বিষয়: পেন-কালচার মাছ চষের পদ্ধতি/নিয়ম, পেনে মাছ চাষ।
হ্যাশট্যাগ:#পেনে মাছ চাষ#পেন-কালচার মাছ চষের পদ্ধতি#পেন-কালচার মাছ চষের নিয়ম।
পেন-কালচার মাছ চষের পদ্ধতি/নিয়ম
পানির নির্ধারিত অংশের চার দিকে বাঁশের খুঁটি গেড়ে চার কোণ বা গোল আকার (অন্যান্য আকৃতির হতে পারে) একটি একটি আকৃতি তৈরি করে এটাকে পলিথিন বা নাইলন্ জাল দ্বারা ঘেরাও করতে হবে। পানির নিচের জালের যে অংশে মাটির সাথে লাগানো থাকে, তাতে ইট ও ছোট ছোট লোহার ওজন দিয়ে জালকে ভালোভাবে মাটির সঙ্গে আটকাতে হবে, যাতে কোনো ক্রমে মাছ পেনের বাইরে যেতে না পারে। এভাবে খোলা জলাশয়ের মাঝে একটি আকৃতি তৈরি করার পর এতে মাছ চাষ করা যায়। এ পদ্ধতিকে ‘পেন-কালচার’ বলে।
- ১ একর আয়তন বিশিষ্ট পেনে ১৫ হাজার থেকে ২০ হাজার মাছের পোনা মজুত করা যায়।
- খইল, গমের ভূষি, চালের কুড়া ইত্যাদি মাছের খাবার হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।
- প্রতি একর জলায় এ পদ্ধতিতে মাছের চাষ করে বছরে ৩ টন পর্যন্ত মাছ উৎপাদন করা যায়।
- পেনে মাছের চাষ করতে হলে খোলা জলাশয়ে যে অংশের পানির স্রোত কম এবং শীতকালে পানির পরিমাণ ৪-৫ ফুটের নিচে যায় না এবং বর্ষাকালে ৮-৯ ফুটের উপরে উঠে না এরূপ স্থানে পেন্ স্থাপন করতে হবে।
- পানির ওঠা-নামার পরিমাণ যত কম হবে পেনে মাছের চাষ ততোই ভালো হবে। যদি কোনো কারণে বর্ষাকালে স্রোতের প্রবাহ বেড়ে যায়, তাহলে স্রোতের প্রবাহ কিছুটা ঘুরিয়ে দিয়ে পেকে রক্ষা করতে হবে।
- ব্যানা, বাঁশের খুঁটি, বেড়া ব্যবহার করা যেতে পারে। পানি ক্ষার ধর্মীয়, পানিতে পরিমিত দ্রবীভূত অক্সিজেনের অভাব নেই, পচনশীল জৈব পদার্থে গ্যাস নেই, মাটিতে খুব বেশি বা কম কাদা নেই, মাটিতে পরিপুষ্টি লবণ রয়েছে ,এরূপ স্থানেই পেনের জায়গা স্থির করতে হবে।
- পেনের মাঝে এক পাশে ছাট আকারের ঘন জাল দিয়ে একটি ছোট আঁতুড়ে পুকুর তৈরি করতে হবে। এতে পোনা পালন করার পর পালন পেনে স্থানান্তর করতে হবে।
কৃত্রিম খাবার
মাছের উপযুক্ত বৃদ্ধির জন্য সুষম খাবারের দরকার আছে। কৃত্রিম খাবার প্রদান করার সময় দেখতে হবে ঐ খাবারে পরিমিত প্রোটিন, কার্বহাইড্রেট, ভিটামিন ও অন্যান্য খনিজ পদার্থ আছে কি না। যদি খাবারের মধ্যে ১৫%-২০% প্রোটিন থাকে তবে মাছের ফলন ভালো হয়। চাউলের কুড়া, গমের ভূষি, খইল, শুকনা মাছের গুড়া, গুড়ের গাদ, প্রভৃতি পরিমিত হারে একত্রে মিশ্রণ করে পেনের মাছকে সরবরাহ করলে মাছ পরিমিত প্রোটিন, ভিটামিন, কার্বোহাইড্রেট প্রভৃতি পেয়ে থাকে।
সাবধানতা
১. অতিরিক্ত স্রোত, অতিরিক্ত জোয়ার-ভাটা, ব্যাঙ, কাঁকড়া, উদ, ইত্যাদির কবল হতে পেকে রক্ষা করতে হবে।
২. লবণাক্ত পানিতে মিঠা পানির মাছ চাষ করা যাবে না।
৩. নিয়মিত খাবার সরবরাহ করে মাছের স্বাস্থ্য বৃদ্ধি করতে হবে। ৪. রোগাক্রান্ত মাছের চিকিৎসা করতে হবে। ৫. রুই, কাতলা, মৃগেল, কালবাউস প্রভৃতি রুই জাতীয় মাছ পেনে ছাড়তে হবে।