বিষয়: 6টি ইমামের জন্য মুসল্লিদের দায়িত্ব এবং 7টি মুসল্লিদের প্রতি ইমামের দায়িত্ব কর্তব্য।
হ্যাশট্যাগ: #ইমামের জন্য মুসল্লিদের দায়িত্ব এবং #মুসল্লিদের প্রতি ইমামের দায়িত্ব কর্তব্য।
ইমামের জন্য মুসল্লিদের দায়িত্বঃ
১. মুসল্লী ও মুক্তাদীগণ ইমামের আদব ও সম্মান রক্ষা করবে। তাই আদব হল ইমাম নামাযের জন্য দাঁড়িয়ে গেলে মুসল্লীগণও সাথে সাথে দাঁড়িয়ে যাবেন। ইমাম যে কাতার বরাবর পৌঁছবেন সে কাতারের লোকজন দাঁড়িয়ে যাবেন।
২. ইমামের মধ্যে শরী আত সম্মত দোষ না দেখা দিলে তার পেছনে নামায পড়তে নারাযী দেখাবে না।
৩. কখনও নির্দ্ধারিত সময়ে ইমাম উপস্থিত হতে না পারলে তাঁর জন্য চার পাঁচ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করবে, এর কারণে কোন উচ্চবাক্য বা ইমামের নিন্দা সমালোচনা করবে না, এটাকে তাঁর মানবিক ওজর বলে গণ্য করবে।
৪. ইমাম উপস্থিত থাকা অবস্থায় তাঁর সম্মতি ব্যতীত অন্য কাউকে ইমাম বানাবে না।
৫. নামায বা কেরাতে ইমামের কোন ভুল হলে তার কারণে ইমামের প্রতি ভক্তি নষ্ট করা অনুচিত। কেননা, মানুষের পক্ষে নামাযে ভুল-চুক হয়ে যাওয়া স্বাভাবিক।
৬. ইমাম উলামা ও মাশায়েখদের অন্তর্ভুক্ত, এ হিসেবেও তাঁর জন্য অন্যদের কিছু করণীয় রয়েছে। এ প্রেক্ষিতে উলামা মাশায়েখ ও বুযুর্গদের জন্য যা করনীয়, ইমামের জন্যও তা করণীয়।
মুসল্লিদের প্রতি ইমামের দায়িত্ব কর্তব্যঃ
১. ইমাম সমস্ত গোনাহ থেকে তওবা না করে নামায শুরু করবেন না, যেহেতু তিনি মুক্তাদীদের জন্য সুপারিশকারী। অতএব সর্বাগ্রে তাকে পরিস্কার হতে হবে।
২. সালাম ফিরানোর পর ইমাম যখন দোয়া করবেন, তখন শুধু একার জন্য নয় বরং সকলের জন্য দোয়া করবেন; অন্যথায় তাদের প্রতি খেয়ানত হয়ে যাবে।
৩. নির্ধারিত সময়ে নামায় পড়ানো ইমামের দায়িত্ব। তবে মানবিক জরুর বশতঃ মাঝে মধ্যে দুই চার মিনিট বিলম্ব হলে তা অন্যায় নয়।
৪. জামাআতের নির্ধারিত সময় হয়ে যাওয়ার পর কারও আগমনের অপেক্ষার এতখানি বিলম্ব করা যাবে না, যাতে উপস্থিত মুসল্লীদের কষ্ট হয়। তবে এমন কোন লোক যদি হয় যার জন্য অপেক্ষা না করলে উৎপাত ও ফ্যাসাল ঘটবে, তাহলে ভিন্ন কথা।
৫. ইমাম মুসল্লীদের সন্তুষ্টি ব্যতীত নামায এতখানি লম্বা করবেন না, যাতে তাদের কষ্ট হয়। এ জন্যই মুসল্লীদের প্রতি লক্ষ্য রাখতে গিয়ে স্বাভাবিক ভাবে তিনি সুন্নাত পরিমাণ কেরাতের চেয়ে কেরাত লম্বা করবেন না, আবার সুন্নাত পরিমাণের চেয়ে কম পড়াও মাকরূহ। ইমাম রুকু সাজদায় তাসবীহ এভাবে পড়বেন যেন মুক্তাদীগণ এতমীনানের সাথে তিনবার পড়তে পারেন। এজন্যেই কারও কারও মতে ইমামের জন্য উত্তম হল রুক্ সাজদার তাসবীহ পাঁচবার পড়া।
৬. মুসল্লীদের সন্তুষ্টি ব্যতীত অস্বাভাবিকভাবে নামায পড়ানো থেকে অনুপস্থিত থাকবেন না।
৭. ইমামের মধ্যে প্রকৃতপক্ষে শরী—আত সম্মত কোন দোষ থাকার কারণে তার পেছনে নামায পড়তে মুসল্লীগণ অসম্মত হলে তাঁর পক্ষে তাদের ইমামতী করা মাকরূহ। এরূপ অবস্থায় তিনি তাদের ইমামতী করবেন না। শরীয়ত সম্পর্কিত কারণ ছাড়া ব্যক্তিগত কোন পছন্দ অপছন্দ থাকার অভিযোগ ধর্তব্যে আনা হবেনা।
বিঃ দ্রঃ ইমাম একজন আলেম ও মাশায়েখদের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার প্রেক্ষিতে তার উপর আরও কিছু দায়িত্ব বর্তায়। তার জন্য খামারিয়ান.কম এ আলাদা আলোচনা রয়েছে।
সমাপ্ত: 6টি ইমামের জন্য মুসল্লিদের দায়িত্ব এবং 7টি মুসল্লিদের প্রতি ইমামের দায়িত্ব কর্তব্য।
সূত্র: আহকামে যিন্দেগী।