Skip to content

 

পোশাক-পরিচ্ছদের সুন্নাত, আদব ও বিধি-নিষেধ সমূহ + তেল, প্রসাধনী ও সাজ গোছের বিধি-বিধান

পোশাক-পরিচ্ছদের সুন্নাত, আদব ও বিধি-নিষেধ সমূহ + তেল, প্রসাধনী ও সাজ গোছের বিধি-বিধান

বিষয়: পোশাক-পরিচ্ছদের সুন্নাত, আদব ও বিধি-নিষেধ সমূহ + তেল, প্রসাধনী ও সাজ গোছের বিধি-বিধান।
হ্যাশট্যাগ: #পোশাক-পরিচ্ছদের সুন্নাত, আদব ও বিধি-নিষেধ সমূহ #তেল, প্রসাধনী ও সাজ গোছের বিধি-বিধান।

পোশাকের কাট-ছাঁট বিষয়ক :

* জামা পায়জামা নেছ্‌ফে ছাক অর্থাৎ, পায়ের নলার অর্ধেক পর্যন্ত হওয়া সুন্নাত। টাখনু গিরার উপর পর্যন্ত জায়েয।

১. আল্লাহ তোমাদের মধ্যে বরকত দান করুন।

২. আল্লাহ তোমাকে উত্তম বদলা দান করুন।

* গোল জামা অধিক সতর রক্ষার সহায়ক বিধায় তা-ই উত্তম।

* নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জামার হাতা হাতের কবজি পর্যন্ত ছিল। অতএব জামা, শেরওয়ানী ইত্যাদির হাতা কবজি পর্যন্ত হওয়া সুন্নাত।

* পুরুষের জন্য মহিলাদের কাট-ছাঁটের পোশাক পরিধান করা এবং তাদের বেশ ধারণ করা, তদ্রূপ মহিলাদের জন্য পুরুষের কাট-ছাঁটের পোশাক পরিধান করা এবং তাদের বেশ ধারণ করা হারাম ও নিষিদ্ধ।

* মহিলাদের জন্য শাড়ি পরিধান করা জায়েয।

* প্রাণীর ছবি যুক্ত কাপড় ব্যবহার করা নাজায়েয, ছবি যে কোন ভাবেই তৈরী হোক না কেন।*

* এত টাইট-ফিট পোশাক পরিধান করা নিষিদ্ধ, যাতে শরীরের গোপন অঙ্গ ফুটে ওঠে।

* পাগড়ীর পরিমাণের ব্যাপারে হযরত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন বিশেষ নির্দেশ দিয়ে যাননি। প্রত্যেকেই তার অভ্যাস অনুসারে পরিমাণ বেছে নিতে পারেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বার হাত ও সাত হাত দুই রকমের পাগড়ী ছিল বলে জানা যায়।

* কোট, প্যান্ট, শার্ট বর্তমান যুগে মুসলমান অমুসলমান নির্বিশেষে সর্বস্তরের কর্মজীবি ও শ্রমজীবি মানুষের পোশাকে পরিণত হওয়ায় এগুলো ব্যবহার করা না জায়েয হবে না। যেমন থানবী (রহঃ) তার যুগে বলেছেনঃ লন্ডনে কোট, প্যান্ট ব্যবহার নিষিদ্ধ হবে না, কেননা সেখানে এগুলোর ব্যাপক প্রচলন ঘটায় এখন আর এরকম মনে হয় না যে, এগুলো বিশেষ কোন ভিন্ন ধর্মের লোকদের পোশাক। আর এ বা ভিন্ন জাতির অনুকরণইতো এগুলো নিষিদ্ধ হওয়ার ভিত্তি। অতএব ভিন্ন জাতির বৈশিষ্ট্য হিসেবে অবশিষ্ট না থাকলে তা নিষিদ্ধও থাকবেনা। তবে এগুলো নেককার পরহেযগার লোকদের পোশাক নয় বিধায় এগুলো ব্যবহার করা অনুত্তম হবে নিঃসন্দেহে।

* বিজাতীয় লেবাস-পোশাক বর্জনীয়।

পোশাকের রং বিষয়ক :

* সাদা রংয়ের কাপড় হযরত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বেশী পছন্দ করতেন। তাই সাদা রংয়ের পোশাকই সর্বোত্তম পোশাক।

* হযরত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাল এবং সবুজ রংয়ের কাপড়ও ব্যবহার করেছেন, তাই সর্বদা শুধু সাদাই নয় বরং নিষিদ্ধ রংগুলো ব্যতীত অন্যান্য রংয়ের কাপড়ও মাঝে মধ্যে ব্যবহার করা মোস্তাহাব।

* পুরুষের জন্য কুসুম-লাল, হলুদ, জাফরান এবং গোলাব রং নিষিদ্ধ আর নিরেট লাল অনুত্তম। (আলাইটি) মহিলাদের জন্য সব রং-এর পোশাক জায়েয। (مفاتيح الجنان نقلا عن شرح النقابة)

* পাগড়ী কাল রংয়ের হওয়া মোস্তাহাব। (حاشیہ فتاوی دار العلوم جـ / 4 نقلا عن الدو المختار )

পোশাকের সুতা ও বুনন বিষয়ক :

* পুরুষের জন্য রেশমের পোশাক ব্যবহার করা বৈধ নয়। তবে যে কাপড়ের দৈর্ঘ্যের সুতা রেশম কিন্তু প্রস্থের সুতা রেশম নয়- সেটা ব্যবহার করা বৈধ। আর মহিলাদের জন্য সব ধরনের রেশমের কাপড় বৈধ।

* যে কাপড়ে শরীর দেখা যায় এমন পাতলা কাপড় পরিধান করা না করারই হুকুম রাখে।

* হারাম উপায়ে অর্জিত পোশাক বা হারাম উপায়ে অর্জিত সম্পদ দ্বারা ক্রয় করা পোশাক পরিধান করা হারাম।

উচ্চমান ও নিম্নমানের পোশাক বিষয়ক :

* অহংকার প্রদর্শন বা বিলাসিতার নিয়তে উচ্চমানের পোশাক পরিধান করা শরী’আতের দৃষ্টিতে নিন্দনীয়।

* তাওয়াযু’ বা বিনয়ের উদ্দেশ্যে নিম্নমানের পোশাক, পুরাতন পোশাক কিংবা ছেঁড়া ফাটা ও তালিযুক্ত পোশাক পরিধান করা উত্তম। তবে এরূপ পোশাক দেখে লোকে দরবেশ বা আৱভোলা বলবে কিংবা বিনয়ী ও দুনিয়া- ত্যাগী মনে করবে- এরূপ রিয়া বা লোক দেখানোর নিয়ত থাকলে সেটাও এক প্রকার অহংকার বিধায় তা নিন্দনীয় 1

* আল্লাহ সম্পদ দিয়েছেন সেই সম্পদের বহিঃপ্রকাশ ঘটানোর এবং শোকর আদায়ের নিয়তে উত্তম পোশাক পরিধান করা প্রশংসনীয়।

* কাপড় যেমন মানেরই হোক তা সর্বদা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা শরী‘আতের কাম্য।

পোশাক পরিধানের নিয়ম বিষয়ক :

* সতর ঢাকা, শারীরিক দোষ-ত্রুটি ঢাকা ও সৌন্দর্য লাভের নিয়তে পোশাক পরিধান করবে। অহংকারের উদ্দেশ্যে পোশাক পরা হারাম।

* কামিজ, জামা, কোর্তা, ছদরিয়া ইত্যাদি পরিধান করতে প্রথমে ডান হাত তারপর বাম হাত ঢুকানো সুন্নাত। এমনিভাবে পায়জামা পরিধান করতে প্রথমে ডান পা পরে বাম পা ঢুকানো সুন্নাত এবং খোলোর সময় এর বিপরীত বাম দিক থেকে খোলা সুন্নাত। মোজা, জুতা, স্যান্ডেল ইত্যাদির ক্ষেত্রেও এরূপ নিয়ম সুন্নাত।

* একই সময়ে জামা ও পায়জামা উভয়টি পরিধান করতে হলে আগে জামা পরে পায়জামা পরিধান করা উত্তম।

* পাগড়ীর নীচে টুপি পরা সুন্নাত। টুপি ব্যতীত শুধু পাগড়ী পরিধান করা সুন্নাতের পরিপন্থী। নামাযের সময় মাথার মাঝখান খোলা রাখা মাকরূহ।

* পাগড়ী গোল করে বাঁধা অথবা শামলা (বর্ধিত অংশ) ছেড়ে বাঁধা উভয় রকমই সুন্নাত। শামলা ডানে বা পেছনের দিকে অথবা একই সাথে উভয় দিকে ছেড়ে দেয়া যায়। বাম দিকে শামলা ছাড়ার প্রমাণ নেই বিধায় উলামায়ে কেরাম সেটাকে বিদআত বলেছেন। শামলা এক বিঘত, এক হাত বা তার চেয়ে বেশী পরিমাণ রাখা যায়।

* পায়জামা বসে পরিধান করা ভাল, অন্যথায় স্বাস্থ্যগত অসুবিধা হতে পারে। লুঙ্গি মাথার উপর দিক থেকে এবং পাগড়ী দাঁড়িয়ে পরিধান করবে।

* পুরুষের জন্য লুঙ্গি, পায়জামা, জামা, জুব্বা, আবা ইত্যাদি অহংকার বশতঃ টাখনু গিরার নীচে ঝুলিয়ে পরা কবীরা গোনাহ। অহংকার বশতঃ না হলেও এরূপ পরা ঠিক নয়। কারণ এতে অহংকার বশতঃ যারা করে তাদের সাথে সাদৃশ্য হয়ে যায়। মহিলাদের জন্য পুরো পা ঢেকে মাটি পর্যন্ত কাপড় ঝুলিয়ে পরা উত্তম।

* নতুন কাপড় পরিধান করার দোয়া-

الحمد لله الذي كساني ما أواري به غورتی واتجمل به في حياتی۔

অর্থঃ সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি আমাকে কাপড় পরিধান করিয়েছেন, যার দ্বারা আমি লজ্জাস্থান আবৃত করি এবং তার দ্বারা জীবনকে সৌন্দর্য মন্ডিত করি।

* পুরাতন কাপড় পরিধান করার দোয়া-

الحمد لله الذي كساني هذا الثوب ورزقنيه من غير حول مني ولا قوة –

অর্থঃ সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি আমাকে এই পোশাক পরিধান করালেন এবং এটা আমার চেষ্টা ও শক্তি ছাড়া নছীবে রাখলেন। (আবূ দাউদ)

* কাপড় খোলার সময় পড়বে-

بسم الله الذي لا إله إلا هو ۔ (ابن السني رقم ۲۷۳)

উল্লেখ্য যে, কাপড় খোলার সময় বিমিল্লাহ বলার দরুন শয়তান লজ্জাস্থানের দিকে নযর দিতে পারে না।

* কাপড় খোলার পর আদব হল সেটাকে গুছিয়ে রাখা, এলোমেলো না রাখা।

* নতুন কাপড় পরিবর্তন করলে পুরাতন কাপড় গরীব-মিসকীনকে দিয়ে দেয়া উত্তম।

জুতা/স্যান্ডেল সম্পর্কিত বিধি-বিধান

* পুরুষের জন্য মহিলাদের স্টাইলের জুতা/স্যান্ডেল বা মহিলাদের জন্য পুরুষের স্টাইলের জুতা/স্যান্ডেল পরিধান করা হারাম ও নিষিদ্ধ। (امداد الفتاوی ج ۴)

* জুতা/স্যান্ডেল পরিধান করার সময় প্রথমে ডান পায়ে পরে বাম পায়ে পরিধান করা এবং খোলার সময় প্রথমে বাম পায়েরটা পরে ডান পায়েরটা খোলা সুন্নাত।

নতুন জুতা/স্যান্ডেল পরিধান করে এই দোয়া পড়তে হয়-

اللهم لك الحمد أنت كسوتنيه، أسألك خيره وخيرما صنع له وأعوذبك من شره وشر ما صنع له ۔ (رواه في كتاب الاذكار وقال حديث صحيح)

অর্থ : হে আল্লাহ, আমি তোমার কাছে কামনা করি এটার কল্যাণ এবং এর সদুদ্দেশ্য। আর তোমার নিকট পানাহ চাই এটার অনিষ্ট ও অসদুদ্দেশ্য থেকে।

* জুতা/স্যান্ডেল খোলার সময় পড়বে-

بسم الله الذي لا إله إلا هو ـ (كتاب الاذكار عن ابن السني)

* জুতা/স্যান্ডেল সম্ভব হলে একাধিক রাখা ভাল।

* জুতা পায়ে দেয়ার সময় হাত লাগানোর দরকার হলে বসে পায়ে দিবে।

* কোন মজলিসে বা মসজিদে যে স্থানে কেউ জুতা/স্যান্ডেল রেখেছে সেখান থেকে তার জুতা/স্যান্ডেল সরিয়ে সেখানে নিজের জুতা/স্যান্ডেল রাখবে না, এটা অন্যায়, কেননা সেখানে তার জুতা/স্যান্ডেল না পেয়ে সে পেরেশান হবে। অতএব নিজের জুতা/স্যান্ডেল যেখানে খালি আছে সেখানে বা ভিন্ন স্থানে রাখুন।

* জুতা/স্যান্ডেল এমন ভাবে রাখুন যেন তা উক্ত স্থানকে নাপাক বা গান্ধা ময়লাযুক্ত করে না ফেলে। প্রয়োজনে জুতার অতিরিক্ত আলগা ময়লা বাইরে ঝেড়ে ফেলুন।

* জুতা/স্যান্ডেল একখানা পায়ে দিয়ে হাটা নিষেধ।

* মাঝে মধ্যে খালি পায়ে চলতে অসুবিধা নেই, তবে হযরত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অধিকাংশ সময় জুতা/স্যান্ডেল বা মোজা পরিধান করে চলতেন।

আয়না-চিরুনির বিধি-বিধান

* আয়না দেখা জায়েয।

* আয়না দিনে রাতে যে কোন সময় দেখা যায়। রাতে আয়না দেখা ঠিক নয়-এরূপ একটি কথা প্রসিদ্ধ আছে, যার কোন ভিত্তি নেই।চুল পরিপাটি করার জন্য চিরুনি করা সুন্নাত। তবে খুব বেশী এর ধান্ধায় না পড়া উচিত। চুল আঁচড়ানোর সময় প্রথমে ডান দিক তারপর বাম দিক আঁচড়ানো সুন্নাত।

* চিরুনি করার জন্য অথবা অন্য কোন প্রয়োজনে আয়না দেখার সময় নিম্নোক্ত দোয়া পড়তে হয়-

اللهم أنت حسنت خلقى فحسّن خلقی – (كتاب الاذكار عن ابن السني)

অর্থঃ হে আল্লাহ, তুমি যেমন আমার চেহারাকে সুন্দর করেছ, তেমন আমার চরিত্রকেও সুন্দর করে দাও।

* একই চিরুনি দিয়ে একাধিক ব্যক্তির চুল আঁচড়ানোতে কোন অসুবিধা নেই।

তেল, প্রসাধনী ও সাজ গোছের বিধি-বিধান

* হযরত নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাথায় তেল ব্যবহার করতেন, তাই তেল ব্যবহার করা সুন্নাত।

* তেল ব্যবহার করার ইচ্ছা করলে বাম হাতের তালুতে তেল নিয়ে প্রথমে ভ্রুর উপর, তারপর চেখে তারপর মাথায় লাগানো সুন্নাত।

* মাথায় তেল লাগাতে মুখমন্ডলের দিক থেকে শুরু করা সুন্নাত। (Whajl)

* ক্রিম, স্নো, পাউডার ব্যবহার করাতে কোন দোষ নেই, যদি এগুলোতে কোন নাপাক বস্তু মিশ্রিত না থাকে।

* নেল পালিশ (নখ পালিশ) প্রভৃতি যা ব্যবহার করলে একটা শক্ত আবরণ সৃষ্টি হয়ে যায়, যার নীচে পানি পৌঁছে না-এরূপ বস্তু সহকারে উযূ গোসল সহীহ হয় না। আর উযূ গোসল সহীহ না হলে নামাযও সহীহ হয় না এবং প্রত্যেক উযূর সময় নেল পালিশ দূর করাও মুশকিল, তাই নেল পালিশ থেকে বিরত থাকাই জরুরী।

* নেল পালিশ ব্যতীত অন্যান্য যেসব মেকআপ দ্বারা আল্লাহর সৃষ্টি করা গঠনে কোন বিকৃতি ঘটে না, তা ব্যবহার করা জায়েয।

* মহিলাগণ চুলের আলগা খোপা বা আলগা চুল ব্যবহার করতে পারেন, যদি সেটা কৃত্রিম চুলের হয়। আর যদি সেটা মানুষের চুল হয় তাহলে তা ব্যবহার করা জায়েয নয়।

* শরীরে ট্যাটু কিছু অংকন করা হারাম।

সুরমা, আতর ও সেন্ট ব্যবহারের বিধি-বিধান

পুরুষ মহিলা সবার জন্য সুরমা ব্যবহার করা সুন্নাত। সুরমা বিশেষ ভাবে রাতের বেলায় শোয়ার পূর্বে লাগানো উত্তম।

* প্রত্যেক চোখে তিনবার করে সুরমা লাগানো সুন্নাত।

* আতর ব্যবহার করা সুন্নাত। তবে যে আতরের খুশবু বাইরে ছড়ায়-এরূপ আতর ব্যবহার করে মহিলাগণ বাইরে যাবে না।

* সেন্ট এর মধ্যে স্পিরিট ব্যবহার করা হ্য়, এই স্পিরিট খেজুর, কিশমিশ বা আঙ্গুর থেকে তৈরি করা হলে সেরূপ স্পিরিট নাপাক, অতএব সেরূপ স্পিরিটযুক্ত সেন্টও নাপাক হবে এবং তা ব্যবহার করাও নিষিদ্ধ। তবে আহ্ছানুল ফাতাওয়া ২য় খন্ডে উল্লেখ করা হয়েছে যে, তদন্ত করে জানা গেছে বর্তমান যুগের স্পিরিটে এবং এ্যালকোহলে (শরাবে) খেজুর, আঙ্গুর ব্যবহার করা হয় না। অতএব বর্তমানে স্পিরিট নাপাক নয়, ফলে সেন্ট ব্যবাহারেও কোন দোষ থাকছে না। কিন্তু সন্দেহের ক্ষেত্রে বিরত থাকাই শ্রেয়।

* মাঝে মাঝে আতর লাগানো ভাল। বিশেষভাবে জুমুআর দিন ঈদের দিন প্রভৃতি সময়।

অলংকারের বিধি-বিধান

* মহিলাদের জন্য কাঁচ বা যে কোন ধাতুর চুড়ি পরিধান করা জায়েয।

* মহিলাদের কান ফুটানো জায়েয। নাক ফুটানো অধিকাংশের মতে জায়েয, কেউ কেউ ভিন্ন মত পোষণ করেছেন।

* মহিলাদের জন্য সোনা, রুপা, পিতল, তামা ইত্যাদি সব রকম ধাতুর সব রকম অলংকার ব্যবহার করা জায়েয। তবে বিধর্মীদের অনুকরণ যেন না হয়।

* যেসব অলংকারে বাজনা হয়, সেগুলো গায়র মাহরাম পুরুষের সামনে পরা জায়েয নয়।

* পুরুষের জন্য সোনার আংটি বা সোনার অন্য যে কোন অলংকার ব্যবহার করা সম্পূর্ণ হারাম। তবে সাড়ে চার মাশা অর্থাৎ, এক সিকি পরিমাণ (৩.৩৮০ গ্রাম) রূপার আংটি ব্যবহার করা জায়েয। এর অধিক ওজনের রূপার আংটিও ব্যবহার করা নিষিদ্ধ। অন্যান্য ধাতুর আংটি যেমন তামার আংটি, অষ্ট ধাতুর আংটি ইত্যাদি পুরুষের জন্য নাজায়েয। সোনা রূপা ব্যতীত অন্যান্য ধাতুর আংটি মহিলাদের জন্য জায়েয তবে মাকরূহ।

* লোহা, পিতল, তামা, কাঁশা, পাথর ইত্যাদি ধাতুর আংটি ব্যবহার করা পুরুষের জন্য জায়েয নয় অর্থাৎ, যখন আংটির হলকা বা বৃত্তটা এসব ধাতু দ্বারা তৈরী হবে। আর বৃত্তটা যদি সিকি পরিমাণ রূপার মধ্যে হয় আর নাগীনা বা মণিটা এসব ধাতুর হয় তাহলে তা জায়েয।

সমাপ্ত: পোশাক-পরিচ্ছদের সুন্নাত, আদব ও বিধি-নিষেধ সমূহ + তেল, প্রসাধনী ও সাজ গোছের বিধি-বিধান।
সূত্র: আহেকামে যিন্দেগী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Copyright Notice

কপি করা নিষিদ্ধ!