Skip to content

 

Wait...❤😘 Show love? ⬇⬇⬇

মাছের পোনা উৎপাদন পদ্ধতি, হাপার সাহায্যে রুই জাতীয় মাছের পোনা উৎপাদন পদ্ধতি, হ্যাচারিতে রুই জাতীয় মাছের পোনা উৎপাদন, রুই মাছের পোনা, কিভাবে কৃত্রিম পদ্ধতিতে মাছের ডিম পোনা তৈরি করা হয়?

হ্যাচারিতে রুই জাতীয় মাছের পোনা উৎপাদন, কিভাবে কৃত্রিম পদ্ধতিতে মাছের ডিম পোনা তৈরি করা হয়

বিষয়: মাছের পোনা উৎপাদন পদ্ধতি, হাপার সাহায্যে রুই জাতীয় মাছের পোনা উৎপাদন পদ্ধতি, হ্যাচারিতে রুই জাতীয় মাছের পোনা উৎপাদন, রুই মাছের পোনা, কিভাবে কৃত্রিম পদ্ধতিতে মাছের ডিম পোনা তৈরি করা হয়?
হ্যাশট্যাগ:#মাছের পোনা উৎপাদন পদ্ধতি#হাপার সাহায্যে রুই জাতীয় মাছের পোনা উৎপাদন পদ্ধতি#হ্যাচারিতে রুই জাতীয় মাছের পোনা উৎপাদন#রুই মাছের পোনা#কিভাবে কৃত্রিম পদ্ধতিতে মাছের ডিম পোনা তৈরি করা হয়?

বদ্ধ জলাশয়ে রুই, কাত্লা, মৃগেল ও কালবাউস মাছ ডিম ছাড়ে না। তাই পুকুর চাষীগণ প্রতি বছরই প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্রসমূহ থেকে পোনা সংগ্রহ করে থাকে। পোনা পরিবহনকালে সঠিকভাবে যত্ন নেওয়া যায় না এবং এর ফলে বহু পোনা পুকুরে ছাড়ার পূর্বেই মারা যায়। রুই, কাতলা ও মৃগেল এসব মাছকে পুকুর দীঘিতে ডিম পাড়ানো সম্ভব হয়েছে এবং ডিম থেকে পোনা ফুটানো হয়।

হরমোন ইনজেশনের সাহায্যে রুই জাতীয় মাছসমূহ থেকে পোনা পাওয়ার জন্যে যে সব পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়ঃ

১. মাছের মাথা হতে পিটুইটারী গ্ল্যান্ড সংগ্রহ।

২. পরিপক্ক স্ত্রী ও পুরুষ মাছ বাছাই করা।

৩. বৈশাখ জ্যৈষ্ঠের বর্ষণের সময় বিকালে বা সন্ধ্যায় স্ত্রী ও পুরুষ মাছের শরীরে পিটুইটারী গ্ল্যান্ড কর্তৃক ইন্‌জেক্‌শন্ প্রয়োগ।

৪. ইন্‌জেক্‌শন দিয়ে স্ত্রী ও পুরুষ মাছকে (জোড়ায় জোড়ায়) মশারীর বা কাপড়ের হাপার মধ্যে পুকুরের পানিতে রেখে দেওয়া এবং এর ৬ ঘণ্টা পর পুনরায় ইন্‌জেকশন করা ও ঐ হাপার মধ্যে রেখে দেওয়া।

৫. হাপার মধ্যে ডিম দেবার পর মাছগুলোকে সরিয়ে নেওয়া।

৬. ডিম ফুটে যাবার পর ডিম পোনার যত্ন নেওয়া।

হাপার সাহায্যে রুই জাতীয় মাছের পোনা উৎপাদন পদ্ধতিঃ

  1. পৌষ ও মাঘ মাসে পরিপক্ক রুই বা কাতলা জাতীয় মাছের মাথা থেকে পিটুইটারী গ্ল্যান্ড সংগ্রহ করে সংগৃহীত গ্রন্থিটিকে এসলিউট এ্যাল্‌কোহলে ধৌত করে এসলিউট এ্যাল্‌কোহল্ ভর্তি ছোট শিশির মধ্যে রেখে দিতে হবে।
  2. এরকমভাবে ৪-৫টি করে গ্ল্যান্ড ছোট শিশির মধ্যে রেখে শিশিটিকে ডেসিকেটারের মধ্যে রেখে দিতে হয়।
  3. ডেসিকেটারে মুখটিকে এমনভাবে আটকে দিতে হবে যেন বাইরের বাতাস এর মধ্যে ঢুকতে না পারে। তাছাড়া ডেসিকেটারের মধ্যে কিছু ক্যাসিয়াম ক্লোরাইড রেখে দিতে হবে যেন এরা বাতাসের আর্দ্রতা শোষণ করতে পারে।
  4. এভাবে ২-১ মাস রেখে দেওয়ার পর মৌসুমকালে মাছের শরীরে ইন্‌জেক্শন দেবার সময় গ্রন্থিটিকে ছোট শিশি হতে বের করে একে ভালোভাবে ফিল্টার কাগজে শুকিয় নিতে হবে।
  5. অতঃপর গ্রন্থিটি চূর্ণ করে শতকরা ০.৩ ভাগ বিশুদ্ধ লবণ পানিতে অথবা পরিশোধিত একটি ঘোলা দ্রবণের সৃষ্টি করে দ্রবণটিকে সেন্ট্রিফিউজ নামক যন্ত্রের সাহায্যে ভালোভাবে মিশ্রিত করার পর যে পরিষ্কার সলিউশান্ পাওয়া যাবে সেটিকে ইন্জেকশনের সিরিঞ্জে ভরতে হবে।
  6. এ জাতীয় সলিউশান্ বা দ্রবণ তৈরি করার সময় একটি একটি করে গ্ল্যান্ডচূর্ণ করাই বাঞ্ছনীয়। কারণ, লক্ষ্য রাখতে হবে যে মাছটিকে ইন্‌জেকশন করা হবে তার মোট ওজনের প্রতি পাউন্ডে এক মিলিগ্রামের বেশি পিটুইটারী গ্রন্থি ঢুকানো না হয়।
  7. তবে দ্বিতীয় ইন্জেকশনের সময় এর পরিমাপ দ্বিগুণ হতে পারে। এখানে বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয় যে, প্রথম ইন্‌জেশনের পর যদি ইন্‌জেক্‌শন্ প্রদত্ত মৎস্যসমূহ ডিম ও বীর্য দুই-ই স্থলন করে এবং ডিমগুলো যথারীতি নিষিক্ত হয়ে যায় তাহলে আর দ্বিতীয় ইন্‌জেক্শনের প্রয়োজন নেই। হঠাৎ যদি এমন হয় যে, দ্বিতীয় ইন্‌জেকশন্ করতে গিয়ে দেখা গেল যে, একটি মাছ মরে গেছে তাহলে সংগে সংগে মৃত মাছটিকে সরিয়ে দিয়ে অনুরূপ আর একটি মাছ ইন্‌জেক্‌শন্ দিয়ে হাপায় রেখে দিতে হবে। প্রথম ইন্‌জেশনের ৬ ঘণ্টা পর দ্বিতীয় ইন্‌জেক্‌শন্‌ দিতে হয়।
  8. পরিপক্ক স্ত্রী ও পুরুষ মাছ বাছাই করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। মাঘ ও ফাল্গুন মাসে ডিমওয়ালা স্ত্রী মাছ ও বয়স্ক পুরুষ মাছ বাছাই করে, এগুলোকে যে পুকুরে ইন্‌জেক্শন দেওয়া হবে সেখানে রেখে দিতে হয়।
  9. তারপর জ্যৈষ্ঠ, আষাঢ় ও শ্রাবণ মাসে যখন আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকে এবং মুষলধারে বৃষ্টি নামে তখন এসব বাছাই করা স্ত্রী-পুরুষ মাছগুলোকে ধরে গ্রন্থী সলিউশান্ দিয়ে ইন্‌জেক্শন করা হয়। লেজের উপরে পাশ্বিক রেখার সামান্য উপরাংশে আইসের নিচে সিরিঞ্জের সাহায্যে ইন্‌ন্জেকশন্ দেবার পর প্রতি জোড়া মাছকে (একটি মেয়ে, একটি পুরুষ) প্রজনন হাপার মধ্যে রেখে দিতে হয়। ইন্‌জেক্‌শন্ দেবার সময় লক্ষ্য রাখতে হবে যেন অতিরিক্ত হাতাহাতিতে মাছের শরীরে কোনো ক্লান্তি না আসে।
  10. প্রথম ইন্‌জেক্‌শন্যে পাশে দেওয়া হবে, দ্বিতীয় ইন্‌জেক্‌শন্ তার অপর পাশে দিতে হবে। প্রথম ইন্‌জেক্‌শনে মাছকে প্রতি পাউন্ড মাছের ওজনে এক কিলোগ্রাম গ্রস্থির বেশি ইন্‌জেক্শন দেওয়া যাবে না।
  11. দ্বিতীয় ইন্‌জেক্শনের সময় গ্রন্থির পরিমাপ দ্বিগুণ হবে। প্রতিবারই পুরুষ মাছটিকে মেয়ে মাছটি অপেক্ষা কম পরিমাণ গ্রস্থি ঢুকানো বাঞ্ছনীয়। কারণ, পুরুষ মাছটির পুরুষ বীর্য অতি সহজেই নির্গত হয়।
  12. প্রথমবার ইন্‌জেক্শন দেবার ৫-৬ ঘণ্টা অন্তর দ্বিতীয়বার ইন্‌জেক্‌শন দিতে হয়। প্রজনন হাপা মার্কিন বা ঘন মশারীর কাপড়ে তৈরি। এর দৈর্ঘ্য ৪’-০” ও উচ্চতা ৪’ -০” ফুট। এটা আকৃতিতে মশারীর মতো। এটিকে পানিতে উল্টোভাবে ৪ কোণায় ৪টি বাঁশের সাহায্যে দাঁড়া করে রাখতে হবে এর নিচের মুখটি বন্ধ এবং উপরের অংশটি খোলা।
  13. ইন্‌জেক্শন দিয়ে হাপার ভিতরে এক জোড়া মাছ (একটি মেয়ে ও একটি পুরুষ) রাখার পর মাছগুলো লাফিয়ে চলে যেতে পারে তাই উপরের খোলা মুখটি ও পাতলা জাল দিয়ে এমনভাবে বন্ধ করে রাখতে হবে যাতে মাছগুলো লাফিয়ে যেতে না পারে। প্রজনন হাপাটিকে পুকুরের কিনারায় এমনভাবে বসাতে হবে যেন এর অর্ধাংশেরও বেশি পানির নিচে থাকে।
  14. প্রথম ও দ্বিতীয় ইন্‌জেক্শন দিয়ে মাছগুলোকে হাপাতে রেখে দেওয়ার পর এদেরকে খুব নড়াচড়া করতে দেখা যায় এবং এর ৫-৬ ঘণ্টা অন্তর স্ত্রী মাছ ডিম ছাড়ে ও পুরুষ মাছ বীর্য ছেড়ে দেয়। পানির মধ্যে পুরুষ বীর্য ডিমগুলোকে নিষিক্ত করে। ডিম ছাড়ার পর উভয় মাছকে প্রজনন হাপা থেকে বের করে দিতে হবে। তারপর যত্নের সংগে ডিমগুলোকে প্রজনন হাপা থেকে ডিম ফুটানোর হাপায় রাখতে হবে।
  15. ডিম ফুটানোর হাপায় বা হেচিং হাপায় দুটি মশারি থাকবে। একটি মার্কিন কাপড়ের মশারি ও অপরটি নেটের নির্মিত মশারি।
  16. মার্কিন কাপড়ের মশারিটির দৈর্ঘ্য ৩’-০” ফুট, প্রস্থ ২- ০” ফুট ও উচ্চতা ২’-০” ফুট। এ হাপাটির মশারির নির্মিত ছোট হাপার দৈর্ঘ্য ২’-৬”, প্রস্থ ১-৬”, উচ্চতা ১´-৬” ফুট বসাতে হবে। তারপর এগুলোকে বাঁশের সাহায্যে প্রজনন হাপার মতো পুকুরের পানিতে বসাতে হবে। অতঃপর ডিমগুলোকে প্রজনন হাপা থেকে সরিয়ে কয়েকটি ডিম ফুটানোর ভিতরের মশারির হাপাতে রাখতে হবে।
  17. এভাবে ডিম ফুটানোর হাপাতে ডিমগুলো ছড়িয়ে রাখার পর প্রায় ১৪-১৫ ঘণ্টা পরে ডিমগুলো ফুটে পোনা বের হবে এবং নড়াচড়া করতে করতে ডিমের খোলসটি ভেতরের মশারির হাপায় থেকে যাবে, আর পোনাগুলো মশারির ফাঁক দিয়ে মার্কিন কাপড়ের হাপাতে চলে যাবে। এ হাপাতে পোনাগুলোকে ৪-৫ দিন রাখার পর এগুলোকে উপযুক্ত নার্সারি পুকুরে সরানো যেতে পারে।
See also  দেশি ছোট মাছের চাষ: মলা, চেলা ও পুঁটি মাছের চাষ, পাবদা মাছের চাষ, গুলশা মাছের চাষ, দেশি সরপুঁটির চাষ, কই মাছের চাষ

যেসব অবস্থায় হরমোন ইনজেকশন বিশেষ কার্যকরীভাবে ফলপ্রসু হয় সেগুলো হচ্ছেঃ

  1. পানির তাপমাত্রা ৭৯°থেকে ৮৫° ফারেনহাইট।
  2. পানিতে ৪.৮ হতে ৭.৭ ভাগ।
  3. স্ত্রী ও পুরুষ মাছ পরিপক্ক ও স্বাস্থ্যবান।
  4. গ্রস্থী পরিপক্ক মাছে।
  5. আবহাওয়া বর্ষণযুক্ত মেঘলা।

মাছের শরীরে হরমোন ইনজেকশন দেওয়ার জন্য যেসব যন্ত্রপাতি প্রয়োজন হয় সেগুলো হচ্ছেঃ

ছোট হাতকরাত, ডিসেটিং বক্স, সূক্ষ্মও ধারালো ফরসেপস্, এ্যাল্কহল ভর্তি ছোট শিশি, ডেসিকেটার ক্যাসিয়াম ক্লোরাইড, ক্যামিকেল্ ব্যালেন্স,পরিশোধিত পানি ও লবণের পানি, হাত সেন্ট্রিফিউজ মেশিন, সুই, হাইপোডারমিক সিরিঞ্জ, তুলা, পেট্রিডিস, ট্রে, এ্যাল্‌কোহল, টিস্যু হোমোজেনাইজার, হাঁপার-তিন প্রকার, বাঁশের খুঁটি, টর্চ লাইট বালতি ও মগ,বোরেট, ফারেন, হাইট, থার্মোমিটার, ছোট টেবিল, স্পঞ্জের টুক্রা, পিপেট, কনিক্যাল্ফ্লা ক্স, বিকার, মেজারিং সিলিন্ডার, হাত জাল, পি.এইচ মিটার, গামবুট, রেইন কোট, কাঁচি, ফেনোপথেলিন্ ইন্ডিকেটার, সোডিয়াম কার্বনেট সলিউশান,এল্‌কেলাইন্ আয়োডাইট সলিউশান, ম্যাঙ্গানিজ সাল্‌ফেট সলিউশান, কনসেনট্রেটেট সাফিউরিক্ এসিড, সোডিয়াম থাইওসালফেট্ সলিউশান্ ও ষ্টার সলিউশান্।

হ্যাচারির সাহয্যে রুই জাতীয় মাছের পোনা উৎপাদন পদ্ধতিঃ

  1. হ্যাচারিতেই টিউব ওয়েলের পানি পাক্কা জলাধারে প্রজাতির করে আভ্যন্তরীণ স্রোতের সৃষ্টি করা হয়। জলাধারে নির্দিষ্ট সীমারেখা পর্যন্ত ভর্তি হওয়ার পর অতিরিক্ত পানি বের হয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়। এভাবে পানি আসা-যাওয়ার মধ্যে যে স্রোত সৃষ্টি হয় তাতে পিটুইটারীনির্জাসেস্ ইন্‌জেক্শন দিয়ে পরিপক্ক স্ত্রী ও পুরুষ মাছকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
  2. এর পর স্ত্রী মাছ ডিম এবং পুরুষ মাছ বীর্য স্খলন করে। ডিমগুলো নিষিক্ত হয়ে যায়। তখন মাছগুলোকে সরিয়ে দিতে হয়। নিষিক্ত ডিমগুলো মৃদু স্রোতে রাখার জন্য ব্যবস্থা করতে হয়।
  3. লক্ষ্য রাখতে হবে যে, নিষিক্ত ডিমগুলো নিষিক্ত করার জলাধার হতে বেরিয়ে না যায়। এ সময় বহির্গমনের রাস্তায় হ্যাচিং জাল দিতে হয়। তাপমাত্রায় তারতম্য ভেদে ১২ থেকে ২০ ঘণ্টার মধ্যে ডিম ফুটে পোনা বের হয়ে আসে। এগুলোকে পরে হোল্ডিং ট্যাংকে নিয়ে যেতে হয়। এভাবে হ্যাচারি পরিচালনা করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Copyright Notice

কপি করা নিষিদ্ধ!