বৃত্ত কাকে বলে: একটি নির্দিষ্ট বিন্দুকে কেন্দ্র করে সর্বদা সমান দূরত্ব বজায় রেখে অন্য একটি বিন্দু তার চারদিকে একবার ঘুরে এলে যে ক্ষেত্র তৈরি হয় তাকে বৃত্ত বলে।
অন্যভাবে বললে, একটি নির্দিষ্ট বিন্দুকে কেন্দ্র করে সর্বদা সমান দূরত্ব বজায় রেখে যে বক্ররেখা ঘুরে আসে তাকে বৃত্ত বলে।

১।একই সরল রেখায় অবস্থিত নয় এমন তিনটি বিন্দু দিয়ে একটি ও কেবল মাত্র বৃত্ত আঁকা যায়।
২। একই সরল রেখায় অবস্থিত এমন তিনটি বিন্দুর মধ্যে দিয়ে কোন বৃত্ত আঁকা সম্ভব নয়।
৩। দুইটি নির্দিষ্ট বিন্দু দিয়ে অসংখ্য বৃত্ত আঁকা যায়।
৪। যে বিন্দুকে কেন্দ্র করে একটি বৃত্ত আঁকা হয় তাকে ঐ বৃত্তের কেন্দ্র বলে।
বৃত্ত কাকে বলে সম্পর্কি সংজ্ঞাসমূহ
- বৃত্তচাপ: বৃত্তের সাথে সংযুক্ত বা এর পরিধির কোনো অংশ।
- অধিচাপ:অর্ধবৃত্ত অপেক্ষা বড় চাপ।
- উপচাপ:অর্ধবৃত্ত অপেক্ষা ছোট চাপ।
- কেন্দ্র: বৃত্তের সকল বিন্দুর সেট হতে সমদূরবর্তী একটি নির্দিষ্ট বিন্দু, যা বৃত্তের অন্তস্থ।
বৃত্তের জ্যা, অভিলম্ব, স্পর্শক এবং ব্যাস
- জ্যা: এমন একটি রেখাংশ যার প্রান্তিক বিন্দুদ্বয় বৃত্তের ভেতর থাকে। একটি বৃত্তের ব্যাস-ই বৃহত্তম জ্যা।
- বৃত্তীয় ক্ষেত্র: দুটি ব্যাসার্ধ ও একটি চাপ দ্বারা পরিবেষ্টিত অঞ্চল।
- বৃত্তীয় রেখাংশ: জ্যা এর শেষ বিন্দুদ্বয়ের মধ্যে অবস্থিত অপর একটি জ্যা ও চাপ দ্বারা পরিবেষ্টিত অঞ্চল, যার কোনো কেন্দ্র নেই।
- পরিধি: বৃত্তের পরিসীমার দৈর্ঘ্য।
- ব্যাস: একটি কেন্দ্রভেদী রেখাংশ যার শেষবিন্দুদ্বয় বৃত্তের পরিসীমায় অবস্থিত। অন্যভাবে বলা যায়, ব্যাস এমন একটি রেখাংশের দৈর্ঘ্য যা বৃত্তের কোনো দুটি বিন্দুর মধ্যকার বৃহত্তম দূরত্ব। এটি একটি বিশেষ ধরনের জ্যা, সবচেয়ে দীর্ঘতম জ্যা এবং এটি ব্যাসার্ধের দ্বিগুণ। ব্যাস একটি বৃত্তকে সমান দুটি ভাগে বিভক্ত করে যার প্রতিটি অর্ধবৃত্ত।
- ব্যাসার্ধ: একটি রেখাংশ যা বৃত্তের কেন্দ্রের সাথে বৃত্তের যে কোনো একটি বিন্দুকে যুক্ত করে। কার্যত যেই রেখাংশ ব্যাসের অর্ধেক তাই ব্যাসার্ধ।
- কর্তক: একটি বর্ধিত জ্যা, যা দুটি বিন্দুতে বৃত্তকে ছেদ করে এমন একতলীয় সরলরেখা।
- অর্ধবৃত্ত: ব্যাস ও একটি চাপ (যা ব্যাসের শেষ বিন্দুদ্বয়ের সাথে সংযুক্ত) দ্বারা বেষ্টিত অংশ।
- স্পর্শক: একটি বৃত্ত বহির্ভূত একতলীয় সরলরেখা যা বৃত্ততে একটি একক বিন্দুতে স্পর্শ করে মাত্র।
বৃত্তের পরিধি কাকে বলে?
একটি বৃত্তের কেন্দ্র হতে সমান দূরত্ব বজায় রেখে কোন বিন্দুর চলার পথকে পরিধি বলে।
বৃত্তের পরিধি বের কারর সূত্র:- পরিধি=2πr
বৃত্তের চাপ কাকে বলে?
বৃত্তের পরিধির যে কোন অংশকে চাপ বলে।
১। বৃত্তের একই চাপের উপর দন্ডায়মান বৃত্তস্থ কোন কেন্দ্রেস্থ কোণের অর্ধেক।
২। পরিধিস্থ কোণ বা বৃত্তস্থ কোণ একই কথা।
৩। অর্ধবৃত্তস্থ কোণ এক সমকোণ।
জ্যা কাকে বলে?:
’’পরিধির যে কোন দুই বিন্দুর সংযোজক রেখাংশকে জ্যা বলে।’’
১। বৃত্তের ব্যাসই হচ্ছে বৃত্তের বৃহত্তম জ্যা।
২। বৃত্তের যে কোন জ্যা এর লম্ব দ্বিখণ্ডক কেন্দ্রগামী।
৩। বৃত্তের সমান সমান জ্যা কেন্দ্র হতে সমদূরবর্তী।
৪। বৃত্তের দুটি জ্যা এর মধ্যে কেন্দ্রের নিকটতম জ্যাটি অপর জ্যা অপেক্ষা বৃহত্তম।
ব্যাস কাকে বলে?
বৃত্তের কেন্দ্রগামী সকল জ্যাকেই ব্যাস বলে। একটি বৃত্তে অসংখ্য ব্যাস থাকে। ব্যাস=২*ব্যাসার্ধ
ব্যাসার্ধ কাকে বলে?
একটি বৃত্তের কেন্দ্র হতে পরিধি পর্যন্ত দূরত্বকে ব্যাসার্ধ বলে। ব্যাসার্ধ হচ্ছে ব্যাসের অর্ধেক। ব্যাসার্ধ=ব্যাস/২
বৃত্তের ক্ষেত্রফল কত?
বৃত্তের ক্ষেত্রফল = πr2 বর্গ একক
স্পর্শক কাকে বলে?
একটি বৃত্ত ও একটি সরল রেখা যদি একটি ও কেবল একটি ছেদ বিন্দু থাকে তবে রেখাটিকে বৃত্তটির একটি স্পর্শক বলে।
১। বৃত্তের বহি:স্থ যে কোন বিন্দুতে কেবল একটি স্পর্শক আঁকা যায়।
২। বৃত্তের যে কোন বিন্দুতে অংকিত স্পর্শক স্পর্শবিন্দুগামী ব্যাসার্ধের উপর লম্ব।
৩। বৃত্তের বহি:স্থ কোন বিন্দু হতে ঐ বৃত্তের উপর ২ টি স্পর্শক টানা সম্ভব।
বৃত্তের বৈশিষ্ট্য সমূহ কি?
- বৃত্ত হল নির্দিষ্ট পরিসীমার মধ্যে আবদ্ধ বৃহত্তম ক্ষেত্রফল।
- বৃত্ত বিশেষ ধরনের প্রতিসাম্যের অধিকারী একটি আকৃতি। কেন্দ্রভেদী যে কোন রেখাই প্রতিফলন প্রতিসম অক্ষ হিসেবে কাজ করে এবং কেন্দ্রের সাপেক্ষে যে কোন কোনে ঘূর্ণন প্রতিসাম্য তৈরি হয়।
- প্রতিটি বৃত্তের আকৃতি অভিন্ন।
- বৃত্তের পরিধি ও ব্যাসের অনুপাত একটি ধ্রূব সংখ্যা, একে π দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
- কার্তেসীয় স্থানাঙ্ক ব্যাবস্থায় মূলবিন্দুতে কেন্দ্র বিশিষ্ট একক ব্যাসার্ধের বৃত্তকে বলা হয় একক বৃত্ত।
- যে কোন তিনটি বিন্দুগামী, যারা অসমরেখ, একটি এবং কেবলমাত্র একটি বৃত্ত রয়েছে।