Skip to content

 

Wait...❤😘 Show love? ⬇⬇⬇

আধুনিক পদ্ধতিতে মাছ চাষ এর জন্য মাটিতে যেসব পরিপুষ্টি পদার্থ বিদ্যমান থাকতে হয় + পুকুরের মাটির প্রকারভেদ ও বৈশিষ্ট্য, মাছ চাষে নাইট্রেজেন, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, জৈব পদার্থ, দ্রবীভূত অক্সিজেন, কার্বন ডাই-অক্সাইড, পানির তাপ, জলজ গাছ-গাছড়া, পটাশ এর ব্যবহার#মাছ চাষে উন্নত ব্যবস্থাপনা#মাছ চাষের উপায়#মাছ চাষ কিভাবে করা যায়

পদ্ধতিতে মাছ চাষ এর জন্য মাটিতে যেসব পরিপুষ্টি পদার্থ বিদ্যমান থাকতে হয়
Table of contents

⭐⭐⭐⭐⭐ বিষয়: আধুনিক পদ্ধতিতে মাছ চাষ এর জন্য মাটিতে যেসব পরিপুষ্টি পদার্থ বিদ্যমান থাকতে হয় + পুকুরের মাটির প্রকারভেদ ও বৈশিষ্ট্য, মাছ চাষে নাইট্রেজেন, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, জৈব পদার্থ, দ্রবীভূত অক্সিজেন, কার্বন ডাই-অক্সাইড, পানির তাপ, জলজ গাছ-গাছড়া, পটাশ এর ব্যবহার, মাছ চাষে উন্নত ব্যবস্থাপনা, মাছ চাষের উপায়, মাছ চাষ কিভাবে করা যায়।
হ্যাসট্যাগ: আধুনিক পদ্ধতিতে মাছ চাষ এর জন্য মাটিতে যেসব পরিপুষ্টি পদার্থ বিদ্যমান থাকতে হয় + পুকুরের মাটির প্রকারভেদ ও বৈশিষ্ট্য,#মাছ চাষে নাইট্রেজেন, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, জৈব পদার্থ, দ্রবীভূত অক্সিজেন, কার্বন ডাই-অক্সাইড, পানির তাপ, জলজ গাছ-গাছড়া, পটাশ এর ব্যবহার#মাছ চাষে উন্নত ব্যবস্থাপনা#মাছ চাষের উপায়#মাছ চাষ কিভাবে করা যায়।

সব পুকুরের ফলন সমান হয় না। বিভিন্ন প্রকার প্রাকৃতিক, রাসায়নিক ও জৈবিক পরিবেশ পুকুরের উৎপাদিকা শক্তি নিয়ন্ত্রণ করে। মাছ চাষে এগুলোর প্রভাব সম্পর্কে জানতে পারলে মাছের উপযুক্ত পরিচর্যা করা যাবে। মাছ চাষে এগুলোর ভূমিকা জানা দরকার।

পুকুরের মাটি খনিজ পদার্থ ও জৈব পদার্থের সমন্বয়ে মাটির সৃষ্টি। এ দুটি উপাদন ছাড়াও মাটিতে বায়ু, পানি, জীবাণু ইত্যাদি থাকে। এ সব উপাদানের দরুণই মাটিতে নানা প্রকার ভাঙা-গড়া প্রক্রিয়া চলে।

খনিজ পদার্থ মাটিতে বিভিন্ন আকারে থাকে। যেমন— পাথর এক প্রকার খনিজ পদার্থ। পাথরের সবচেয়ে সূক্ষ্ম অংশকে কদম রেণু বলে। এর চেয়ে বড় অংশকে পলি কণা ও তার চেয়ে বড় অংশকে বালি বলে।

আধুনিক পদ্ধতিতে মাছ চাষে পুকুরের মাটির প্রকারভেদ

বালি ও কাদার পরিমাণ কম বেশি অনুসারে মাটিকে নিম্নলিখিত ৭টি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে। যথা-

  • (1) বেলে মাটি. এ মাটিতে শতকরা ৮০ ভাগেরও বেশি বালি থাকে। এটা খখসে এবং আঠামুক্ত |
  • (2) কাদা মাটি: এ মাটিতে শতকরা ৫০ ভাগেরও বেশি কাদা থাকে। ভেজা অবস্থায় আঠালো এবং শুষ্ক অবস্থায় শক্ত।
  • (3) দো-আঁশ মাটি: এ মাটিতে বালি ও কাদার পরিমাণ সমান সমান থাকে।
  • (4) বেলে দো-আঁশ: এ মাটিতে কাদার চেয়ে বালির পরিমাণ অধিক।
  • (5) কাদা দো-আঁশ মাটি: এ মাটিতে বালির চেয়ে কাদার পরিমাণ অধিক।
  • (6) চুনা মাটি: এ মাটি চুনা পাথর হতে উৎপন্ন হয়। এতে শতকরা ২০ ভাগেরও অধিক চুনা থাকে।
  • (7) পচা মাটি: এ মাটি প্রাণী গাছ প্রভৃতি ধ্বংশপ্রাপ্ত দেহ হতে উৎপন্ন হয়েছে।

আধুনিক পদ্ধতিতে মাছ চাষে বাংলাদেশের মাটির প্রকারভেদ

গুণাগুণ অনুসারে বাংলাদশের মাটিকে ৬টি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-

  • (1) লাল মাটি অঞ্চল: ঢাকা ও ময়মনসিংহ জেলার কিছু অংশ এ অঞ্চলের অন্তর্গত। এটা মধুপুর জঙ্গল এলাকা নামে খ্যাত।
  • (2) বরেন্দ্রভূমি: গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্রের মধ্যবর্তী ভূ-ভাগ যা বর্তমানে উত্তরবঙ্গ নামে পরিচিত, তার অধিকাংশই এ বরেন্দ্র অঞ্চলের অন্তর্গত।
  • (3) গঙ্গার পলি দ্বারা গঠিত অঞ্চল: যশোহর, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর, রাজশাহী, পাবনা, ঢাকা ও বরিশাল অংশ বিশেষ এ এলাকার অন্তর্ভুক্ত।
  • (4) তিস্তা পলি দ্বারা গঠিত অঞ্চল: রংপুর, দিনাপজুর, বগুড়া ও পাবনার কিছু অংশ নিয়ে এ অঞ্চল গঠিত।
  • (5) ব্রহ্মপুত্র পলি দ্বারা গঠিত অঞ্চল: কুমিল্লা, নোয়াখালী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটের অংশ বিশেষ নিয়ে এ মৃত্তিকাঞ্চল গঠিত।
  • (6) উপকূলের লোনা মাটি অঞ্চল: খুলনা, বাখরগঞ্জ, নোয়াখালী ও চট্টগ্রামের উপকূল ভাগ এ অঞ্চল গঠিত।
  • (7) বিভিন্ন মাটির গুণগত মান থেকে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, পলিমাটি অঞ্চলের পুকুরে মৎস্য ফলন ভালো হবে এবং অন্যান্য জাতীয় মাটির পুকুরে প্রয়োজনীয় চুন ও অন্যান্য সার তুলনামূলকভাবে বেশি পরিমাণে ব্যবহার করতে হবে। মাটিতে যেসব পরিপুষ্টি পদার্থ বিদ্যমান, তাদের মধ্যে নাইট্রোজেন, ফসফরাস্ ও ক্যাল্‌সিয়াম, পটাসিয়াম প্রভৃতি প্রধান। পানির গুণাগুণ নিয়ন্ত্রণে এদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আধুনিক পদ্ধতিতে মাছ চাষের মাটিতে যেসব পরিপুষ্টি পদার্থ বিদ্যমান থাকতে হয়

ক. আধুনিক পদ্ধতিতে মাছ চাষে ‘নাইট্রেজেন’

  • নাইট্রোজেন্না ইট্রোজেন সারে শেওলা জাতীয় উদ্ভিদ দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং পুকুরের পানি সবুজ রং ধারণ করে। উদ্ভিদ জাতীয় শেওলাতে মাছ তাড়াতাড়ি বাড়ে, মাংসও বলবান হয়। নাইট্রোজেনের অভাবে পুকুরের পানি বিবর্ণরূপ ধারণ করে ও মাছের খাবার থাকে না।
  • পুকুরের পানিতে নাইট্রোজেন সরবরাহের জন্যে ০.০৬ হতে ০.১ পি.পি.এম. নাইট্রেট থাকা প্রয়োজন।
  • পানিতে নাইট্রোজেন্ বিভিন্ন অবস্থায় থাকে। যথা— নাইট্রাইট, নাইট্রেট, এ্যামোনিয়া ইত্যাদি। মাটি, বাতাস, বৃক্ষ ও প্রাণী প্রভৃতির মধ্যে নাইট্রোজেন্ আদান প্রদানের একটি নিবিড় যোগসূত্র আছে। এ যোগসূত্রকে ‘নাইট্রোজেন্‌ চক্র’ বলে।
  • নাইট্রোজেন্ একটি বর্ণহীন, স্বাদহীন ও গন্ধহীন গ্যাস। এটা পানিতে অল্প পরিমাণে দ্রবীভূত হয়। এটা বায়ু অপেক্ষা সামান্য হালকা।
  • বায়ুতে প্রচুর পরিমাণ নাইট্রোজেন আছে। এর তিন- চতুর্থাংশ ভাগ নাইট্রোজেন্।
  • যৌগাবস্থায় নাইটার (nitre) বা পটাশিয়াম নাইট্রেট, অ্যামোনিয়া প্রভৃতিতে নাইট্রোজেন্ আছে। উদ্ভিদ ও জীবদেহের প্রোটিন জাতীয় বস্তুতে নাইট্রোজেন্‌ আছে। নাইট্রোজেন বায়ু হতে মাটিতে, মাটি হতে উদ্ভিদে, উদ্ভিদ হতে জীবদেহে এবং পুনরায় মাটিতে ফিরিয়ে আসে ও আবার মাটি হতে বায়ুতে চলে যায়। এ প্রণালীসমূহ চক্রাকারে সর্বদাই চলছে।
  • নাইট্রোজেন সার হিসেবে ইউরিয়া ব্যবহৃত হয়। এটা পানিতে দ্রুত দ্রবীভূত হয়।
  • প্রাকৃতিক নিয়মে কিছু সংখ্যক গাছ-গাছড়া ও প্রাণী অনবরতই মৃত্যুবরণ করে। এসব প্রাণী ও গাছ গাছড়া পঁচে গিয়ে জৈব পদার্থে পরিণত হয় এবং বিভিন্ন প্রকার ব্যাক্টেরিয়ার দহনে জৈব পদার্থ হতে পরিপুষ্টি ও খনিজ লবণে সৃষ্টি হয়। এ লবণের মধ্যে কার্বন, নাইট্রোজেন, ফসফরাস্ ও সালফার কম্পাউন্ড আছে। বিভিন্ন প্রকার ব্যাক্টেরিয়ার কার্যক্রিয়ায় এ লবণ হতে কার্বন, নাইট্রোজেন, ফসফরাস ও সাফ্ফার যথাক্রমে কার্বন ডাই-অক্সাইড, এ্যামোনিয়া, ফসফেট ও হাইড্রোজেন সালফাইড হিসেবে মুক্তি পায়।
See also  সমন্বিত হাঁস মুরগি ও মাছ চাষ ব্যবস্থাপনা + মাছ ও হাঁস চাষ পদ্ধতি একসাথে, হাঁস ও মাছ সমন্বিত চাষ + মুরগি ও মাছ সমন্বিত চাষ, মাছ ও মুরগি চাষ পদ্ধতি একসাথে, মুরগি ও মাছের খামার

ব্যাক্টেরিয়ার এ জাতীয় কার্য ক্রিয়ার উপর ভিত্তি করে ব্যাক্টেরিয়াগুলোকে ৬ ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-

(1) ডিউট্রিফাইং ব্যাক্টেরিয়া— পচন ক্রিয়াশীল ব্যাক্টেরিয়া। এ ব্যাক্টেরিয়া প্রোটিনকে অ্যামোনিয়াতে রূপান্তরিত করে। ডিনাইট্রিফাইং ব্যাক্টেরিয়া এ নাইট্রোজেন কম্পাউন্ডকে গ্যাসিয়াস্ নাইট্রোজেনে পরিণত করে।

(2) নাইট্রোজেন্ ফিক্সার ব্যাক্টেরিয়া বাতাসের মুক্ত নাইট্রোজেনকে নাইট্রেইট কম্পাউন্ডে পরিণত করে।

(3) নাইট্রাইট প্রডিউসার ব্যাক্টেরিয়া এ্যামোনিয়াকে ভেঙ্গে নাইট্রাইটে পরিণত করে।

(4) পরভোজী ব্যাক্টেরিয়া হলো যে সব ব্যাক্টেরিয়া অন্যান্য প্রাণীর শরীরে বাস করে।

(5) পিউট্রিফাইং ব্যাক্টেরিয়া জৈব পদার্থ থেকে সৃষ্টি খনিজ ও পরিপুষ্টি লবণের নাইট্রোজেনকে এ্যামোনিয়াম কম্পাউন্ডে পরিণত করে। পরবর্তী পর্যায়ে এ্যামোনিয়াম কম্পাউন্ড, নাইট্রাইট ব্যাক্টেরিয়া ও নাইট্রেট ব্যাক্টেরিয়া কর্তৃক যথাক্রমে নাইট্রাইট ও নাইট্রেটে পরিণত হয়। এ্যামোনিয়ার এ বিবর্তনকে ‘নাইট্ৰিফিকেশন’ বলা হয়।

(6) অন্যদিকে ডিনাইট্রিফাইং ব্যাক্টেরিয়া নাইট্রেট ও এ্যামোনিয়া প্রভৃতি নাইট্রোজেন্ কম্পাউন্ড হতে নাইট্রোজেনকে মুক্ত করে ও বায়ুস্তরে ছেড়ে দেয়। নাইট্রোজেনের এরূপ বিলুপ্তিকে ডিনাইট্রিফিকেশান্ পদ্ধতি নামে অভিহিত করা হয়।

ডিনাইট্রিফিকেশান্ পদ্ধতিতে যদিও পানি ও মাটির কিছুটা নাইট্রোজেন্ হারিয়ে যায় তবু মাটিতে নাইট্রোজেনের অভাব হয় না। কারণ, নাইট্রোজেন ফিক্সিং ব্যাক্টেরিয়া মোলস্ ও আলজী অনবরতই কিছু না কিছু নাইট্রোজেন্‌ বাতাস থেকে গ্রহণ করে এবং নাইট্রেট হিসেবে সংস্থাপন করে। এমনিভাবে মাটি, বাতাস, বৃক্ষ ও প্রাণী— এদের মধ্যে নাইট্রোজেন্ আদান- প্রদানের এক নিবিড় যোগসূত্র স্থাপিত হয়েছে। এ যোগ সূত্রই নাইট্রোজেন্ চক্র।

খ. আধুনিক পদ্ধতিতে মাছ চাষে ‘ফসফরাস’

  • ফসফরাস্ সার পুকুরের তলদেশের মাটিতে আবদ্ধ নাইট্রোজেনকে মুক্ত করে দেয় এবং এর ফলে শেওলা বৃদ্ধির প্রাচুর্যতা দেখা দেখা যায়। ফফরাসের প্রভাবে মাছ সুস্বাদু হয়।
  • ফসফরাস এর অভাবে মাছ দুর্বল হয়ে রোগাক্রান্ত হয়।
  • পরিমিত ফসফরাস্ সরবরাহের জন্য পুকুরের ০.২ হতে ০.৪ পি.পি.এম ফসফেট থাকা দরকার।
  • ফসফরাস্ সার পুকুর তলদেশের মাটিতে আবদ্ধ নাইট্রোজেন্‌কে মুক্ত করে সরাসরি শেওলা জন্মাতে সাহায্য করে এবং এর জন্যই নাইট্রোজেন সার ব্যবহার না করেও শুধু ফসফরাস্ সার দিয়েও ভালো ফলন পাওয়া যেতে পারে।
  • পানিতে ফসফরাস্ ফসফেট অবস্থায় থাকে। প্রকৃতিতে মুক্ত অবস্থায় ফসফরাস্পা ওয়া যায় না।
  • নানা রকমের ফসফেট হিসেবে এটা পাওয়া যায়। এরা দু প্রকার যথা- ১. শ্বেত ফসফরাস্ এবং ২. লোহিত ফসফরাস্।
  • লোহিত ফসফরাস্ স্বাদ ও গন্ধহীন। এটা পানিতে অদ্রবণীয় এবং বিষাক্ত নয়। অন্যদিকে শ্বেত ফসফরাস্ রসুনের মতো গন্ধবিশিষ্ট ও পানিতে প্রায় অদ্রবণীয়। জীবদেহের ক্রিয়া বিষাক্তকর।
  • সুপার ফসফেট পানিতে দ্রবণীয়। কিন্তু বেশি দিন মাটির নিচে থাকলে এটা অদ্রবণীয় আকরে পরিণত হয়। এ অবস্থায় চুন প্রয়োগ উপকার পাওয়া যায়।

গ. আধুনিক পদ্ধতিতে মাছ চাষে ‘পটাশ’

  • পটাশ সার ফটোসেথেসিস্ বা আলোক সংশ্লেষণ ঘটায় এবং শেওলার সবুজ কণা বৃদ্ধি করে। এছাড়া পটাশ মাছের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বৃদ্ধি করে ও মাছের মাংসপেশী দৃঢ় করে দেয়।
  • পটাশও ক্যালসিয়াম সরবরাহের মধ্য দিয়ে পানির খারত্ব ১০০ ভাগই বজায় রাখতে পারলে মাছ সহজে রোগাক্রান্ত হয় না।

ঘ. আধুনিক পদ্ধতিতে মাছ চাষে ‘ক্যালসিয়াম’

  • ক্যাসিয়াম্ মাটির উর্বরতা বাড়ায় এবং উপযুক্ত পরিমাণ ক্যাল্‌সিয়ামের উপস্থিতিতে পানির খারত্ব ভাব বজায় থাকে। এছাড়া ক্যাসিয়ামের প্রভাবে ফসফ্রাস্ ও পটাসিয়ামের ভূমিকা সুদৃঢ় হয়।
  • পুকুরে ক্যাল্সিয়ামের পরিমাণ ১ লাখ ভাগ পানিতে ২৫ থেকে ৫০ ভাগ হলে মাছ চাষ ভালো হয়।
  • প্রকৃতিতে ক্যাল্‌সিয়াম্ মৌল অবস্থায় পাওয়া যায় না। নানাবিধ আকুরি হিসেবে যথা— কার্বনেট, সল্‌ফেট, ক্লোরাইট ও ফসফেট হিসেবে পাওয়া যায়।
  • এটা একটা সক্রিয় ধাতু। পানির সাথে বিক্রিয়া করে হাইড্রোক্সাইড ও হাইড্রোজেন উৎপন্ন করে।
  • ক্যাল্‌সিয়াম অক্সাইডকে সাধারণ চুন বা কুইক লাইম বলা হয়। এটা একটা সাদা দানাদার পদার্থ। ক্যাল্‌সিয়াম অক্সাইড পানির সঙ্গে ক্রিয়া করে কালি চুর্ণ বা স্ল্যাকড লাইম উৎপন্ন করে।
  • ক্যাল্‌সিয়াম হাইড্রক্সাইডকে কালি চুন বা স্ন্যাকড লাইম্ বলা হয়। পানিতে এটা সামান্য দ্রবণীয়। এ দ্রবণকে ‘চুনের পানি’ বা ‘লাইম ওয়াটার’ বলে। সামান্য পানিতে অধিক কালি চুন মিশ্রিত করলে কিছু দ্রবীভূত হয় এবং অবশিষ্ট কিছু অংশ একটা অবদ্রব উৎপন্ন করে এটাকে চুন গুলা বা মিল্ক অভ্ লাইম বলা হয়।
  • ক্যালসিয়াম কার্বনেট একটি সাদা কঠিন বস্তু। এটা পানিতে সাধারণ পরিমাণে দ্রবণীয়। ক্যাল্‌সিয়াম নাইট্রেট একটি দানাদার পদার্থ। এটা পানিতে দ্রবণীয়। এ সব আকুরির মধ্যে ক্যাল্‌সিয়াম কার্বনেট পুকুর দীঘিতে অধিক ব্যবহার হয়ে থাকে।

ঙ. আধুনিক পদ্ধতিতে মাছ চাষে ‘জৈব পদার্থ’

  • পুকুরের পানির গুণাগুণে বিবিধ প্রকার জৈব পদার্থের ভূমিকাও কম নয়। জীবজন্তু গাছ-পালা প্রভৃতির ধ্বংসাবশেষ থেকেই জৈব পদার্থের সৃষ্টি হয়েছে। জৈব পদার্থের উপস্থিতিতে মাটির গঠন ভালো হয়, মাটির পানি ধারণ করার শক্তি বাড়ে এবং মাটির বিষাক্ত পদার্থগুলো সংশোধিত হয়।
  • জৈব পদার্থের পরিমিত উপস্থিতি মাছ চাষের জন্য ভালো। কিন্তু অপঁচা, আঁধা পঁচা প্রভৃতি বেশি পরিমাণে থাকলে পানিতে গন্ধ হয় এবং মাছ চাষের প্রতিকূলতা সৃষ্টি করে।
  • পুকুরের উর্বরতা বৃদ্ধিতে জৈব পদার্থের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জৈব পদার্থের বিয়োজনের ফলেই, হিউমাস্ সৃষ্টি হয়। এটা নাইট্রোজেন্ ফসফরাস্ ও পটাসিয়ামসমূহ সারা বছরই ধীরে ধীরে সরবরাহ করতে পারে।
See also  দেশি ছোট মাছের চাষ: মলা, চেলা ও পুঁটি মাছের চাষ, পাবদা মাছের চাষ, গুলশা মাছের চাষ, দেশি সরপুঁটির চাষ, কই মাছের চাষ

চ. আধুনিক পদ্ধতিতে মাছ চাষে ‘দ্রবীভূত অক্সিজেন’

  • যে পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেনের অভাব, সে পানিতে মাছ অথবা অন্য কোনো প্রাণী বাঁচে না। অক্সিজেন জীবনী শক্তির আধার। দিনের বেলা সূর্যকিরণের উপস্থিতিতে জলজ গাছ-গাছড়া অক্সিজেন ত্যাগ করে ও কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস আপন কাজে গালায়।
  • কাজেই দিনের বেলায় অক্সিজেনের অভাব হয় না। তবে জলজ উদ্ভিদের অনুপস্থিটিতে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে।
  • তাই বর্ষাকালে যখন আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকে অথবা রাতে যখন সূর্যের আলো থাকে না তখন জলজ উদ্ভিদসমূহ কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস কাজে লাগিয়ে খাদ্য তৈরি করতে পারে না এবং কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস পানিতে দ্রবীভূত হয়ে অক্সিজেনের অভাব ঘটায়।
  • সেজন্য অতিরিক্ত বর্ষায় বা অতিরিক্ত গরমে মাছকে পানির উপরে ভেসে উঠতে দেখা যায়। এ সময়ে পুকুরে সাতার কেটে বা জাল টেনে দিলে বা কৃত্রিম উপায়ে অক্সিজেন ‘স্প্রে’ করলে কিংবা পটাশ পারম্যাঙ্গানেট দ্রবণ পুকুরে প্রয়োগ করলে এ অবস্থায় উপশম হয়।
  • পুকুরে অক্সিজেনের পরিমাণ সাধারণত ১ লক্ষ ভাগ পানির ৪.৮ হতে ৭.৭ ভাগ হলে মাছ চাষের জন্য খুবই উপযোগী।
  • অক্সিজেন একটি বর্ণহীন, গন্ধহীন, স্বাদহীন গ্যাস। অক্সিজেন পানিতে দ্রবীভূত হয়।
  • মাছ ও অন্যান্য জলজ প্রাণীরা তাদের ফুলকার সাহায্যে এ দ্রবীভূত অক্সিজেন গ্রহণ করে শ্বাস কার্য সম্পাদন করে থাকে।
  • বায়ুমণ্ডলে যথেষ্ট পরিমাণে মৌলিক অক্সিজেন আছে। সাধারণভাবে বায়ুমণ্ডলে ৪ ভাগ নাইট্রোজেনের সাথে ১ ভাগ মৌলিক অক্সিজেন মিশ্রিত রয়েছে।
  • যৌগাবস্থায় পানি, বালি প্রভৃতিতে প্রচুর অক্সিজেন রয়েছে। ভূত্বকের কঠিন স্তরের অন্যতম প্রধান উপাদান অক্সিজেনের যৌগসমূহ।

ছ. ক. আধুনিক পদ্ধতিতে মাছ চাষে ‘কার্বন ডাই-অক্সাইড’

  • কার্বন ডাই-অক্সাইড একটি বর্ণহীন, সামান্য গন্ধ ও অম্ল স্বাদযুক্ত গ্যাস।
  • এটা বায়ু অপেক্ষা ভারী।
  • এটা বিষাক্ত নয় তবে এর ভিতরে কোনো প্রাণী জীবিত থাকতে পারে না। কারণ, এর ভিতরে প্রাণীসমূহ অক্সিজেনের অভাবে দম বন্ধ হয়ে মারা যায়।
  • কার্বন ডাই-অক্সাইড পানিতে দ্রবীভূত হয়ে কার্বনিক এসিড উৎপন্ন করে।
  • বায়ুতে সামান্য পরিমাণ CO2 গ্যাস মুক্ত অবস্থায় আছে। এটা পানিতে দ্রবীভূত অবস্থায় থাকে।
  • জীবজন্তুর নিঃশ্বাসে ও জ্বালানি পোড়ালে এর সৃষ্টি হয়।
  • কার্বন ক্ষুদ্র জীবাণু উদ্ভিদ ও জীবকুলে চক্রাকারে বিরাজ করে। এটাই ‘কাৰ্বন চক্র’ নামে অভিহিত হয়।

জ. আধুনিক পদ্ধতিতে মাছ চাষে ‘পানির তাপ’

  • পানি অতিরিক্ত গরম হয়ে গেলে মাছ জীবাণু অনুকূলে আসে না। পানির নির্ধারিত তাপমাত্রার উপরই মাছের হজমশক্তি নির্ভর করে। যে পুকুরের তাপমাত্রা ৮০° ডিগ্রি থেকে ৮৮° ডিগ্রি ফারেনহাইট থাকে সেখানে রুই জাতীয় মাছগুলোর ফলন ভালো হয়। পানির ভিতরে সূর্যের কিরণ যতদূর পৌঁছায় ততদুর পর্যন্ত মাছের খাবার তৈরি হয়।
  • সাধারণত পানির ৭-৮ ফুট নিচে পর্যন্ত সূর্যের কিরণ যেতে পারে। সূর্যের কিরণের উপস্থিতি, অনুপস্থিতি, প্রখরতা ও অপ্রখরতা হেতু তাপমাত্রার পরিমাণ কম বা বেশি হয়ে থাকে। আর সে জন্যই পুকুরে মাছের খাবার কোনো কোনো ঋতুতে বেশি বা কম হয়।
  • উদ্ভিদ জাতীয় প্ল্যাঙ্কটন দিনের বেলায় পানির উপরের স্তরে বেশি থাকে, আবার জুপ্ল্যাঙ্কটন রাতের বেলায় উপরের স্তরে বেশি থাকে কমিয়ে দেয় এবং ফটোসিনথেটিক্এ র ফলে নিমজ্জনশীল উদ্ভিদসমূহে এবং উদ্ভিদ জাতীয় প্ল্যাঙ্কটন নিচের স্তরে চলে যায়। বৃষ্টি পানির তাপমাত্রা পানির ঘোলাটে ভার বাড়িয়ে দেয়। পদ্ধতি বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া বৃষ্টির পানি দ্রবীভূত খনিজ পদার্থের ঘনত্ব কমিয়ে দেয় এবং অক্সিজেন ও নাইট্রোজেনের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়।

ঝ. আধুনিক পদ্ধতিতে মাছ চাষে ‘জলজ গাছ-গাছড়া’

  • পুকুরে মাছ চাষের জন্য জলজ উদ্ভিদসমূহকে দু ভাগে ভাগ করা যায়, যথা- বঞ্চিত জলজ উদ্ভিদ ও অবাঞ্চিত জলজ উদ্ভিদ।
  • যে সব জলজ উদ্ভিদ মাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়, মাছকে রোদের সময় অতিরিক্ত সূর্যতাপ থেকে রক্ষা করে এবং বর্ষাকালের শিলা বৃষ্টি সময় এদের নিচে আশ্রয় নিতে পারে ও পুকুরের পানিতে সীমিত সংখ্যায় বিরাজ করে সেগুলোকে আমরা ‘বাঞ্চিত উদ্ভিদ’ বলতে পারি। কলমিশাক, হেলেঞ্চা, ক্ষুদিপানা, গুড়িপানা এ জাতীয় গাছ-গাছড়াসমূহ বাঞ্চিত জলজ উদ্ভিদ হিসেবে গণ্য হয়।
  • অন্যদিকে যে সব জলজ উদ্ভিদের বংশবৃদ্ধি দ্রুত হয় ও মৎস্যভূক প্রাণীর আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং এ জাতীয় উদ্ভিদের প্রতুলতা হেতু পুকুরের পানিতে সূর্যকিরণ ঢুকতে পারে না ঐ জাতীয় উদ্ভিদসমূহকে ‘অবাঞ্চিত উদ্ভিদ’ বলে। কচুরিপানা, ঝাঁজি প্রভৃতি অবাঞ্চিত উদ্ভিদ।
  • ভাসমান শেওলা পুকুরের পানিতে চুন প্রয়োগ করে জালের সাহায্যে দূর করা যেতে পারে। এগুলো মাছের মধ্যে রোগ বিস্তারেও সাহায্য করে।

স্বভাব ও বাস্থল অনুযায়ী আমাদের পুকুরের গাছ- গাছড়াগুলোকে ৪ ভাগে ভাগ করা যায়। যথা: (1) ভাসমান, (2) নির্গমশীল, (3) লতানো ও (4) নিমজ্জনশীল উদ্ভিদ।

  1. ভাসমান জলজ উদ্ভিদ: এসব উদ্ভিদ পানির উপর ভেসে থাকে এবং মূল শিকড় মাটিতে আটকানো থাকে না, পানি কমে যাবার সংগে সংগে শিকড়টি মাটিতে স্পর্শ করে এবং বর্ষা না আসা পর্যস্ত মাটি থেকে রস সংগ্রহ করেও পানি আসার সংগে সংগে ভেসে ওঠে কচুরিপানা, ক্ষুদিপানা, টুপাপনা ও উল্কিপানা প্রভৃতি এ শ্রেণীর অর্ন্তভুক্ত।
  2. নির্গমশীল উদ্ভিদ: গাছের শিকড় পানির নিচে মাটির তলায় থাকে এবং এদের পাতা পানির উপরিভাগে ছড়ানো থাকে, যেমন— পানিফল, পদ্ম, শাপলা ও শুষনি শাক ইত্যাদি।
  3. লতানো জলজ উদ্ভিদ: এ জাতীয় জলজ উদ্ভিদের শিকড়ে পুকুরের ঢালু পাড়ে আটকানো থাকে এবং এদের কাণ্ড ও পাতাপানির উপর ছড়িয়ে থাকে ও ক্রমান্বয়ে পুকুর ঢেকে ফেলে। হেলেঞ্চা, কলমিশাকও কেশরদাম প্রভৃতি এ শ্রেণির উদ্ভিদ।
  4. নিমজ্জনশীল জলজ উদ্ভিদ: এসব উদ্ভিদ পানির নিচে জন্মায় এবং উপরে ভেসে ওঠে না। পাতা, কাণ্ড ইত্যাদি সব অংশই পানির নিচে থাকে। এদের কতকগুলোর শিকড় আছে, আবার কতকগুলো শিকড় নেই। এ শ্রেণীর উদ্ভিদ মৎস্য চাষের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর।
See also  শিং-মাগুরের চাষ

ঞ. আধুনিক পদ্ধতিতে মাছ চাষে ‘আগাছা নিয়ন্ত্রণ’

সীমিত সংখ্যক গাছ গাছড়া মাছ চাষের পক্ষে উপকারী। কিন্তু এর প্রতুলতা পুকুর চাষে সর্বপ্রকার প্রতিকূলতা সৃষ্টি করে জলজ উদ্ভিদ নিয়ন্ত্রণের জন্য যে কয়েক প্রকার পন্থা গ্রহণ করা হয় তা আলোচনা করা হলো:

রাসায়নিক প্রক্রিয়া:

  • ভাসমান ও লতানো জলজ উদ্ভিদগুলোকে কপার্ সাল্‌ফেট, সোডিয়াম আসেনাইট ও টু-ফোর্-ডি প্রভৃতি রসায়ন দ্রব্যের সাহায্যে বিনাশ করা যায়।
  • তবে কপার্ সাল্‌ফেট ও সোডিয়াম আসেনাইটের মতো রসায়ন দ্রব্য ব্যবহার করা বিপদজনক। কারণ, এগুলো নির্ধারিত পরিমাণে ও সময় বিশেষে ব্যবহৃত না হলে মাছ ও অন্যান্য জলজ প্রাণীর জন্য অতীব মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে। এ জাতীয় রসায়ন ব্যবহার কপার পর পুকুরের পানি ব্যবহার করা নিষিদ্ধ।
  • ভাসমান জলজ উদ্ভিদ। নিয়ন্ত্রণের জন্য টু-ফোর্-ডি বিশেষ উল্লেখযোগ্য রসায়ন। এটা ডাই ক্লোরোফেনক্সি এসিটিক এসিড। এর ব্যবসায়িক নাম টু-ফোর্-ডি। পাউডার ও তরল দুই অবস্থাতেই একে বাজারে পাওয়া যায়। পাউডারের দাম তরলটার চেয়ে কম। ৫% শক্তি সম্পন্ন টু-ফোর্-ডি প্রতি একরে ১০০ গ্যালন ব্যবহার করা যেতে পারে। টু-ফোর্-ডি পানি বা কেরোসিন এ দুয়ের সংগে মিশ্রিত করে প্রয়োগ করা হয়। পানির সংগে টু-ফোর্-ডি এর মিশ্রণ তৈরি করতে হলে এ্যামোনিয়াম হাইড্রো-অক্সাইড ব্যবহার করতে হয়।
  • স্প্রে মেশিনের সাহায্যে শীতকালে এর ব্যবহার সবচেয়ে ভালো। এ রসায়ন প্রয়োগের মাধ্যমে ভাসমান জলজ উদ্ভিদগুলো ১-৪ সপ্তাহের মধ্যে মরে গিয়ে পুকুরের তলদেশ ভর্তি হয়ে যায়। তাই এভাবে উদ্ভিদ বিনাশ করে তেমন লাভবান হওয়া যায় না। তবে চলন্ত পানিতে নদী-নালা পরিষ্কার করার ব্যাপারে এর প্রয়োগ লাভজনক হিসেবে বিবেচিত হয়।

সার প্রয়োগ প্রক্রিয়া:

  • এ্যামোনিয়াম সালফেট, এ্যামোনিয়াম হাইট্রেট, সুপার ফসফেট, ও মিউরেট অভ্ পটাশ প্রভৃতি সারসমূহ মিশ্রভাবে পুকুরের পানিতে প্রয়োগ করলে প্রচুর পরিমাণ সবুজ আলগী জন্মায়। কচুরিপানার মতো সূর্যের আলোর পথ বন্ধ করে দেয়। এর ফলে পুকুরের তলদেশের উদ্ভিদ খাদ্যাভাবে মারা যায়।
  • সার প্রয়োগ পদ্ধতিতে নিমর্জ্জনশীল উদ্ভিদ মরে পচে যাওয়ার সংগে সংগে এদেরকে জাল টেনে তুলে ফেলতে হয়। শীতকালই এ পদ্ধতি প্রয়োগ করার উত্তম সময়। যদি একবার ব্যবহার করার পর উপযুক্ত ফল পাওয়া যায়, তাহলে এক শীতকালেই ২-৩ বার সার ব্যবহার করে পুকুরের সব নিমর্জ্জনশীল উদ্ভিদ দূর করা যেতে পারে।

যান্ত্রিক প্রক্রিয়া:

শীত মৌসুমে নৌকায় বসে জাল করাতে টেনে পুকুরের তলদেশের আগাছ কেটে দেওয়া যায়। এরপর আগছাগুলো ভেসে ওঠে এবং এগুলোকে মোটা দড়ি বা তারের জাল দিয়ে টেনে তুলে ফেলা হয়। এছাড়া নৌকায় বসে ভাসমান উদ্ভিদগুলোকে হাতে টেনেও তুলে ফেলা যায়। পুকুরের তলা শুকিয়ে ভাসমান, লতানো ও নিমজ্জনশীল উদ্ভিদ বিনাশ করা যায়।

জৈবিক প্রক্রিয়া:

উল্লিখিত যান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় গাছ-গাছড়ার উপদ্রব সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা যায়। বার বার গাছ-গাছড়া পরিষ্কার না করলে পুকুর মাছ চাষের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এজন্য আজকাল কিছু তৃণভোজী মাছ প্রজাতির সন্ধান পাওয়া গেছে এবং এদের দিয়ে পুকুর দীঘির গাছ-গাছড়া বহুলাংশে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এ জাতীয় তৃণভোজী মাছ প্রজাতির মধ্যে গ্রাস্কার্প মাছ বিশেষ উল্লেখযোগ্য।

ট. আধুনিক পদ্ধতিতে মাছ চাষে ‘প্লাবন’

অতিরিক্ত বর্ষায় বা বন্যায় পুকুরের পাড় ভেসে যেতে পারে এবং এর ফলে পুকুরের মাছ একদিকে যেমন বেরিয়ে যেতে পারে অন্যদিকে তেমনি মৎস্যভূক মাছসহ অন্যান্য ক্ষতিকর জলজপ্রাণী পুকুরে ঢুকে পড়তে পারে। এজন্য পুকুরের পাড় এমনভাবে উঁচু করতে হবে যাতে বর্ষায় বা বন্যায় এরা ভেসে না যায়। তদুপরি উঁচু পুকুর পাড়ের উপর বিভিন্ন প্রকার গাছ- গাছড়া লাগানো যেতে পারে। যেসব গাছ-গাছড়া পুকুর পারে লাগানো বিশেষ সুবিধেজনক তাদের মধ্যে কলা, নারকেল, সুপারি, পেপে লেবু ও আনারস ইত্যাদি অন্যতম। এছাড়া শীতকালেও পুকুর পাড়ের উপর বিভিন্ন প্রকার রবি শস্যের আবাদ করা যেতে পারে। পুকুরের পাড়ে বেশি শাখা বিশিষ্ট বৃক্ষ না লাগানই উচিত। কারণ, তাতে গাছের ডাল-পালার বাধা হেতু পানিতে সূর্যকিরণ পড়তে পারে না। পুকুর পাড়ে গাছ-গাছড়া লাগাবার সময় পূর্ব ও দক্ষিণ পাড়ে তুলনামূলকভাবে কম লাগানো উচিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Copyright Notice

কপি করা নিষিদ্ধ!