সূচনাঃ
ভালো দুগ্ধবতী ছাগী নির্বাচন করতে হলে তার মাথা, গলা, পিঠ, পাঁজর, পাছা ইত্যাদি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের গড়ন, ওলানের গঠন, দুগ্ধনালী বিশেষভাবে পরীক্ষা করতে হয়।
মাথা মাথা লম্বা এবং মাঝারি আকারের। মুখ পরিপূর্ণ সুন্দর ও আকর্ষণীয়ভাবে গঠিত। নাসিকা খোলা ও বড়। চোখ দুটো বড় বড় এবং নরম মেয়েলি স্বভাবের। আশপাশের লোকজন চলাচলে সাড়া দেয়।
অ-দুধেল বা কম উৎপাদনশীল ছাগীর মাথা তুলনামূলকভাবে আকারে ছোট অথবা অস্বাভাবিক বড়, সামনের দিকে উঁচু নাসিকা সব মিলে স্বভাবের মধ্যে একটা কাঠিন্য প্রস্ফুটিত হয়।
গলা ও ঘাড়ঃ
গলা লম্বা ও সরু এবং নরম কাঁধ। কম উৎপাদনশীল ছাগীর কাঁধ মোটা ও চওড়া। গলা ছোট অনেক সময় কাঁধের নিচে গর্ত থাকে। এ লক্ষণ আরো খারাপ।
পিঠঃ
পিঠের কুঁজ এবং কাঁধ প্রায় সরলরেখায় থাকবে। পিঠ সরলরেখায় অবস্থিত।
পাঁজরঃ
পাঁজরের হাড়গুলো প্রশস্ত ও বাঁকানো থাকে। কারণ, হাড়গুলোর ভেতরের বিভিন্ন অঙ্গ যেমন অন্ত্র, পাকস্থলী, যকৃত, প্লীহা প্রভৃতি ধারণ, করে থাকে। অস্ত্র ও ভেতরের বিভিন্ন অংশ অত্যন্ত উন্নত ও বড় হয়। অনুৎপাদনশীল ছাগলের পাঁজরের হাড়গুলো অপ্রশস্ত ও সোজা পিঠ ও পাঁজরের হাড়ের মিলিত স্থান ইটের কোণার মতো ধারালো ও সমান্তরাল থাকে।
পিছনের পার্শদেশ বা ফ্ল্যাঙ্কঃ
ছাগীর পাঁজর ও জংঘার মধ্যবর্তী স্থানকে ‘ফ্ল্যাঙ্ক’ বলে। উৎপাদনশীল ছাগীর ফ্ল্যাঙ্ক নিচু ও দাবানো থাকে।
পাছাঃ
পাছার হাড় পিছনের দিকে ঢালু ও প্রশস্ত। পাছার উভয়দিকে উঁচু হাড় ও বাঁকানো হাড়ের মধ্যবর্তী স্থান প্রশস্ত। অনুৎপাদনশীল ছাগীর পাছা অপ্রশস্ত ও ছোট।
পালান বা ওলানঃ
পালান অবশ্যই ছাগীর দেহের আকারের সাথে মানানসই বড় ও সুগঠিত হবে। ওলানের চুলগুলো রেশমের মতো নরম হবে। ভরা পালান দুধ দেবার পর একদম চুপসে যবে। অনুৎপাদনশীল ছাগীর পালান ছোট ও সামঞ্জস্যহীন।
পিছনের পা এবং হাঁটুঃ
পায়ের হাড়গুলো মজবুত ও হাঁটুর সন্ধিস্থলে হাঁটার সময় ওলানের সাথে ঘর্ষণ এড়াবার জন্যে পরিমিতভাবে বাঁকানো থাকে। অনুৎপাদনশীল ছাগীর হাঁটুর সন্ধিস্থল হাঁটার সময় পরস্পরের কাছাকাছি থাকে এবং উভয় পায়ের মধ্যবর্তী স্থান অপ্রশস্ত থাকে।
দুধের বাটঃ
বাট দুটো আলাদা থাকে। পালানের বা ওলানের আকারের সাথে সামঞ্জস্য রেখে বাটের আকারও বড় হয়। ভরা দুধের সময় বাট মোটা ও আকারে বড় হবে এবং ঝুলানো থাকবে।
অনুৎপাদনশীল ছাগীর ওলান আকারে ছোট ও অসামঞ্জস্যপূর্ণ থাকে এবং বাটগুলো আকারে ছোট ও পরস্পরের কাছাকাছি থাকে।
ওলানের সামনের ভাগঃ
ওলানের সামনের ভাগ প্রশস্ত, সামনের দিক উন্নত ও সামঞ্জস্যপূর্ণ থাকে অনুৎপাদনশীল ছাগীর ওলান ছোট ও অসামঞ্জস্যপূর্ণ।
দুগ্ধশিরাঃ
পেটের নিচে দুগ্ধশিরা স্পষ্ট ও উন্নত থাকে। অনেক সময় দেখা না গেলেও হাত দিলে তার অবস্থান ও স্থিতি অনুভব করা যায়। অনুৎপাদনশীল ছাগীর দুধশিরা অস্পষ্ট এবং হাত দিলে অনুভব করা যায় না।
চোয়ালঃ
চোয়াল লম্বা, শক্ত ও বেশি খাওয়ার উপযোগী প্রশস্ত থাকে। অনুৎপাদনশীল ছাগীর চোয়ালের হাড় ছোট ও অপ্রশস্ত।