আজকে আমরা আলোচনা করবঃ
পোল্ট্রির খামার স্থাপনঃ
বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে যে খামারে পোল্ট্রি পালন করা হয় তাকে পোল্ট্রির খামার বা পোল্ট্রি ফার্ম বলে। তবে যে খামারে শুধু মুরগি পালন করা হয় তাকে ‘মুরগির খামার’ আর যে খামারে কেবল মাত্র ‘হাঁস পালন’ করা হয় তাকে ‘হাঁসের খামার’ এবং যে খামারে হাঁস-মুরগি উভয় পালন করা হয় তাকে ‘হাঁস-মুরগির খামার’ বলে।
পোল্ট্রির উৎপাদনের উপর ভিত্তি করে প্রধানত তিন ধরনের খামার স্থাপন করা যায় অথবা একই খামারে নিম্নোক্ত তিন প্রকারে পোল্ট্রি উৎপাদনের খামার স্থাপন করা যায় ।
- → পোল্ট্রির বাচ্চা উৎপাদনের জন্য ‘লেয়ার খামার’ ।
- → ডিম উৎপাদনের জন্য ‘লেয়ার খামার’।
- → মাংস উৎপাদনের জন্য ‘ব্রয়লার মুরগির খামার’।
খামার স্থাপন পরিকল্পনাঃ
খামার স্থাপনের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া। আর আি ভাবে লাভবান হওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে কোন ধরনের খামার স্থাপন করা সুবিধাজনক। যেমন— ব্রয়লার খামার, হ্যাচারী খামার, লেয়ার খামার অথবা বিভিন্ন উৎপাদনের সমন্বয়ে ‘পোল্ট্রি খামার’ । মনে রাখতে হবে সুষ্ঠু পরিকল্পনাই অভীষ্ঠ উদ্দেশ্যকে বাস্তবায়িত করতে সক্ষম হয়।
খামার স্থাপনে প্রয়োজনীয় উপকরণ ও ব্যবস্থাপনাঃ
→ খামারের জায়গায় ঘর, বেড়া ও নির্মাণ সামগ্রী এবং পাখি ক্রয় ইত্যাদি।
→ আবশ্যকীয় রাস্তাঘাট ও পানির ব্যবস্থা এবং যন্ত্রপাতি ক্রয় ।
→ বাৎসরিক পৌনঃপুনিক ব্যয় বা আবর্তক ব্যয় খাতে থাকবে দৈনন্দিন খরচ, পাখির খাদ্য, যাতায়াত খরচ, বিদ্যুৎ খরচ, শ্রমিক মজুরী, যন্ত্রপাতি মেরামত, ঔষধপত্র ও টিকা দেয়ার খরচ ইত্যাদি।
সুষ্ঠু প্রকল্প পরিকল্পনা ও মূলধনঃ
→ পোল্ট্রি খামার ও পালন সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান বা প্রশিক্ষণ।
→ প্রাথমিক পর্যায়ে একটি ছোট প্রকল্প পরিকল্পনায় অভিজ্ঞতা অর্জনের পর বড় আকারের খামার স্থাপনে সহায়ক হবে।
→ প্রাথমিক মূলধন বিনিয়োগের খাত।
খামার ব্যবস্থাপনাঃ
স্বাস্থ্যসম্মত উন্নত পোল্ট্রি পালন ব্যবস্থাপনায় পাখি থাকে স্বাস্থ্যবান এবং পাখির পর্যাপ্ত উৎপাদনে খামার হয় লাভজনক। তাই সুষ্ঠুভাবে পোল্ট্রি খামার ব্যবস্থাপনার জন্য নিম্নোক্ত বিষয়ের উপর গুরুত্ব দেয়া আবশ্যক।
→ পাখি ছাঁটাই, পাখির স্বাস্থ্য পরিচর্যা ও খামারের আয়-ব্যয়ের হিসাব রেকর্ড করা ইত্যাদি।
→ এসব বিষয় সম্পর্কে মুরগির বাচ্চা পালন, ব্রয়লার পালন ও লেয়ার মুরগি পালন অংশে বর্ণনা করা হয়েছে।
→ বাসস্থান, মেঝের জায়গা, লিটার ব্যবস্থাপনা, ঘরের আলো ও বায়ু চলাচল ব্যবস্থা ।
→ তাপমাত্রা, পাখির খাদ্য, খাবার পাত্র, পানির পাত্র ও ঝিনুকের গুড়া রাখার পাত্র।
→ পাখিকে খাওয়ানো পদ্ধতি, ডিম পাড়ার বাক্স, ঘরে আলোর ব্যবস্থা ও পাখির ঠোঁট কাটা।
লাভজনক লেয়ার ফার্ম স্থাপনের জন্য নিম্নোক্ত বিষয়ে পর্যাপ্ত জ্ঞান ও ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজনঃ
- সুষম খাদ্যের ব্যবস্থা।
- প্রয়োজনীয় মূলধন।
- ডিম বিক্রয়ের বাজার।
- ফার্মের ঘর তৈরি।
- ফার্মের আয় ও ব্যয়ের হিসাব।
- মুরগির জাত নির্বাচন।
- ফার্মের স্থান নির্বাচন।
- মুরগির রোগ চিকিৎসা ও প্রতিরোধ ব্যবস্থা।
লিটার পদ্ধতিতে ১০০টি ডিম পাড়া মুরগির একটি লাভজনক মডেল ফার্মের আয় ব্যয় হিসাবর নমুনাঃ (2018)
লিটার পদ্ধতিতে ১০০টি ডিম পাড়া মুরগির একটি লাভজনক মডেল ফার্মের আয় ব্যয় হিসাবর নমুনা নিম্নে দেয়া হল। এই নমুনায় প্রতিটি ডিম পাড়া মুরগির প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যয় দেখানো হয়েছে। তাই এই নমুনা থেকেই যে কোন সংখ্যার লেয়ার ফার্মের পরিকল্পনা ও আয় ব্যয়ের হিসেব সহজেই করা যায়।

খাাঁচায় ডিম পাড়া মুরগি পালন প্রকল্পঃ (২০১৮)
প্রধানত তিন ভাবে খাাঁচায় মুরগি পালন করা যায়। যথা-
- বরান্দায় (স্বল্প সংখ্যক/পারিবারিক প্রকল্প)
- ছাদে (মাঝারি প্রকর্প)
- এবং ঘরের মধ্যে (বৃহৎ প্রকল্প)
