Skip to content

 

কয়েকটি আধুনিক পেশা, ব্যবসা-বাণিজ্য ও ক্রয়বিক্রয় সম্পর্কে শরীয়তের বিধান ও মাসআলা মাসায়েল

কয়েকটি আধুনিক ব্যবসা ও পেশা সংক্রান্ত মাসআলা মাসায়েল

বিষয়: কয়েকটি আধুনিক পেশা, ব্যবসা-বাণিজ্য ও ক্রয়বিক্রয় সম্পর্কে শরীয়তের বিধান ও মাসআলা মাসায়েল।
হ্যাশট্যাগ: কয়েকটি আধুনিক পেশা, ব্যবসা-বাণিজ্য ও ক্রয়বিক্রয় সম্পর্কে শরীয়তের বিধান ও মাসআলা মাসায়েল।

কয়েকটি আনুধিক পেশা সম্পর্কে শরীয়তের বিধান ও মাসআলা মাসায়েল

* উকালতির পেশা জায়েয, তবে শর্ত এই যে, সত্য মামলা গ্রহণ করবে অর্থাৎ, যে মক্কেল ন্যায়ের উপর রয়েছে তার মামলা পরিচালনা করবে। মিথ্যা মোকদ্দমা পরিচালনা করা জায়েয নয় এবং তার বিনিময়ে কিছু গ্রহণ করাও হারাম।

* আইনজীবিদের জন্য আইন বিষয়ক পরামর্শ দিয়ে অর্থ গ্রহণের পেশা বৈধ।

* ফটোগ্রাফারের পেশা বৈধ, তবে রং তুলি দিয়ে চিত্রাঙ্গন পেশা বৈধ নয় কারণ প্রাণীর আঁকানো ইসলামে জায়েয নয়।

* ঔষধ দেয়া ছাড়াও শুধু ব্যবস্থা বলে দিয়ে বা প্রেসক্রিপশন লিখে দিয়ে রোগী থেকে অর্থ গ্রহণের পেশা বৈধ।

* নাচ, গান, বাদ্য-বাজনা, অভিনয় ইত্যাদির পেশা বৈধ নয়।

* টেলিভিশন ও গান বাদ্যের উপকরণ মেরামতের পেশা বৈধ নয়। রেডিও মেরামতের ব্যাপারে মাসায়েল হল : যদি জানা থাকে রেডিও মালিক রেডিওকে খবর শোনার কাজে ব্যবহার করেন-গানবাদ্য শোনার কাজে ব্যবহার করেন না, তাহলে তার রেডিও মেরামত ও তার বিনিময় গ্রহণ করা বৈধ। (امداد الفتاوی جه/۳ واحسن الفتادی ج ۷)

* ঘড়ি ও চশমা মেরামতের পেশা বৈধ।

* সাংবাদিকতার পেশা বৈধ, তবে সাংবাদিক তথা পত্র পত্রিকার কর্মকর্তাদেরকে নিম্নোক্ত নীতিমালা মেনে চলতে হবে, অন্যথায় পাপী হতে হবে।

১. শরয়ী প্রমাণ ব্যতীত এমন কোন ঘটনা ছাপা যাবে না যাতে কারও দোষ প্রকাশ পায়, কারও বিপদের কারণ ঘটে। কেননা কোন কাফের সম্পর্কেও মিথ্যা অপবাদ আরোপ করা জায়েয নয়।

২. কোন ঘটনা প্রমাণিত হওয়ার জন্য শুধু লোক মুখের রটনা বা কোন পত্র পত্রিকা বা প্রচার মাধ্যমে প্রকাশিত ও প্রচারিত হওয়াকে যথেষ্ট মনে করবে না। তবে সে ঘটনায় যদি কারও কোন দোষ বদনাম না থাকে তাহলে এতটুকু প্রমাণকে যথেষ্ট মনে করা যায়। যদিও তা

৩. কারও কোন দোষ বদনাম বিষয়ক সংবাদ ছাপা জায়েয নয়, শরয়ী প্রমাণ দ্বারা প্রমাণিত হয় বরং কারও কোন দোষ সম্পর্কে অবগত হলে গোপনে সংশোধনের নিয়তে তাকে বলে দিতে হবে- সে সংবাদ প্রচার করে তাকে লাঞ্ছিত করা অন্যায়। তবে হ্যাঁ, কেউ মাজলূম হলে মাজলূমের দুরাবস্থা তুলে ধরা এবং জালেমের বিরুদ্ধে বলা জায়েয এবং তাও এই নিয়তে যেন মাজলূমের সাহায্য হয় ৷

৪. মানুষকে উপদেশ প্রদান ও সতর্ক করার নিয়তে কোন দোষ বদনামের কথা বলা যায়।

৫. পত্র-পত্রিকায় কারও নামে তার লেখা প্রতিবাদযোগ্য কোন বিষয় প্রকাশিত হলে, তার ব্যক্তির উপর আক্রমণ না করে শুধু বিষয়টার প্রতিবাদ বা জবাব দিয়ে দিতে হবে। কেননা কারও নামে কোন লেখা শুধু প্রকাশিত হওয়াই প্রকৃতপক্ষে এটা তার লেখা-এর প্রমাণ হিসেবে যথেষ্ট নয়।

৬. যে সংবাদে কারও কোন দোষ বদনাম নেই বা যেটা কারও জন্য ক্ষতিকর নয় এরূপ বিষয় এই শর্তে ছাপা জায়েয যে, তা কোন মুসলমান ব্যক্তি বিশেষ বা মুসলমান জাতির স্বার্থ ও কল্যাণ বিরোধী হতে পারবে না।

৭. শরী‘আত বিরোধী বা বাতিলপন্থীদের চিন্তাধারা সম্বলিত কোন লেখা প্রকাশ করা যাবে না। বিশেষ প্রয়োজনে ছাপা হলেও সেই দিন এবং সেই সংখ্যাতেই তার প্রতিবাদ ও জবাব ছাপতে হবে। পরের কোন সংখ্যার অপেক্ষা করা যাবে না এ জন্য যে, হতে পারে কেউ শুধু এ সংখ্যাটিই পড়বে-পরের সংখ্যা পড়বে না। তাহলে এ সংখ্যার লেখা তার গোমরাহীর কারণ হতে পারে। আর এর জন্য দায়ী হবে এই পত্রিকার কর্মকর্তাগণ।

See also  রোজা সম্পর্কে যত প্রশ্ন

৮. শরয়ী দলিলে যদি মুসলমানদের উপর কাফেরদের জুলুম অত্যাচার প্রমাণিত হয়, তাহলে সে সংবাদ এমনভাবে প্রচার করতে হবে যাতে সেই মুসলমানদের সাহায্য সহযোগিতার (বৈধ পদ্ধতিতে) আহ্বান থাকবে।

৯. পত্র পত্রিকার সম্পাদক সর্বদা এমন ব্যক্তিকে নিযুক্ত করতে হবে যিনি ইসলামী জ্ঞান বিজ্ঞান সম্পর্কে পারদর্শী অথবা অন্ততঃ উলামায়ে কেরাম থেকে জেনে নেয়ায় অভ্যস্ত এবং ধর্মের প্রতি অনুরক্ত।

১০.ধর্মের জন্য ক্ষতিকর বই পত্র ও ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে হারাম ঔষুধ বা যে কোন ভাবে শরী’আতে নিষিদ্ধ কোন বিষয়ের বিজ্ঞাপন বা এশতেহার প্রকাশ করা যাবে না।

* ইলেকট্রিক কাজের পেশা বৈধ। তবে সিনেমা, সুদ ভিত্তিক ব্যাংক, বীমা কোম্পানি প্রভৃতি অবৈধ প্রতিষ্ঠানে ইলেকট্রিকের কাজ করা বা যে কোন স্থানে অবৈধ সংযোগ লাগিয়ে দেয়া বৈধ নয়।

* অনলাইন ফরেক্স ট্রেডিং, বাইনারি অপশন ট্রেডিং হারাম।

* ব্লগিং, ফেসবুক, ইউুটউব থেকে আ্যাডস এর মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করা বৈধ, শর্ত হলো নিজের কন্টেন্ট ও আ্যাডস সমূহ অশ্লিল/হারাম/অবৈধ কর্ম সংক্রান্ত হওয়া যাবে না।

আধুনিক কিছু ব্যবসা-বাণিজ্য ও ক্রয়বিক্রয় সম্পর্কে শরী’আতের বিধান

* গ্রন্থস্বত্ব/প্রকাশনা স্বত্ব বিক্রয় করা ও তার বিনিময় গ্রহণ করা জায়েয়। (ভকে এবং এর হট ৬৮ট) তবে পূর্বেকার অনেক মুফতী এটাকে জায়েয বলতেন না।

* বিনা অনুমতিতে অন্য প্রকাশকের বই প্রকাশ করা জায়েয নয়।

* রক্ত বিক্রয় করা জায়েয নয়। তবে দুই অবস্থায় রক্ত দেয়া জায়েয।

(১) যদি রক্ত দেয়া ব্যতীত রোগীর জীবনের আশংকা দেখা দেয় এবং অভিজ্ঞ ডাক্তারের দৃষ্টিতে রক্ত দেয়া ব্যতীত তার জীবন বাঁচানোর আর কোন পথ না থাকে।

(২) কিংবা অভিজ্ঞ ডাক্তারের দৃষ্টিতে রক্ত দেয়া ব্যতীত সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা না থাকে। এরূপ রোগীকে রক্তদান করা জায়েয এবং রোগীর জন্যও এরূপ অবস্থায় রক্ত নেয়া জায়েয এবং প্রথম অবস্থায় তাকে বিনামূল্যে রক্ত দেয়ার মত কেউ না থাকলে তার জন্য রক্ত ক্রয় করাও জায়েয। তবে রক্ত বিক্রয় করা কারও জন্যেই জায়েয নয়।

* মানুষের কোন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ (যেমন চোখের কর্নিয়া, কিডনি ইত্যাদি) বিক্রয় করা জায়েয নয় ৷ চক্ষু দান করা (জীবদ্দশায় হোক বা মরণোত্তর) জায়েয নয়। এ সম্পর্কে বিস্তারিত যুক্তি প্রমাণ জওয়াহেরুল ফেকাহ, ২য় খণ্ডে বর্ণিত হয়েছে। অন্যের চক্ষু ব্যবহার করাও জায়েয নয়। (جواہر الفقہ جہ/۲ وفتاوی محمودیہ ج / ٥ )

* বোনাস ভাউচার বিক্রয় করা জায়েয নয়।

* পেনশন বিক্রয় করা জায়েয নয়, তবে সরকারের কাছে বিক্রি করা জায়েয।

* গোবর বিক্রি করা জয়েয।

* পায়খানা বিক্রি করা জায়েয নয়, তবে মাটি হয়ে গেলে এবং মাটি প্রবল হয়ে গেলে বিক্রি করা জায়েয।

* কিস্তিতে (অধিক মূল্যে হলেও) ক্রয় বিক্রয় করা জায়েয, তবে পূর্ণ কিস্তি পরিশোধ না করলে বিক্রিত দ্রব্য ফেরত গ্রহণ ও বিগত প্রদত্ত কিস্তির টাকা বাজেয়াপ্ত করার শর্ত আরোপ করা হলে সেরূপ বিক্রয় নিষিদ্ধ।

* ক্রেতা ক্রয় করতে অস্বীকার করলে জমি ইত্যাদির বায়নার টাকা ফেরত দেয়া জরূরী। তবে বায়না করার পর বিক্রেতার সম্মতি ছাড়া ক্রেতার ক্রয় করতে অস্বীকার করার অধিকার নেই।

* রেডিও, টেপরেকর্ডার ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যাপারে মাসআলা হল- যদি গান বাজনা ইত্যাদি গোনাহের কাজে ব্যবহার করার উদ্দেশ্যে হয় তাহলে ক্রয় করা জায়েয নয় এবং এরূপ ক্রেতার নিকট বিক্রয় করাও জায়েয নয়। অন্যথায় জায়েয।

See also  হজ্জ এর A টু Z সকল নিয়ম, হজ্জ কত প্রকার? কোন হজ্জে কি কি করতে হয়? কি কি করা যায় না? হজ্জের সকল নিয়মনীতি ও মাসায়েল

* টেলিভিশন ক্রয়-বিক্রয় মাকরূহ তাহরীমী (যা হারামের কাছাকাছি)। (احسن الفتاوی ج ۲ )

* মদ, গাজা, হেরোইন প্রভৃতি ক্রয়-বিক্রয় জায়েয নয়। আফিম যেহেতু ঔষধে ব্যবহৃত হয় তাই বিক্রয় করা জায়েয, তবে যে এটা দ্বারা নেশা করবে বলে প্রবল ধারণা হয় তার নিকট বিক্রয় করা মাকরূহ তাহরীমী ও নাজায়েয। (احسن الفتاوی ج ۲ )

* ব্লাক করা আইনত অপরাধ।

* বিড়ি সিগারেট বিক্রয় করা জায়েয, তবে বিড়ি সিগারেট সেবন যেহেতু মাকরূহ তাই এগুলো বিক্রি করা মাকরূহ কাজে সহযোগিতা করার নামান্তর। অতএব এ থেকে বিরত থাকাই শ্রেয়।

* ছেঁড়া ফাটা টাকা (নোট)-এর বদলায় ভাল টাকা (নোট) কম বেশী করে বদলানো দুরস্ত নয়।

* বাদ্যযন্ত্র ক্রয়-বিক্রয় না জায়েয।

* বিধর্মীদের বইপত্র, বাতিলপন্থীদের বই পত্র বিক্রয় করা জায়েয নয়। (احسن الفتاوی ج/۲)

* এল, সি খুলে ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে যে মাল আমদানী করা হয় সেই মাল পৌঁছার পূর্বে যে ইনভয়েস ও বিল অফ লেডিং হস্তগত হয় তার ভিত্তিতে মাল পৌঁছার পূর্বেই মাল বিক্রয় করা জায়েয।

* খেলাধুলা সাজ-সরঞ্জাম বিক্রয় করা জায়েয নয়।

* সরকার স্মাগলিং বা চোরাই ভাবে আমদানীকৃত মালামাল আঁটক পূর্বক সেগুলো নিলামে বিক্রয় করলে সেগুলো ক্রয় করা জায়েয নয়। কারণ সরকার সেগুলোর মালিক নয়।

* ডিপো হোল্ডারের পক্ষে সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অধিক মূল্য গ্রহণ করা জায়েয নয়।

* বর্তমানে প্রচলিত কৌটা ও প্যাকেটে বিভিন্ন মালের যে ওজন লেখা থাকে সেই ওজন ধরে নিয়ে ঐ মাল উক্ত ওজনের মূল্যে বিক্রয় করা জায়েয। গ্রাহককে মেপে দেয়া জরুরী নয়।

* লটারির টিকিট ক্রয়-বিক্রয় জায়েয নয়।

* প্রাইজবণ্ড ক্রয় করা জায়েয নয়।

* সুদ ভিত্তিক ব্যাংক কর্তৃক পরিচালিত ফিক্সড ডিপোজিড, ডিপোজিট পেনশন স্কীম, এমনিভাবে প্রতিরক্ষা সঞ্চয়পত্র পদ্ধতিতে অর্থ বিনিয়োগ করা বৈধ নয়, কারণ এগুলো সুদের হিসাবে পরিচালিত।

* আইনতঃ নিষিদ্ধ না হলে ব্যাংকের বাইরে ডলার, পাউণ্ড ইত্যাদি বেশী মূল্যে ক্রয় করা জায়েয, যদি তাতে মুসলমানদের ক্ষতি না হয়।

* বৈদেশিক মুদ্রা যেমন ডলার, পাউণ্ড ইত্যাদি সরকার নির্ধারিত মূল্যের বেশী মূল্যে ক্রয়-বিক্রয় করা জায়েয।

* যখন কোন কোম্পানির শেয়ার প্রাথমিকভাবে ইস্যু (Subscribe) হয় তখন তা ক্রয় করা জায়েয এই শর্তে যে, সে কোম্পানির মূল কারবার হারাম হতে পারবে না। যেমন ইন্সুরেন্স কোম্পানি বা সুদ ভিত্তিক ব্যাংক বা মদের ফ্যাক্টরী ইত্যাদি হতে পারবে না।

* স্টক মার্কেট থেকে শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় ও শেয়ার ব্যবসা চারটি শর্তে জায়েয। যথা :

১. যে কোম্পানির শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় করা হবে সেটা মৌলিকভাবে হারাম কারবার করে না।

২. কোম্পানির কিছু স্থায়ী সম্পত্তি (Fixd Assets) থাকতে হবে, যেমন বিল্ডিং ভূমি ইত্যাদি। যার সম্পূর্ণ পুঁজি এখনও তরল সম্পদে (Liquid Assets) রয়ে গেছে তার শেয়ার ফেস ভ্যাল্যূ (Face Value) থেকে কম বা বেশীতে বিক্রি করা জায়েয নয়।

৩. কোম্পানি কোন সুদী লেন-দেনের সাথে জড়িত থাকলে বাৎসরিক মিটিংয়ে সুদের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে হবে, যদিও তার আওয়াজ Overrule (অগ্রাহ্য) হয়ে যায়।

৪. মুনাফা বন্টন হওয়ার সময় যতটুকু সুদী ডিপোজিট থেকে অর্জিত হবে ততটুকু সদকা করে দিতে হবে- তা ভোগ করতে পারবে না। মুনাফা (Dividend)- এর কত হার সুদী ডিপোজিট থেকে অর্জিত হয় তা কোম্পানির ইনকাম স্টেটমেন্ট (Income Statment) থেকে জানা যায়।

See also  বিয়ে/বিবাহের সকল মাসআলা মাসায়েল

* স্টক এক্সচেঞ্জে অনেক সময় শেয়ারের লেন-দেনের উদ্দেশ্যে নয় বরং পারস্পরিক ডিফারেন্স (Difference) দূর করার উদ্দেশ্যে শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় হয়ে থাকে, এরূপ ক্ষেত্রে শেয়ার ডেলিভারীও করা হয় না এবং সেটা উদ্দেশ্যও থাকে না বরং শুধু উদ্দেশ্য থাকে ডিফারেন্স দূর করা। এরূপ উদ্দেশ্যে শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় বনাম জুয়া খেলা সম্পূর্ণ হারাম।

* কারও নামে শেয়ার বরাদ্দ হওয়ার পর শেয়ার সার্টিফিকেট ডেলিভারী পাওয়ার পূর্বেও তা ক্রয়-বিক্রয় জায়েয। (এবং

* ডিবেঞ্চার ক্রয়-বিক্রয় জায়েয নয়। কারণ তা সুদ ভিত্তিক।

* বাণিজ্যিক নাম ও ট্রেডমার্ক বিক্রি করা জায়েয তিন শর্তেঃ

১. উক্ত নাম ও ট্রেডমার্ক সরকারী আইনে রেজিষ্টার্ড হতে হবে।

২. উক্ত নাম ও ট্রেডমার্ক ক্রয়কারীকে ঘোষণা দিতে হবে যে, এখন থেকে এই নাম ও ট্রেডমার্কে পূর্বের অমুক ব্যক্তি ও অমুক প্রতিষ্ঠান দ্রব্য তৈরী ও বাজারজাত করবে না বরং অন্যরা করবে।

৩. উক্ত নাম ও ট্রেডমার্ক ক্রয়কারী যথাসাধ্য পণ্যের সাবেক মান রক্ষা করার কিংবা আরও অধিক মানসম্পন্ন দ্রব্য উৎপাদন করার চেষ্টা করবে।

* ইমপোর্ট এক্সপোর্ট লাইসেন্স ও যে কোন বাণিজ্যিক লাইসেন্স বিক্রি করা জায়েয, যদি রাষ্ট্রীয় আইনে উক্ত লাইসেন্স হস্তান্তর করাতে কোন নিষেধাজ্ঞা না থাকে।

* ইনডেটিং বিজনেস বা কমিশন এজেন্সি কারবার বৈধ। এটা দু’ ধরনের হতে পারে।

১. এজেন্ট মূল কোম্পানি থেকে মাল ক্রয় করে বিক্রি করবে এবং কোম্পানি থেকে শতকরা পারসেনটিজ গ্রহণ করবে। এটা জায়েয এই শর্তে যে, প্রথমে এজেন্টকে মাল হস্তগত করতে হবে তারপর ক্রেতাকে বুঝিয়ে দিতে হবে। নিজের গাড়ি, লরি, ট্রাক ইত্যাদিতে মাল বুঝিয়ে নেয়াও হস্তগত করার শামিল। হস্তগত করার পূর্বে বিক্রি করা বৈধ নয়, যেমন ক্রেতা প্রস্তুত করে ক্রেতাকে কোম্পানির গোডাউনে নিয়ে যাওয়া হল আর ক্রেতা তার নিজস্ব গাড়িতে/বাহনে মাল বুঝে তুলে নিয়ে আসল। এ ক্ষেত্রে যেহেতু এজেন্ট মাল হস্তগত করার পূর্বেই বিক্রি করল, তাই এটা জায়েয নয়। এল, সি খুলে বিদেশ থেকে মাল আনা হলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের বিদেশস্থ শাখা কর্তৃক মাল বুঝে গ্রহণ করা নিজের হস্তগত করার শামিল।

২. কখনও এরকম হয় যে, এজেন্ট শুধু ক্রেতাদেরকে উৎসাহিত ও প্রস্তুত করে এবং সেই ক্রেতাগণ সরাসরি মূল কোম্পানির সাথে ক্রয়ের চুক্তি করে। আর ক্রেতাদেরকে এই উৎসাহিত করার বিনিময়ে কোম্পানি এজেন্টকে শতকরা হারে কিছু বেনিফিট দিয়ে থাকে। এ পদ্ধতিও বৈধ। ( جد یدفقہی مسائل جهرا واحسن الفتاوی جه/ ۲ )

* টিকিট কেটে বড়শি দিয়ে মাছ ধরার যে পদ্ধতি বর্তমানে দেখা যায় তা বৈধ নয়।

সমাপ্ত: কয়েকটি আধুনিক পেশা, ব্যবসা-বাণিজ্য ও ক্রয়বিক্রয় সম্পর্কে শরীয়তের বিধান ও মাসআলা মাসায়েল।
সূত্র: আহকামে জিন্দেগী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Copyright Notice

কপি করা নিষিদ্ধ!