Skip to content

 

Wait...❤😘 Show love? ⬇⬇⬇

নামাজের আহ্কাম বা শর্তসমূহ (৭টি), নামাজের আরকান (৬টি), নামাজের ওয়াজিবসমূহ (১৬টি), নামাজ ভঙ্গের কারণসমূহ (২৭টি), নামাজের মাকরূহসমূহ (২৫টি), যে সব অবস্থায় নামাজ ছেড়ে দেয়া যায় (৫টি)

আহকাম-আরকান-ওয়াজিব-ভঙ্গের-কারণ-ও-নামাজ-ছাড়ার-কারণ-4

[বিষয়: নামাজের আরকান, নামাজের ওয়াজিবসমূহ (১৬টি), নামাজ ভঙ্গের কারণসমূহ (২৭টি), নামাজের মাকরূহসমূহ (২৫টি), (৫টি) যে সব অবস্থায় নামাজ ছেড়ে দেয়া যায়, নামাজের আহ্কাম বা শর্তসমূহ (৭টি)]

নামাজের ফরজ কয়টি?

নামাজের ফরজ সমূহ নামাজে তেরটি ফরজ। নামাজ আরম্ভ করার পূর্বে সাতটি ও নামাজ আরম্ভ করার পর ছয়টি ফরজ।

নামাজের পূর্বের সাতটিকে নামাজের আহকাম বা শর্ত বলে। আর মধ্যেরগুলিকে নামাজের আরকান বলে। এই আরকান বা শর্ত সমূহের কোন একটিও ছুটে গেলে নামাজ হবে না।

১. সময় মত নামাজ পড়া। নামাজের সময় হওয়ার পূর্বে নামাজ পড়লে নামাজ হবে না।

২. প্রকৃত অপ্রকৃত সর্ব প্রকার নাপাকী থেকে শরীর পবিত্র হতে হবে। অর্থাৎ, উযূ না থাকলে উযূ করে নিতে হবে। গোসলের প্রয়োজন হলোে গোসল করে নিতে হবে। শরীরে কোন নাপাকী লেগে থাকলে ধৌত করে নিতে হবে।

৩. পোশাক-পরিচ্ছদ পাক হতে হবে। কাপড়ে গাঢ় অথবা পাতলা যে কোন প্রকারের নাপাকী লেগে থাকলে ধৌত করে নিতে হবে।

৪. যে জায়গায় নামাজ পড়বে তা পাক হতে হবে।

৫. ছতর বা ঢাকবার স্থান ঢাকতে হবে অর্থাৎ, নামাজীর শরীর কাপড় দিয়ে ঢেকে নিতে হবে। পুরুষ এরূপ কাপড় পরিধান করবে যেন নাভি থেকে হাঁটু পর্যন্ত ঢেকে যায়। স্ত্রীলোক এমন কাপড় পরিধান করবে যেন দু হাতের কব্জি দু পা ও মুখমণ্ডল ব্যতীত সমস্ত শরীর আবৃত হয়ে যায়। যে উড়না এত পাতলা যে, তাতে চুল দেখা যায় তাতে নামাজ হবে না। পুরুষের পায়ের গিট কাপড়ে ডেকে গেলে নামাজ মাকরূহ হবে। স্ত্রীলোকের সমস্ত গিট অনাবৃত থাকলে নামাজ মাকরূহ হবে।

৬. কেবলার দিকে মুখ করতে হবে।

৭. নামাজের নিয়ত করতে হবে। হৃদয়ের অনুভূতি দ্বারা অমুক নামাজ পড়ছি বলে ইচ্ছে করলে এতেই যথেষ্ট হবে, তবে মুখে নিয়ত উচ্চারণ করা উত্তম, এতে হৃদয়ের আকর্ষণ বেড়ে যায়।

১. তাকরীরে তাহরীমা বলা। অর্থাৎ, নামাজের নিয়ত করার সময় ‘আল্লাহু আকবার’ বলা।

২. কিয়াম করা অর্থাৎ, কোন অসুবিধা না থাকলে সোজা হয়ে দাঁড়ানো।

৩. কিরআত পাঠ করা: পবিত্র কুরআন থেকে কমপক্ষে তিনটি ছোট আয়াত অথবা একটি বড় আয়াত পাঠ করতে হবে।

৪. রুকূ করা।

৫. দু’সাজদা করা।

৬ শেষ বৈঠকে তাশাহ্হুদ পড়তে যতক্ষণ সময় লাগে ততক্ষণ বিলম্ব করা।

নামাজের কোন একটি ফরজ কাজ ছুটে গেলে নামাজ হবে না। দ্বিতীয়বার নামাজ পড়তে হবে। যেমন তাকবীরে তাহরীমা- আল্লাহু আকবার বলল না কিংবা সাজদা করল না, বা রুকূ করতে ভুলে গেল। এ সমস্ত অবস্থায় নামাজ হবেই না।

তবে নামাজের কোন একটি ওয়াজিব কাজ ভুলে ছুটে গেলে নামাজ পুরাপুরি ভঙ্গ হবে না। তবে নামাজের একটি কাজ বাদ পড়ায় এ ঘাটতি মোচন করার জন্য শরী’আত সাজদায়ে সাহো বা ভুলের সাজদা দেয়ার নিয়ম করেছে। এ সাজদা ওয়াজিব হলোে সে সাজদা আদায় না করলে দ্বিতীয়বার নামাজ পড়ে নেয়া ওয়াজিব।

সাজদায়ে সাহো (ভুলের সাজদা) আদায় করার নিয়মাবলী সম্পর্কে আমাদের সাইটে সার্স দিলে বিস্তারিত পোষ্ট পাবেন।

নামাজের ওয়াজিবগুলো নিম্নরূপ:

১. ফরজের প্রথম দুই রাকআত কিরাত পাঠের জন্যে নির্দিষ্ট করা।

২. সুরা ফাতিহা পাঠ করা অর্থাৎ, ফরজ নামাজের প্রথম দু’ রাকআতে এবং সুন্নাত ও নফল নামাজের সকল রাকআতে সূরা ফাতিহা পাঠ করা ওয়াজিব।

৩. নফল অথবা বিতর নামাজের সমস্ত রাকআতে সূরা ফাতিহাসহ কোন সূরা বা তিন আয়াত পাঠ করা ওয়াজিব এবং ফরজ নামযের শুধু প্রথম দু’ রাকআতে সুরা ফাতিহাসহ কোন সূরা বা তিন আয়াত পাঠ করা ওয়াজিব।

৪. প্রথমে ফাতিহা পড়া তারপর সূরা/কিরাত পড়া।

৫. নামাজের অঙ্গগুলো ক্রমাগত আদায় করা। অর্থাৎ, অমনোযোগিতা অথবা ভুলবশতঃ নামাজের এক অঙ্গ আদায় করার পর অন্য অঙ্গ আদায় করতে যদি তিন তাসবীহ পরিমাণ বিলম্ব হয়, তখন ভুলের সাজদা দেয়া ওয়াজিব হবে। দোয়া ইত্যাদি পড়ার মধ্যে যত বিলম্বই হোক না কেন ভুলের সাজদা দিতে হবে না।

See also  জুমার নামায ও জুমার খুতবার সুন্নাত, আদব ও মাসায়েল

৬. কিয়াম, রুকু, কিরাত ও সাজদার মধ্যে ধারাবাহিকতা ঠিক রাখতে হবে। অর্থাৎ, রুকুর আগে সাজদা অথবা সাজদার আগে কা’দা (বৈঠক) করলে ভুলের সাজদা দেয়া ওয়াজিব হবে।

৭. রুকূ ও সাজদার মধ্যে এতটুকু বিলম্ব করা যাতে একবার ’আল্লাহু আকবার’ পাঠ করতে পারে। এ চেয়ে অতি তাড়াতাড়ি করে রুকূ সাজদা করলে নামাজ হবে না।

৮. কওমা করা। অর্থাৎ, রুকূ করার পর সোজা হয়ে দাঁড়ানো। এতে বহুলোক তাড়াহুড়া করে অর্থাৎ, সোজা হয়ে না দাঁড়িয়েই সাজদায় চলে যায়, এরূপ করলে নামাজ হবে না।

৯. জলসা করা। অর্থাৎ, এক সাজদা করার পর ভাল করে বসা, অতঃপর দ্বিতীয় সাজদা করা।

১০. প্রথম বৈঠকে অর্থাৎ, তিন অথবা চার রাকআত বিশিষ্ট নামাজের দু’রাকআত পড়ার পর তাশাহ্হুদ পাঠ করতে পারা যায় এতটুকু সময় বসা।

১১. উভয় বৈঠকে তাশাহ্হুদ পাঠ করা। অর্থাৎ, দু’ রাকআত বিশিষ্ট নামাজে দ্বিতীয় রাকআতে, তিন রাকআত বিশিষ্ট নামাজের দ্বিতীয় ও তৃতীয় এবং চার রাকআত বিশিষ্ট নামাজে দ্বিতীয় ও চতুর্থ রাকআতের বৈঠকে তাশাহ্হুদ পড়তে হবে।

১২.তা’দীলে আরকান। অর্থাৎ, নামাজের অঙ্গগুলো ধীরস্থির ভাবে আদায় করা। কওমা, রুকূ, সাজদা ও জলসা ইত্যাদি শান্ত-শিষ্ট ভাবে আদায় করা। নামাজের দোয়াগুলোও ধীরস্থির ভাবে পড়তে হবে যেন কোন কিছু ছুটতে না পারে।

১৩.যে নামাজে কুরআন পাঠ আস্তে করার বিধান আছে, যেমন জোহর ও আসরের নামাজের কিরাত, আর যে নামাজে জোরে কিরাত পাঠ করার বিধান আছে, যেমন ফজর, মাগরিব ও ইশা, এগুলোতে যথাক্রমে আস্তে ও জোরে সূরা কিরাত পড়তে হবে।

১৪. ‘আসসলামু আলাইকুম’ বলে নামাজ শেষ করতে হবে।

১৫.বিতরের তৃতীয় রাকআতে দোয়া কুনূত পড়া।

১৬.দু’ ঈদের নামাজে অতিরিক্ত ছয় তাকবীর বলা। তবে জামা’আত অতি বড় হলোে তাকবীর ছুটে গেলে অথবা অন্য কোন ওয়াজিব ছুটে গেলে ভুলের সাজদা দিতে হবে না।

আহকাম-আরকান-ওয়াজিব-ভঙ্গের-কারণ-ও-নামাজ-ছাড়ার-কারণ-2

যে সমস্ত কাজ দ্বারা নামাজ ভঙ্গ হয়ে যায় ও দ্বিতীয়বার নামাজ পড়তে হয়, সে কাজগুলো হলো:

১. ভুলে ইচ্ছা করে কথা বলা

২. নামাজ রত অবস্থায় সালাম দেয়া অথবা উত্তর দেয়া।

৩. কেউ হাঁচি দিলে হাঁচির উত্তরে ‘ইয়ারহামুকাল্লাহ’ বলা। তবে নামাজে নিজের হাঁচি আসলে ভুল করে ‘আল-হামদুলিল্লাহ’ বললে নামাজ হয়ে যাবে কিন্তু ইচ্ছা করে এরূপ বলা ঠিক নয়।

৪. নামাজের বাইরে দোয়া করা হলোে নামাজে থেকে তার উত্তরে ‘আমীন’ বলা।

৫. কোন দুঃসংবাদ শুনে ‘ইন্নালিল্লাহ’ বা অন্য কোন দোয়া বলা।

৬. কোন সুসংবাদ শুনে ‘আল-হামদুলিল্লাহ’ অথবা অন্য কোন শব্দ উচ্চারণ করা।

৭. আশ্চর্যজনক কোন কথা শুনে ‘সুবহানাল্লাহ’ অথবা অন্য কোন বাক্য উচ্চারণ করা।

৮. উহ্ আহ্ শব্দ করা বা উচ্চস্বরে ক্রন্দন করা।

৯. নামাজে থাকাকালীন নামাজের বাইরে কোন ব্যক্তির কুরআন পাঠে লোকমা দেয়া।

১০. নামাজের মধ্যে দেখে কুরআন পাঠ করা।

১১.কোন পুস্তক অথবা লিখিত বস্তু দেখে পাঠ করা। তবে মনে মনে লিখিত বস্তুর মর্ম বুঝে নিলে নামাজ ভঙ্গ হবে না, কিন্তু এরূপ করা ঠিক নয়।

১২. ‘আমলে কাছীর’ করা অর্থাৎ, এমন কোন কাজ করা যা অন্য লোক দেখলে নামাজী বলে বুঝতে না পারে যেমন দু’হাতে শরীর চুলকানো অথবা পরিধানের কাপড় দু’হাতে ঠিক করা, ইত্যাদি।

১৩. বিনা প্রয়োজনে জোরে কাশি দেয়া অথবা গলা পরিস্কার করা। ইমাম গলার আওয়াজ পরিস্কার করার জন্য কাশি দিতে পারেন।

১৪. ইচ্ছা করে অথবা ভুল করে কোন বস্তু খাওয়া অথবা পান করা।

১৫. কুরআন পাঠে ভীষণভাবে অর্থ বিকৃত হয়ে যায় এমন ভুল পড়া।

১৬. নামাজের ভিতর হাটা, তবে প্রয়োজনে দুই এক কদম আগে পিছে সরা যায়। সাজদার জায়গা থেকেও আগে বেড়ে গেলে নামাজ হবে না।

১৭. কিবলার দিক থেকে অন্য দিকে সিনা ফিরানো। কোন কারণ ব্যতীত মুখ ফিরিয়ে নিলেও নামাজ মাকরূহ হয়ে যাবে।

১৮. এক চতুর্থাংশ ছতর এতটুকু সময় খুলে রাখা যতক্ষণে তিনবার সুবহানাল্লাহ বলা যায়।

১৯. আল্লাহ তা’আলার নিকট এমন বস্তু চাওয়া যা মানুষের নিকট চাওয়া যায়। যেমন পানাহার ইত্যাদি চাওয়া।

২০. আল্লাহু এবং আকবার শব্দের আলিফ বা আকবার শব্দের বা-কে লম্বা করা।

২১. জানাজার নামাজ ব্যতীত অন্য নামাজে অট্টহাসি হাসা।

২২. ইমামের আগে রুকু অথবা সাজদা করে নেয়া।

See also  বিতরের নামাজের নিয়ম + বিতরের নামাজের নিয়ত + বিতরের নামাজের দোয়া + দোয়া কুনুত আরবি, বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ

২৩. একই নামাজে নারী-পুরুষের একত্রে দণ্ডায়মান হওয়া, আর এই দাঁড়ানো এতটুকু বিলম্ব হওয়া যার মধ্যে একবার সাজদা করা যেতে পারে।

২৪. তাইয়াম্মুমকারী ব্যক্তির পানি পেয়ে যাওয়া।

২৫. পূর্ণ সাজদার মধ্যে উভয় পা যদি মোটেই মাটিতে লাগানো না হয়। তবে পা উঠে গেলে আবার মাটিতে রাখলে অসুবিধা নেই।

২৬. নামাজের মধ্যে সন্তান দুধ পান করলে। তবে দুধ বের না হলোে নামাজ ভাঙ্গবে না, কিন্তু তিন বা ততোধিক বার টানলে দুধ বের না হলোেও নামাজ ভেঙ্গে যাবে।

২৭. স্ত্রী নামাজে থাকা অবস্থায় স্বামী তাকে চুম্বন করলে।

আহকাম-আরকান-ওয়াজিব-ভঙ্গের-কারণ-ও-নামাজ-ছাড়ার-কারণ-1

যে সমস্ত কাজ দ্বারা নামাজ ভঙ্গ হয় না, তবে দোষণীয়, সে কাজগুলো নিম্নরূপ:

১. শরীরে চাদর না জড়িয়ে উভয় কাঁধে লটকিয়ে ছেড়ে দেয়া অথবা জামা কিংবা শেরওয়ানীর হাতায় হাত না ঢুকিয়ে কাঁধে নিক্ষেপ করা, তেমনি মাফলারের উভয় দিক ছেড়ে দেয়া।

২. কাপড় অথবা কপালে ধুলাবালি লাগার ভয়ে কাপড় টেনে ধরা অথবা মুখে ফুঁক দিয়ে ধুলাবালি সরানো। সাজদার জায়গায় পাথর কনা থাকলে হাত দিয়ে প্রয়োজনে দু’একবার সরালে কোন দোষ নেই।

৩. নিজের শরীর, কাপড় অথবা দাড়ি নিয়ে খেলা করলে। বহু লোক এরূপ করে থাকে, এ থেকে বেঁচে থাকা কর্তব্য।

৪. এমন কাপড় পরিধান করে নামাজ পড়া যে কাপড় পরে বাজারে অথবা সভা-সমিতিতে যাওয়া অপছন্দনীয় বোধ হয়।

৫. মুখে এমন জিনিস রেখে নামাজ পড়া যা রাখার ফলে কুরআন পাঠ করা কষ্টকর হয়।

৬. শৈথিল্য অথবা অমনোযোগিতার দরুণ মাথা খালি রেখে অথবা নাভির উপরে খোলা দেহে নামাজ পড়া। তবে কোন লোক বিনয়ের কারণে খালি মাথায় নামাজ পড়লে মাকরূহ হবে না, তবে মসজিদের মধ্যে এরূপ করা উচিত নয়, ঘরের মধ্যে করা যায়। মসজিদের ভিতর এরূপ করা হলোে অন্য লোকের মন থেকে এর গুরুত্ব উঠে যাবে।

৭. আঙ্গুল মটকানো অথবা এক হাতের আঙ্গুল অন্য হাতের আঙ্গুলে ঢুকিয়ে দেয়া।

৮. বিনা প্রয়োজনে কোমরের কাপড়ে হাত ঢুকিয়ে দেয়া কিংবা বিনা প্রয়োজনে কোমরে হাত রাখা।

৯. সাজদায় দু’হাত কনুই পর্যন্ত বিছিয়ে দেয়া।

১০. এদিক সেদিক দৃষ্টি নিক্ষেপ করা।

১১. এমন লোকের দিকে মুখ করে নামাজ পড়া, যে লোক তার দিকে মুখ করে আছে বা এমন স্থানে নামাজ পড়া যেখানে কেউ হাসিয়ে দেয়ার সম্ভাবনা আছে।

১২. হাত অথবা মাথা দ্বারা ইঙ্গিত করে কারও কথার উত্তর দেয়া।

১৩. কোন অসুবিধা ব্যতীত হামাগুড়ি দিয়ে বসা বা দুই পা খাড়া রেখে বসা বা আসন গেড়ে বসা। কোন ওজর থাকলে যে রকম সম্ভব বসা চলে।

১৪. ইচ্ছা করে হাই তোলা অথবা হাই বন্ধ করার চেষ্টা না করা।

১৫. সামনের কাতারে জায়গা থাকা সত্ত্বেও একাকী পিছনে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়া।

১৬. কোন প্রাণীর ছবি যুক্ত কাপড় পরিধানরত অবস্থায় নামাজ পড়া।

১৭. প্রথম রাকআত অপেক্ষা দ্বিতীয় রাকআতের কিরাত তিন আয়াত বা ততোধিক পরিমাণ লম্বা করা।

১৮. ইমামের পক্ষে একাকী কোন উঁচু স্থানে দাঁড়ানো। তবে এক বিঘত পরিমাণ পর্যন্ত উঁচুতে দাঁড়ালে কোন ক্ষতি নেই।

১৯. এমনভাবে চাদর জড়িয়ে নামাজ পড়া, যাতে হাত বের করতে অসুবিধে হয়।

২০. অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ মোচড়ানো।

২১. টুপী, পাগড়ী, অথবা রুমালের ভাঁজে সাজদা করা। অর্থাৎ, এগুলো পরিধান করার পর সাজদার জন্য জায়গা খোলা রাখতে হবে।

২২. কোন নামাজে বিশেষ সূরা নির্দিষ্ট করে সব সময় সেটা পড়া!

২৩. কুরআনের তারতীবের বিপরীত কুরআন পাঠ করা। অর্থাৎ, পবিত্র কুরআনের সূরাগুলো যে তারতীবে (যে পর্যায়ক্রমে) লেখা হয়েছে-এর ব্যতিক্রম পাঠ করা।

২৪. পেশাব পায়খানার জোর অনুভূতি হওয়া সত্ত্বেও সে অবস্থায় নামাজ পড়া।

২৫. খুব ক্ষুধা অনুভব হলোে এবং খাবার তৈরী থাকলে না খেয়ে নামাজ পড়া।

২৬. নামাজরত অবস্থায় ছারপোকা, মাছি ও পিপড়া মারা। তবে ছারপোকা অথবা পিপড়ায় কামড় দিলে তা ধরে ছেড়ে বা সরিয়ে দেয়া যায়। কামড় না দিলে ধরাও মাকরূহ।

২৭. কনুই পর্যন্ত জামা ইত্যাদির হাতা গুটিয়ে নামাজ পড়া মাকরূহ। জামা যদি এমনিতেই হাতা কাটা হয়, যেমন শার্ট তাহলোে তা পরিধান করে নামাজ পড়া খেলাফে আওলা বা অনুত্তম।

আহকাম আরকান ওয়াজিব ভঙ্গের কারণ ও নামাজ ছাড়ার কারণ 3 নামাজের আহ্কাম বা শর্তসমূহ (৭টি), নামাজের আরকান (৬টি), নামাজের ওয়াজিবসমূহ (১৬টি), নামাজ ভঙ্গের কারণসমূহ (২৭টি), নামাজের মাকরূহসমূহ (২৫টি), যে সব অবস্থায় নামাজ ছেড়ে দেয়া যায় (৫টি) ইসলাম নামাজ নামাজ

কোন কোন অবস্থায় নিজেই নামাজ ছেড়ে দিতে হয়, ছেড়ে না দিলে কবীরা গোনাহ হয়। আবার কোন কোন অবস্থায় নামাজ ছেড়ে না দিলে সামান্য গোনাহ হয়। সেগুলো নিম্নরূপ:

See also  তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম , বাংলা উচ্চারণ সহ নিয়ত, দোয়া এবং পড়ার ফজিলত + তাহাজ্জুদের নামাজ সংক্রান্ত 6টি প্রশ্নের উত্তর (সংক্ষিপ্ত)

১. কোন অনিষ্টকারী প্রাণীর ভয় থাকলে। যেমন নামাজরত অবস্থায় সাপ সামনে আসলে নামাজ ছেড়ে দিয়ে মারতে হবে অথবা বিচ্ছু ও ভীমরুল কাপড়ের ভিতর ঢুকে গেলে তা দংশন করার ভয় থাকলে এ অবস্থায় নামাজ ছেড়ে দেয়ার অনুমতি রয়েছে। তদ্রূপ বিড়ালে মুরগি ধরলে অথবা ধরে ফেলার সম্ভাবনা থাকলে তখন নামাজ ভঙ্গ করা যায়।

২. যদি এমন কোন বস্তুর ক্ষতির আশংকা থাকে যার মূল্য অন্ততঃ সাড়ে ৪ রক্তি` রূপার সমান, যেমন চুলায় পাতিল থাকলে তা জ্বলে যাওয়ার ভয় থাকলে আর এর মূল্য উক্ত পরিমাণ অথবা তার চেয়ে অধিক হলোে তখন নামাজ ছেড়ে দিয়ে পাতিল নামিয়ে নিতে হবে। (৬ রত্তি-তে ১ আনা এবং ১৬ আনায় ১ ভরি হয়ে থাকে ৷)

৩. এভাবে কুকুর, বিড়াল ও বানর ঘরে ঢুকলে আটা, ডাল, দুধ, ঘি ইত্যাদি ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে নামাজ ছেড়ে দেয়া যাবে। মসজিদে অথবা ঘরে নামাজ পড়ছে অথচ কোন বস্তু ভুল বশতঃ এমন স্থানে রেখে এসেছে যেখান থেকে চুরি হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে তখন নামাজ ছেড়ে দিয়ে আসবাবপত্র রক্ষা করবে। তবে নামাজীকে নামাজ আরম্ভ করার পূর্বেই এগুলো রক্ষা করার ব্যবস্থা করে নিতে হবে।

৪. নামাজ পড়লে যানবাহন ছেড়ে দেয়ার সম্ভাবনা থাকলে আর গাড়ীতে আসবাবপত্র ও শিশু সন্তান থাকলে বা গাড়ী চলে গেলে ক্ষতির আশংকা থাকলে নামাজ ছেড়ে দিতে পারবে। নামাজরত অবস্থায় পেশাব পায়খানার চাপ অসহ্য মনে হলে নামাজ ছেড়ে দিতে পারবে।

৫. নামাজরত অবস্থায় কাউকে বিপদ বা মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করার প্রয়োজন হলোে নামাজ ছেড়ে দেয়া ফরজ, নামাজ ছেড়ে না দিলে কঠিন গোনাহগার হবে। যেমন কোন অন্ধ যাচ্ছে এবং তার সম্মুখে কূপ অথবা গভীর গর্ত রয়েছে অথবা মোটরগাড়ী বা রেলগাড়ীতে পিষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয় আছে, অথবা কারও কাপড়ে আগুন লেগে তাতে জ্বলে যাওয়ার অথবা পুড়ে যাওয়ার উপক্রম হলোে অথবা পানিতে কেউ ডুবে যাচ্ছে অথবা ডাকাত কিংবা শত্ৰু কাউকে ভীষণভাবে প্রহার করছে এবং সে সাহায্যের জন্য ডাকছে- এসব অবস্থায় নামাজ ছেড়ে দিয়ে তাকে উদ্ধার করা কর্তব্য, তা না হলোে গোনাহগার হতে হবে।

৬. মাতা-পিতা, দাদা-দাদী, নানা-নানী কোন বিপদে পড়ে ডাকলে নামাজ ছেড়ে দিয়ে তাদের কাছে যাওয়া কর্তব্য। যেমন তাদের কেউ হোঁচট খেয়ে পড়ে গেল অথবা আঘাত পেল এবং তারা ডাকল, এমতাবস্থায় তাদের উদ্ধার করার জন্যে কেউ না থাকলে নামাজ ছেড়ে দিয়ে তাদেরকে উদ্ধার করতে হবে। যদি তাদের কেউ পায়খানা অথবা পেশাব করতে যাচ্ছে, অথচ তাকে সাহায্য করার জন্য কেউ নেই তাহলোে নামাজ ছেড়ে দিয়ে তাকে সাহায্য করতে হবে। তবে তাকে সাহায্য করার লোক রয়েছে অথবা অনর্থক চীৎকার করছে, তখন নামাজ ছেড়ে দেয়া যাবে না। যদি সে নফল অথবা সুন্নাত নামাজ পড়তে থাকে আর সে নামাজ পড়ছে বলে তারা না জানে (বিপদের সময় ডাকুক কিংবা এমনি ডাকুক) তাহলোে এমতাবস্থায় নামাজ ছেড়ে দিয়ে উত্তর দিতে হবে। তবে নামাজ পড়ছে বলে জ্ঞাত হলোে এবং ডাকলে তখন কোন বিপদের ভয় না হলোে নামাজ ছাড়া যাবে না, নতুবা ছেড়ে দিবে 1

(مراقی الفلاح مع الطحطاوي)

[সমাপ্ত: নামাজের আহ্কাম বা শর্তসমূহ (৭টি), নামাজের আরকান (৬টি), নামাজের ওয়াজিবসমূহ (১৬টি), নামাজ ভঙ্গের কারণসমূহ (২৭টি), নামাজের মাকরূহসমূহ (২৫টি), যে সব অবস্থায় নামাজ ছেড়ে দেয়া যায় (৫টি)।]

সূত্র: আহকামে যিন্দেগী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Copyright Notice

কপি করা নিষিদ্ধ!