Skip to content

 

Wait...❤😘 Show love? ⬇⬇⬇

মুরগির খাবার তালিকা, মুরগির খাবার তৈরি, মুরগির খাবার তৈরির উপাদান, মুরগির খাদ্য তালিকা ও মুরগির খাদ্য তৈরির উপাদান

মুরগির খাবার তালিকা, মুরগির খাবার তৈরি, মুরগির খাবার তৈরির উপাদান, মুরগির খাদ্য তালিকা ও মুরগির খাদ্যে তৈরির উপাদান
Table of contents

আলোচ্য বিষয়: মুরগির খাবার তালিকা, মুরগির খাবার তৈরি, মুরগির খাবার তৈরির উপাদান, মুরগির খাদ্য তালিকা ও মুরগির খাদ্য তৈরির উপাদান।

খামার/ফার্মি এ প্রচুর নলেজ ও পরিশ্রমের প্রয়োজন, আর নলেজ বৃদ্ধিতে পড়ার বিকল্প নেই।

পড়তেও ধৈর্য্য লাগে, ফার্মিং এ সফল হতেও ধৈর্য্য লাগে।

আপনি যদি পড়তে ভয় পান, পড়ার ধৈর্য্য না পান, আপনার জন্য ফার্মিং না।

যথেষ্ঠ নলেজ বিহীন পরিশ্রম বৃথা।

আমার কথা খারাপ লেগে থাকলে দুখিঃত তবে এটাই বাস্তব।

যাই হোজ আজকেই যে আলোচনা বিষয় তাতে ফিরে যাই।

মুরগির খাদ্যঃ

যা খেলে জীবদেহের বৃদ্ধি, ক্ষয়পূরণ, পুষ্টি, শক্তি উৎপাদন এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে তাকে খাদ্য বলে।

১. সুষম খাদ্য

আমিষসহ সকল উপাদান সমূহ বিদ্যমান ও অন্যান্য গুণাবলী সম্পন্ন মুরগির খাদ্যকে সুষম খাদ্য বলে। এর সংগে পানোপযোগী পরিস্কার বিশুদ্ধ পানি সব সময় মুরগিকে সরবরাহ করতে হয়। মুরগির খাদ্যের ওপর নির্ভর করে ডিম ও মাংস উৎপাদন। খামারের প্রায় শতকরা ৮০% ভাগ খরচ হয় মুরগির খাদ্যের জন্য। উত্তম ডিম পাড়া মুরগিকে প্রয়োজনীয় সুষম খাদ্য না খাওয়ালে ডিম উৎপাদনের হার অনেক কমে যায়। তাই মুরগির উৎপাদন অব্যাহত রাখার জন্যে নির্দিষ্ট মানের সুষম খাদ্য সরবরাহ করতে হয়।

২. ছাড়া অবস্থায় মুরগির খাদ্য

গ্রামীণ পরিবেশে বসত বাড়িতে মুরগি সাধারণতঃ ছাড়া অবস্থায় থাকে। সেখানে মুরগি পালনে সর্বদা খাদ্য না দিলেও চলে। যথেষ্ট পরিমাণে ধান, গম, রান্না ঘর বা খাবার ঘরের অবশিষ্ট বা উচ্ছিষ্ট সেখানে পাওয়া যায়। এ থকে মুরগি বেশ কিছু খাদ্য আহরণ করতে পারে। শুধু মাত্র সকালে ও বিকেলে এদেরকে খাদ্য দিলেই যথেষ্ট। ধান বা গমের ক্ষুদ কুড়ার সংগে গরু-ছাগলের নাড়িভুড়ি সেদ্ধ করে ছোট করে কেটে এই খাদ্য তৈরী করা যায়। সাথে ডিমের খোসা ও ঝিনুক গুঁড়া করে খাদ্যের সংগে সরবরাহ করা উচিত।

৩. আবদ্ধ অবস্থায় মুরগির খাদ্য

আবদ্ধ অবস্থায় মোরগ-মুরগি পালন করতে হলে খাদ্য সরবরাহের প্রতি বিশেষ নজর দিতে হবে। খাদ্য ২৪ ঘন্টায় বিভিন্ন সময় সকালে, দ্বিপ্রহর ও বিকালে দেয়া যেতে পারে। পুষ্টি ও ভালো উৎপাদনের জন্য খাদ্যে খাদ্য উপাদানসমূহ যাতে সঠিক পরিমাণে থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখা দরকার। আবদ্ধ অবস্থায় মোরগ-মুরগি পালনে সুষম খাদ্য না দিলে মোরগ-মুরগি পুষ্টিহীনতায় ভোগে এবং উৎপাদন অনেক কমে যায়।

৪. ব্রয়লার মুরগির খাদ্য

ব্রয়লার মোরগ-মুরগির খাবার ভিন্ন ধরণের। ব্রয়লার মোরগ-মুরগির দৈহিক বৃদ্ধি খুব তাড়াতাড়ি হয়। তাই তাদের খাদ্যে উপাদান বেশি বিশেষ করে আমিষ ও শর্করা জাতীয় খাদ্যের পরিমাণ বেশি দিতে হয়।

মুরগির খাবার তালিকা, মুরগির খাবার তৈরি, মুরগির খাবার তৈরির উপাদান, মুরগির খাদ্য তালিকা ও মুরগির খাদ্যে তৈরির উপাদান

মোরগ-মুরগির খাদ্যের উপাদান ও তার উৎসঃ

৬টি উপাদান নিয়ে মোরগ-মুরগির খাদ্য গঠিত হওয়া উচিত। শর্করা, আমিষ, চর্বি, খনিজ দ্রব্য, খাদ্যপ্রাণ বা ভিটামিন এবং পানি এগুলো হলো খাদ্য উপাদান। খাদ্যের গুণাগুণ ও শরীরের প্রয়োজনীয়তার উপর নির্ভর করে খাদ্যের উপাদানসমূহকে মোট ছয় ভাগে ভাগ করা যায়। যথা :

১. শর্করা

শর্করা জাতীয় খাদ্য মোরগ-মুরগির শরীরে তাপ ও শক্তির উৎপাদন করে। গম, গমের ভূষি, ধান, ভুট্টা, যব, চালের খুদ, চালের কুড়া ইত্যাদিতে শর্করা পাওয়া যায়।

২. আমিষ

আমিষ খাদ্য শরীরের মাংস বৃদ্ধি, ডিম উৎপাদন ও শরীরের ক্ষয় পূরণ করতে সাহায্যে করে। শুটকি মাছের গুড়া, শুকানো রক্ত, গরু-ছাগলের নাড়ী-ভুড়ি, পোকামাকড়, কেঁচো, শামুক ও ঝিনুকের ভিতরের অংশ, গোবরের পোকা ও মাছের উচ্ছিষ্ট এগুলো প্রাণীজ আমিষ। উদ্ভিদ আমিষের মধ্যে তিল, সোয়াবিন ও বাদামের খইল, ডালের গুড়ো ইত্যাদি নাম করা যায়।

৩. চর্বি জাতীয় খাদ্য

এ জাতীয় খাদ্য তাপ ও শক্তি সরবরাহ করে। বিভিন্ন খাদ্য উপাদানের সংমিশ্রণে যে খাবার তৈরী কর হয় তাতে প্রয়োজনীয় চর্বি বিদ্যমান থাকে। বিধায় পৃথকভাবে খাদ্যের সাথে মিশ্রণের প্রয়োজন হয় না।

See also  মুরগি পালন প্রশিক্ষণ সিরিজঃ বাছাইযোগ্য মোরগ-মুরগির লক্ষণ, ভালো খারাপ মুরগি চেনার উপায় + বাজে মুরগি বাছাই ছাঁটাই

৪. খনিজ পদার্থ

এ জাতীয় খাদ্য শরীর বৃদ্ধি, হজম শক্তি বাড়ান, হাড় ও ডিমের খোসা তৈরী করতে সাহায্য করে। হাড়ের গুড়ো, মাছের কাটার গুঁড়ো, ঝিনুক ও শামুকের খোসার গুড়ো, ডিমের খোসা লবণ ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণে খনিজ পদার্থ থাকে।

৫. খাদ্যপ্ৰাণ বা ভিটামিন

এ জা খাদ্য মোরগ-মুরগির উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, শরীরকে সবল ও সুস্থ রাখে এবং পুষ্টিহীনতা দূর করে। মাছের তেল, শাক সবজি, গজানো গম ও ছোলা, ভুট্টা, সবুজ ঘাস, চালের কুড়া ইত্যাদিতে ভিটামিন পাওয়া যায়।

৬. পানি

মোরগ-মুরগির শরীরের তাপমাত্রার সমতা রক্ষা ও খাদ্য হজমে সাহায্য করে। মুরগির ঘরে পানির পাত্রে পানি এমনভাবে রাখতে হবে যাতে মুরগি দরকার মত পানি পান করতে পারে। ১০০টি মুরগির জন্যে দৈনিক ২০-২২ লিটার পানির দরকার। খাবার পানি দৈনিক ৩/৪ বার বদলিয়ে দেয়া উচিত।

মুরগির খাবার তালিকা, মুরগির খাবার তৈরি, মুরগির খাবার তৈরির উপাদান, মুরগির খাদ্য তালিকা ও মুরগির খাদ্যে তৈরির উপাদান

মুরগির খাদ্য তালিকা ও মুরগির খাদ্যে তৈরির উপাদানঃ

খাদ্যের মধ্যে আমিষ জাতীয় উপাদান অত্যাধিক প্রয়োজন। আমিষের অভাবে শরীরের পুষ্টিহীনতা, দুর্বলতা, আমিষ উৎপাদন ক্ষমতা হ্রাস ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দেয়। সাধারণত আমিষ সমৃদ্ধ খাদ্য উপকরণের মুল্য অত্যাধিক বেশি। সেজন্যে হাঁস মুরগির খাদ্যে সর্বনিম্ন পরিমাণ আমিষের প্রয়োজনীয়তা আমাদের জানা দরকার যার মাধ্যমে শরীরের পুষ্টি ও উৎপাদন ক্ষমতা বজায় থাকে এবং উৎপাদন বাড়ানো যায়। সাধারণত হাঁস মুরগির খাদ্যে মোট আমিষের শতকরা ২৫ ভাগ প্রাণীজ আমিষ অবশ্যই প্রয়োজন। এখানে প্রাণীজ আমিষের সর্বনিম্ন পরিমাণের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। কম মূল্যে এবং সহজ লভ্য হলে প্রাণীজ অথবা উভয় জাতীয় আমিষের পরিমাণ বাড়ানো যায়। আমিষ জাতীয় খাদ্যকে তার উৎস অনুসারে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে যেমন (ক) প্রাণীজ আমিষ ও (খ) উদ্ভিজ আমিষ।

(ক) প্রাণীজ আমিষ

১. ফিশমিল

বিভিন্ন প্রকার মাছ শুকিয়ে গুড়া করে এই খাদ্য উপকরণ তৈরী করা হয়। ভালো শুটকী মাছের গুড়া ময়লা আবর্জনা ও ধুলাবালি শুন্য হওয়া উচিৎ। ভালো শুটকী মাছে ৬০ হতে ৭০ ভাগ পর্যন্ত আমিষ থাকে। বিদেশে বাতাস শুন্য যন্ত্রে বৈদ্যুতিক তাপের সাহায্যে শুটকী করা হয় বলে উন্নতমানের আমিষ পাওয়া যায়। আমাদের দেশে সাধারণত রোদে শুকানো হয়ে থাকে। সুটকী মাছে পর্যাপ্ত পরিমাণে খনিজ পদার্থ, বিভিটামিন (রিবোল্ফাডিন নিয়াসিন, পেনটোথেনিক এসিড এবং কোলিন) থাকে। শুটকী গুড়া ভালো করে শুকিয়ে পলিথিন ব্যাগে সংরক্ষণ করা হয়। ফলে বর্ষাকালে আবহাওয়া হতে জলীয়বাষ্প গ্রহণ করে পচন ধরে না। ‘ম্যাশ’ খাদ্যে শতকরা ৫ ভাগ হতে ২০ ভাগ পর্যন্ত মিশ্রণ করতে হয়। কাঁচা মাছে ৩০ হতে ৩৫ ভাগ আমিষ উপাদান থাকে। কাঁচা মাছ পর্যাপ্ত পাওয়া গেলে আধা সিদ্ধ কবে হাঁস মুরগিকে খাওয়ানো যায়।

২. মাংস

কাঁচা মাংসে শতকরা ২০ হতে ৩০ ভাগ আমিষ থাকে। কোন মাংসের উচ্ছিষ্ট যেমন—মুরগি, ছাগল, গরু ইত্যাদির নাড়ি ভুড়ি কাঁচা অবস্থায় সুলভ মূল্যে সরবরাহ পাওয়া গেলে সিদ্ধ করে ১০০ ভাগ ম্যাশ খাদ্যের সাথে শতকরা ৪০ হতে ৪৫ ভাগ মিশিয়ে অথবা পরিমাণমত আলাদা পাত্রে খাওয়ানো যায়। আমাদের দেশে প্রতি বছর শতকরা ১০ ভাগ গবাদি পশু ও অন্যান্য প্রাণী সংক্রামক রোগ ছাড়াও বিভিন্নভাবে মারা যায়। উন্নত দেশের মত এই সমস্ত মাংস শতকরা ৩ হতে ৭ ভাগ লবণ মিশিয়ে সিদ্ধ করে শুকিয়ে অথবা প্রসেস করে হাঁস মুরগির জন্য আমিষ খাদ্য তৈরী করা হয়। শহরাঞ্চলে হোটেল বা রেস্তোরায় প্রতিদিন যে সমস্ত মুরগি জবাই হয় যার নাড়ি ভুড়ি, চামড়া, ঠোঁট, পালক, পা ইত্যাদি নষ্ট করে ফেলা হয়। চিংড়ি প্রসেসিং কেন্দ্রে ছোট চিংড়ি, চিংড়ির খোলা এবং তার সাথে বেশ খানিকটা করে মাংস শুধু শুধু ফেলে দেওয়া হয়। এদের চিংড়ির চাষ বৃদ্ধির সাথে সাথে এর অপচয়ও বৃদ্ধি পাচ্ছে। যারা মুরগির চাষ করে আস্ত মুরগি বিক্রির পরিবর্তে মাংস বিক্রি করেন তারা তার উচ্ছিষ্ট অংশ সগ্রহ করতে পারেন। এ সমস্ত প্রসেস করার ব্যবস্থা নিলে হাঁস মুরগি চাষের জন্য সস্তায় অফুরন্ত পরিমান আমিষ খাদ্য তৈরী করা সম্ভব। গ্রামাঞ্চলে শামুক, ঝিনুক পুড়িয়ে চুন তৈরী করা হয়। জীবিত ঝিনুক মাংস গুরো করে আমিষ খাদ্য হয়। শামুক বা ঝিনুকের মাংস কাঁচা সিদ্ধ করে হাঁস মুরগিকে দেয়া যায়। কাঁচা চামরার কারখানায় চামড়া টেনিং করার সময় চামড়া হতে মাংস কেটে ফেলে দেয়। তার পরিমানও কম নয়। এ সমস্ত সংগ্রহ করে হাঁস মুরগির আমিষ খাদ্য তৈরী করা যায়। কসাই খানায় প্রতিদিন যে সমস্ত গবাদি পশু জবেহ করা হয় তার রক্ত হাঁস মুরগির ভালো খাদ্য। রক্তে শতকরা ৭০ হতে ৭৫ ভাগ আমিষ থাকে। এই খাদ্য সিদ্ধ করে কাঁচা খাওয়ানো যায় বা শুকিয়ে সংরক্ষণ করা যায়। কিন্তু রক্ত ভালো হজম হয় না বলে “ম্যাশ” খাদ্যের সাথে শতকরা ৫ হতে ১০ ভাগের বেশি ব্যবহার করা ঠিক নয়।

৪. যকৃত চুৰ্ণ

যকৃত বা মেটে হাঁস মুরগির উত্তম আমিষ সমৃদ্ধ খাদ্য মৃত প্রাণীর হাঁস মুরগির খাদ্য হিসাবে সংরক্ষন করা যায়। এই খাদ্যে শতকরা ৬০ হতে ৭০ ভাগ আমিষ, যকৃত সিদ্ধ করে শুকিয়ে প্রচুর ভিটামিন, খনিজ পদার্থ ও উৎপাদন শক্তি আছে। খুব মুল্যবান খাদ্য বলে ম্যাশের সাথে শতকরা ৩ থেকে ৫ ভাগের বেশি ব্যবহার করা ঠিক নয়।

See also  সমন্বিত হাঁস মুরগি ও মাছ চাষ ব্যবস্থাপনা + মাছ ও হাঁস চাষ পদ্ধতি একসাথে, হাঁস ও মাছ সমন্বিত চাষ + মুরগি ও মাছ সমন্বিত চাষ, মাছ ও মুরগি চাষ পদ্ধতি একসাথে, মুরগি ও মাছের খামার

৫. দুগ্ধজাত খাদ্য

মাখন তোলা দুধ হাঁস মুরগির আমিষ খাদ্য হিসেবে খাওয়ানো যায়। বিশেষ করে বাচ্চার জন্য খুবই উপযোগী খাদ্য। বিদেশে শুকনো গুড়া দুধ হাঁস মুরগির বাচ্চার আমিষ খাদ্য হিসাবে ব্যবহৃত হয়। গুড়াদুধে শতকরা ৩০ ভাগ আমিষ আছে।

৬. ডিম

ডিম ফোটানো যন্ত্র হতে বাদ দেওয়া ডিম অথবা যেকোন খারাপ ডিম সিদ্ধ করে হাঁস মুরগির বাচ্চাকে খাওয়ানো যায়। এই খাদ্যে শতকরা ৩৫ ভাগ আমিষ আছে। সমস্ত নষ্ট ডিম সিদ্ধ করে শুকিয়ে ভবিষ্যতের জন্য সংরক্ষণ করা যায়।

৭. উই পোকা, লালশে লাল পিপড়া ও তাদের ডিম

এগুলোও হাঁস মুরগির ভালো উপাদেয় খাদ্য। এতে শতকরা ২০ হতে ৩০ ভাগ আমিষ থাকে। আলাদা করে বাচ্চাদের খাওয়ানো যায়।

৮. গবাদি পশুর পাকস্থলিস্থ

পোকা ও জীবানু গবাদি পশুর পাকস্থলিস্থ পোকা জীবানু ইত্যাদি শুখানোর ফলে পোকা ও জীবানু মরে প্রাণীজ আমিষে পরিণত হয়। এ ছাড়াও এ খাদ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি পাওয়া যায়। গোবর ফারমেন্টেশন হয়ে এক ধরণের রাসায়নিক পদার্থ তৈরী হয় যা বাচ্চাদের তাড়াতাড়ি বাড়ার শক্তি দেয়। এই গোবরের মধ্যে থাকে এই হরমুন মুরগির বাচ্চার মাথায় ঝুঁটি বা বৈল বৃদ্ধি করে। ডিম পাড়া মুরগিকে এই খাদ্য খাওয়ানো হলে ডিমের ভিতরে এক প্রকার পদার্থের সৃষ্টি হয়—-যা তাদের বাচ্চাদের তাড়াতাড়ি বাড়তে সাহায্য করে। ম্যাশের সাথে শতকরা ৫ হতে ১৫ ভাগ মিশিয়ে মুরগি ও তার বাচ্চাদের খাওয়ানো যায়।

৯. মাছের কাটা, আশ ও উচ্ছষ্ট

জালের পাত্রে রোদে ভালো করে শুকিয়ে গুড়া করে হাঁস মুরগির খাদ্য হিসাবে ব্যবহার করা যায়। বাড়িতে একটা হামান দিস্তা থাকলে এগুলো গুড়া করে পারিবারিক খামারের মুরগিদের দেওয়া যায় অথবা ম্যাশ খাদ্যের সাথে শতকরা ৩ থেকে ৫ ভাগ হারে মিশিয়ে খাওয়ানো যায়। এই খাদ্যে শতকরা ১৫ হতে ২০ ভাগ আমিষ আছে। বাড়িতে এবং কাছাকাছি হোটেল রেস্তোরা থেকেও এ সমস্ত উপকরণ সংগ্রহ করা যায়।

মুরগির খাবার তালিকা, মুরগির খাবার তৈরি, মুরগির খাবার তৈরির উপাদান, মুরগির খাদ্য তালিকা ও মুরগির খাদ্যে তৈরির উপাদান

(খ) উদ্ভিদ জাতীয় আমিষ

১. তৈল জাতীয় দ্রব্যের খইল

এই সমস্ত খাদ্যের মধ্যে অত্যাধিক পরিমানে উদ্ভিদ জাতীয় আমিষ পাওয়া যায়। নারিকেল খৈল হাঁস মুরগির জন্য অত্যাধিক উপাদেয়। পলিথিন ব্যাগের মধ্যে বাতাস শূন্য অবস্থায় রাখতে হয়। আমাদের দেশের জন্য সুলভ মূল্যে তিল ও নারিকেল খৈল ভালো। সহজ খাদ্য হলে অন্যান্য খৈল ব্যবহার করা যায়। ম্যাশ খাদ্যের সাথে শতকরা ৮ হতে ২০ ভাগ পর্যন্ত মিশানো যায়।

২. ডাল জাতীয় খাদ্য

ছোলা, মটর শুটী, কলাই, সিম, অড়হর, খেসারী ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণে উদ্ভিদ জাতীয় আমিষ আছে। সস্তা এবং সহজ লভ্য হলে এই সমস্ত ডাল আধাভাঙ্গা করে ম্যাশের সাথে শতকরা ২০ ভাগ হার পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়। এই সমস্ত ডালের দানা মিশ্রিত ভূষি শতকরা ৫ হতে ১৫ ভাগ ম্যাশের সাথে মিশিয়ে খাওয়াতে হয়। এই খাদ্যে শতকরা ২৫ হতে ৩৫ ভাগ আমিষ থাকে।

৩. গমের ভূষি

গম শর্করা জাতীয় খাদ্য। কিন্তু গমের ভূষিতে শতকরা আমিষের হার ১৫ ভাগ। গমের ভূষিতে উৎপাদন শক্তি কম বলে ‘ম্যাশের’ সাথে শতকরা ২০ ভাগের বেশি ব্যবহার করা ঠিক নয়।

৪. দানা মিশ্রিত গমের ভূষি

গমের সরু ভূষির সাথে গমের দানা মিশ্রিত থাকে। এই খাদ্যে উৎপাদন শক্তির পরিমাণ বেশি এবং আমিষের পরিমাণ শতকরা ১৫ ভাগ। হাঁস মুরগির খাদ্য হিসাবে এই খাদ্যে ভিটামিন “ই” পাওয়া যায়।

৫. চাউলের কুড়া

ধানের উপরের খোষা বাদ দিলে চাউলের সাথে থাকে কুড়া। এই খাদ্য প্রচুর পরিমাণে বি ভিটামিন ছাড়াও খনিজ পদার্থে সমৃদ্ধ। আমিষের পরিমাণ শতকরা ১২ ভাগ এবং উৎপাদন শক্তিও প্রচুর। হাঁস মুরগির খাদ্য হিসাবে এই খাদ্যের ব্যবহার প্রচুর। ম্যাশের মধ্যে শতকরা ২৫ হতে ৪০ ভাগ পর্যন্ত দেওয়া যায়।

৬. টমেটো

শীতের শেষে সস্তাদামে প্রচুর টমেটো পাওয়া যায়। এগুলো হাঁস মুরগিকে খাওয়ানো যায়। শুকিয়ে সংরক্ষণ করা যায়। তাজা অবস্থায় আমিষের পরিমাণ শতকরা ১০.৯ ভাগ এবং শুকনা অবস্থায় শতকরা ১৫ হতে ২০ ভাগ। ক্যামারীতে বাই-প্রোডাকট হিসাবে যে সমস্ত ফলের উচ্ছিষ্ট অংশ ফেলে দেওয়া হয় সেগুলোও শুকিয়ে হাঁস মুরগির খাদ্য হিসাবে ব্যবহার করা যায়।

৭. বিভিন্ন প্রকার তরিতরকারী ও ফলমুল

বিভিন্ন প্রকার ফল বা তরিতরকারীর উচ্ছিষ্ট অংশ ফেলে না দিয়ে হাঁস মুরগিকে খাওয়ানো যায়। পারিবারিক খামারের জন্য কাঁচাকলা, পাকা কলা, বেগুন, পটল, লাউ, চিচিঙ্গা, কুমড়া, তরমুজ ইত্যাদি ফল বা তরিতরকারীর উচ্ছিষ্ট অংশ বা খোসা ছোট করে কেটে দিলে উদ্ভিদ জাতীয় আমিষ পাওয়া যায়। বিভিন্ন শাকসব্জি যেমন বাঁধা কপির পাতা, ইপিল ইপলের পাতা, লেটুস ইত্যাদি শুকিয়ে রেখে প্রয়োজনে ব্যবহার করা যায়। সবুজ শাকসব্জি মাইলেজ করে রেখে সারা বৎসর হাঁসের জন্য ভাতের মাড় বিভিন্ন প্রকার তরিতরকারীর উচ্ছিষ্ট শাকসব্জি ইত্যাদি একসাথে সিদ্ধ করে দিলে উপাদেয় খাদ্য তৈরী হয়।

মুরগির খাবার তালিকা, মুরগির খাবার তৈরি, মুরগির খাবার তৈরির উপাদান, মুরগির খাদ্য তালিকা ও মুরগির খাদ্যে তৈরির উপাদান

(গ) শর্করা বা শ্বেতসার জাতীয় খাদ্য উপাদান

এ জাতীয় খাদ্য উপাদানে শরীরে তাপ উৎপাদন করে উৎপাদনও কর্মক্ষমতা বাড়ায়। এর অভাবে হাঁস মুরগি নিস্তেজ হয়ে পড়ে এবং উৎপাদন ক্ষমতা হারায়।

See also  (১১টি) মুরগির জাত পরিচিতি, মুরগির জাত কি কি? দেশি মুরগি চেনার উপায়, একটি দেশি মুরগি বছরে কতটি ডিম দেয়? কোন মুরগি কত দিনে ডিম দেয়? কোন জাতের মুরগি বেশি ডিম দেয়?

১. গম

শর্করা খাদ্য হিসাবে আধাভাঙ্গা গম মিশ্রণ খাদ্যের সাথে শতকরা ৩০ হতে ৫০ ভাগ পর্যন্ত মিশিয়ে খাওয়াতে হয়। আবার দানা বেশি গুড়া করে আটা হয়ে গেলে মুরগিতে কম খায় এবং স্বাদ নষ্ট হয়ে যায়। তাই যেকোন দানাদার খাদ্য আধাভাঙ্গা করে দেওয়া উচিৎ।

২. ভুট্টা

হাঁস মুরগির শর্করা এবং দানাদার খাদ্যের মধ্যে ভুট্টা খুবই উপাদেয় এবং তুলনামুলক হারে গমের চেয়ে সস্তা খাবার, গমের পরিবর্তে বা গমের সাথে যেকোন হারে মিশিয়ে সর্বমোট ৩০ হতে ৫০ ভাগ পর্যন্ত আধাভাঙ্গা করে খাওয়ানো যায়।

৩. ধান বা চাউল

পারিবারিক খামারের জন্য ছড়ানো ছিটানো ধান মৌসুমের সময় গ্রামাঞ্চলে ব্যবহার করা হয়। চাউলের ক্ষুদ হাঁস মুরগির খাদ্য হিসাবে ব্যবহার করা যায়। বাচ্চার জন্য ব্রুডার ম্যাশ তৈরী করতে চাইলের ক্ষুদ্র ব্যবহার করা যায়।

৪. গোল আলু

সিদ্ধ করে ভিজা ম্যাম খাদ্যে শতকরা ২০ ভাগ হারে খাওয়ানো যায়। শুকিয়ে গুড়া করে ম্যাশ খাদ্যের সাথে শতকরা ২০ ভাগ হারে দেওয়া যায় এবং সেই পরিমাণে গম বা দানাদার খাদ্য কম দিতে হয়।

৫. মিষ্টি আলু

দামে সস্তা এবং সহজ লভ্য হলে গমের সাথে ম্যাশ খাদ্যে গোলআলুর ন্যায় ব্যবহার করা যায়।

৬. বিভিন্ন প্রকার সিম

সিমের বীচি শুকিয়ে ম্যাশ খাদ্যে শতকরা ১০ হতে ১৫ ভাগ মিশিয়ে খাওয়ানো যায়। আমিষের পরিমাণ শতকরা ২৫ হতে ৩০ ভাগ।

৭. ঝোলাগুড় বা মোলাসেম

‘আখের গুড় হতে তৈরী মোলাসেস হাঁস মুরগির উপাদেয় খাদ্য। মোলাসেসের আমিষ ৩.২% আর শর্করা উপাদান ৬৫.৬৪% তাছাড়াও প্রচুর পরিমাণে খনিজ পদার্থ আছে। খাদ্যে উৎপাদন শক্তি বাড়ানোর জন্য শতকরা ৩ থেকে ৪ ভাগ হারে শুকনা ম্যাশ খাদ্যের সাথে মিশিয়ে খাওয়াতে হয়। অনেকে সর্বাধিক শতকরা ১০ ভাগ পর্যন্ত খাদ্যের সাথে মিশিয়ে বাড়ন্ত বাচ্চাকে খাইয়ে সন্তোষজনক ফল পেয়েছেন।

মুরগির খাবার তালিকা, মুরগির খাবার তৈরি, মুরগির খাবার তৈরির উপাদান, মুরগির খাদ্য তালিকা ও মুরগির খাদ্যে তৈরির উপাদান

(ঘ) চর্বি বা স্নেহ জাতীয় খাদ্য-উপাদান

শরীরের শক্তি উৎপাদন ও তাপ সংরক্ষণের জন্য এই জাতীয় খাদ্য উৎপাদনের প্রয়োজন। চর্বি দেহের লাবণ্যতা রক্ষা করে ও তাপ নিয়ন্ত্রণ করে। মাংস, মাংসের উচ্ছিষ্ট, শুটকী মাছ, তৈল জাতীয় বীজের খৈল-(যেমন তিল, নারিকেল, তিসি, সোয়াবিন, তুলার বীজ ইত্যাদির খৈল) শাকসব্জি ইত্যাদিতে প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদান থাকে।

মুরগির খাবার তালিকা, মুরগির খাবার তৈরি, মুরগির খাবার তৈরির উপাদান, মুরগির খাদ্য তালিকা ও মুরগির খাদ্যে তৈরির উপাদান

(ঙ) খাদ্য উৎপাদন শক্তির প্রয়োজনীয়তা

মুরগির মাংস পেশী সঞ্চালন, অঙ্গ প্রত্যঙ্গের দৈনন্দিন কাৰ্য্য সম্পাদন ডিম উৎপাদন ও মাংস বৃদ্ধি ইত্যাদিতে শক্তির ক্ষয় সাধিত হয়ে থাকে। শীতকালে এই প্রক্রিয়ার আরো বৃদ্ধি ঘটে। শরীর হতে প্রতিনিয়ত এই তাপ সঞ্চারণের মানে শক্তির ক্ষয় সাধিত হওয়া। এই ক্ষয় পূরণের জন্য খাদ্য হতে শক্তি আহরণ যদি সমপরিমাণ না হয় তাহলে শক্তির ঘাটতি পড়ে। শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা সঠিক রাখার জন্য শরীরের জন্য মেটাবোলিক কার্যকলাপ বাড়তে থাকে। আর শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় অর্থ-মৃত্যুর পথে ধাবিত হওয়া।

১. মেটাবোলাইজাবল শক্তি

হাঁস মুরগি বা কোন প্রাণীকে খাদ্য খাওয়ানোর পর তার মল মূত্র সম্পূর্ণ পোড়ানোর পর যে শক্তি পাওয়া যায় তা ঐ খাদ্যের সর্বমোট শক্তি হতে বাদ দিলে মেটাবোলিক শক্তি পাওয়া যায়।

২. উৎপাদন শক্তি

হাঁস মুরগির শরীরে সবটুকু মেটাবোলিক শক্তি ব্যবহৃত হতে পারে না। তার কারণ কিছু অংশ তাপ আকারে পারিপার্শ্বিক আবহাওয়াতে বিকিরণ হয়ে যায়। অবশিষ্ট শক্তি শরীরে চর্বি ও আকারে জমা হয়ে বাংলাদেশী সঞ্চালন কর্মক্ষমতা ও ডিম উৎপাদনে সহায়তা করে।

৩. খাদ্যে উৎপাদন শক্তি

হাঁস মুরগি বা বাচ্চা তাদের শরীরে প্রয়োজনীয় উৎপাদন শক্তির চাহিদা পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত খাদ্য খেতেই থেকে তবুও তাদের খাদ্য মেটে না। অর্থাৎ উৎপাদন শক্তি যে খাদ্যে কম থাকে সে খাদ্য তারা পরিমাণে বেশি খায়।

মুরগির খাবার তালিকা, মুরগির খাবার তৈরি, মুরগির খাবার তৈরির উপাদান, মুরগির খাদ্য তালিকা ও মুরগির খাদ্যে তৈরির উপাদান

সমাপ্ত: একটি পোষ্টে সব কিছু এক সাথে বলা সম্ভব নয়, তবে, আশা করি আপনাদের, মুরগির খাবার তালিকা, মুরগির খাবার তৈরি, মুরগির খাবার তৈরির উপাদান, মুরগির খাদ্য তালিকা ও মুরগির খাদ্য তৈরির উপাদান, বিষয়ক প্রশ্নগুলো অধিকাংশেরই উত্তর দিতে পেরেছি।

এছাড়াও বাকি থাকা বিষয়গুলো নিয়ে আলাদা আলাদা পোষ্ট তৈরি করা হবে। তাই খামারিয়ান.কম কে বুকমার্ক/সেভ করে রাখুন ও আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন। তো দেখা হচ্ছে, পরবর্তী পোষ্টে। আর্লাহ হাফেয।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Copyright Notice

কপি করা নিষিদ্ধ!