🛑মুসলিমরা কা’বার উপাসনা করে?
🔷উত্তর হচ্ছেঃ এটি পশ্চিমা বিশ্বে একটি খুব কমন ধারণা। খ্রিষ্টান মিশনারীদের লাগামহীন প্রচারণার দ্বারা এই ধারনা ব্যাপক ‘জনপ্রিয়তা’ লাভ করেছে।
কিন্তু প্রকৃত সত্য হচ্ছে— ইসলামের মূল কথাই হচ্ছে আল্লাহ ছাড়া আর কারো উপাসনা করা যাবে না। কেউ যদি কা’বার উপাসনা করে, তাহলে সে ইসলাম থেকে বের হয়ে যায়। কুরআন ও হাদিসে কোথাও কা’বার উপাসনার কথা বলা হয়নি। বরং বলা হয়েছে কা’বার প্রভু আল্লাহ তা’আলার উপাসনা করতে।
فَلۡيَعۡبُدُواْ رَبَّ هَـٰذَا ٱلۡبَيۡتِ (٣) ٱلَّذِىٓ أَطۡعَمَهُم مِّن جُوعٍ۬ وَءَامَنَهُم مِّنۡ خَوۡفِۭ (٤)
“ অতএব তারা যেন ইবাদত করে এই ঘরের(কা’বা) প্রভুর। যিনি তাদেরকে ক্ষুধায় আহার দিয়েছেন এবং ভীতি থেকে তাদেরকে নিরাপদ করেছেন। ” [8]
প্রকৃতপক্ষে যারা এরূপ অভিযোগ করে তারা আসলে জানেই না যে পৌত্তলিকতা কী। সব থেকে অজ্ঞ মুসলিমটিও কখনোই কা’বাকে আল্লাহর মূর্তি বলে মনে করে না। বরং মুসলিমদের কাছে এটি আল্লাহর ইবাদতের ঘর। ঠিক যেমন ইহুদিদের কাছে বাইতুল মাকদিস বা বাইতুল মুকাদ্দাস {হিব্রুতে Bethel বা Beit HaMikdash, ইংরেজিতে Temple Mount} হচ্ছে ঈশ্বরের ইবাদতের গৃহ। [9] অথচ ইহুদিদেরকে তারা বলে একত্ববাদী আর মুসলিমদেরকে বলে পৌত্তলিক!
সৌদি আরব থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন দূরবর্তী স্থানে মুসলিমরা সলাত(নামাজ) আদায় করে থাকে। পৃথিবীর অধিকাংশ মুসলিমদের থেকেই কা’বা অনেক দূরে অবস্থিত। এমন কোন মূর্তিপুজারী কি আছে, যে তার দেবতার মূর্তিকে হাজার হাজার মাইল দূরে রেখে উপাসনা করে? কখনো যদি এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় যে কিবলার দিক বোঝা যাচ্ছে না, তখন যে কোন দিকে ফিরে সলাত আদায় করা যায়। এমনকি কা’বাকে যদি কখনো ধ্বংসও করে ফেলা হয়, তাহলে মুসলিমরা কা’বা যে স্থানটিতে আছে, সেই স্থানের দিকে মুখ করে সলাত আদায় করবে। [10] এ থেকে প্রমাণ হয় যে মুসলিমরা মোটেও কা’বার ইমারতের উপাসনা করে না বরং কা’বা মুসলিমদের জন্য শুধুমাত্র ইবাদতের দিক বা কিবলা। যে কোন পৌত্তলিকের কাছে তার দেবতা সব থেকে পবিত্র ও মহান। অথচ ইসলাম ধর্মে একজন মু’মিন মুসলিমের জান, মাল ও ইজ্জত কা’বার চেয়ে বেশি মর্যাদাবান। [11]
কোন পৌত্তলিক কখনোই তার দেবতার মূর্তির উপর দাঁড়ায় না। কোন হিন্দু ধর্মালম্বী কি কখনো তার দেব মূর্তির উপর উঠে দাঁড়াতে পারবে? কিংবা কোন ক্যাথোলিক খ্রিষ্টান কি কখনো যিশু বা মরিয়মের মূর্তির উপর উঠে দাঁড়াতে পারবে? কখনোই না। মুসলিমদের কাছে কা’বা হচ্ছে কিবলা এবং ইবাদতের ঘর। এর উপর উঠে দাঁড়িয়ে মুসলিমরা আযান দিতে পারে। প্রতি বছর হজের মৌসুমে কা’বার ছাদে উঠে এর গিলাফ পরিবর্তন করা হয়। [12]
এসব থেকে প্রমাণিত হয় যে কা’বা মুসলিমদের নিকট মোটেও মূর্তি বা প্রতিমা জাতীয় কিছু না এবং মুসলিমরা কখনোই কা’বার উপাসনা করে না।
তথ্যসূত্রঃ
[8] আল কুরআন, কুরাঈশ ১০৬:৩-৪
[9] ■ খ্রিষ্টান বাইবেল/ইহুদি তানাখ, আদিপুস্তক(Genesis/Bereishit) ২৫:১০-২২
■ “The Holy Temple” (chabad)
https://www.chabad.org/library/article_cdo/aid/144586/jewish/The-Holy-Temple.htm
[10] Question regarding Muslims worshiping Ka’bah and Hajr Aswad (islamQA Hanafi)
https://goo.gl/V6nJx2 অথবা http://bit.ly/2AKwrfT
[11] আবদুল্লাহ ইবনে আমর(রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ(ﷺ)কে কা’বা ঘর তাওয়াফ করতে দেখলাম এবং তিনি বলছিলেনঃ কত উত্তম তুমি হে কা’বা! আর্কষীয় তোমার খোশবু, কত উচ্চ মর্যাদা তোমার! কত মহান সম্মান তোমার। সেই সত্তার শপথ, যাঁর হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ! আল্লাহর নিকট মু’মিন ব্যক্তির জান-মাল ও ইজ্জতের মর্যাদা তোমার চেয়ে অনেক বেশী। আমরা মু’মিন ব্যক্তি সম্পর্কে সুধারণাই পোষণ করি। [সুনান ইবন মাজাহ, হাদিস নং ৩৯৩২]
[12] “Hajj 2013 | Exclusive Kaba Kiswa change 2013-1434 Arafa Day ” (You Tube)
https://goo.gl/i3zjxS অথবা http://bit.ly/2kdRttz