বিষয়: ইসলামে ভালবাসা ও বন্ধুত্বের নীতিমালা + অমুসলিমদের সাথে কোন ধরনের সম্পর্ক রাখতে হবে?
হ্যাশট্যাগ: #ইসলামে ভালবাসা ও বন্ধুত্বের নীতিমালা #অমুসলিমদের সাথে কোন ধরনের সম্পর্ক রাখতে হবে?
ইসলামে ভালবাসা ও বন্ধুত্বের নীতিমালা
* কোন অমুসলিমের সাথে আন্তরিক বন্ধুত্ব গড়ে তোলা জায়েয নয়।
* সব মুসলমানের সাথে দ্বীনী বন্ধুত্বের সম্পর্ক রাখতে হবে।
* কোন মুসলমান ভাইয়ের সাথে খালেস আল্লাহর ওয়াস্তে বন্ধুত্ব ও ভালবাসা সৃষ্টি হলে তাকে জানিয়ে দিবে যে, আমি আপনাকে মহব্বত করি, ভালবাসি, তাহলে তারও তোমার সাথে মহব্বত সৃষ্টি হবে।
* ভালবাসা ও বন্ধুত্বের ক্ষেত্রে ভারসাম্য বজায় রাখা জরুরী। কাউকে ভালবেসে তার কাছে নিজেকে এতখানি উন্মুক্ত করে দেয়া ঠিক নয়, তার কাছে নিজের গোপনীয়তা এতখানি ফাঁস করে দেয়া ঠিক নয়, যাতে কোন দিন সে শত্রু হয়ে গেলে ক্ষতি করতে সক্ষম হয়।
* মহব্বত (ভালবাসা) ও শাহওয়াত (কাম রিপুর তাড়না) এক কথা নয়। বেগানা নারী ও শ্মশ্রুহীন বালকের প্রতি যে আকর্ষণকে মহব্বত বলে মনে হয়, তা প্রায়শঃ প্রকৃত পক্ষে মহব্বত নয় বরং শাহওয়াত থেকে উৎপন্ন হয়ে থাকে। এরূপ আকর্ষণ পাপ পথে ধাবিত করে থাকে বিধায় তা পাপ ও গর্হিত।
* ভালবাসার বুনিয়াদ হতে হবে দ্বীনদারী ও পরহেযগারী। অতএব যে যত বেশী দ্বীনদার ও পরহেযগার, তার সাথেই ততবেশী ভালবাসা ও বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। দোস্তী মহব্বত করার আগে তার আমল-আখলাক দেখে নিতে হবে।
* স্বার্থের জন্য মহব্বত করা ভাল নয়, মহব্বত করতে হবে নিঃস্বার্থ ভাবে শুধু আল্লাহর উদ্দেশ্যে।
অমুসলিমদের সাথে কোন ধরনের সম্পর্ক রাখতে হবে?
মানুষে মানুষে পারস্পরিক সম্পর্ক চার ধরনের হতে পারে; এর মধ্যে অমুসলিম তথা কাফেরদের সাথে শর্ত সাপেক্ষে তিন ধরনের সম্পর্ক রাখা যায়। এক ধরনের সম্পর্ক কোন অবস্থাতেই রাখা যায় না। যথাঃ
১. বন্ধুত্ব ও আন্তরিকতার সম্পর্কঃ এ পর্যায়ের সম্পর্ক একমাত্র মুসলমানদের সাথেই হবে। কোন কাফেরের সাথে কোন মুসলমানের বন্ধুত্ব বা আন্তরিকতার সম্পর্ক হতে পারে না।
২. সহানুভূতি ও সমবেদনার সম্পর্কঃ এ পর্যায়ের সম্পর্ক অমুসলিমদের সাথেও থাকবে। অমুসলিমদের প্রতিও সহানুভূতি প্রদর্শন করা, সমবেদনা জ্ঞাপন করা এবং তাদের উপকার করার শিক্ষা ইসলাম দিয়েছে। তবে যুদ্ধরত অমুসলিমদের সাথে এ পর্যায়ের সম্পর্ক রাখা জায়েয নয়।
৩. সৌজন্য ও আতিথেয়তার সম্পর্কঃ ধর্মীয় কল্যাণ সাধনের লক্ষ্যে অথবা আৱৱক্ষার স্বার্থে অমুসলিমদের সাথেও এ পর্যায়ের সম্পর্ক রাখা যাবে। অর্থাৎ, যদি অমুসলিমদেরকে ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট করা, ইসলামের শিক্ষা সম্পর্কে তাদেরকে অবহিত করা, তাদেরকে হেদায়াত করা বা এ ধরনের কোন ধর্মীয় উপকারিতা লাভের উদ্দেশ্যে কিংবা তাদের অনিষ্ট থেকে আৱৱক্ষার উদ্দেশ্যে তাদের সাথে বাহ্যিক বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যবহার ও সৌহার্দমূলক আচরণ করা হয় এবং তাদের আতিথেয়তা করা হয় তবে তা জায়েয, অন্য কোন উদ্দেশ্যে তাদের সাথে এরূপ সম্পর্ক রাখা জায়েয নয়।
৪. লেন-দেনের সম্পর্কঃ অর্থাৎ, ব্যবসা-বাণিজ্য, ইজারা, চাকুরী, শিল্প ও কারিগরী ক্ষেত্রে সম্পর্ক স্থাপন করা। এ ধরনের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা অমুসলমানদের সাথে জায়েয, তবে এতে যদি মুসলমানদের ক্ষতি হয় তাহলে জায়েয নয়। এ কারণে মুসলমানদের সাথে যুদ্ধরত কাফেরদের হাতে সামরিক অস্ত্র-শস্ত্র বিক্রয় করা নিষিদ্ধ। এরূপ মুহূর্তে তাদের সাথে শুধু মাত্র স্বাভাবিক ব্যবসা-বাণিজ্যের অনুমতি রয়েছে।
(ماخوذ از معرف القرآن و بیان القرآن)
সমাপ্ত: ইসলামে ভালবাসা ও বন্ধুত্বের নীতিমালা + অমুসলিমদের সাথে কোন ধরনের সম্পর্ক রাখতে হবে?
সূত্র: আহকামে যিন্দেগী।