Skip to content

 

Wait...❤😘 Show love? ⬇⬇⬇

মুরগির বাচ্চা পালনের নিয়ম + মুরগির বাচ্চার খাবার তালিকা + মুরগির বাচ্চা ব্রুডিং করার নিয়ম

মরগির বাচ্চা পালনের নিয়ম + মুরগির বাচ্চার খাবার তালিকা + মুরগির বাচ্চা ব্রুডিং করার নিয়ম
Table of contents

এই পোষ্টটিতে রয়েছে- মুরগির বাচ্চা পালনের নিয়মগলো কি, মুরগির বাচ্চার খাবার তালিকা ও মুরগির বাচ্চা ব্রুডিং করার নিয়ম সমূহ।

প্রিয়. খামারিয়ান.কম এর সদস্যবৃন্দ নতুন পোষ্টে আপনাকে স্বাগতম। তো পড়ি ও শিখি।

প্রথমেই শুরু করি ‍মুরগির বাচ্চা পালনের নিয়মগুরো সম্পর্কে।

মুরগির বাচ্চা পালনের নিয়ম জানাব কেন?

হাঁস-মুরগির বাচ্চা পালন আজ অত্যন্ত লাভজনক ব্যবসা হিসেবে প্রসার লাভ করেছে। তবে অনেকে একাজে লাভজনক অনেক ও অনেকে আবার পদ্ধতিগত জ্ঞানের অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে।

মুরগির বাচ্চা পালন পদ্ধতি কয়টি?

মুরগি পালনের প্রধান সমস্যা হলো ডিম ফুটানোর পর বাচ্চা পালন। সঠিক ভাবে বাচ্চা পালন না করতে পারলে বাচ্চা মারা যায়।

মুরগির বাচ্চা পালনের জন্য দুই রকম পদ্ধতি প্রচলিত আছে।

১। প্রাকৃতিক উপায়ে বাচ্চা পালন।

২। কৃত্রিম উপায়ে বাচ্চা পালন।

প্রাকৃতিক উপায়ে বাচ্চা পালনঃ

মুরগির তা দিয়ে ফুটানো বাচ্চাকে মুরগির সাহায্যে পালনকেই প্রাকৃতিক উপায়ে বাচ্চা পালন বলে। গ্রামে এভাবে কুঁচে মুরগির মাধ্যমে বাচ্চাকে তা দিয়ে পালন করা হয়। এই পদ্ধতি এদেশে প্রাচীন কাল থেকে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বাচ্চার শরীরে নুতন পালক না গজানো পর্যন্ত মুরগি তার বাচ্চাদের বুকের নিচে আগলে রাখে এবং বাচ্চার শরীরের তাপ মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। মুরগির শরীরের তাপে বেড়ে উঠা বাচ্চার মৃত্যু হার সাধারনত কম হয়। অনেক সময় দেখা যায়, মা বাচ্চাদের ডেকে নিয়ে বুকের বা পালকের নিচে আশ্রয় দেয়। এই প্রক্রিয়ায় মুরগি একমাত্র তার নিজের ফুটানো বাচ্চাকেই নিজের বাচ্চা মনে করে। অন্য মুরগির ফুটানো বাচ্চাকে সে গ্রহণ করে না, অনেক সময় ঠুকরে দুরে সরিয়ে দিতে দেখা যায়। তবে কোন কোন সময় কৃত্রিম উপায়ে ফুটানো বাচ্চাকেও বিশেষ ব্যবস্থায় দেশি কুঁচে মুরগি দিয়ে পালন করা যায়। নিম্নে বর্ণিত পদ্ধতির মাধ্যমে তা সম্ভব।

পদ্ধতিঃ দেশি কুঁচে মুরগি যখন ডিম ফুটাতে থাকে তখন রাতে কৃত্রিম উপায়ে ফুটানো বাচ্চা তার সদ্য ফুটানো বাচ্চার সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে কাজটি কিন্তু করতে হবে ২-৩ দিনে পর্যায়ক্রমে, তা না হলে মুরগি যদি বুঝতে পারে বাচ্চা তার নয়, তখন সে এদের মেরে ফেলতে পারে। এ প্রক্রিয়ায় ১টি মুরগি ১৫-২০টির মত বাচ্চা পালতে পারে। বাচ্চাসহ মুরগি অন্যান্য মুরগি থেকে আলাদা রাখতে হবে। কুঁচে মুরগি একাধিক হলে তাদের প্রত্যেককে বাচ্চাসহ আলাদা রাখতে হবে।

মরগির বাচ্চা পালনের নিয়ম + মুরগির বাচ্চার খাবার তালিকা + মুরগির বাচ্চা ব্রুডিং করার নিয়ম

কৃত্রিম উপায়ে বাচ্চা পালনঃ

কৃত্রিম উপায়ে বাচ্চা ফুটানো ও পালনকে যথাক্রমে ইনকোবেশন ও ত্রুডিং বলে। এই উপায়ে বাচ্চা পালন করতে হলে নিচের ব্যবস্থার দিকে খেয়াল রাখতে হবে।

বাচ্চা পালনের ঘর

বাঁশ, চাটাই বা তক্তা দিয়ে ১৫০ সেমি ৩০০ সেমি তৈরি খাচা ও বাঁশের চটা, চাটাই অথবা তক্তা দিয়ে বেড়া দিতে হবে। ঘরের উচ্চতা হবে ১৫০-২১০ সেমি। খড়, গোলপাতা, ছন, কাশফুল, পাটকাটি বা পলিথিন দ্বারা বাঁশের চাটাই দিয়ে ঘরের চাল তৈরি করা যায়। লক্ষ্য রাখতে হবে যেন ব্রডার ঘরে প্রচুর আলো বাতাস ঢুকে। জানালা গুলো একটু উপরে থাকলে বাচ্চার গায়ে বাতাস লাগবে না। ঝড় বৃষ্টি ঠান্ডার দিনে চট দিয়ে উপরের ফাঁকা জায়গা বন্ধ করে দিতে হবে। জানালার পাল্লা থাকলে ভালো হয়। কাদা মাটি ও তুষের প্রলেপ দিয়ে বাঁশের বেড়া লেপে দিতে হবে। লিটার, ব্রুডার ও বেষ্টনী গার্ড পদ্ধতিতে কৃত্রিম উপায়ে মুরগির বাচ্চা পালন করা যায়।

See also  (৮টি) হাঁস মুরগির রোগ ও প্রতিকার pdf, হাঁস মুরগির রোগ ও চিকিৎসা, হাঁস মুরগির ওষুধ, হাঁস মুরগি পালন প্রশিক্ষণ

লিটার পদ্ধতি

তুষ বা কাঠের গুঁড়া ৫-৭ সেমি পুরু করে মেঝেতে বিছিয়ে বাচ্চার বিছানা বা লিটার তৈরি করতে হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে তুষ বা কাঠের গুড়া যেন শুকনো হয়। ভিজা গুঁড়া বা তুষ বাচ্চার জন্য ক্ষতিকর। সাত দিন পর পর বিছানা উলটিয়ে দিতে হবে এবং সম্ভব হলে প্রতি ১৫ দিন পর পর বিছানা পাল্টে দিলে ভালো হয়। লিটার বা বিছানয় যাতে কোন রকম পোকা জন্মাতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। বিছানায় এবং ঘরে ডেটল বা সেভলন দিয়ে জীবানু মুক্ত করতে হবে।

ব্রুডার পদ্ধতি

বাচ্চা পালনে ব্রুডার ঘরে তাপ নিয়ন্ত্রণ একটি বিশেষ জরুরী বিষয়। বাচ্চা ব্রুডার ঘরে রাখার আগে ঘরের মধ্যে তাপ মাত্রা যাতে ৬০-৭০ ফাঃ থাকে তা নিশ্চিত করার জন্য ৩-৪টি এই ধরনের ১টি ব্রুডারে ২০০টি বাচ্চা পালন করা যায়। বাঁশের ঝুড়ির মাঝে ছিদ্র করে হারিকেন বসিয়ে হারিকেন হোল্ডার তৈরি করা যায়। হারিকেন থেকে যাতে সঠিক তাপ বা গ্যাস বাইরে আসতে না পারে তার জন্য কাদামাটি ও ধানের তুষ দিয়ে ঝুড়ির উভয় দিক ডেকে দিতে হয়।

বেষ্টনী গার্ড পদ্ধতি

হোল্ডারের ৯০ সেমি দূরে চতুর্দিকে ৩০-৪৫ সেমি উঁচু চাটাইয়ের, বা টিন বা হার্ডবোর্ড দিয়ে বেষ্টনী দিয়ে দিতে হবে। ফলে বাচ্চা ব্রুডার থেকে বেশি দূরে যেতে পারবে না। বেষ্টনী গার্ডের ভিতরে প্রয়োজনীয় খাদ্য ও পানি সরবরাহ করতে হবে। প্রতি ১০০টি বাচ্চা ব্রুডার করতে ২টি হারিকেন হোল্ডারই যথেষ্ট। ব্যবসায়িক ভিত্তিতে আজকাল হার্ডবোর্ড ও কাঠের বহুতলা বিশিষ্ট ব্রুডার বাজারে পাওয়া যায়। অধিক বাচ্চা পালনের জন্য এ ধরনের ব্রুডার ব্যবহৃত হয়। মুরগির বাচ্চা সাধারনত ৯৫ ফা তাপমাত্রা পর্যন্ত স্বাচ্ছন্দে বা আরামে কাটাতে পারে। কাজেই কৃত্রিম উপায়ে প্রয়োজনীয় তাপমাত্রা সৃষ্টি করতে হবে। কৃত্রিম উপায়ে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য নানা প্রকার ব্রুডার বা তাপমান যন্ত্র ব্যবহৃত হয়। এদের মধ্যে উল্লেখ যোগ্য হল :

১. বৈদ্যুতিক বাতি,

২. কেরোসিন বাতি

৩. হারিকেন বা গরম পানির সাহায্যেও এ তাপ সৃষ্টি করা যায়। ব্রুডার ঘরে তাপমাত্রা বাচ্চার বয়স বাড়ার সাথে সাথে পর্যায়ক্রমে কমাতে হবে। প্রতি সপ্তাহে ৫ ফাঃ করে তাপমাত্রা কমানো উচিত। বাচ্চা সাধারনত ৬-৭ সপ্তাহ পর্যন্ত ব্রুডার ঘরে রাখতে হয়। তবে শীত কালের চেয়ে গ্রীষ্মকালে কম সময়ের জন্য ত্রুডিং করতে হয়। গরম কালে ৪ সপ্তাহই যথেষ্ট বলে বিবেচিত হয়ে থাকে।

সফল ভাবে মুরগির বাচ্চাকে পালন করতে হলে, মুরগির বাচ্চা ব্রুডিং করার নিয়মগুলো জানা ও মানা দুটাই অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

মুরগির বাচ্চা ব্রুডিং করার নিয়মঃ

বয়স ভিত্তিক ব্রুডার ঘর ও ব্রুডারের তাপমাত্রার হার

বাচ্চার বয়সব্রুডার ঘরের তাপমাত্রা
(ফারেনহাইট)
ব্রুডার এর তাপমাত্রা
(ফারেনহাইট)
১ম সপ্তাহ
২য় সপ্তাহ
৩য় সপ্তাহ
৪র্থ সপ্তাহ
৫ম সপ্তাহ
৬ষ্ঠ সপ্তাহ
৭০-৭৫
৭০-৭৫
৬৫-৭৫
৬০-৭০
৬০-৬৫
৬০-৬৫
৯০
৯০
৮৫
৮০
৭৫
৭০

ব্রুডারে কেন্দ্রস্থলে টিনের তৈরি ছাতার মত ১টি ঢাকনা থাকে, তাকে হোভার বলে। বৈদ্যুতিক ব্রুডারে হোভারের নিচে ১০০ পাওয়ারের বাল্ব দিতে হবে।

এবার আমার আলোচনা করব মুরগির বাচ্চার খাবার তালিকা সম্পর্কে। চলুন।

ব্রুডার ঘর তৈরি

বাঁশ, কাঠ, টিন বা তার জালের বেড়া দিয়ে ঘর তৈরি করা যায়। ঘর তৈরির সময় ঘরের মেঝে, দেয়াল বা বেড়া ভালো ভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে। তারের বেড়া থাকলে বাচ্চাকে ঠান্ডা, ঝড় বৃষ্টির হাত থেকে রক্সা করতে হলে চট বা বস্তা ঝুলিয়ে দিতে হবে। প্রয়োজনে যাতে চট ঘুটিয়ে বা ঝুলিয়ে দেওয়া যায় তার ব্যবস্থা করতে হবে। বয়স অনুসারে ২ সপ্তাহ বয়স পর্যন্ত প্রতি বাচ্চার জন্য ১,২ বর্গ ফুট, ৪ সপ্তাহ পর্যন্ত ১ বর্গ ফুট, ৬ সপ্তাহ পর্যন্ত ২ বর্গফুট এবং ১০ সপ্তাহ পর্যন্ত ৩ বর্গফুট পরিমান জায়গার প্রয়োজন। ঘরের মেঝে তুষ বা কাঠের গুড়া ৫-৭ সেমি পুরু করে বিছিয়ে তার উপর চট বা বস্তা দিয়ে বিছানা তৈরি করতে হবে। বাচ্চার ঘরে পর্যন্ত আলো বাতাস প্রবেশের ব্যবস্থা রাখতে হবে। নিয়মিত জীবানু নাশক দিয়ে ঘর পরিষ্কার করতে হবে।

See also  মুরগির খাবার তালিকা, মুরগির খাবার তৈরি, মুরগির খাবার তৈরির উপাদান, মুরগির খাদ্য তালিকা ও মুরগির খাদ্য তৈরির উপাদান

তাপের ব্যবস্থা

বৈদ্যুতিক বাল্ব, হিটার, গ্যাস, ব্রুডার, হারিকেনের ব্রুডার প্রভৃতির সাহায্যে হাঁসের বাচ্চাকে তাপ দেওয়া যেতে পারে। বিভিন্ন বয়সের বাচ্চার জন্য নিম্ন তাপ ব্যবহার করা যায়।

বৈদ্যুতিক বাল্বের সাহায্যে তাপের ব্যবস্থা

৩০ সেমি উচ্চতা বিশিষ্ট ৪টি পায়ার উপর ৯১×৯১ সেমি টিন, কাঠ বা হার্ডবোর্ড দ্বারা ব্রুডার তৈরি করা যেতে পারে। উল্লেখিত তাপ মাত্রার জন্য শীতকালে ১০০ ওয়াটের ৩-৪টি ও গরম কালে ৬০ ওয়াটের ৩-৪টি বাল্ব ব্যবহার করা যায়। ব্রুডারে বাচ্চা ছাড়ার ৩-৪ ঘন্টা আগে বাল্ব জ্বেলে তাপমাত্রা ঠিক করতে হবে। ব্রুডার ঘরের তাপমাত্রা সাধারনত থার্মোমিটারের সাহায্য তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হয়। তবে থার্মোমিটারের অভাবে বাচ্চাদের অবস্থান ও গতিবিধি দ্বারা ও তাপমাত্রা ঠিক আছে কিনা বুঝা যায়।

কম তাপঃ

ব্রুডারের নিচে বাচ্চাদের গাদাগাদি অবস্থান, ব্রুডারে তাপমাত্রা কমে যাওয়া বুঝায়। এক্ষেত্রে তাপ বাড়াতে হবে।

বেশি তাপঃ

বাচ্চারা বেষ্টনী গার্ড গেঁষে দলবদ্ধ ভাবে ঘুরতে থাকলে এবং চেচামেচি করলে তাপ বেশি হয়েছে বুঝতে হবে, তখন তাপ কমাতে হবে।

স্বাভাবিক তাপঃ

ঘরের মধ্যে বাচ্চাগুলো সবদিকে ঘুরে বেড়ালে এবং খাদ্য ও পানি গ্রহণ ও স্বাচ্ছন্দে ঘুরাফেরা করলে তাপ মাত্রা স্বাভাবিক আছে। বাল্ব গুলোকে উপরে উঠিয়ে তাপ কমানো নিচে নামিয়ে তাপ বাড়ানো যায়। ব্রুডারের ৩০-৪৫ সেমি দূরে হার্ডবোর্ড বা টিনের বেড়া দিয়ে বেষ্টনী বা গার্ড তৈরি করা যায়। বাচ্চাদের উষ্ণ আরামদায়ক পরিবেশের জন্য এরকম তৈরি করা আবশ্যক। দিনের বেলায় জানালা খুলে অথবা চটের ঝুলানো বস্তা সরিয়ে আলো বাতাস প্রবেশের ব্যবস্থা করতে হবে। গরম কালে ৪ সপ্তাহ ও শীতকালে ৫ সপ্তাহ বয়স পর্যন্ত বাচ্চাকে তাপ দিতে হবে। গরম কালে ৪-৫ দিন এবং শীতকালে ৭ দিন পর ব্রুডার গার্ড সরিয়ে বাচ্চাদের জন্য বাড়তি জায়গা করে দিতে হবে। শীতকালে ১৫-২০ দিন এবং গরম কালে ১০-১৫ দিন পরে ব্রুডার গার্ড সরিয়ে বাচ্চাদের সারা ঘর ঘুরে বেড়াবার সুযোগ করে দিতে হবে। ১ মাস বয়সের প্রতিটি বাচ্চার জন্য ৪৬০ বর্গ সেমি হিসেবে মেঝে জায়গা দিতে হবে। ৪-৫ দিন পরপর বিছানা (লিটার) বদলে দিতে হবে এবং নূতন লিটার যোগ করে ঘর শুকনো রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।

মরগির বাচ্চা পালনের নিয়ম + মুরগির বাচ্চার খাবার তালিকা + মুরগির বাচ্চা ব্রুডিং করার নিয়ম

মুরগির বাচ্চার খাবার তালিকা কখন কিভাবে?

বাচ্চা ফুটানোর পর ২৪ ঘন্টা পর্যন্ত খাওয়ার প্রয়োজন হয় না। প্রথম দিন লিটার এর উপর কাগজ বা পলিথিন বিছিয়ে নিয়ে গম ভাঙা বা চালের খুদ খেতে দিতে হবে। দ্বিতীয় দিনে গম ভাঙা বা ভুট্টা ভাঙার সাথে সবুজ কঁচি পাতা ছোট করে কেটে দেওয়া যায়। ননী ছাড়া দুধও দেয়া যেতে পারে। তিন দিন বয়সে বাচ্চাকে হোভারের নিচে ও বেষ্টনী গার্ডের মধ্যে কাবার ও পানি দিতে হবে। ক্রমান্বয়ে বাচ্চার যখন খুঁটি খাবার অভ্যাস হবে তখন মেঝে খাবার না দিয়ে খাবার পাত্রে খাবার এবং পানির পাত্রে পানি দিতে হবে। খাবার পাত্র বাঁশ টিন, কাঠ বা মাটি দিয়ে তৈরি করা যেতে পারে। নিচে বিভিন্ন ধরনের খাবার পাত্র দেখানো হল। প্রতিটি ১০০ বাচ্চার জন্য ৭৫ সেমি লম্বা ৫০ সেমি চওড়া ও ৫ সেমি উচ্চতা বিশিষ্ট ৪টি কাঠের তৈরি খাবার পাত্র দেওয়া যায়।

বয়স অনুপাতে মুরগির বাচ্চার খাবার তালিকাঃ

বয়সখাদ্য উপকরণপরিমাণ
১ সপ্তাহ হতে ২ মাস পর্যন্তগম/ভুট্টা ভাঙা
চাউলের কুড়া
তিলের খৈল
শুটকি মাছের গুড়া
ঝিনুক চুন
খনিজ মিশ্রন
লবণ
৪.৫ কেজি
২.৫ কেজি
১.২ কেজি
১.৫ কেজি
০.২ গ্রাম
০.০৫ গ্রাম
০.০৫ গ্রাম

উপরোক্ত হারে খাদ্য মিশ্রণ থেকে বয়স অনুপাতে প্রতিটি বাচ্চার খাবার পরিমান। প্রতি বাচ্চার জন্য দৈনিক হার।

See also  (20টি) মুরগির শরীরের বিভিন্ন অংশের নাম ও কাজের বর্ণনা
বাচ্চার বয়সপ্রতি বাচ্চার জন্য দৈনিক হার
১ম সপ্তাহ
২য় সপ্তাহ
৩য় সপ্তাহ
৪র্থ সপ্তাহ
৫ম সপ্তাহ
১০ গ্রাম
২০ গ্রাম
৩০ গ্রাম
৪০ গ্রাম
৫০ গ্রাম

বাচ্চাদের খাবারের পাশাপাশি প্রচুর বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করতে হবে। মাটির থালায় উপর করা ১টি পানির গড়া বা ঘটি এমনভাবে ছিদ্র করে রাখতে হবে যাতে পানি সর্বদাই ছিদ্রটির উপর থাকে। বাচ্চারা পিপাসার্ত হলেই পানি খেতে থাকবে এবং পানির স্তর ছিদ্রটির নিচে নেমে গেলে পুনরায় পানি ভর্তি হয়ে যাবে। প্রতি ২৫টি বাচ্চার জন্য ১টি করে পানির পাত্র রাখা যায়।

হাঁস মুরগির ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সমস্যাদি

হাঁস মুরগির ব্যবস্থাপনা একটি অতীব জরুরী কারিগরি কাজ। সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে দেখা যায় খামারের বিশেষ ক্ষতি হয়। বিশেষ করে বাচ্চাদের খুবই ক্ষতি হয়। সময়মত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে খামারের সকল বাচ্চাই মারা যেতে পারে। সাধারনত যে সব ব্যবস্থাপনা ত্রুটির কারনে খামারের সমূহ ক্ষতি হয় তা নিচে বর্ণনা করা হল।

হাঁস মুরগির ঠাণ্ডা লাগার কারণ

আমাদের দেশে সাধারণত শীতকালেই হাঁসের বাচ্চা ফুটানো হয় এবং শীতকালেই বাচ্চাদের ঠান্ডা লাগার বেশি ভয় থাকে। অত্যাধিক ঠাণ্ডা লাগলে বাচ্চারা একত্রে জড়োসড়ো হয়ে থাকে। কিচির মিচির শব্দ করে, সহজেই অবসন্ন হয়ে পড়ে এবং মারা যায়। হাঁস মুরগির ঠাণ্ডা লাগার বহু বিধ কারণ আছে, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল।

১. রাতে ঘরের দরজা জানালা বন্ধ না করা,

২. ঘরের ভিতরে তাপের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকা

৩. ব্রুডারে সঠিক তাপ না থাকা এবং ব্রুডারের নিচে জায়গা কম থাকলে।

হাঁসের বাচ্চা ঠান্ডা লাগলে সহজেই বুঝার উপায় হল—তখন বাচ্চারা পরস্পর জড়সড় হয়ে গাদাগাদি করে থাকে, খাওয়া বন্ধ করে দেয়, শ্বাস কষ্ট দেখা দেয় এবং সবশেষে অবসন্ন হয়ে মারা যায়। বাচ্চাদের ঠাণ্ডার হাত থেকে বাঁচাতে হলে দ্রুত ব্যবস্থা দরকার। ঠান্ডা লাগার সঠিক কারণ নির্ণয় করত প্রতিকারের ব্যবস্থা নিতে হবে। খাদ্যের পরিমান বাড়াতে হবে, ভিটামিন যুক্ত খাবার দিতে হবে এবং ঘরের তাপ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করতে হবে।

মুরগির বাচ্চা খাবার না খাওয়া

প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপনার অভাবে অনেক সময় হাঁস মুরগির খামারে বাচ্চারা অভুক্ত বা সম্পূর্ণ ভাবে অনাহারে থাকে। যদিও সময়মত প্রচুর পরিমানে খাবার ও পানি দিয়ে তা কাটিয়ে উঠা যায় তবু একই ধরনের অবস্থার পুনরাবৃত্তিতে বাচ্চাদের শরীরের ওজন কমে যায়। বাচ্চারা শুকিয়ে যায় এবং সপ্তানান্তে মারা যায়।

মুরগির বাচ্চা খাবার না খাওয়ার কারণ

হাঁস মুরগির বাচ্চা অনাহারে থাকার অনেক কারন থাকতে পারে তবে নিম্নলিখিত কারণগুলো

উল্লেখযোগ্য।

১. ব্রুডারের তাপমাত্রা কম থাকলে বাচ্চারা জড়সড় হয়ে থাকে, খাবার পাত্রের দিকে যেতে চায়না এবং আস্তে আস্তে নিস্তেজ হয়ে পড়ে।

২. খাবার জায়গা কম হরে, অপেক্ষাকৃত দুর্বল বাচ্চারা খাবারের কাছে যেতে পারে না, ফলে খেতে না পেয়ে আরো দুর্বল হয় এবং নিস্তেজ হয়ে পড়ে।

৩. খাবার জায়গা কম হলে, অপেক্ষাকৃত দুর্বল বাচ্চারা খাবারের কাছে যেতে পারে না, ফলে খেতে না পেয়ে আরো দুর্বল হয় এবং নিস্তেজ হয়ে পড়ে।

৪. খাবার পাত্র-সমভাবে সব জায়গায় স্থাপন না করলে।

৫. সুষম ও পরিমিত খাবার সরবরাহ না করলে।

৬. খাবার বাসি বা পঁচে গিয়ে বিষবাদ হলে।

সমাপ্ত। আশা করি পোষ্টাট থেকে মুরগির বাচ্চা পালনের নিয়মগলো কি, মুরগির বাচ্চার খাবার তালিকা ও মুরগির বাচ্চা ব্রুডিং করার নিয়ম সমূহ সম্পর্কে আরও নতুন কিছু শিখতে পেরেছেন ও পুরতন জানাগুলেওিক পুনরায় ঝালিয়ে নিতে পেরেছেন।

ভবিষ্যতে এই বিষয়ে আরো আলোচনা থাকবে, ইংশাআল্লাহ। ইয়া রব আমাদের জ্ঞানকে আরও বৃদ্ধি করে দিন। আমিন।

আমাদের এই বিষয়ে অন্যান্য পোষ্ট সমূহ পড়ার আমন্ত্রণ রইল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Copyright Notice

কপি করা নিষিদ্ধ!