? অন্যরা কি মুসলমান নয়?
উ: যারা সঠিক কোরআন ও হাদীসের উপর আছে তারাই প্রকৃত মুসলমান। এবার আসুন যুক্তি তর্কের খাতিরে দেখি কে কেমন?

৩৬। কোরান নাকি বিজ্ঞান গ্রন্থ। একে রিসার্চ করে ইসলামী বিজ্ঞানীরা কি কি আবিষ্কার করেছে? রাইট ভ্রাতৃদ্বয় কোরান না জেনেও উড়োজাহাজ কি করে আবিষ্কার করল?
উ: এই প্রশ্নটা মুর্খামি ছাড়া কিছু না। কোরআন বিজ্ঞান গ্রন্থ না, মানুষের জীবনবিধান। বাংলাদেশের সংবিধানে প্লেন আবিষ্কারের ফর্মুলা নেই কেন জিজ্ঞেস করেন।
আসলে বলা উচিত কোরআনের আয়াতগুলো বিজ্ঞানসম্মত। তাহলেই তো কোন সমস্যা থাকে না।
আপনার জ্ঞান বিজ্ঞান নিয়ে এমনিতেই কম (আগের একটা প্রশ্নেই তা প্রকাশ পেয়েছে)। ৬০ টা ধর্ম বিষয়ক প্রশ্ন করে এটাও প্রমাণ করেছেন ধর্ম নিয়েও আপনার জ্ঞান কম। আগে একটা একটা করে জানুন, তারপর দু’টাকে মেলান। নাহলে সব গুবলে যাবে তো।

৩৭। আধুনিক সভ্যতা সৃষ্টিতে মুসলমানদের অবদান খুবই নগণ্য কেন? এরা বিপথে থাকলে ইহুদী ও খ্রীষ্টানদের অবদান এত বেশ কেন? তারা কি বিপথগামী নয়? বর্তমান পৃথিবীতে মুসলামনদের সংখ্যা মাত্র ২১% খ্রীষ্টান ৩৪ %, নাস্তিক/ ধর্মহীন ২১% এর মত। পৃথিবীর বেশিরভাগ মুসলমান নয়। অমুসলিম মানুষগণ জ্ঞানবিজ্ঞানেও এগিয়ে আছে। এই সংখ্যা গরিষ্ঠ মানুষরাই ভুল পথে আছে তার প্রমাণ কি?
উ: সংখ্যাগরিষ্ঠরা যে সবসময় সঠিক পথে থাকে না তার ব্যাপারে কোরআনের বহু জায়গায় বলা হয়েছে। ‘কিন্তু তাদের বেশির ভাগই বোঝে না’, ‘তাদের অধিকাংশই সত্যের পথে নয়’, ‘তাদের অধিকাংশই জাহান্নামী’ ইত্যাদি আয়াতগুলো পরিষ্কার ইন্ডিকেট করে যে বেশিরভাগ লোকের মতবাদ নিয়ে ইসলাম মোটেই চিন্তিত না। সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে কোন বিষয়ে জয়লাভও ইসলামের ইতিহাসে নেই। একমাত্র যে যুদ্ধে মুসলমানরা কাফেরদের থেকে সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিলো সেটা ছিলো ওহুদের যুদ্ধ। সেই যুদ্ধে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ক্ষয়ক্ষতি হয় এবং তারা পিছু হঠতে বাধ্য হয়। বাকি সকল যুদ্ধে মুসলমানরা ছিলো সংখ্যালঘু। বদরের যুদ্ধে ১০০০ জনের বিরুদ্ধে ৩১৩ জন, তাবুকের যুদ্ধে ১ লক্ষের বিরুদ্ধে ৩,০০০ জন সে প্রমাণই বহন করে।
জ্ঞানবিজ্ঞানের মুসলমানদের যথেষ্ট অবদান আছে। কিন্তু মধ্যবর্তী সময়ে মুসলমানরা নিজেদের আদর্শ হারিয়ে বিপথগামী হয়ে যাওয়ায় এখন পিছিয়ে আছে। আশা করা যায় আবার মুসলমানদের স্বর্ণযুগ ফিরে আসবে কারণ অনেক বিজ্ঞানী, প্রফেসর, জাজ ইদানিং মুসলমান হচ্ছেন এবং তাদের সন্তানেরা ভালো কিছু করবে এই আশা করা যায়।

৩৮। কোরানে দাসীদের ভোগ করার অধিকার দেয়া হয়েছে। একাটি ধর্ষণ ও মানবতাবিরোধী নয়? এছাড়া হাদিসে স্ত্রীকে জোর করে সহবাস করার অধিকারের কথা বলা হয়েছে- এটা কি ধর্ষণ নয়? তাহলে নারীর অধিকার কি ক্ষুন্ন করা হয় নাই?
উ: ধর্ষণের এই নব্য সংজ্ঞা তো আপনার বানানো। এমনটা না ভাবলেই তো হয়। দাসীদের বিধান এখন নেই, তাই তর্ক করার মানে হয় না। তবে যখন ছিলো তখন তাদের সাথে ভালো ব্যবহারের যথেষ্ট মানদন্ড দেয়া আছে। আমেরিকানরা এক-দেড়শো বছর আগেও সেসব জানতো না। এখন তারা ধর্ষণের নতুন সংজ্ঞা দেয়াতে খুশিতে আটখানা হচ্ছেন কেন?
‘দাসীদের ভোগ করা’- কথাটার ভেতর কেমন একটা জানি কদর্য আছে। :negative: একজন মুসলিম পুরুষ কি নারীদের ‘ভোগ’ করে?? নাহ। নিজ স্ত্রীকেও কোন মুসলিম ‘ভোগ’ করে না। ভোগ তো করে ধর্ষকরা,নিজের যৌন চাহিদা মিটিয়ে নেয় আরেকজনকে কষ্ট দিয়ে। মুসলিমের সাথে স্ত্রী এর সম্পর্ক হল ভালোবাসার। এখানে ভোগের কোন ব্যাপার নেই। দুজনেরই প্রধান লক্ষ্য থাকে নিজের চাহিদাটা মেটানো, অপরজনের চাহিদাটা মেটানো এবং পবিত্র থাকা। স্ত্রী এর সাথে জোর করে সহবাস এর প্রসংগে আগে আলোচনা করি।

বিষয়গুলি নিয়ে খোলাখুলি আলোচনা করলাম। আশা করি কেউ মনে আঘাত পাবেন না। এগুলো আমাদের জানা দরকার।

প্রথমেই একটি হাদীসের কথা আপনাকে বলি,
আয়েশা (আল্লাহ তার উপর সন্তুষ্ট থাকুন) বলেন,” আল্লাহর রাসুল(স) নামাযে যাওয়ার আগে আমাকে চুম্বন করে যেতেন,এবং এরপর অযু করতেন না। ” (সুনান আল-দারকুতনি,১/৪৯ এবং অন্যান্য)

একজন মুসলিম বাসা থেকে বের হওয়ার আগে স্ত্রীকে চুম্বন করবে, ঘরে ফিরে রাগারাগি না করে,রান্নার খোজ না নিয়ে, আগে স্ত্রী এর খোজ নিবে,চুম্বন দিয়ে তাকে ভালোবাসা জানাবে। এতটাই রোমান্টিক হবে তাদের সম্পর্ক। চুম্বন এর ক্ষেত্রে সুন্নাত হল আবেগময় ফ্রেন্চ কিসিং( মানে অন্যের জিহ্বাকে স্পর্শ করে এবং চোষন করে চুম্বন)। রোজা রেখেও চুম্বনে বাধা নেই। :yes:

ইসলামে সেক্সের নামে কেবলই ‘পেনেট্রেশনের’ অনুমতি দেয়নি। একটা ছেলের জন্য ‘অরগাসম’ করা যতটা সহজ নারী দেহের জন্য তা এতটা সহজ নয়। ছেলেরা সহজেই শুধু ‘স্ট্রোকিং’ করেই নিজের চাহিদা মিটিয়ে নিতে পারে। কিন্তু এতে সংগী নারীটি থেকে যায় অতৃপ্ত। এতে করে বিয়ের বাইরে নারী বিকল্প খুজতে বাধ্য হয়,বা চিরকাল থেকে যায় অতৃপ্ত। তাই বর্তমানে যে জিনিসটাকে সেক্স এক্সপার্টরা খুব বেশি করে করতে বলেন তা হল ‘ফোরপ্লে’। সোজা বাংলায় যা হল ‘পেনেট্রেশন’ এর আগে নারীকে প্রস্তুত হওয়ার সুযোগ দেওয়া। পশুর মত ‘ফোরপ্লে’ ছাড়া সহবাস করতে রাসুল (স) নিষেধ করেছেন ,যেন নারীটি সম্পূর্ণ ভাবে তৃপ্ত হয়।
সুতরাং,যে স্ত্রীকে যৌনভাবে তৃপ্ত রাখতে মুসলিমরা এত সচেষ্ট থাকে, তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে সহবাস করার অনুমতি নেই মুসলিম পুরুষের। আপনার যে পজিশন পছ্ন্দ তা ব্যবহার করতে পারেন(অ্যানাল বাদে)।ইসলাম যৌনতাকে অবদমন এর পক্ষে নয়,বরং বিয়ের মাধ্যমে যৌনতাকে সঠিকভাবে উপভোগের পক্ষে।

হাদীসে আছে ,আবু হুরাইরা বর্ণনা করেন,”কোন স্বামী যদি স্ত্রীকে তার সাথে শয়নের জন্য আহ্বান করে এবং সে তার কাছে না যায়,তবে সকাল পর্যন্ত ফেরেস্তার সেই স্ত্রীকে অভিস্পাত করে।” আপনি হয়তো এই হাদীসের কথা বলছিলেন।

কই,আপনার দাবি মত তো এখানে জোর করে অধিকার আদায়ের অনুমতি নেই। সেই স্ত্রীটি ঠিকই সহবাস
না করেই থাকছেন। তবে বিনা কারণে ( শারীরিক অসুস্থতা, মেনসট্রুয়েশন ইত্যাদি নয়) দূরে থাকলে সে পাপ করবে। এই হল সঠিক ব্যাখ্যা।

৩৯। ইসলাম নারীদের ক্ষমতা গ্রহণ মেনে নেয় না কেন? আপনারা নারীদের ভোট দিতে দিচ্ছেন কেন? মেনে নিচ্ছেন কেন? অথচ জননাঙ্গ ছাড়া নারী পুরুষে কোন পার্থক্য নেই একথা সত্য নয় কি?
উ: আপনার জন্য পাল্টা প্রশ্ন, পশ্চিমারা ছেলে মেয়ের খেলা একসাথে চালায় না কেন? শারীরিক দুর্বলতার দোহাই দিবেন, তাহলে দাবার মতো মানসিক খেলায়ও কেন ছেলে মেয়ে আলাদা? জননাঙ্গ ছাড়া আর কোন পার্থক্য নেই এটা কোন পাগলেও বলবে না। অনেক পার্থক্য আছে। মেয়েরা ছেলেদের চেয়ে বেশি আবেগপ্রবণ, মেয়েদের ব্রেনের সাইজ ছেলেদের চেয়ে কম ইত্যাদি।
নারীর ক্ষমতায়ন ইসলামে নেই তাই মানি না। নারীকে ভোট দিয়েছি কিভাবে জানলেন? মানুষ বাধ্য হয়ে তেতো জিনিসকেও মেনে নেয় তাই নারী নেতৃত্বকে মানতে হচ্ছে। নাহলে কি করবো? দাঙ্গা ফাসাদ? তাই তো আপনারা চান, যাতে মুসলমানদের জঙ্গী বলা যায়। এইসব প্রভোকেশনের জন্য আপনার বিরুদ্ধে মামলা হওয়া দরকার। টু ব্যাড, ল’ পড়া এখনো শেষ হয়নি।

৪০। উসমানের ইসলাম বিরোধী কাজের প্রতিবাদ করায় সাহাবা আবুজর গিফরীকে নির্বাসন দেয়া এবং তারা নিজের পছন্দসই কোরান বাদে বাকীগুলিকে পুরিয়ে ফেলার পরও সে কিভাবে আমাদের খলিফা? এছাড়া আলী বুদ্ধি, কৌশল এবং শেষে পেশিতে মোয়াবিয়ার কাছে পরাস্ত হলেন সে কিভাবে আল্লার তরবারী এবং খলিফা হওয়ার যোগ্যতা রাখেন? এছাড়া আবু বক্কর ও ওমরকে শ্বশুর এবং জামাতা অর্থাৎ আত্মীয়ার বন্ধনে আবদ্ধ করা কি ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার কৌশল নয়? চার খলিফাই একই বংশভূক্ত এবং কেউ জামাতা কেউ শ্বশুর এটা স্পষ্টতই পারিবারিককরণ নয় কি?
উ: আপনার পরিচয়টা একটু একটু করে পরিষ্কার হচ্ছে। আপনি মওদুদীর ভক্ত। জামায়াত করেন নাকি? না করলেও মওদুদীর ভক্ত হতে সমস্যা নেই। এসব প্রশ্নের উত্তর লম্বা। দয়া করে মাওলানা আবু তাহের মেসবাহ অনূদিত ‘ইতিহাসের কাঠগড়ায় হযরত মোয়াবিয়া (রা ) বইটা পড়ুন।
কোরআন যখন নাজিল হতো তখন মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেগুলো সাথে সাথে লেখার নির্দেশ দিতেন।সাহাবীরা চামড়ায় বা অন্য কোন মাধ্যমে সেগুলো লিখতেন। এভাবে করা সংকলনটি হযরত ওসমান রা. এর কাছে ছিলো। তিনি খলিফা হবার পর দেখতে পেলেন কেউ কেউ কিছু ভুলসহ সংকলন করেছে। তিনি তখন ভুল সংকলনগুলো জোগাড় করে পুড়িয়ে ফেললেন। আর তার কাছে মহানবীর যে কপিটি ছিলো তা থেকে সবাইকে কপি করতে বললেন। তিনি যদি অ-খলিফিয় কাজ করতেন, তাহলে তখনকার বড় বড় সাহাবীরা প্রতিবাদ করেননি কেন?

৪১। বিজ্ঞানীরা টেষ্ট টিউবে বিভিন্ন পদার্থের সংমিশ্রণ ঘটিয়ে ভাইরাস জাতীয় প্রাণী সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছেন। বিজ্ঞানীরা চলাচল সক্ষম ভাইরাস আত্মা ছাড়া কিভাবে বানালেন? সম্প্রতি কৃত্রিমভাবে তৈরি ডিএনএ মৃত ব্যাক্টিরিয়ার খোলসে প্রবেশ করিয়ে জীবিত করে তুলেছেন বিজ্ঞানীরা। এখানে আত্মা কে বানালো?
উ: বিভিন্ন পদার্থের সংমিশ্রণে যে আত্মার সৃষ্টি হবে না তেমন দিব্যি কি কোরআন দিয়েছে? কিন্তু আত্মা কি ঐ বিজ্ঞানীরা সৃষ্টি করেছেন? তারা শুধুমাত্র সংযোজন করেছেন, মূল ম্যানুফ্যাকচারার কিন্তু ঐ আল্লাহ। আল্লাহ এমন সিস্টেম দিয়ে রেখেছেন যে বিজ্ঞানীরা তা সংযোজন করতে পারছেন। সমস্যা কোথায়?

৪২। নূহের নৌকায় এত প্রকারের ডাইনোসর , হাতি, সিংহ, বাঘ, গণ্ডার ছাড়াও কোটি কোটি প্রাণী ও বীজ কি করে রাখলেন? না রাখলে এরা বাঁচলো কি করে? সারা পৃথিবী জুড়ে পাহাড়ের সমান উচ্চতার বন্যার পানিগুলো কোথায় গেল?
উ: প্রশ্নগুলো তাহলে আপনার না। খৃষ্টানদের সাইট থেকে তুলে আনা। যাক উত্তর দিতে তো আর সমস্যা নেই।
সারা পৃথিবীতে বন্যা হয়েছে এটা শুধু বাইবেলে বলা আছে, কোরআনে বলা নেই। একটা এলাকা বন্যায় ডুবে গেছে এটা বৈজ্ঞানিকভাবে এখন প্রমাণিত। তবে বাইবেলের মতে সারা পৃথিবী ডুবে যাওয়া সম্ভব ছিলো না। কারণ ঐ সময় ইরাকের দিকে সভ্যতা বিদ্যমান ছিলো যা বিলীন হয়ে যায়নি।
নৌকাটা কত বড় ছিলো তা তো কোরআন বলেনি। ধরে নিন কোটি কোটি প্রাণী আর বীজ রাখার মতো যথেষ্ট বড় ছিলো। সমস্যা কোথায়?
আর ভুল ধরতে চান? বাইবেলের ভুল ধরুন কারণ ওটা মানুষ বিকৃত করেছে। সেখানে নৌকার একটা মাপ লেখা আছে। ঐ মাপের নৌকায় কখনোই অত প্রাণী তোলা সম্ভব হতো না।

৪৩। স্ত্রী ছাড়া শয়তানের বংশবৃদ্ধি কিভাবে হচ্ছে? শয়তানের স্ত্রী নাই অথচ একসাথে ১০টি সন্তান হচেছ কিভাবে? অমুসলিম দেশে শয়তানের অস্তিত্ব নাই কেন?
শয়তানের স্ত্রী নেই এমন কথা কোথাও পেয়েছেন? অথবা স্ত্রী ছাড়া সে সন্তান জন্ম দিতে পারবে না এমন দিব্যি কোরআন দিয়েছে?
‘অমুসলিম দেশে শয়তানের অস্তিত্ব’ না থাকলে এতো ‘সওয়াবের’ কাজ ওরা করছে কিভাবে? নাকি তাদের পাপগুলোকে পাপ মনে হয় না?

৪৪। জ্বিন কোথায়? থাকে অমুসলিম দেশে এর আভাস নাই কেন?
উ: জ্বিন আপনার আমার আশেপাশেই আছে। মাঝে মাঝে যে রহস্যময় ঘটনা ঘটে তার ব্যাখ্যা হয়তো জ্বিন। দিব্যি দিবো না।
আর অমুসলিম দেশে নেই- কোন গবেষণার ফল এটা?

৪৫। ইমাম মেহেদী এত অস্ত্রের মুখে কেন তরবারী দিয়ে যুদ্ধ করবে এবং ঘোড়ায় করে সংবাদ পাঠাবে?
উ: অপেক্ষা করতে থাকুন, পৃথিবীর তেল-গ্যাস শেষ হতে চলেছে। তারপর ঘোড়া ছাড়া উপায় নেই। অস্ত্র-গোলাবারুদেরও একটা ব্যবস্থা হবে।

৪৬। হাতের মুঠোয় পৃথিবী, অথচ সাদ্দাদেও বেহেস্ত পৃথিবীর কোথায় রয়েছে এবং ইমাম মেহেদীর পরবর্তী কালের দানবরা কোথায় লুকিয়ে আছে জানা যাচ্ছে না কেন?
উ: এখনও আপনি জানেননা মহাসমুদ্রের নিচে কি আছে,পৃথিবীর অনেক পাহাড়ী এলাকায় মানুষের পা পড়েনি কখনো, তাহলে হাতের মুঠোয় পৃথিবী তা আপনি কি করে বললেন?

৪৭। বর্তমানে কোন বুজুর্গ মাজেজা দেখাতে পারছে না কেন? সঠিক কোন মুসলামান নেই কি?
উ: মাজেজা দেখানো কি ইসলামের শর্ত?

৪৮। মানুষ মাটি দিয়ে সৃষ্টি। অন্য প্রাণীরা মাটির সৃষ্টি নয়। অথচ মানুষের কোষের সাথে অন্য প্রাণীর কোষে প্রচুর মিল রয়েছে। এমনকি গঠন পরিপাক, জনন প্রনালী অনেকটাই এক রমক অর্থাৎ তারা একই ভাবে সৃষ্টি। এর কারণ কি?
উ: কোন বিজ্ঞানীকে জিজ্ঞেস করুন।সঠিক উত্তর পাবেন।

৪৯। ঈমানদারদের চেয়ে বেঈমানদাররা বেশি সৎ কাজ করছেন কেন? আল্লাহর রহমত মুসলমানদের উপর কি করে গেছে? মুসলমানদের সাফল্য এত কম কেন? মুসলমানরা অনেক ক্ষেত্রেই বিধর্মীদের দয়ায় বেঁচে থাকে কেন? তাহলে বিধর্মীরা কি আল্লাহর বেশি প্রিয় হয়ে যাচ্ছে?
উ: আল্লাহর আদেশ না মানলে বেইজ্জতি তো হবেই। এটা মুসলমানদের জন্য আল্লাহর শিক্ষা।এই বেইজ্জতি সহ্য করার পরও শিক্ষা না হলে কি আর করা।

৫০। চোর ডাকাতদের রেজেক কে দেয়? যদি আল্লাহই চোর ডাকাতদের রেকেজ এভাবেই দেয় তবে তাদেও করার কি আছে? জারজ সন্তানদের রুহু যদি আল্লাহই সৃষ্টি করে থাকেন তাহলে শয়তান এখানে কি করেছে? মানুষের ভাগ্য ও হেদায়েত আল্লাহর হাতে থাকলে শয়তানের গুরুত্ব কি?
উ: আল্লাহ কোরআনে বলেছেন যে তিনি পৃথিবীর সবাইকে রিজিক দেন।কারণ তিনি দয়ালু। চোর ডাকাতের নিজস্ব চিন্তাশক্তি আছে। সেটা তারা না খাটালে কি আর করা।
জারজ সন্তানের বিধান ইসলামে সাধারণ সন্তানের মতোই। বায়োলজিকাল বাবা-মার ভুলের জন্য সন্তানের কোন মাশুল দিতে হবে না। তারা ইমাম হতে পারবে, নামাজ পড়াতে পারবে।
মানুষকে আল্লাহ নিজস্ব বুদ্ধি দিয়েছেন। আর শয়তানের কাজ হলো সেই বুদ্ধিকে ভ্রংশ করে বিপথে নেয়া।সুতরাং শয়তানের গুরুত্ব আছে বৈকি। আল্লাহও দেখতে চান, কে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে তার কথা মেনে চলে।

৫১। স্রষ্টা ছাড়া যদি কিছু সৃষ্টি না হয়। অর্থাৎ বলা হয় আল্লাহ না থাকলে এত সৃষ্টি হল কিভাবে এবং সুনিয়ন্ত্রিত হচ্ছে কিভবে? তাহলে স্রষ্টা ছাড়া আল্লাহর নিজের সৃষ্টি কিভবে হল?
উ: প্রথম প্রশ্নের উত্তর আগে কয়েকবার দিয়েছি। আল্লাহ একটা সিস্টেম করে দিয়েছেন, সবকিছু সেই সিস্টেমে চলছে। আল্লাহ এখানে হস্তক্ষেপ করেন না।
আল্লাহ সৃষ্টি হননি। সূরা এখলাসে আছে, তিনি কাউকে জন্ম দেননি, কারো থেকে জন্মও নেননি। তাছাড়া তার শুরু নেই, শেষ নেই। এমন আরেকটি সত্তা পৃথিবীতে নেই। তাই এ নিয়ে ক্ষুদ্র মাথা গরম করে লাভ নেই। বিশ্বাসেই মুক্তি।

৫২। ধর্ম মানুষকে বলে দিচ্ছে এটা ঠিক ওটা বেঠিক, অর্থাৎ মানুষের জীবন যাপনের পথ নির্দিষ্ট করে দিয়েছে। আইনতো বদলায় কিন্তু কোরআন তো কোনভাবেই বদলাবে না? তাহলে কি মানব জাতির বুদ্ধির বিকাশকে বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে না?
উ: মানবজাতির বুদ্ধির বিকাশ হচ্ছে বলেই তো হোমোসেক্সুয়ালরা আজকাল জোর গলায় কথা বলছে। কয়দিন পর ইনসেস্টও বৈধ করবে কেউ কেউ। অপেক্ষা করেন।
আল্লাহ যে বিধান দিয়েছেন তা অতীত ভবিষ্যৎ বর্তমান সব আগে থেকে বিবেচনা করেই দিয়েছেন। তাই তা পরিবর্তনের কোন সুযোগ নেই। তবে নতুন নতুন বিষয় আগের প্রিন্সিপালে পরিচালিত হবে। যেমন,টেস্ট টিউব বেবি নেয়া যাবে কী না ইত্যাদি।

৫৩। মানুষকে লোভ দেখিয়ে কোন কাজ করানো বা ভয় দেখিয়ে কোন কাজ করানো অবশ্যই ঠিক নয়। তাহলে বেহেস্ত-দোজখের লোভ বা ভয় দেখিযে তাকে ধর্মের পথে আনানো কি সঠিক?
উ: বলেন কি? বর্তমান পৃথিবীটা তো চলছেই লোভ আর ভয় দেখিয়ে। বেতন, ভাতা, কমিশন ইত্যাদির লোভ আপনাকে দেখানো হয় না? তাহলে মনে হয় আপনি আফ্রিকার সুদূর জংগলে আছেন।
অফিসে নোটিশ না দিয়ে এক সপ্তাহ অনুপস্থিত থাকেন তো। বা বসের সামনে গিয়ে যা খুশি গালি দেনতো। কেন অনুপস্থিত থাকেন না বা গালি দেন না? কারণ প্রতিষ্ঠানের আইন অনুযায়ী আপনার চাকরিটা যাবে।
সবাই ভয় আর লোভে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে, আর আল্লাহ করলে দোষ!

৫৪। ধর্মগ্রন্থে বলা হয়েছে পৃথিবীর চারদিকে রয়েছে কোহেক্বাফ নামক পর্বত। বর্তমানে পৃথিবীর কোথায় কি আছে সব কিছুই মানুষের জানা। দূর্ভেদ্য সেই কোহেক্বাফ পর্বত বর্তমান পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না কেন?
উ: কোন ধর্মগ্রন্থে? সূত্র দেন।

৫৫। মুসলমাদের জন্য কচ্ছপ ও শুকর খাওয়া নিষিদ্ধ। অথচ এদের মাংসের মধ্যে কোন কোন খারাপ উপাদান দেখা যাচ্ছে না বরং প্রায় অন্যান্য খাদ্যোপযোগী মাংসের মতোই। এদের খেতে না দেওয়ার প্রকৃত কারণ কি? তাহলে আল্লাহ এদের সৃষ্টিই করেছেন কেন?
উ: খারাপ উপাদান নেই? শুয়োরের গোস্তে কি পরিমাণ ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া আছে একটু গুগল করে জেনে নিন।
আল্লাহ এদের সৃষ্টি করেছেন যাতে আপনার লোভকে পরীক্ষা করতে পারেন। এটা একটা পরীক্ষা।আচ্ছা বলুন তো, ডায়াবেটিস রোগীকে মিষ্টি খাওয়া নিষেধ করে কেন? এটা তো খুব ভালো খাবার।

৫৬। বৃষ্টিপাত নাকি মিকাইল ফেরেস্তা নিয়ন্ত্রন করেন। বৃষ্টিপাতের সিস্টেম আজ মানুষের জানা সেই সিস্টেমে মিকাইল ফেরেস্তার প্রয়োজন কোথায়? মানুষ বর্তমানে কৃত্রিম ভাবেও বৃষ্টি নামাচ্ছে। এটাকি মিকাইল ফেরেস্তার কাজে হস্তক্ষেপের সামিল নয়? তারপরেও তিনি নীরব কেন?
উ: আপনি ওয়েদার কন্ট্রোল ডিভাইস ঘোরালে মিকাইল ফেরেস্তা যে বৃষ্টি আনবেন না তার কথা কি আল্লাহ কোথাও বলেছেন?
আগেই বলেছি, পৃথিবীটা একটা সিস্টেমে চলছে। সেই সিস্টেমের আওতায় বিজ্ঞানীরা আজ ওয়েদার কন্ট্রোল ডিভাইস বানিয়েছেন। এটা তো আল্লাহরই দেয়া সুযোগ।

৫৭। মানুষের অনিষ্টকারী এবং অপ্রয়োজনীয় অনেক প্রাণী পৃথিবীতে আছে। যেমন মশা, মছি, বিভিন্ন প্রকার জীবানু ইত্যাদি। এদের সৃষ্টি করার কারণ কি?
উ: শুধু ভালো জিনিস নিয়ে পৃথিবী সৃষ্টি হলে এর মজা আপনি পেতেন না তাছাড়া প্রতিটি প্রাণীরই কোন না কোন উপকারীতা আছে। কয়দিন আগে পত্রিকায় দেখলাম কোন মশা যেন উপকারী এবং সেগুলো শহরে ছাড়ার চিন্তা-ভাবনা চলছে।
পৃথিবীতে কত প্রাণী আছে যেগুলোর সাথে আপনার কখনো সাক্ষাতই হবে না। যেমন ডলফিন। এদেরকে মেরে ফেলছে বলে পৃথিবীর ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলে পত্রিকায় দেখেননি? আল্লাহ সবকিছু দিয়ে পৃথিবীর ব্যালেন্স রক্ষা করছেন।

৫৮। ধর্মগ্রন্থে বলা হয়েছে পৃথিবীতে আঠারো হাজার মাখলুকাত আল্লাহ তায়ালা সৃষ্টি করেছেন। ডাইনোসরসহ কিছু প্রাণী বিলুপ্ত হওয়াতে এদের সংখ্যা কমে যাওয়ার কথা। অথচ দেখা যাচ্ছে এক অর্থোপোডা গোত্রই এদের চেয়ে বেশি সংখ্যক মাখলুকাত রয়েছে। অর্থাৎ পৃথিবীতে আঠারো হাজারের অনেক বেশি মাখলোকাত রয়েছে। বাকীরা এল কোথা থেকে?
উ: কোন ধর্মগ্রন্থে আছে? সূত্র দিন।

৫৯। প্রায় সমস্ত ধর্মেই দেখা যাচ্ছে একজন আদিম পিতা ও মাতা রয়েছে। বিভিন্ন
ধর্মগ্রন্থে এদের নাম বিভিন্ন। অন্য ধর্ম যদি মিথ্যা হয় তাহলে তারা ইসলাম ধর্মগ্রন্থ আবির্ভাবের পূর্বে আদি পিতামাতার কথা জানল কি করে? বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থে স্রষ্টার নাম ভিন্ন কেন?
উ: ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে সবচেয়ে বড় ভুল ধারণা হলো যে অনেকেই মনে করেন হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই ধর্মের প্রবর্তক। ভুল! ইসলাম হযরত আদম আ . এর সময় থেকে মানুষের একমাত্র ধর্ম।
ইহুদী ধর্মের নাম তাদের ধর্মগ্রন্থে খুঁজে পাবেন না, তেমনি খৃস্টান ধর্মের নামও পাবেন না। হিন্দু ধর্ম কি নামে অভিহিত হবে তা-ই তো একটা বিতর্ক। বৌদ্ধ ধর্মের নামও তাদের গ্রন্থে নেই।
তাদের ধর্মগ্রন্থে মহানবীর ভবিষ্যদ্বাণী পাওয়া যায়।এক আল্লাহর কথা জানা যায়। এ ব্যাপারে বেশি কিছু জানতে গুগল করুন, ‘কনসেপ্ট অফ গড ইন মেজর রেলিজিয়নস’ বাই ড. জাকির নায়েক। সব ধর্মগ্রন্থের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি একটি দীর্ঘ আলোচনা করেছেন।

৬০। মুসা নবীর হাতের লঠির আঘাতে নীল নদের মধ্য দিয়ে পানি শুকিয়ে রাস্তা হয়ে গিয়েছিল। নদীর স্রোত থাকায় এঘটনার প্রভাব ব্যাপকভাবে পরার কথা? পানি উপচে বন্যা হওয়ার কথা। প্রভাব পড়েছিল কি? আবার হযরত মুহম্মদের মেরাজ নিয়ে দুটি মত রয়েছে? বেশি প্রচলিত মতটি মতে সে সশরীরে মেরাজে গিয়েছিল। এটা সত্যি হতে হলে সারাবিশ্বব্যাপী তাপ, আলো, শৈথ্য, আবহাওয়া আনবিক অবস্থা, বায়ু ইত্যাদির ব্যাপক পরিবর্তন প্রয়োজন যার প্রভাব পৃথিবীতে ব্যাপকভাবে পড়ার কথা অথচ তার যাত্রার কথা সে না বলা পর্যন্ত আর কেউ জানতেও পারে নি। মেরাজ স্বশরীরে কিভাবে সম্ভব?
উ: প্রথম কথা যে যে সম্মান প্রাপ্য তাকে সে সম্মান দিন। মহানবীকে আপনি পছন্দ নাও করতে পারেন, কিন্তু তিনি অনেকের আদর্শ। তার জন্য ‘সে’ সর্বনাম ব্যবহার করাটা অনুচিত।
মেরাজ স্বশরীরে হয়েছিলো এ নিয়ে বিতর্কের অবকাশ নেই। আইনস্টাইনের সম্ভবত আলোর গতির একটি থিওরি আছে যেটা প্রমাণ হয়েছে কি হয়নি। মানুষ যদি আলোর গতিতে চলতে পারে তাহলে একরাত্রের মধ্যে মেরাজ সম্ভব না হবার কোন কারণ নেই।
নীল নদের কী অবস্থা হয়েছিলো তা নিয়ে কোন ইতিহাস আছে? হয়তো বন্যা হয়েছিলো, হয়তো অন্য প্রভাব পড়েছিলো।তাতে কি?

[ মন্তব্য:
১) Firstly, Thanks for Your Questions

২) A little learning is a dangerous thing..
পড়ুন, জানুন, অতঃপর প্রশ্ন করুন।

৩)কিছু ব্যাপারে আপনি পবিত্র কোরআনের অপব্যাখ্যা করেছেন।

১০ নং আয়াতে এমন অপব্যাখ্যা করেছেন। আপনি কি চাঁদের আলো পৃথিবীতে পাননি বা দেখেননি, আলোর আলো নিয়ে কি কোন গান শোনেননি, চাঁদ প্রদীপের মতো আলো প্রদান করে না তবে reflected light বা প্রতিফলিত আলো প্রদান কারী।

71:15 নং আয়াতে চন্দ্র আলো প্রদানকারী বলা আছে… (কিন্তু নিজস্ব আলো বা প্রদান কারী উৎস হিসেবে আরবীতে নেই যা আপনি বলছেন)
25:61 নং আয়াতে বলা আলোকময় চন্দ্র (কিন্তু এটা ভুল ব্যখ্যায় আপনি বলছেন আলোর উৎস)

৪) আপনার অনেক প্রশ্নের রেফারেন্স নাই। যেমন প্রশ্ন ৫,৬,১০,১২,১৫,১৬,৩৮,৫৪, রেফারেন্স দিলে ভালো হয়।

৫) আপনার সব প্রশ্নের উত্তর ডাঃ জাকির নায়েকের লেকচার সমগ্র নামের বইতে পাবেন।

৬) যেসব প্রশ্ন করেছেন (আপনার লেখায় যেমন বুঝেছি) তার অধিকাংশই ভুল জ্ঞান। আমি জানি না আপনি মুসলিম কী না। কোরআন পড়েন, সহীহ হাদিস পড়েন, ধর্মের সঠিক জ্ঞান পাবেন। কোনো কিছু সঠিকভাবে না জেনে প্রশ্ন তুলা সত্যিই বোকামী।]

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Copyright Notice

কপি করা নিষিদ্ধ!